রেডজোন ঘোষিত এলাকায় বিধিনিষেধ মানছে না কেউ

বগুড়ায় করোনা সংক্রমণের সংখ্যা প্রতিদিনই নতুন রেকর্ড করছে। আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা দুটোই বাড়ছে সমানতালে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ৩ জন এবং উপসর্গ নিয়ে আরও ২ জন মারা গেছে। এছাড়া গত সোমবার একদিনেই আক্রান্ত হয়েছে দেড় শতাধিক। এটি বগুড়ায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক আক্রান্ত। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের হিসাব অনুযায়ী মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত মুত্যুর সংখ্যা ২১ জন। তবে এর বাইরে আরও ৩ জন রয়েছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা হাসপাতালে মারা যান।

সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল এই ৩ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করায় করোনাভাইরাসে জেলায় এ পর্যন্ত মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৪ জনে। এদিকে করোনার সংক্রমণ উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে চললেও বগুড়ার রেডজোন হিসাবে ঘোষিত এলাকাগুলোতে কড়াকড়ি দেখা যায়নি। যানবাহনসহ অনেক এলাকায় লোকজনের চলাচলসহ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা দেখা গেছে। ফলে শিথিল রেডজোনের বিষয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। মানা হচ্ছে না রেডজোনের বিধিনিষেধ। অপরদিকে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা পরিপূর্ণ হওয়ার মুখে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, আগামী কয়েক দিনেই সরকারি আইসোলেশন সেন্টারের শয্যা পূর্ণ হয়ে যাবে।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে. গত সোমবার একদিনে বগুড়ায় ১৫২ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়।

এর আগে বগুড়ায় একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১২৮। গত সোমবার পর্যন্ত জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৫৫৪। এরমধ্যে বগুড়ার শহর এলাকাতেই আক্রান্তের সংখ্যা ১০৩১ জন। আর একই সময় পর্যন্ত শহর এলাকাতে মারা গেছে ১৪ জন (মঙ্গলবার মারা যাওয়া ১ জন স্বাস্থ্য বিভাগের সংখ্যায় বিকেল পর্যন্ত অন্তর্ভুক্ত হয়নি)। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে বগুড়া মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালে মারা গেছেন ২ জন। এদের মধ্যে সোমবার রাতে মারা যান আদমদিঘী উপজেলার পল্লীচিকিৎসক আবু বক্কর সিদ্দিকী।

মঙ্গলবার সকালে মারা যান শহরের রাজাবাজার এলাকার জুলফিকার আলী। করেনার আইসোলেশন সেন্টার বগুড়া মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এটিএম নুরুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এছাড়া বেসরকারি টিএমএসএস হাসপাপাতালে মঙ্গলবার করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন জাকির হোসেন নামে এক ব্যক্তি মারা যান। একই হাসপাতালে গত সোমবার সন্ধ্যায় করোনার উপসর্গ নিয়ে ধুনটের চিত্ররঞ্জন নামে এক বৃদ্ধ মারা যান। হাসপাতাল থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

করোনার উপসর্গ নিয়ে আমদিঘীর চাঁপাপুর গ্রামে গত সোমবার রাতে মারা যান রাজিব কু- নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তা। এদিকে জেলায় করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সিভিল সার্জন বগুড়া সদরের ৯ এলাকাকে রেডজোন ঘোষণা করলে জেলা প্রশাসন রোববার গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে রেডজোন এলাকার বিধিনিষেধ মেনে চলার আহ্বান জানায়। তবে রেডজোন ঘোষিত বেশিরভাগ এলাকাতেই জনচলাচল স্বাভাবিক লক্ষ্য করা গেছে।

যানবাহন চলাচলেও তেমন নিয়ন্ত্রণ ছিল না। কয়েকটি সড়ক মুখে বাঁশ দিয়ে বেরিকেড থাকলেও ছিল শিথিলতা। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ জানান, তিনিও বিষয়টি জেনেছেন। সংক্রমণ রোধে রেডজোন এলাকায় বিধিনিষেধ কঠোরভাবে পালনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে বলে জানান।

