পোশাক রপ্তানির শীর্ষ ৯ দেশ

এপ্রিল থেকে জুনে রপ্তানি মাত্র ৩০৫ কোটি ডলার

দেশের মোট পোশাক রপ্তানির প্রায় ৯৬ শতাংশের বেশি আয় আসে জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, স্পেন, নেদারল্যান্ড, ফ্রান্স, ইতালি, কানাডা ও বেলজিয়াম থেকে। তবে করোনাকালীন সময়ে এপ্রিল থেকে জুন এই তিন মাসে এসব দেশ থেকে রপ্তানি আয় কমেছে ৫০ শতাংশের বেশি। এই তিন মাসে পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশ ৩৮৪ কোটি ৫৪ লাখ ডলার আয় করেছে। এরমধ্যে এই ৯টি দেশেই রপ্তানি হয়েছে ৩০৪ কোটি ৭৪ লাখ ডলার। তবে করোনার আগের তিন মাসের তুলনায় এ পরিমাণ অর্ধেকে নেমে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, গত জানুয়ারি থেকে মার্চ এই তিন বাংলাদেশ থেকে শীর্ষ দেশ জার্মানিতে পোশাক রপ্তানি হয়েছিল ১৪৬ কোটি ২০ ডলার। তবে দেশটিতে করোনাকালীন তিন মাসে (এপ্রিল থেকে জুন) জার্মানিতে পোশাক রপ্তানি কমেছে ৭৮ কোটি ২৪ লাখ ডলার বা ৫৩ শতাংশ। অর্থাৎ এই তিন মাসে জার্মানিতে মাত্র ৬৭ কোটি ৯০ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এছাড়া পোশাক রপ্তানির দ্বিতীয় শীর্ষ দেশ যুক্তরাষ্ট্রে এপ্রিল থেকে জুন এই তিন মাসে রপ্তানি হয়েছে মাত্র ৭৭ কোটি ডলার। আর এর আগের তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি হয়েছিল ১৩৯ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। অর্থাৎ করোনাকালে রপ্তানি কমেছে ৫৫ শতাংশ বা ৬২ কোটি ৬৫ লাখ ডলার।

এদিকে গত জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত এই সাত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৩১ শতাংশ পোশাক আমদানি কমেছে বলেও যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক আমদানির তথ্য সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান ওটেক্সার (অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল) তথ্যে দেখা গেছে। আর চলতি বছরের সাত মাসে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানি কমেছে ১৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ বা ২৯০ কোটি ৫৩ লাখ ডলারের। আগের বছরের একই সময়ে দেশটিতে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩৫৬ কোটি ৬৫ লাখ ডলারের পোশাক পণ্য।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, পোশাক রপ্তানির তৃতীয় শীর্ষ দেশ যুক্তরাজ্য। দেশটিতে করোনাকালে (এপ্রিল থেকে জুন) মাত্র ৩৬ কোটি ৯৬ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশ। আগের তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানি করেছিল ৯৫ কোটি ১৭ লাখ ডলার। অর্থাৎ করোনাকালের তিন মাসে যুক্তরাজ্যে পোশাক রপ্তানি কমেছে ৫৮ কোটি ২০ লাখ ডলার। শীর্ষ চারে থাকা স্পেনে করোনাকালীন সময়ে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ২০ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। তার আগের তিন মাসে দেশটিতে রপ্তানি হয়েছিল ৬০ কোটি ১৩ লাখ ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, করোনাকালীন তিন মাসে নেদারল্যান্ডসে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ১১ কোটি ৫৬ লাখ ডলার। আগের তিন মাসে এই দেশটিতে পোশাক রপ্তানি হয়েছিল ২৫ কোটি ৯৩ লাখ ডলার। ফ্রান্সে করোনাকালীন সময়ে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ২৫ কোটি ৭৬ লাখ ডলার। তার আগের তিন মাসে দেশটিতে রপ্তানি হয়েছিল ৩৯ কোটি ৯৮ লাখ ডলার। ইতালিতে করোনাকালীন সময়ে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ১৯ কোটি ডলার। তার আগের তিন মাসে দেশটিতে রপ্তানি হয়েছিল ৩২ কোটি ১১ লাখ ডলার। কানাডায় করোনাকালীন সময়ে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ১৩ কোটি ৯৪ লাখ ডলার। তার আগের তিন মাসে দেশটিতে রপ্তানি হয়েছিল ২৩ কোটি ৮৭ লাখ ডলার। বেলজিয়ামে করোনাকালীন সময়ে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৭ কোটি ২০ লাখ ডলার। তার আগের তিন মাসে দেশটিতে রপ্তানি হয়েছিল ১৫ কোটি ১০ লাখ ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, দেশে মোট রপ্তানির ৮৩ শতাংশ আয় হয় তৈরি পোশাক থেকে। এরমধ্যে ৪১ দশমিক ৭০ শতাংশ আয় হয় ওভেন গার্মেন্ট পণ্য থেকে। এর বাইরে ৪১ দশমিক ৩০ শতাংশ আয় হয় নিটওয়্যার পণ্য রপ্তানি করে। এছাড়া, অন্যান্য পণ্য রপ্তানি করে আয় হয় ১৭ শতাংশ।

রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ৩০ মহররম ১৪৪২, ০২ আশ্বিন ১৪২৭

