প্রণোদনার ঋণ দ্রুত বিতরণের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের

করোনাভাইরাস থেকে দেশের অর্থনীতিকে টেনে তুলতে হলে প্রণোদনা প্যাকেজের বাস্তবায়ন আরও দ্রুত করার জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই ঋণ বিতরণে দীর্ঘসূত্রতায় এফবিসিসিআইসহ ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সংগঠনের অসন্তোষের প্রেক্ষাপটে গত বৃহস্পতিবার এই নির্দেশনা দেয়া হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘জরুরি’ এই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ঋণ গ্রহীতাদের আবেদন স্বল্পতম সময়ের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে দ্রুত ঋণ মঞ্জুর এবং বিতরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এই আদেশ গত বৃহস্পতিবার সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

বিদ্যমান বিধি-বিধানের আলোকে ঋণ দেয়া সম্ভবপর না হলে সেক্ষেত্রেও স্বল্পতম সময়ের মধ্যে আবেদনকারীকে তা জানিয়ে দিতে বলা হয়েছে। ঋণ আবেদনকারীদের সহায়তা করতে প্রতিটি ব্যাংকের প্রতিটি শাখায় আবশ্যিকভাবে একটি স্বতন্ত্র ‘হেল্প ডেস্ক’ গঠন এবং সহজে দৃষ্টিগোচর হয় এমন স্থানে আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ সংক্রান্ত তথ্যাদি প্রদর্শন করতে বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণবিষয়ক সার্বিক কাজ তদারকি সরাসরি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীকে করতে বলা হয়েছে। করোনাভাইরাস মহামারী থেকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সরকার এ পর্যন্ত ১ লাখ ৩ হাজার ১১৭ কোটি টাকার আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এই প্যাকেজগুলোর মধ্যে রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য বিশেষ তহবিল, কৃষি ভর্তুকি, বিনামূল্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ, গৃহহীন মানুষের জন্য গৃহনির্মাণ, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর স্থগিত সুদের উপর ভর্তুকিসহ ইত্যাদি খাতে সরকারের রাজস্ব খাত হতে অর্থায়ন করা হচ্ছে।

নির্দেশণায় বলা হয়, অর্থনীতিতে কোভিড-১৯ এর নেতিবাচক প্রভাব রোধকল্পে সরকার অগ্রাধিকার খাত বিবেচনায় আর্থিক সহায়তা প্যাকেজ প্রবর্তনসহ নানামুখী কার্যক্রম ইতোমধ্যে গ্রহণ করেছে, যার অধিকাংশই ব্যাংক ব্যবস্থার মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। এই সব কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য ব্যাংকসমূহের সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক প্রণীত প্যাকেজসমূহের সম্যক ধারণা থাকা আবশ্যক। এছাড়া প্যাকেজসমূহের যথার্থ বাস্তবায়নকল্পে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়সহ সব শাখা ও উপশাখার বিভিন্ন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সম্পৃক্ত করাও অত্যন্ত জরুরি। ব্যাংকগুলো উদ্যোগী না হলে প্যাকেজগুলো বাস্তবায়ন কাক্সিক্ষত মাত্রায় পৌঁছানো সম্ভবপর হবে না, যা কাম্য নয়। ব্যবসায়ী শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, এই মহামারীকালে অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারে প্রণোদনা প্যাকেজগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের কোন বিকল্প নেই। এজন্য সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে ব্যাংকগুলোকে। ব্যাংকগুলো যত দ্রুত ঋণ দেবে, সংকট তত দ্রুত কেটে যাবে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও আমরা (এফবিসিসিআই) একসঙ্গে কাজ করছি। ইতোমধ্যে এফবিসিসিআইতেও একটি ‘হেল্প ডেস্ক’ খোলা হয়েছে। কোন ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তার প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্যের প্রয়োজন হলে ‘হেল্প ডেস্ক’ থেকে সহায়তা নিতে আমি অনুরোধ করছি। সবাই একসঙ্গে কাজ করলে আমরা এই সংকট মোকাবিলা করতে পারব বলে আমি আশা করি।