বুধবার, ১৭ জুন ২০২০ , ৩ আষাঢ় ১৪২৭, ২৪ শাওয়াল ১৪৪১

বগুড়ায় করোনা সংক্রমণ প্রতিদিন নতুন রেকর্ড

রেডজোন ঘোষিত এলাকায় বিধিনিষেধ মানছে না কেউ

প্রতিনিধি, বগুড়া

বগুড়ায় করোনা সংক্রমণের সংখ্যা প্রতিদিনই নতুন রেকর্ড করছে। আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা দুটোই বাড়ছে সমানতালে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ৩ জন এবং উপসর্গ নিয়ে আরও ২ জন মারা গেছে। এছাড়া গত সোমবার একদিনেই আক্রান্ত হয়েছে দেড় শতাধিক। এটি বগুড়ায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক আক্রান্ত। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের হিসাব অনুযায়ী মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত মুত্যুর সংখ্যা ২১ জন। তবে এর বাইরে আরও ৩ জন রয়েছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা হাসপাতালে মারা যান।

সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল এই ৩ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করায় করোনাভাইরাসে জেলায় এ পর্যন্ত মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৪ জনে। এদিকে করোনার সংক্রমণ উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে চললেও বগুড়ার রেডজোন হিসাবে ঘোষিত এলাকাগুলোতে কড়াকড়ি দেখা যায়নি। যানবাহনসহ অনেক এলাকায় লোকজনের চলাচলসহ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা দেখা গেছে। ফলে শিথিল রেডজোনের বিষয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। মানা হচ্ছে না রেডজোনের বিধিনিষেধ। অপরদিকে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা পরিপূর্ণ হওয়ার মুখে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, আগামী কয়েক দিনেই সরকারি আইসোলেশন সেন্টারের শয্যা পূর্ণ হয়ে যাবে।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে. গত সোমবার একদিনে বগুড়ায় ১৫২ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়।

এর আগে বগুড়ায় একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১২৮। গত সোমবার পর্যন্ত জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৫৫৪। এরমধ্যে বগুড়ার শহর এলাকাতেই আক্রান্তের সংখ্যা ১০৩১ জন। আর একই সময় পর্যন্ত শহর এলাকাতে মারা গেছে ১৪ জন (মঙ্গলবার মারা যাওয়া ১ জন স্বাস্থ্য বিভাগের সংখ্যায় বিকেল পর্যন্ত অন্তর্ভুক্ত হয়নি)। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে বগুড়া মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালে মারা গেছেন ২ জন। এদের মধ্যে সোমবার রাতে মারা যান আদমদিঘী উপজেলার পল্লীচিকিৎসক আবু বক্কর সিদ্দিকী।

মঙ্গলবার সকালে মারা যান শহরের রাজাবাজার এলাকার জুলফিকার আলী। করেনার আইসোলেশন সেন্টার বগুড়া মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এটিএম নুরুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এছাড়া বেসরকারি টিএমএসএস হাসপাপাতালে মঙ্গলবার করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন জাকির হোসেন নামে এক ব্যক্তি মারা যান। একই হাসপাতালে গত সোমবার সন্ধ্যায় করোনার উপসর্গ নিয়ে ধুনটের চিত্ররঞ্জন নামে এক বৃদ্ধ মারা যান। হাসপাতাল থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

করোনার উপসর্গ নিয়ে আমদিঘীর চাঁপাপুর গ্রামে গত সোমবার রাতে মারা যান রাজিব কু- নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তা। এদিকে জেলায় করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সিভিল সার্জন বগুড়া সদরের ৯ এলাকাকে রেডজোন ঘোষণা করলে জেলা প্রশাসন রোববার গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে রেডজোন এলাকার বিধিনিষেধ মেনে চলার আহ্বান জানায়। তবে রেডজোন ঘোষিত বেশিরভাগ এলাকাতেই জনচলাচল স্বাভাবিক লক্ষ্য করা গেছে।

যানবাহন চলাচলেও তেমন নিয়ন্ত্রণ ছিল না। কয়েকটি সড়ক মুখে বাঁশ দিয়ে বেরিকেড থাকলেও ছিল শিথিলতা। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ জানান, তিনিও বিষয়টি জেনেছেন। সংক্রমণ রোধে রেডজোন এলাকায় বিধিনিষেধ কঠোরভাবে পালনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে বলে জানান।