ইটভাটার গ্রাসে ফসলি জমির ঊর্বর মাটি : আবাদ হুমকিতে

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার কসবা গ্রামে ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রির চলছে মহোৎসব। জমির মালিকেরা তাদের জমি ব্যবসায়ীদের কাছে ইজারা দিয়েছেন। এসব ব্যবসায়ীরা ফসলি জমির মাটি কেটে ইটভাটার মালিক ও রাস্তার ঠিকাদারদের কাছে বিক্রি করছেন। জমি থেকে গভীর করে মাটি তোলায় আশপাশের ফসলি জমিগুলোতে ধস দেখা দিয়েছে। এভাবে মাটি কাটা অব্যহত থাকলে কসবা গ্রামের ফসলি মাঠটি খাল-বিলে পরিণত হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

তাদের অভিযোগ, ৬-৭ বছর ধরে কসবা গ্রামের ফসলি মাঠের জমির মাটি কাটার চলছে মহোৎসব। এখন মাঠের অনেক জমির শ্রেণী পরির্বতন হয়ে গেছে। ফসলি জমির মাটি কাটা বন্ধের জন্য ভূমি অফিস, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে বারবার অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না এলাকাবাসী।

সরেজমিনে কসবা গ্রামে ফসলি মাঠে গিয়ে দেখা যায়, ফসলি মাঠটিতে মাটি কাটার চলছে মহোৎসব। গ্রামের ফসলি মাঠটির ৭টি স্থানে বিশাল অংশজুড়ে তিন ফসলি জমির মাটি গভীর করে মাটি কাটার কাজ চলছে। প্রতিটি স্থানেই এক সঙ্গে ৫-৬টি ট্র্যাক্টর এসে মাটি নিয়ে যাচ্ছে। অবাধে ট্র্যাক্টর চলাচল করায় সাগরপুর থেকে কসবা গ্রাম পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার পাঁকা সড়কটি প্রায় নষ্ট হয়ে যেতে বসেছে। কসবা, সাগরপুর ও পচাঁরমোড়ের গ্রামবাসীরা জানান, বিগত ৬-৭ বছর আগে থেকে কসবা ফসলি মাঠ থেকে মাটি বিক্রির শুরু হয়। ৫-৬ জন জমির মালিক তাদের জমির বালু ও মাটি ব্যবসায়ীদের কাছে ইজারা দিয়েছেন। এসব ব্যবসায়ীরা দুই-তিন ফসলি জমির মাটি কেটে ইটভাটার মালিক ও রাস্তার ঠিকাদারদের কাছে বিক্রি করছেন। আর ভূমি অফিস সুত্রে জানা যায়, কোন জমির মালিক নিজ ইচ্ছে মতো জমির শ্রেণি পরিবর্তন করতে পারবে না। কেউ নিজ ইচ্ছেমতো জমির শ্রেণি পরিবর্তন করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বদলগাছী উপজেলা কৃষি অফিসার হাসান আলী বলেন, ফসলি মাঠে জমির উর্বর মাটি কেটে বিক্রি দেয়ায় অন্য জমিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জমির শ্রেণিও পরিবর্তন হচ্ছে। আমি বিষয়টি আমার উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বদলগাছী কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী হারুনুর আর রশিদ বলেন, বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সাগরপুর গ্রাম থেকে কসবা গ্রাম পর্যন্ত আটশ মিটার সড়ক পাঁকাকরণ করেছে। মাঠের মাটি উত্তোলন কাজে অবাধে ট্র্যাক্টর চলাচল করায় ও সড়কটি কেটে ট্র্যাক্টর নামাউঠা করায় সড়কটির বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি এর আগেও আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানিয়েছি। তবে ডিব টিওবয়েলের আন্ডারগাউন্ড এর পাইপ ফেটে ফেলার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এ বিষয়ে বদলগাছী সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমন জিহাদীর সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি গত রাতেই শুনেছি আজ খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু তাহির বলেন, কসবা গ্রামে ফসলি জমির বালু ও মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে বলে আমি প্রথম শুনলাম। আইন অমান্যকরে বালু ও মাটি উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

image

বদলগছী (নওগাঁ) : এভাবেই ট্রলি ভর্তি করে ফসলি জমির মাটি কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ইটভাটায় -সংবাদ

আরও খবর
তাহিরপুরে ডায়াগনস্টিকে ঢুকে যুবককে চুরিকাঘাত
ডিমলায় ২৮ দিন পর অপহৃতা উদ্ধার
চাঁপাইয়ে নিখোঁজ শিশুর দেহ উদ্ধার
ভেদরগঞ্জে তিন বিদ্রোহীর চাপে নৌকার মাঝি
ডাকাতিয়া বালু ব্যবসায়ীদের দখল দূষণে অস্তিত্ব সংকটে
সিলেট মহানগর কৃষক দলের কমিটির অনুমোদন
গোপালপুরে পাউবোর খননে সড়ক নদীতে বিলীন যান চলাচল বন্ধ
নাগেশ্বরীতে শীতবস্ত্র পেলেন ২ হাজার ২শ’ শীতার্ত
‘চট্টগ্রাম বন্দর ভাগ্য বদলাবে বাংলাদেশের’
আশুগঞ্জে শিয়ালের কামড়ে আহত অর্ধশত : রাত জেগে পাহারা
সেই নুরু বাবুর্চি গ্রেফতার
লাকসামে হাট-বাজারে গরম কাপড়ের ব্যবসা জমজমাট

