নিরাপত্তা ঝুঁকিতে সাক্ষ্য দিতে আসছে না বন্যা রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী

জঙ্গিদের হাতে নিহত অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনায় অভিজিতের স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা সাক্ষ্য দিতে আসছেন না বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গোলাম সারোয়ার জাকির জানিয়েছেন। গতকাল ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইবুনালে এই মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা সাক্ষ্য দেয়ার পর একথা বলেন তিনি। মামলা পরিচালনায় বিশেষ প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী জাকিরের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল রাফিদা আহমেদ বন্যা সাক্ষ্য দিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসছেন কিনা।

জবাবে তিনি বলেন, তাকে যথাযথ পদ্ধতিতে দূতাবাসের মাধ্যমে আদালতের সমন পাঠানো হয়েছিল। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে তার সঙ্গে টেলিফোনে কথাও বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি বলেছেন, সাক্ষ্য দেয়ার আমার শতভাগ ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আসতে পারছি না। বিজ্ঞানমনষ্ক লেখক ও মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ রায় স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন যুক্তরাষ্ট্রে। ২০১৫ সালে বইমেলা উপলক্ষে দেশে ফিরেছিলেন দুইজন।

২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা পৌঁছানোর পর রাতে বইমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় জঙ্গিদের হামলার শিকার হন তারা। জঙ্গিদের চাপাতির আঘাতে নিহত হন অভিজিৎ, তার স্ত্রী বন্যাও গুরুতর আহত হয়েছিলেন। তার হাতের একটি আঙুল কাটা পড়ে। পরে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যান তিনি। হত্যাকাণ্ডের পরদিন অভিজিতের বাবা প্রয়াত অধ্যাপক অজয় রায় শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মারা যাওয়ার আগে শারীরিক অসুস্থতা নিয়েই আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন অজয় রায়।

এ মামলায় ২৬ জনের সাক্ষ্য হয়েছে জানিয়ে আইনজীবী জাকির বলেছেন, আর বেশি সাক্ষ্য দরকার নেই। আগামী ফেব্রুয়ারিতেই আলোচিত এই মামলার রায় হতে পারে বলে আশা করছেন তিনি। এদিন ট্রাইবুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমানের কাছে মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক সুব্রত গোলদার সাক্ষ্য দেন। তদন্তকালে সুব্রত গোলদার নিহতের সুরতহাল প্রতিবেদন, জব্দ তালিকা, মানচিত্র, সূচিপত্র এবং ১৬১ ধারায় কয়েকজন সাক্ষীর জবানবন্দি নিয়েছিলেন। এ বিষয়গুলো সমথর্ন করে আদালতে সাক্ষ্য দেন তিনি। পরে তাকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মোসলেহ উদ্দিন জসীম, খায়রুল ইসলাম লিটন ও আরও দুইজন আইনজীবী। শেষে বিচারক আগামী ৬ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের ধানমন্ডি জোনাল টিমের সহকারী কমিশনার মো. ফজলুর রহমানের সাক্ষ্য নেয়ার জন্য দিন রেখেছেন। এই মামলায় ২০১৯ সালের ১৩ মার্চ আদালতে ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযাগপত্র জমা দেন মামলার সে সময়ের তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম। মামলায় ৩৪ জনকে সাক্ষী করা হয়।

বুধবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২০ , ০৭ অগ্রহায়ণ ১৪২৭, ০৭ রবিউস সানি ১৪৪২

অভিজিৎ হত্যা

নিরাপত্তা ঝুঁকিতে সাক্ষ্য দিতে আসছে না বন্যা রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী

আদালত বার্তা পরিবেশক

জঙ্গিদের হাতে নিহত অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনায় অভিজিতের স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা সাক্ষ্য দিতে আসছেন না বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গোলাম সারোয়ার জাকির জানিয়েছেন। গতকাল ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইবুনালে এই মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা সাক্ষ্য দেয়ার পর একথা বলেন তিনি। মামলা পরিচালনায় বিশেষ প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী জাকিরের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল রাফিদা আহমেদ বন্যা সাক্ষ্য দিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসছেন কিনা।

জবাবে তিনি বলেন, তাকে যথাযথ পদ্ধতিতে দূতাবাসের মাধ্যমে আদালতের সমন পাঠানো হয়েছিল। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে তার সঙ্গে টেলিফোনে কথাও বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি বলেছেন, সাক্ষ্য দেয়ার আমার শতভাগ ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আসতে পারছি না। বিজ্ঞানমনষ্ক লেখক ও মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ রায় স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন যুক্তরাষ্ট্রে। ২০১৫ সালে বইমেলা উপলক্ষে দেশে ফিরেছিলেন দুইজন।

২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা পৌঁছানোর পর রাতে বইমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় জঙ্গিদের হামলার শিকার হন তারা। জঙ্গিদের চাপাতির আঘাতে নিহত হন অভিজিৎ, তার স্ত্রী বন্যাও গুরুতর আহত হয়েছিলেন। তার হাতের একটি আঙুল কাটা পড়ে। পরে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যান তিনি। হত্যাকাণ্ডের পরদিন অভিজিতের বাবা প্রয়াত অধ্যাপক অজয় রায় শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মারা যাওয়ার আগে শারীরিক অসুস্থতা নিয়েই আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন অজয় রায়।

এ মামলায় ২৬ জনের সাক্ষ্য হয়েছে জানিয়ে আইনজীবী জাকির বলেছেন, আর বেশি সাক্ষ্য দরকার নেই। আগামী ফেব্রুয়ারিতেই আলোচিত এই মামলার রায় হতে পারে বলে আশা করছেন তিনি। এদিন ট্রাইবুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমানের কাছে মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক সুব্রত গোলদার সাক্ষ্য দেন। তদন্তকালে সুব্রত গোলদার নিহতের সুরতহাল প্রতিবেদন, জব্দ তালিকা, মানচিত্র, সূচিপত্র এবং ১৬১ ধারায় কয়েকজন সাক্ষীর জবানবন্দি নিয়েছিলেন। এ বিষয়গুলো সমথর্ন করে আদালতে সাক্ষ্য দেন তিনি। পরে তাকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মোসলেহ উদ্দিন জসীম, খায়রুল ইসলাম লিটন ও আরও দুইজন আইনজীবী। শেষে বিচারক আগামী ৬ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের ধানমন্ডি জোনাল টিমের সহকারী কমিশনার মো. ফজলুর রহমানের সাক্ষ্য নেয়ার জন্য দিন রেখেছেন। এই মামলায় ২০১৯ সালের ১৩ মার্চ আদালতে ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযাগপত্র জমা দেন মামলার সে সময়ের তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম। মামলায় ৩৪ জনকে সাক্ষী করা হয়।