করোনা মহামারী থেকে মুক্তির প্রার্থনার মধ্য দিয়ে বড়দিন উদযাপন

­ঢাকাসহ সারাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপন করা হয়েছে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ‘শুভ বড়দিন’। করোনা মহামারী থেকে মুক্তির প্রার্থনা ও পারস্পরিক সৌহার্দ্য বজায় রেখে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে এবারের বড়দিন উদযাপন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে দেশের সব চার্চ রঙিন বেলুন ও ফুল দিয়ে সাজানো হয়। উৎসব নির্বিঘ্ন করতে বাড়ানো হয় নিরাপত্তা।

গতকাল রাজধানীর কাকরাইল সেন্ট মেরী ক্যাথিড্রাল চার্চ, তেজগাঁও ক্যাথলিক গির্জা, মিরপুর ব্যাপিস্ট চার্চসহ বিভিন্ন চার্চে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বড়দিন উপলক্ষে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ও গির্জাগুলোয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়।

বড়দিন উপলক্ষে বরিশাল জেলার অক্সফোর্ড, ক্যাথলিক ও ব্যাপটিস্ট সম্প্রদায়ের গির্জাগুলো মাদার মেরীর প্রতিকৃতি দিয়ে সাজানো হয়। করোনার কারণে এ বছর ক্যালর অর্থাৎ যিশুখ্রিস্টের কীর্তন বা বনভোজন হয়নি। নগরীর সদর রোড়ের সেন্ট পিটারর্স ক্যাথিড্রাল চার্চের ফাদার লাজারু গোমেজ বলেন, আমরা একে অপরের সহযোগিতা নিয়ে চলমান বৈশ্বিক মহামারী মোকাবিলা করে জয়ী হয়ে সামনে এগিয়ে যাব। বেড়ে ওঠা শিশুরা মানব কল্যাণে কাজ করবে। উপস্থিত বক্তরা বলেন, যিশুখ্রিস্টের জন্মদিনে সবাই আনন্দঘন পরিবেশে গির্জায় এসে প্রার্থনায় যোগ দিয়েছেন। প্রতিবছর তারা এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। ইশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছেন যাতে দ্রুত মহামারী থেকে দেশ ও বিশ্ব মুক্ত হয়। ইশ্বর জননী ধন্যা কুমারী মারীয়ার পর্বোৎসবের মধ্যদিয়ে আগামী ১ জানুয়ারি সমাপ্তি ঘটবে বড়দিনের ছয় দিনব্যাপী অনুষ্ঠান।

গাজীপুরের কালীগঞ্জের খ্রিস্টান পল্লীখ্যাত নাগরী এলাকায় সেইন্ট নিকুলাস গির্জায় সমবেত প্রার্থনার মধ্যদিয়ে সকালে শুরু হয় যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন উৎসব। আগত সব শ্রেণী-পেশার যিশু ভক্তরা ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ্য বিনিময় করেন। আয়োজন করা হয় বৃহৎ প্রার্থনা সভা। প্রার্থনা সভা পরিচালনা করেন ফাদার জয়ন্ত এস গোমেজ। এর আগে সকালে গির্জায় ঘণ্টা ধ্বনি, সমবেত প্রার্থনা ও প্রচলিত রীতিনীতির মধ্যদিয়ে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের এ ধর্মীয় উৎসব শুরু হয়। নারী-পুরুষ ও শিশুরা যিশুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে জীবনযাপন ও করোনা সময়ে সব দেশবাসীর মঙ্গল কামনা করেন। নাটোরে যথাযথ ধর্মীয় আচার, আনন্দ-উৎসব ও প্রার্থনার মধ্যদিয়ে দিনটি উদযাপন করা হয়। বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া ধর্মপল্লী গির্জায় সকাল সাড়ে সাতটা ও সাড়ে নয়টায় দুই দফা প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। প্রার্থনায় বাংলাদেশসহ সারাপৃথিবীতে শান্তি কামনা করা হয়। শুভ বড়দিনের কেক কাটা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা ও নাটোর জেলা প্রশাসক শাহরিয়ার ও বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়াস্থ ধর্মপল্লীর ফাদার রিকাশ রিবেরুসহ অন্যরা। এছাড়া নেত্রকোনার সীমান্ত এলাকা দুর্গাপুরে নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে পালিত হয় বড়দিন।

শনিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২০ , ১০ অগ্রহায়ণ ১৪২৭, ১০ রবিউস সানি ১৪৪২