সোমবার, ০৪ জানুয়ারী ২০২১ , ২০ পৌষ ১৪২৭, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

ইটভাটার গ্রাসে ফসলি জমির ঊর্বর মাটি : আবাদ হুমকিতে

প্রতিনিধি, বদলগাছী (নওগাঁ)

image

বদলগছী (নওগাঁ) : এভাবেই ট্রলি ভর্তি করে ফসলি জমির মাটি কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ইটভাটায় -সংবাদ

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার কসবা গ্রামে ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রির চলছে মহোৎসব। জমির মালিকেরা তাদের জমি ব্যবসায়ীদের কাছে ইজারা দিয়েছেন। এসব ব্যবসায়ীরা ফসলি জমির মাটি কেটে ইটভাটার মালিক ও রাস্তার ঠিকাদারদের কাছে বিক্রি করছেন। জমি থেকে গভীর করে মাটি তোলায় আশপাশের ফসলি জমিগুলোতে ধস দেখা দিয়েছে। এভাবে মাটি কাটা অব্যহত থাকলে কসবা গ্রামের ফসলি মাঠটি খাল-বিলে পরিণত হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

তাদের অভিযোগ, ৬-৭ বছর ধরে কসবা গ্রামের ফসলি মাঠের জমির মাটি কাটার চলছে মহোৎসব। এখন মাঠের অনেক জমির শ্রেণী পরির্বতন হয়ে গেছে। ফসলি জমির মাটি কাটা বন্ধের জন্য ভূমি অফিস, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে বারবার অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না এলাকাবাসী।

সরেজমিনে কসবা গ্রামে ফসলি মাঠে গিয়ে দেখা যায়, ফসলি মাঠটিতে মাটি কাটার চলছে মহোৎসব। গ্রামের ফসলি মাঠটির ৭টি স্থানে বিশাল অংশজুড়ে তিন ফসলি জমির মাটি গভীর করে মাটি কাটার কাজ চলছে। প্রতিটি স্থানেই এক সঙ্গে ৫-৬টি ট্র্যাক্টর এসে মাটি নিয়ে যাচ্ছে। অবাধে ট্র্যাক্টর চলাচল করায় সাগরপুর থেকে কসবা গ্রাম পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার পাঁকা সড়কটি প্রায় নষ্ট হয়ে যেতে বসেছে। কসবা, সাগরপুর ও পচাঁরমোড়ের গ্রামবাসীরা জানান, বিগত ৬-৭ বছর আগে থেকে কসবা ফসলি মাঠ থেকে মাটি বিক্রির শুরু হয়। ৫-৬ জন জমির মালিক তাদের জমির বালু ও মাটি ব্যবসায়ীদের কাছে ইজারা দিয়েছেন। এসব ব্যবসায়ীরা দুই-তিন ফসলি জমির মাটি কেটে ইটভাটার মালিক ও রাস্তার ঠিকাদারদের কাছে বিক্রি করছেন। আর ভূমি অফিস সুত্রে জানা যায়, কোন জমির মালিক নিজ ইচ্ছে মতো জমির শ্রেণি পরিবর্তন করতে পারবে না। কেউ নিজ ইচ্ছেমতো জমির শ্রেণি পরিবর্তন করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বদলগাছী উপজেলা কৃষি অফিসার হাসান আলী বলেন, ফসলি মাঠে জমির উর্বর মাটি কেটে বিক্রি দেয়ায় অন্য জমিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জমির শ্রেণিও পরিবর্তন হচ্ছে। আমি বিষয়টি আমার উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বদলগাছী কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী হারুনুর আর রশিদ বলেন, বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সাগরপুর গ্রাম থেকে কসবা গ্রাম পর্যন্ত আটশ মিটার সড়ক পাঁকাকরণ করেছে। মাঠের মাটি উত্তোলন কাজে অবাধে ট্র্যাক্টর চলাচল করায় ও সড়কটি কেটে ট্র্যাক্টর নামাউঠা করায় সড়কটির বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি এর আগেও আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানিয়েছি। তবে ডিব টিওবয়েলের আন্ডারগাউন্ড এর পাইপ ফেটে ফেলার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এ বিষয়ে বদলগাছী সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমন জিহাদীর সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি গত রাতেই শুনেছি আজ খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু তাহির বলেন, কসবা গ্রামে ফসলি জমির বালু ও মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে বলে আমি প্রথম শুনলাম। আইন অমান্যকরে বালু ও মাটি উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।