ওজোন ক্ষয়কারী দ্রব্য উৎপাদন ও ব্যবহার রোধে জীববৈচিত্র্যকে ঝুঁকি থেকে রক্ষা করা সম্ভব প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বায়ুমণ্ডলীয় ওজোনক্ষয়কারী মানবসৃষ্ট দ্রব্যগুলোর উৎপাদন ও ব্যবহার রোধ করলেই পৃথিবীর জীববৈচিত্র্যকে সম্ভাব্য ঝুঁকি থেকে রক্ষা করা সম্ভব।

আজ বিশ্ব ওজোন দিবস উপলক্ষে গতকাল দেয়া এক বাণীতে তিনি এজন্য, ব্যাপকহারে জনসচেতনতা সৃষ্টি, বনায়ন, বিদ্যমান আইন ও বিধিবিধান অনুসরণপূর্বক পরিবেশবান্ধব বিকল্প প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বায়ুমণ্ডলের জীবন রক্ষাকারী প্রতিরক্ষাস্তর সুরক্ষায় সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতকেও এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস মহামারী বিশ্ব অর্থনীতিকে মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত করলেও একটি দীর্ঘ সময় পুরো পৃথিবী একসঙ্গে লকডাউন হওয়ায় বায়ুদূষণ কমে প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে এসেছিল এবং পৃথিবী একটি গাঢ় সবুজ গ্রহে পরিণত হয়েছিল, যা নিশ্চিতভাবে ওজোনস্তর পুনর্গঠনে সহায়ক হয়েছে।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশেও বিশ্ব ওজোন দিবস-২০২০ পালিত হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত এবং এ উপলক্ষে তিনি সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ওজোনস্তর সূর্য থেকে নিঃসরিত অতিবেগুনি রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাবে মানবদেহে চর্ম-ক্যান্সার, চোখের ছানিসহ অন্যান্য প্রাণী, উদ্ভিদ, শষ্যকে বিবিধ বিরূপ প্রতিক্রিয়া থেকে সুরক্ষা দেয়।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওজোনস্তর রক্ষার জন্য ১৯৮৫ সালে ভিয়েনা কনভেনশন এবং এর আওতায় ১৯৮৭ সালে মন্ট্রিল প্রটোকল গৃহীত হয়। ফলে বিগত ৩৫ বছরে পৃথিবীর সব রাষ্ট্রের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ক্ষয়িষ্ণু ওজোনস্তর ধীরে ধীরে পুনর্গঠিত হতে শুরু করেছে এবং সূর্যালোক মানুষসহ পৃথিবীর সব জীবের জন্য নিরাপদ হচ্ছে।’ ‘এই সাফল্যের ধারাবাহিকতায় বিশ্ব ওজোন দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য ‘প্রাণ বাঁচাতে ওজোন : ওজোনস্তর সুরক্ষার ৩৫ বছর’ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক ও সময়োপযোগী হয়েছে’ বলেন তিনি।

‘আমাদের সরকার ২০২০ সালের ৮ জুন মন্ট্রিল প্রটোকলের কিগালি সংশোধনীতে অনুস্বাক্ষর করে এইচএফসি ব্যবহার হ্রাসের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। মন্ট্রিল প্রটোকল সফলভাবে বাস্তবায়নের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি ও ওজোন সচিবালয় ২০১২, ২০১৭ এবং ২০১৯ সালে বাংলাদেশকে প্রশংসামূলক সনদপত্র প্রদান করেছে, যা আমাদের সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন এবং অনুপ্রেরণা।’

শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার গ্রিন-হাউজ গ্যাস নির্গমন বন্ধ করার লক্ষ্যে প্যারিস চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। পরিবেশ আদালত আইন, ২০১০, বিপদজনক জাহাজ ভাঙার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০১১ এবং ২০১৪ সালে একটি সংশোধিত ও পরিমার্জিত ওজোনস্তর ক্ষয়কারী দ্রব্য (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা প্রণয়ন করেছে।

জাতীয় পরিবেশ নীতি, ২০১৮, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) আইন, ২০১৯ এবং বিশুদ্ধ বায়ু আইনের খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আমরা দেশে ব্যাপক হারে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি। সম্প্রতি ঢাকায় গ্লোবাল সেন্টার অন এডাপটেসান জেসিএর (Global Centre on Adaptation GCA) এর দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক অফিস চালু করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব ওজোন দিবস ২০২০ উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সর্বাঙ্গীন সাফল্য কামনা করেন।

আরও খবর
ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর অভিযোজন তহবিল বৃদ্ধিতে জোরালো বৈশ্বিক সমর্থন কামনা প্রধানমন্ত্রীর
মাছ এবং শামুক সংরক্ষণ ও উন্নয়নসহ ৪ প্রকল্প অনুমোদন
চিকিৎসকদের আবাসন ও আইসোলেশন ব্যবস্থা করবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
জয় বাংলা টেলিমেডিসিন অ্যাপ উদ্বোধন কাদেরের
ভরাট হয়ে গেছে লৌহজং চ্যানেল ‘বিকল্প চ্যানেল খনন করা হচ্ছে’
চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথ ফের চালু করতে ভারতকে অনুরোধ
আরও অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক আবজাল দম্পতির
ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী-বিধবা ও ভিজিডির চাল আত্মসাতের অভিযোগ
অবৈধ বিল বোর্ড ও সাইনবোর্ড উচ্ছেদ চলছে
লালমনিরহাটের ১৪ কারারক্ষী স্ট্যান্ড রিলিজ
সাহেদ করিমের অস্ত্র মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ
বিটিসিএলকে সেবামুখী করতে ঢেলে সাজানো হচ্ছে
এসপির বিরুদ্ধে ৫ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ মামলা

বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৬ মহররম ১৪৪২, ২৮ ভাদ্র ১৪২৭

ওজোন ক্ষয়কারী দ্রব্য উৎপাদন ও ব্যবহার রোধে জীববৈচিত্র্যকে ঝুঁকি থেকে রক্ষা করা সম্ভব প্রধানমন্ত্রী

বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বায়ুমণ্ডলীয় ওজোনক্ষয়কারী মানবসৃষ্ট দ্রব্যগুলোর উৎপাদন ও ব্যবহার রোধ করলেই পৃথিবীর জীববৈচিত্র্যকে সম্ভাব্য ঝুঁকি থেকে রক্ষা করা সম্ভব।

আজ বিশ্ব ওজোন দিবস উপলক্ষে গতকাল দেয়া এক বাণীতে তিনি এজন্য, ব্যাপকহারে জনসচেতনতা সৃষ্টি, বনায়ন, বিদ্যমান আইন ও বিধিবিধান অনুসরণপূর্বক পরিবেশবান্ধব বিকল্প প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বায়ুমণ্ডলের জীবন রক্ষাকারী প্রতিরক্ষাস্তর সুরক্ষায় সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতকেও এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস মহামারী বিশ্ব অর্থনীতিকে মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত করলেও একটি দীর্ঘ সময় পুরো পৃথিবী একসঙ্গে লকডাউন হওয়ায় বায়ুদূষণ কমে প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে এসেছিল এবং পৃথিবী একটি গাঢ় সবুজ গ্রহে পরিণত হয়েছিল, যা নিশ্চিতভাবে ওজোনস্তর পুনর্গঠনে সহায়ক হয়েছে।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশেও বিশ্ব ওজোন দিবস-২০২০ পালিত হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত এবং এ উপলক্ষে তিনি সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ওজোনস্তর সূর্য থেকে নিঃসরিত অতিবেগুনি রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাবে মানবদেহে চর্ম-ক্যান্সার, চোখের ছানিসহ অন্যান্য প্রাণী, উদ্ভিদ, শষ্যকে বিবিধ বিরূপ প্রতিক্রিয়া থেকে সুরক্ষা দেয়।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওজোনস্তর রক্ষার জন্য ১৯৮৫ সালে ভিয়েনা কনভেনশন এবং এর আওতায় ১৯৮৭ সালে মন্ট্রিল প্রটোকল গৃহীত হয়। ফলে বিগত ৩৫ বছরে পৃথিবীর সব রাষ্ট্রের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ক্ষয়িষ্ণু ওজোনস্তর ধীরে ধীরে পুনর্গঠিত হতে শুরু করেছে এবং সূর্যালোক মানুষসহ পৃথিবীর সব জীবের জন্য নিরাপদ হচ্ছে।’ ‘এই সাফল্যের ধারাবাহিকতায় বিশ্ব ওজোন দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য ‘প্রাণ বাঁচাতে ওজোন : ওজোনস্তর সুরক্ষার ৩৫ বছর’ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক ও সময়োপযোগী হয়েছে’ বলেন তিনি।

‘আমাদের সরকার ২০২০ সালের ৮ জুন মন্ট্রিল প্রটোকলের কিগালি সংশোধনীতে অনুস্বাক্ষর করে এইচএফসি ব্যবহার হ্রাসের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। মন্ট্রিল প্রটোকল সফলভাবে বাস্তবায়নের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি ও ওজোন সচিবালয় ২০১২, ২০১৭ এবং ২০১৯ সালে বাংলাদেশকে প্রশংসামূলক সনদপত্র প্রদান করেছে, যা আমাদের সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন এবং অনুপ্রেরণা।’

শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার গ্রিন-হাউজ গ্যাস নির্গমন বন্ধ করার লক্ষ্যে প্যারিস চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। পরিবেশ আদালত আইন, ২০১০, বিপদজনক জাহাজ ভাঙার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০১১ এবং ২০১৪ সালে একটি সংশোধিত ও পরিমার্জিত ওজোনস্তর ক্ষয়কারী দ্রব্য (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা প্রণয়ন করেছে।

জাতীয় পরিবেশ নীতি, ২০১৮, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) আইন, ২০১৯ এবং বিশুদ্ধ বায়ু আইনের খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আমরা দেশে ব্যাপক হারে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি। সম্প্রতি ঢাকায় গ্লোবাল সেন্টার অন এডাপটেসান জেসিএর (Global Centre on Adaptation GCA) এর দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক অফিস চালু করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব ওজোন দিবস ২০২০ উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সর্বাঙ্গীন সাফল্য কামনা করেন।