পোশাক রপ্তানির শীর্ষ ৯ দেশ

এপ্রিল থেকে জুনে রপ্তানি মাত্র ৩০৫ কোটি ডলার

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

image

দেশের মোট পোশাক রপ্তানির প্রায় ৯৬ শতাংশের বেশি আয় আসে জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, স্পেন, নেদারল্যান্ড, ফ্রান্স, ইতালি, কানাডা ও বেলজিয়াম থেকে। তবে করোনাকালীন সময়ে এপ্রিল থেকে জুন এই তিন মাসে এসব দেশ থেকে রপ্তানি আয় কমেছে ৫০ শতাংশের বেশি। এই তিন মাসে পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশ ৩৮৪ কোটি ৫৪ লাখ ডলার আয় করেছে। এরমধ্যে এই ৯টি দেশেই রপ্তানি হয়েছে ৩০৪ কোটি ৭৪ লাখ ডলার। তবে করোনার আগের তিন মাসের তুলনায় এ পরিমাণ অর্ধেকে নেমে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, গত জানুয়ারি থেকে মার্চ এই তিন বাংলাদেশ থেকে শীর্ষ দেশ জার্মানিতে পোশাক রপ্তানি হয়েছিল ১৪৬ কোটি ২০ ডলার। তবে দেশটিতে করোনাকালীন তিন মাসে (এপ্রিল থেকে জুন) জার্মানিতে পোশাক রপ্তানি কমেছে ৭৮ কোটি ২৪ লাখ ডলার বা ৫৩ শতাংশ। অর্থাৎ এই তিন মাসে জার্মানিতে মাত্র ৬৭ কোটি ৯০ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এছাড়া পোশাক রপ্তানির দ্বিতীয় শীর্ষ দেশ যুক্তরাষ্ট্রে এপ্রিল থেকে জুন এই তিন মাসে রপ্তানি হয়েছে মাত্র ৭৭ কোটি ডলার। আর এর আগের তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি হয়েছিল ১৩৯ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। অর্থাৎ করোনাকালে রপ্তানি কমেছে ৫৫ শতাংশ বা ৬২ কোটি ৬৫ লাখ ডলার।

এদিকে গত জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত এই সাত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৩১ শতাংশ পোশাক আমদানি কমেছে বলেও যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক আমদানির তথ্য সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান ওটেক্সার (অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল) তথ্যে দেখা গেছে। আর চলতি বছরের সাত মাসে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানি কমেছে ১৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ বা ২৯০ কোটি ৫৩ লাখ ডলারের। আগের বছরের একই সময়ে দেশটিতে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩৫৬ কোটি ৬৫ লাখ ডলারের পোশাক পণ্য।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, পোশাক রপ্তানির তৃতীয় শীর্ষ দেশ যুক্তরাজ্য। দেশটিতে করোনাকালে (এপ্রিল থেকে জুন) মাত্র ৩৬ কোটি ৯৬ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশ। আগের তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানি করেছিল ৯৫ কোটি ১৭ লাখ ডলার। অর্থাৎ করোনাকালের তিন মাসে যুক্তরাজ্যে পোশাক রপ্তানি কমেছে ৫৮ কোটি ২০ লাখ ডলার। শীর্ষ চারে থাকা স্পেনে করোনাকালীন সময়ে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ২০ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। তার আগের তিন মাসে দেশটিতে রপ্তানি হয়েছিল ৬০ কোটি ১৩ লাখ ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, করোনাকালীন তিন মাসে নেদারল্যান্ডসে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ১১ কোটি ৫৬ লাখ ডলার। আগের তিন মাসে এই দেশটিতে পোশাক রপ্তানি হয়েছিল ২৫ কোটি ৯৩ লাখ ডলার। ফ্রান্সে করোনাকালীন সময়ে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ২৫ কোটি ৭৬ লাখ ডলার। তার আগের তিন মাসে দেশটিতে রপ্তানি হয়েছিল ৩৯ কোটি ৯৮ লাখ ডলার। ইতালিতে করোনাকালীন সময়ে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ১৯ কোটি ডলার। তার আগের তিন মাসে দেশটিতে রপ্তানি হয়েছিল ৩২ কোটি ১১ লাখ ডলার। কানাডায় করোনাকালীন সময়ে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ১৩ কোটি ৯৪ লাখ ডলার। তার আগের তিন মাসে দেশটিতে রপ্তানি হয়েছিল ২৩ কোটি ৮৭ লাখ ডলার। বেলজিয়ামে করোনাকালীন সময়ে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৭ কোটি ২০ লাখ ডলার। তার আগের তিন মাসে দেশটিতে রপ্তানি হয়েছিল ১৫ কোটি ১০ লাখ ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, দেশে মোট রপ্তানির ৮৩ শতাংশ আয় হয় তৈরি পোশাক থেকে। এরমধ্যে ৪১ দশমিক ৭০ শতাংশ আয় হয় ওভেন গার্মেন্ট পণ্য থেকে। এর বাইরে ৪১ দশমিক ৩০ শতাংশ আয় হয় নিটওয়্যার পণ্য রপ্তানি করে। এছাড়া, অন্যান্য পণ্য রপ্তানি করে আয় হয় ১৭ শতাংশ।