যুক্তরাজ্যে ভাইরাসের সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু করেছে বৃহত্তম ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি জনসন অ্যান্ড জনসন। মডার্না, বায়োটেক এবং ফাইজারের পর যুক্তরাষ্ট্রে বড় পরিসরে ট্রায়াল শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ট্রায়ালে প্রায় ৬০ হাজার স্বেচ্ছাসেবী অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন জনসনের ভ্যাকসিন গ্রুপের চিফ সায়েন্টিফিক অফিসার পল স্টোফেলস। তিনি জানিয়েছেন, তৃতীয় ধাপের এ পরীক্ষায় ভ্যাকসিনটি কতটা কার্যকরী ও নিরাপদ সেটি জানা যাবে। বিবিসি।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে গত ২৩ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত অক্টোবরের মধ্যেই সেফটি ট্রায়ালের রিপোর্ট জমা দেয়া হবে মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের রেগুলেটরি কমিটির কাছে। এরপর কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দিলেই ভ্যাকসিন চলে আসবে দ্রুত। চলতি বছরের শেষের দিকেই এ ফলাফল চলে আসবে এবং আগামী বছর এই ভ্যাকসিনের ১ বিলিয়ন ডোজ উৎপাদন করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে আরও তিনটি ভ্যাকসিন চলতি গ্রীষ্মের শুরুতেই তাদের ট্রায়াল শুরু করেছে। তবে জনসনের তৈরি সম্ভাব্য ভ্যাকসিনটি অন্যদের চেয়ে আলাদা। এর বেশ কয়েকটি সুবিধা রয়েছে যা এটি নিরাপদ এবং কার্যকর প্রমাণিত হলে প্রশাসনিক পরিচালনা এবং বিতরণ করা আরও সহজ করে তুলতে পারে। করোনার এ সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের একটি শটেই রোগ প্রতিরোধ শক্তি তৈরি হবে বলে দাবি বিজ্ঞানী পল’র। তিনি জানিয়েছেন, জনসনের ভ্যাকসিনের একটি ডোজই দেয়া হবে স্বেচ্ছাসেবীদের। এ ডোজের মাত্রা এমনভাবেই ঠিক করা হয়েছে যাতে একটি শটেই শরীরে পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। তিনি জানান, ডোজে রক্তের টি-লিম্ফোসেইট কোষও সক্রিয় হবে। এই টি-কোষ সংক্রামিত কোষকে নষ্ট করে দিতে পারে। টি-কোষ অ্যাকটিভ হলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। বায়োমেডিকেল অ্যাডভান্সড রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (বিএ আরডিএ) যৌথ উদ্যোগে এই ভ্যাকসিন তৈরি করছে জনসন অ্যান্ড জনসনের রিসার্চ উইং জ্যানসেন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি। সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অ্যালেক্স গোরস্কি জানিয়েছেন, ল্যাবরেটরিতে প্রাণীদের শরীরে এ ভ্যাকসিনের সেফটি ট্রায়ালে সুফল পাওয়া গেছে। ড্রাগ রেগুলেটরি কমিটির অনুমোদনে বৃহত্তর ট্রায়াল শুরু হয়েছে। মার্কিন সরকারের সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে প্রায় ১শ’ কোটি ভ্যাকসিনের ডোজ তৈরির প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে জনসন অ্যান্ড জনসন।

অন্যদিকে, ফাইজার জানিয়েছে, জার্মান সংস্থা বায়োএনটেকের সহযোগিতায় ভ্যাকসিনের সুরক্ষা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করা গেছে। প্রায় ৩০ হাজার স্বেচ্ছাসেবীকে তাদের তৈরি ভ্যাকসিন প্রয়োগের পর কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। আরও বেশি মানুষের ওপর এখন এ ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু হয়েছে। অক্টোবরের মধ্যেই সেফটি ট্রায়ালের রিপোর্ট জমা দেয়া হবে মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের রেগুলেটরি কমিটির কাছে। এই মেমরি বি সেলের কাজ হলো বাইরে থেকে শরীরে ঢোকা ভাইরাল প্রোটিন বা অ্যান্টিজেনগুলোকে চিহ্নিত করে তার প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি তৈরিতে সাহায্য করা। সেই সঙ্গে সক্রিয় হবে টি-কোষ। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এভাবেই ভাইরাসের মোকাবিলায় শরীরে রোগ প্রতিরোধ শক্তি গড়ে উঠবে।