করোনায় কার্ডে লেনদেনে রেকর্ড

জুলাইয়ে ডেবিট কার্ডে লেনদেন ১৮ হাজার ১২৩ কোটি টাকা

করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত সময়ে মানুষ ঘরে বন্দী থেকেছে অধিকাংশ সময়। তাই স্বাভাবিক লেনদেনের চেয়ে ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, জুলাই মাসে ডেবিট কার্ডে রেকর্ড পরিমাণ লেনদেন হয়েছে। এই সময় লেনদেন হয়েছে, ১৮ হাজার ১২৩ কোটি ছয় লাখ টাকা। এই লেনদেন আগের মাসের তুলনায় ৪৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেশি। আগের মাস জুনে লেনদেন হয়েছিল ১২ হাজার ৫২৮ কোটি এক লাখ টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের পরে এটি সর্বোচ্চ লেনদেন। ২০১৯ সালের জুলাই মাসের তুলনায় এ লেনদেনের পরিমাণ ২৯ দশমিক ০৮ শতাংশ বেশি। ওই মাসে লেনদেন হয়েছিল ১৪ হাজার ৪০ কোটি পাঁচ লাখ টাকা। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহকরা এক হাজার ২৫২ কোটি চার লাখ টাকা ব্যয় করেছেন। যা গত ছয় মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এবং আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ বেশি। জুন মাসে ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহকরা ব্যয় করেছেন ৮৯৮ কোটি টাকা। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে ব্যয় করেছিলেন এক হাজার ৪৮ কোটি এক লাখ টাকা। করোনাভাইরাস মহামারীতে জুন মাসে চলাচলের নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হলেও পণ্য ও সেবা ক্রয়ের জন্য ডিজিটাল লেনদেন সেবার ওপর নির্ভরশীল ছিলেন।

জানা গেছে, এই সময়ে কার্ডের মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিসে টাকা পাঠানো, ই-কমার্স বৃদ্ধি এবং কার্ডের মাধ্যমে মোবাইল রিচার্জ বেড়েছে। ঈদের সময় কেনাকাটার পাশাপাশি শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে মানুষ রেস্তোরাঁ ও সুপারশপে যেতে শুরু করেছে। ঈদের আগে ইলেকট্রনিক্স খাতেও কার্ডের মাধ্যমে মানুষ কেনাকাটা করেছে। বিশেষ করে কোরবানির মাংস সংরক্ষণে ফ্রিজ কেনার জন্য। সাধারণত ঈদুল আজহার সময় মানুষ জামা-কাপড় কম কিনে। কিন্তু এ বছর ঈদুল ফিতরের সময় করোনাভাইরাসের কারণে কেনাকাটা করতে না পারায় ঈদুল আজহার সময় কেনাকাটা করেছে। এসব সামগ্রিক কারণে জুলাই মাসে কার্ডে লেনদেন ভালো হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর ইস্যু করা কার্ড ১৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৯৯ লাখ ৭২ হাজার ৭৯০টিতে। আগের বছরের একই সময়ে কার্ডের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৭৪ লাখ ৫৯ হাজার ৮৮৯টি। চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত ইস্যু করা কার্ডের পরিমাণ ১ কোটি ৯৭ লাখ ২৫ হাজার ৭৮৩টি। অর্থাৎ জুলাই মাসে এক দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি ইস্যু হয়েছে। জুলাই পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর ইস্যু করা ক্রেডিট কার্ডের পরিমাণ ১৫ লাখ ৯৭ হাজার ৭৪৮টি যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১০ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি। চলতি বছরের জুন শেষে ইস্যু করা কার্ডের পরিমাণ ছিল ১৫ লাখ ৯৩ হাজার ৬৯৭টি। অনলাইন শপিংয়ে লেনদেন ২৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৯৬ হাজার ২৫৫ কোটি টাকা। যা আগের বছরের একই মাসে ১৫ হাজার ১২২ দশমিক তিন কোটি টাকা ছিল। এছাড়া চলতি বছরের জুন মাসের চেয়ে ১৩ হাজার ৬১৩ কোটি টাকা বেড়েছে। কার্ডের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেনে ৭৫ শতাংশ কমে জুলাই মাসে হয়েছে ৬৯ দশমিক নয় কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ে লেনদেন হয়েছিল ২৬৪ কোটি আট লাখ টাকা। করোনা ভাইরাস মহামারীর কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য হ্রাস পাওয়ায় কার্ডে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন কমে গেছে।

রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ৩০ মহররম ১৪৪২, ০২ আশ্বিন ১৪২৭