শনিবার, ২০ জুন ২০২০ , ৬ আষাঢ় ১৪২৭, ২৭ শাওয়াল ১৪৪১

প্রণোদনার ঋণ দ্রুত বিতরণের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

image

করোনাভাইরাস থেকে দেশের অর্থনীতিকে টেনে তুলতে হলে প্রণোদনা প্যাকেজের বাস্তবায়ন আরও দ্রুত করার জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই ঋণ বিতরণে দীর্ঘসূত্রতায় এফবিসিসিআইসহ ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সংগঠনের অসন্তোষের প্রেক্ষাপটে গত বৃহস্পতিবার এই নির্দেশনা দেয়া হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘জরুরি’ এই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ঋণ গ্রহীতাদের আবেদন স্বল্পতম সময়ের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে দ্রুত ঋণ মঞ্জুর এবং বিতরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এই আদেশ গত বৃহস্পতিবার সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

বিদ্যমান বিধি-বিধানের আলোকে ঋণ দেয়া সম্ভবপর না হলে সেক্ষেত্রেও স্বল্পতম সময়ের মধ্যে আবেদনকারীকে তা জানিয়ে দিতে বলা হয়েছে। ঋণ আবেদনকারীদের সহায়তা করতে প্রতিটি ব্যাংকের প্রতিটি শাখায় আবশ্যিকভাবে একটি স্বতন্ত্র ‘হেল্প ডেস্ক’ গঠন এবং সহজে দৃষ্টিগোচর হয় এমন স্থানে আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ সংক্রান্ত তথ্যাদি প্রদর্শন করতে বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণবিষয়ক সার্বিক কাজ তদারকি সরাসরি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীকে করতে বলা হয়েছে। করোনাভাইরাস মহামারী থেকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সরকার এ পর্যন্ত ১ লাখ ৩ হাজার ১১৭ কোটি টাকার আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এই প্যাকেজগুলোর মধ্যে রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য বিশেষ তহবিল, কৃষি ভর্তুকি, বিনামূল্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ, গৃহহীন মানুষের জন্য গৃহনির্মাণ, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর স্থগিত সুদের উপর ভর্তুকিসহ ইত্যাদি খাতে সরকারের রাজস্ব খাত হতে অর্থায়ন করা হচ্ছে।

নির্দেশণায় বলা হয়, অর্থনীতিতে কোভিড-১৯ এর নেতিবাচক প্রভাব রোধকল্পে সরকার অগ্রাধিকার খাত বিবেচনায় আর্থিক সহায়তা প্যাকেজ প্রবর্তনসহ নানামুখী কার্যক্রম ইতোমধ্যে গ্রহণ করেছে, যার অধিকাংশই ব্যাংক ব্যবস্থার মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। এই সব কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য ব্যাংকসমূহের সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক প্রণীত প্যাকেজসমূহের সম্যক ধারণা থাকা আবশ্যক। এছাড়া প্যাকেজসমূহের যথার্থ বাস্তবায়নকল্পে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়সহ সব শাখা ও উপশাখার বিভিন্ন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সম্পৃক্ত করাও অত্যন্ত জরুরি। ব্যাংকগুলো উদ্যোগী না হলে প্যাকেজগুলো বাস্তবায়ন কাক্সিক্ষত মাত্রায় পৌঁছানো সম্ভবপর হবে না, যা কাম্য নয়। ব্যবসায়ী শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, এই মহামারীকালে অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারে প্রণোদনা প্যাকেজগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের কোন বিকল্প নেই। এজন্য সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে ব্যাংকগুলোকে। ব্যাংকগুলো যত দ্রুত ঋণ দেবে, সংকট তত দ্রুত কেটে যাবে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও আমরা (এফবিসিসিআই) একসঙ্গে কাজ করছি। ইতোমধ্যে এফবিসিসিআইতেও একটি ‘হেল্প ডেস্ক’ খোলা হয়েছে। কোন ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তার প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ সংক্রান্ত যে কোন তথ্যের প্রয়োজন হলে ‘হেল্প ডেস্ক’ থেকে সহায়তা নিতে আমি অনুরোধ করছি। সবাই একসঙ্গে কাজ করলে আমরা এই সংকট মোকাবিলা করতে পারব বলে আমি আশা করি।