নান্দাইল কাবিখা প্রকল্পে লুটপাটের অভিযোগ

নির্দেশ থাকলেও তদন্তে গড়িমসি

ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা) নন সোলার ১ম ও ২য় পর্যায়ে ৩২০ মেট্রিক টন চাল ও গম সংস্কার কাজ না করে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। যার সরকারি বাজার মূল্য ১ কোটি ৪০ লাখ ১৮ হাজার টাকা। এছাড়াও নান্দাইল উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবদুল আলীমের নেতৃত্বে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাট চলছে বলেও এলাকার সচেতন নাগরিকরা উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে অভিযোগ করেছেন বলে জানা গেছে। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর থেকে জরুরিভিত্তিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর থেকে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হলেও তদন্তের কোন অগ্রগতি না থাকায় অভিযোগকারীরা পুনরায় এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবরে আবেদন করেছেন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক বরাবরে প্রদত্ত অভিযোগে বলা হয়েছে, প্রতিবছরের ন্যায় গতবছরের নান্দাইল উপজেলার কাবিখা ২৪টি বিশেষ প্রকল্পের বিপরীতে ৩২০ টন চাল ও গমের কোন কাজ না করেই সাকুল্য চাল ও গম প্রকল্প চেয়ারম্যানগণ আত্মসাত করেছেন। অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, করোনা মহামারী দুর্যোগকালেও নামধারী কিছু হাইব্রিড নেতা প্রকল্প চেয়ারম্যান হয়ে প্রকল্প কর্মকর্তার সহযোগিতায় কাজ না করে সরকারি মালামাল লুটপাটে মেতে ওঠেছে। অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসৃজন প্রকল্পের কিছু কিছু ক্ষেত্রে হতদরিদ্রদের দিয়ে সর্বোচ্চ ১০ ভাগ কাজ করিয়ে পুরো অর্থই আত্মসাত করেছে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা। অভিযোগে আরও বলা হয় যে, প্রতি জুন মাসে নান্দাইল উপজেলা থেকে বিগত ১০ বছরে সরকারি কোষাগারে কিছু চাল, গমসহ নগদ টাকা ফেরত গেলেও ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে কোন চাল, গম ফেরত যায়নি। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বরাবরে মো. আব্দুল আলীম তথ্য অধিকার আইনে তথ্য চেয়ে আবেদন করেও কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।

অভিখযোগকারীরা জানান, হাইব্রিড আওয়ামী লীগের স্থানীয় এই চক্রটি ২০১৩ সাল থেকে এ যাবতকাল পর্যন্ত নান্দাইলে বিশেষ প্রকল্প তথা কাবিখা, কাবিটা ও টি আর প্রকল্পের সমস্ত টাকা, চাল ও গম আত্মসাত করে আসছে। এ বিষয়ে জরুরী ভিত্তিতে সরেজমিনে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নান্দাইল উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ গত ২৯ অক্টোবর তারিখে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক বরাবরে অভিযোগ দাখিল করেন। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর থেকে একজন উপ-পরিচালকের স্বাক্ষরে অভিযোগ তদন্ত করে জরুরি ভিত্তিতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য গত নবেম্বর মাসের ৪ তারিখে নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহম্মদ সানোয়ার হোসেন জানান, এ ব্যাপারে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়েছেন বলে জানান তিন। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান। কিন্তু অভিযোগকারীরা এ তদন্তের কোন অগ্রগতি না দেখে আবারও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবরে তদন্তের ব্যাপারে জানতে আবেদন করেছেন বলে অভিযোগকারীরা জানান। তবে এ ব্যাপারে অভিযুক্ত কর্মকর্তা নান্দাইলন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার সঙ্গে তার যোগাযোগ করতে বেশ কয়েকবার তার মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

মঙ্গলবার, ০৫ জানুয়ারী ২০২১ , ২১ পৌষ ১৪২৭, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

নান্দাইল কাবিখা প্রকল্পে লুটপাটের অভিযোগ

নির্দেশ থাকলেও তদন্তে গড়িমসি

জেলা বার্তা পরিবেশক, ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা) নন সোলার ১ম ও ২য় পর্যায়ে ৩২০ মেট্রিক টন চাল ও গম সংস্কার কাজ না করে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। যার সরকারি বাজার মূল্য ১ কোটি ৪০ লাখ ১৮ হাজার টাকা। এছাড়াও নান্দাইল উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবদুল আলীমের নেতৃত্বে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাট চলছে বলেও এলাকার সচেতন নাগরিকরা উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে অভিযোগ করেছেন বলে জানা গেছে। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর থেকে জরুরিভিত্তিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর থেকে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হলেও তদন্তের কোন অগ্রগতি না থাকায় অভিযোগকারীরা পুনরায় এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবরে আবেদন করেছেন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক বরাবরে প্রদত্ত অভিযোগে বলা হয়েছে, প্রতিবছরের ন্যায় গতবছরের নান্দাইল উপজেলার কাবিখা ২৪টি বিশেষ প্রকল্পের বিপরীতে ৩২০ টন চাল ও গমের কোন কাজ না করেই সাকুল্য চাল ও গম প্রকল্প চেয়ারম্যানগণ আত্মসাত করেছেন। অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, করোনা মহামারী দুর্যোগকালেও নামধারী কিছু হাইব্রিড নেতা প্রকল্প চেয়ারম্যান হয়ে প্রকল্প কর্মকর্তার সহযোগিতায় কাজ না করে সরকারি মালামাল লুটপাটে মেতে ওঠেছে। অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসৃজন প্রকল্পের কিছু কিছু ক্ষেত্রে হতদরিদ্রদের দিয়ে সর্বোচ্চ ১০ ভাগ কাজ করিয়ে পুরো অর্থই আত্মসাত করেছে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা। অভিযোগে আরও বলা হয় যে, প্রতি জুন মাসে নান্দাইল উপজেলা থেকে বিগত ১০ বছরে সরকারি কোষাগারে কিছু চাল, গমসহ নগদ টাকা ফেরত গেলেও ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে কোন চাল, গম ফেরত যায়নি। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বরাবরে মো. আব্দুল আলীম তথ্য অধিকার আইনে তথ্য চেয়ে আবেদন করেও কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।

অভিখযোগকারীরা জানান, হাইব্রিড আওয়ামী লীগের স্থানীয় এই চক্রটি ২০১৩ সাল থেকে এ যাবতকাল পর্যন্ত নান্দাইলে বিশেষ প্রকল্প তথা কাবিখা, কাবিটা ও টি আর প্রকল্পের সমস্ত টাকা, চাল ও গম আত্মসাত করে আসছে। এ বিষয়ে জরুরী ভিত্তিতে সরেজমিনে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নান্দাইল উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ গত ২৯ অক্টোবর তারিখে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক বরাবরে অভিযোগ দাখিল করেন। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর থেকে একজন উপ-পরিচালকের স্বাক্ষরে অভিযোগ তদন্ত করে জরুরি ভিত্তিতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য গত নবেম্বর মাসের ৪ তারিখে নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহম্মদ সানোয়ার হোসেন জানান, এ ব্যাপারে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়েছেন বলে জানান তিন। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান। কিন্তু অভিযোগকারীরা এ তদন্তের কোন অগ্রগতি না দেখে আবারও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবরে তদন্তের ব্যাপারে জানতে আবেদন করেছেন বলে অভিযোগকারীরা জানান। তবে এ ব্যাপারে অভিযুক্ত কর্মকর্তা নান্দাইলন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার সঙ্গে তার যোগাযোগ করতে বেশ কয়েকবার তার মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।