করোনায় কার্ডে লেনদেনে রেকর্ড

জুলাইয়ে ডেবিট কার্ডে লেনদেন ১৮ হাজার ১২৩ কোটি টাকা

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

image

করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত সময়ে মানুষ ঘরে বন্দী থেকেছে অধিকাংশ সময়। তাই স্বাভাবিক লেনদেনের চেয়ে ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, জুলাই মাসে ডেবিট কার্ডে রেকর্ড পরিমাণ লেনদেন হয়েছে। এই সময় লেনদেন হয়েছে, ১৮ হাজার ১২৩ কোটি ছয় লাখ টাকা। এই লেনদেন আগের মাসের তুলনায় ৪৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেশি। আগের মাস জুনে লেনদেন হয়েছিল ১২ হাজার ৫২৮ কোটি এক লাখ টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের পরে এটি সর্বোচ্চ লেনদেন। ২০১৯ সালের জুলাই মাসের তুলনায় এ লেনদেনের পরিমাণ ২৯ দশমিক ০৮ শতাংশ বেশি। ওই মাসে লেনদেন হয়েছিল ১৪ হাজার ৪০ কোটি পাঁচ লাখ টাকা। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহকরা এক হাজার ২৫২ কোটি চার লাখ টাকা ব্যয় করেছেন। যা গত ছয় মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এবং আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ বেশি। জুন মাসে ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহকরা ব্যয় করেছেন ৮৯৮ কোটি টাকা। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে ব্যয় করেছিলেন এক হাজার ৪৮ কোটি এক লাখ টাকা। করোনাভাইরাস মহামারীতে জুন মাসে চলাচলের নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হলেও পণ্য ও সেবা ক্রয়ের জন্য ডিজিটাল লেনদেন সেবার ওপর নির্ভরশীল ছিলেন।

জানা গেছে, এই সময়ে কার্ডের মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিসে টাকা পাঠানো, ই-কমার্স বৃদ্ধি এবং কার্ডের মাধ্যমে মোবাইল রিচার্জ বেড়েছে। ঈদের সময় কেনাকাটার পাশাপাশি শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে মানুষ রেস্তোরাঁ ও সুপারশপে যেতে শুরু করেছে। ঈদের আগে ইলেকট্রনিক্স খাতেও কার্ডের মাধ্যমে মানুষ কেনাকাটা করেছে। বিশেষ করে কোরবানির মাংস সংরক্ষণে ফ্রিজ কেনার জন্য। সাধারণত ঈদুল আজহার সময় মানুষ জামা-কাপড় কম কিনে। কিন্তু এ বছর ঈদুল ফিতরের সময় করোনাভাইরাসের কারণে কেনাকাটা করতে না পারায় ঈদুল আজহার সময় কেনাকাটা করেছে। এসব সামগ্রিক কারণে জুলাই মাসে কার্ডে লেনদেন ভালো হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর ইস্যু করা কার্ড ১৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৯৯ লাখ ৭২ হাজার ৭৯০টিতে। আগের বছরের একই সময়ে কার্ডের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৭৪ লাখ ৫৯ হাজার ৮৮৯টি। চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত ইস্যু করা কার্ডের পরিমাণ ১ কোটি ৯৭ লাখ ২৫ হাজার ৭৮৩টি। অর্থাৎ জুলাই মাসে এক দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি ইস্যু হয়েছে। জুলাই পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর ইস্যু করা ক্রেডিট কার্ডের পরিমাণ ১৫ লাখ ৯৭ হাজার ৭৪৮টি যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১০ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি। চলতি বছরের জুন শেষে ইস্যু করা কার্ডের পরিমাণ ছিল ১৫ লাখ ৯৩ হাজার ৬৯৭টি। অনলাইন শপিংয়ে লেনদেন ২৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৯৬ হাজার ২৫৫ কোটি টাকা। যা আগের বছরের একই মাসে ১৫ হাজার ১২২ দশমিক তিন কোটি টাকা ছিল। এছাড়া চলতি বছরের জুন মাসের চেয়ে ১৩ হাজার ৬১৩ কোটি টাকা বেড়েছে। কার্ডের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেনে ৭৫ শতাংশ কমে জুলাই মাসে হয়েছে ৬৯ দশমিক নয় কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ে লেনদেন হয়েছিল ২৬৪ কোটি আট লাখ টাকা। করোনা ভাইরাস মহামারীর কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য হ্রাস পাওয়ায় কার্ডে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন কমে গেছে।