করোনা মহামারী থেকে মুক্তির প্রার্থনার মধ্য দিয়ে বড়দিন উদযাপন

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

image

রাজধানীর একটি চার্চে বড়দিনের উৎসবে শিশুদের সঙ্গে সান্তাক্লজ -সংবাদ

­ঢাকাসহ সারাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপন করা হয়েছে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ‘শুভ বড়দিন’। করোনা মহামারী থেকে মুক্তির প্রার্থনা ও পারস্পরিক সৌহার্দ্য বজায় রেখে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে এবারের বড়দিন উদযাপন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে দেশের সব চার্চ রঙিন বেলুন ও ফুল দিয়ে সাজানো হয়। উৎসব নির্বিঘ্ন করতে বাড়ানো হয় নিরাপত্তা।

গতকাল রাজধানীর কাকরাইল সেন্ট মেরী ক্যাথিড্রাল চার্চ, তেজগাঁও ক্যাথলিক গির্জা, মিরপুর ব্যাপিস্ট চার্চসহ বিভিন্ন চার্চে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বড়দিন উপলক্ষে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ও গির্জাগুলোয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়।

বড়দিন উপলক্ষে বরিশাল জেলার অক্সফোর্ড, ক্যাথলিক ও ব্যাপটিস্ট সম্প্রদায়ের গির্জাগুলো মাদার মেরীর প্রতিকৃতি দিয়ে সাজানো হয়। করোনার কারণে এ বছর ক্যালর অর্থাৎ যিশুখ্রিস্টের কীর্তন বা বনভোজন হয়নি। নগরীর সদর রোড়ের সেন্ট পিটারর্স ক্যাথিড্রাল চার্চের ফাদার লাজারু গোমেজ বলেন, আমরা একে অপরের সহযোগিতা নিয়ে চলমান বৈশ্বিক মহামারী মোকাবিলা করে জয়ী হয়ে সামনে এগিয়ে যাব। বেড়ে ওঠা শিশুরা মানব কল্যাণে কাজ করবে। উপস্থিত বক্তরা বলেন, যিশুখ্রিস্টের জন্মদিনে সবাই আনন্দঘন পরিবেশে গির্জায় এসে প্রার্থনায় যোগ দিয়েছেন। প্রতিবছর তারা এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। ইশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছেন যাতে দ্রুত মহামারী থেকে দেশ ও বিশ্ব মুক্ত হয়। ইশ্বর জননী ধন্যা কুমারী মারীয়ার পর্বোৎসবের মধ্যদিয়ে আগামী ১ জানুয়ারি সমাপ্তি ঘটবে বড়দিনের ছয় দিনব্যাপী অনুষ্ঠান।

গাজীপুরের কালীগঞ্জের খ্রিস্টান পল্লীখ্যাত নাগরী এলাকায় সেইন্ট নিকুলাস গির্জায় সমবেত প্রার্থনার মধ্যদিয়ে সকালে শুরু হয় যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন উৎসব। আগত সব শ্রেণী-পেশার যিশু ভক্তরা ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ্য বিনিময় করেন। আয়োজন করা হয় বৃহৎ প্রার্থনা সভা। প্রার্থনা সভা পরিচালনা করেন ফাদার জয়ন্ত এস গোমেজ। এর আগে সকালে গির্জায় ঘণ্টা ধ্বনি, সমবেত প্রার্থনা ও প্রচলিত রীতিনীতির মধ্যদিয়ে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের এ ধর্মীয় উৎসব শুরু হয়। নারী-পুরুষ ও শিশুরা যিশুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে জীবনযাপন ও করোনা সময়ে সব দেশবাসীর মঙ্গল কামনা করেন। নাটোরে যথাযথ ধর্মীয় আচার, আনন্দ-উৎসব ও প্রার্থনার মধ্যদিয়ে দিনটি উদযাপন করা হয়। বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া ধর্মপল্লী গির্জায় সকাল সাড়ে সাতটা ও সাড়ে নয়টায় দুই দফা প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। প্রার্থনায় বাংলাদেশসহ সারাপৃথিবীতে শান্তি কামনা করা হয়। শুভ বড়দিনের কেক কাটা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা ও নাটোর জেলা প্রশাসক শাহরিয়ার ও বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়াস্থ ধর্মপল্লীর ফাদার রিকাশ রিবেরুসহ অন্যরা। এছাড়া নেত্রকোনার সীমান্ত এলাকা দুর্গাপুরে নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে পালিত হয় বড়দিন।