তৃষার হত্যাকারী তাহলে কে

যশোরের শিশু আফরিন তৃষা (৮) নিখোঁজ হয়েছিল ২০১৯ সালের ৩ মার্চ। পরের দিন তার বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করা হয়। অভিযোগ ওঠে, ধর্ষণের পর শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে। সেই ঘটনায় মামলা করা হয়। ধর্ষণ ও হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকরাী বাহিনী। আটক সাইফুল অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। এরপর ধর্ষণ ও হত্যার প্রধান সন্দেহভাজন শামীম কথিত বন্দুকযুদ্ধে মারা যায়। তদন্তে জানা যায়, শামীমকে মাদক সেবনে বাধা এবং ইজিবাইকে ওঠা নিয়ে তৃষার বাবার সঙ্গে বিরোধের জেরে উক্ত ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ঘটে।

তদন্ত শেষে দুই আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। মামলার আইনজীবী ব্লাস্টের সমন্বয়কারী মোস্তফা হুমায়ুন কবীর বলেছেন, এ মামলায় আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ছিল। ময়নাতদন্ত রিপোর্টও ছিল। সাক্ষীদের বক্তব্যেও ধর্ষণের পর হত্যার বিষয়টি উঠে এসেছিল। কিন্তু মামলার চূড়ান্ত রায়ে আসামিরা বেকসুর খালাস পেয়েছে। অতীতে এমন অনেক ধর্ষণ মামলায় আসামিদের বেকসুর খালাস পেতে দেখা গেছে।

সরকারপক্ষের আইনজীবী যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের (বিশেষ পিপি) সেতারা খাতুন গণমাধ্যমকে বলেছেন, আটক দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ না পাওয়ায় বিচারক তাদের মামলা থেকে খালাস দিয়েছেন। মামলার বাদী নিহত তৃষার বাবা তরিকুল ইসলাম রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা বলেছেন।

তৃষা যে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হয়েছে সেটা বিভিন্নভাবে জানা যাচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে, মামলার আসামিরা এ ঘটনায় জড়িত না থাকলে কার কারণে শিশুটিকে এমন করুণ পরিণতি বরণ করতে হলো। কাদের হুমকিতে বাদীকে সপরিবারে যশোর শহরের ভাড়া বাড়িটি ছেড়ে যেতে হলো। এসব প্রশ্নের মীমাংসা জরুরি।

মামলার কোন স্তরে কোন ঘাটতি ছিল কিনা সেটা একটা প্রশ্ন। বাদী বলেছেন, তারা উচ্চ আদালতে যাবেন। আমরা আশা করব, সেখানে এসব প্রশ্নের উত্তর মিলবে। ন্যায়বিচারের স্বার্থে প্রশ্নগুলোর উত্তর জানা জরুরি।

বুধবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২১ , ২৯ পৌষ ১৪২৭, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

তৃষার হত্যাকারী তাহলে কে

যশোরের শিশু আফরিন তৃষা (৮) নিখোঁজ হয়েছিল ২০১৯ সালের ৩ মার্চ। পরের দিন তার বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করা হয়। অভিযোগ ওঠে, ধর্ষণের পর শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে। সেই ঘটনায় মামলা করা হয়। ধর্ষণ ও হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকরাী বাহিনী। আটক সাইফুল অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। এরপর ধর্ষণ ও হত্যার প্রধান সন্দেহভাজন শামীম কথিত বন্দুকযুদ্ধে মারা যায়। তদন্তে জানা যায়, শামীমকে মাদক সেবনে বাধা এবং ইজিবাইকে ওঠা নিয়ে তৃষার বাবার সঙ্গে বিরোধের জেরে উক্ত ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ঘটে।

তদন্ত শেষে দুই আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। মামলার আইনজীবী ব্লাস্টের সমন্বয়কারী মোস্তফা হুমায়ুন কবীর বলেছেন, এ মামলায় আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ছিল। ময়নাতদন্ত রিপোর্টও ছিল। সাক্ষীদের বক্তব্যেও ধর্ষণের পর হত্যার বিষয়টি উঠে এসেছিল। কিন্তু মামলার চূড়ান্ত রায়ে আসামিরা বেকসুর খালাস পেয়েছে। অতীতে এমন অনেক ধর্ষণ মামলায় আসামিদের বেকসুর খালাস পেতে দেখা গেছে।

সরকারপক্ষের আইনজীবী যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের (বিশেষ পিপি) সেতারা খাতুন গণমাধ্যমকে বলেছেন, আটক দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ না পাওয়ায় বিচারক তাদের মামলা থেকে খালাস দিয়েছেন। মামলার বাদী নিহত তৃষার বাবা তরিকুল ইসলাম রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা বলেছেন।

তৃষা যে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হয়েছে সেটা বিভিন্নভাবে জানা যাচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে, মামলার আসামিরা এ ঘটনায় জড়িত না থাকলে কার কারণে শিশুটিকে এমন করুণ পরিণতি বরণ করতে হলো। কাদের হুমকিতে বাদীকে সপরিবারে যশোর শহরের ভাড়া বাড়িটি ছেড়ে যেতে হলো। এসব প্রশ্নের মীমাংসা জরুরি।

মামলার কোন স্তরে কোন ঘাটতি ছিল কিনা সেটা একটা প্রশ্ন। বাদী বলেছেন, তারা উচ্চ আদালতে যাবেন। আমরা আশা করব, সেখানে এসব প্রশ্নের উত্তর মিলবে। ন্যায়বিচারের স্বার্থে প্রশ্নগুলোর উত্তর জানা জরুরি।