আশ্রয়ণে অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার, প্রতিপাদ্য বিষয়ে মুজিব শতবর্ষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় বাগেরহাটের শরণখোলার চারটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার সরকারি খাস জমিতে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত দুই কক্ষ বিশিষ্ট রঙ্গিন টিনের ছাউনিযুক্ত আধাপাকা দুইশত ঘর পেতে যাচ্ছেন । তবে, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ঘর নির্মাণ নিয়ে যাতে কোন অনিয়মের অভিযোগ না ওঠে, সেজন্য অধিক গুরুত্বের সাথে ঘরগুলোর নির্মাণ কাজ তদারকি করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন। পাশাপাশি কয়েক পর্বে যাচাই বাছাই শেষে তৈরি করা হচ্ছে প্রকৃত ভূমিহীন ও গৃহহীন ব্যক্তিদের নামের তালিকা । প্রাথমিকভাবে আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে শরণখোলা উপজেলার কয়েকটি এলাকার ১০০টি পরিবারকে উপহার দেয়া হবে তাদের স্বপ্নের নীড় (নুতন ঘরের) চাবি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে দেশব্যাপী ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্ভলিত দুই কক্ষ বিশিষ্ট সেমিপাকা ৫০ হাজার ঘর চলতি মাসের ১৫ জানুয়ারি, দেশব্যাপী একযোগে শুভ উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি ঘরের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে মাত্র ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। তবে, ঘরপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের অভিমত জানতে চাইলে, উপজেলার ধান সাগর ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা বাসিন্দা ৩ সন্তানের জননী বিধবা মোসা. মিনারা বেগম (৫৫) বলেন, আমার স্বামী সিড়র পরবর্তী সময়ে জীবিকার তাগিদে সুন্দরবনে মাছ আহরণ করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন । গত ১৪ বছরেও তিনি আর ফিরে আসেননি । এমনকি তার লাশটি পাওয়া যায়নি। স্বামী নিখোজ হওয়ার পর আমি ছেলে-মেয়েদের নিয়ে পলিথিন মোড়ানো কুড়ে ঘরে থাকতাম। সরকার গৃহহীনদের জন্য ঘর বরাদ্দ দিলে উপজেলার ইউএনও স্যারের কাছে একটি আবেদন করি । তিনি তালিকায় আমার নামটি অন্তর্ভুক্ত করে সুন্দর একটি ঘর নির্মাণ করে দেন । এতে আমার কোন টাকা পয়সা লাগেনি এবং কোন পরিশ্রমও করতে হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর এমন উপহার পেয়ে আমি ও আমার পরিবারের সবাই খুশি । সরকার আমার মতো অসহায় নারীকে যে উপকার করলেন, সে জন্য আমি তার কাছে চির ঋণী হয়ে থাকলাম। একই গ্রামের বিধবা রীতা রানী (৩২) বলেন, ৩ বছর পূর্বে আমার স্বামী এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। তার পর থেকে একমাত্র শিশু পুত্র রাতুল চন্দ্রকে নিয়ে বাবার ঘরে আছি। সরকারের দেয়া এ উপহারের ফলে অন্তত আমার মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে। তাকে ধন্যবাদ জানানোর ভাষা আমার জানা নাই। ওই গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী মো. আবুল কালাম হাওলাদার (৫৫) বলেন, আমাদের মতো অসহায় মানুষের কথা চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রী বিনা পয়সায় পাকা ঘর দিয়ে যে মমতা দেখিয়েছেন তা বর্তমান সমাজে অনেক জন্মদাতা পিতাও তার সন্তানের জন্য করেন না । এ জন্য আমি সরকার প্রধানকে কৃতজ্ঞতা জানাই । এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী প্রায় দুইশটি ঘর উপজেলার প্রকৃত-ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে সরবারহ করা হবে। যাচাই-বাছাইসহ তালিকা প্রনয়নের কাজ সমাপ্তের পথে এবং ঘরগুলোর নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। প্রধানমন্ত্রী চলতি মাসের ১৫ জানুয়ারি দেশব্যাপী ৫০ হাজার ঘরের উদ্বোধন করবেন । ওইদিন শরণখোলা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার একশটি পরিবারের নিকট তাদের নুতন ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হবে। তবে, এত কম বরাদ্দে শরণখোলার মতো উপকূলীয় অঞ্চলে আধুনিকমানের ঘর নির্মাণ করা কঠিন। কারণ এখানে নির্মাণ সামগ্রীসহ মালামাল পরিবহন ব্যয় খুব বেশি । যার ফলে অতিরিক্ত বরাদ্দ চেয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের মাধ্যমে গত ৩১ ডিসেম্বর উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে একটি আবেদন পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২১ , ৩০ পৌষ ১৪২৭, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২
প্রতিনিধি, শরণখোলা (বাগেরহাট)
আশ্রয়ণে অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার, প্রতিপাদ্য বিষয়ে মুজিব শতবর্ষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় বাগেরহাটের শরণখোলার চারটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার সরকারি খাস জমিতে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত দুই কক্ষ বিশিষ্ট রঙ্গিন টিনের ছাউনিযুক্ত আধাপাকা দুইশত ঘর পেতে যাচ্ছেন । তবে, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ঘর নির্মাণ নিয়ে যাতে কোন অনিয়মের অভিযোগ না ওঠে, সেজন্য অধিক গুরুত্বের সাথে ঘরগুলোর নির্মাণ কাজ তদারকি করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন। পাশাপাশি কয়েক পর্বে যাচাই বাছাই শেষে তৈরি করা হচ্ছে প্রকৃত ভূমিহীন ও গৃহহীন ব্যক্তিদের নামের তালিকা । প্রাথমিকভাবে আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে শরণখোলা উপজেলার কয়েকটি এলাকার ১০০টি পরিবারকে উপহার দেয়া হবে তাদের স্বপ্নের নীড় (নুতন ঘরের) চাবি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে দেশব্যাপী ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্ভলিত দুই কক্ষ বিশিষ্ট সেমিপাকা ৫০ হাজার ঘর চলতি মাসের ১৫ জানুয়ারি, দেশব্যাপী একযোগে শুভ উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি ঘরের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে মাত্র ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। তবে, ঘরপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের অভিমত জানতে চাইলে, উপজেলার ধান সাগর ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা বাসিন্দা ৩ সন্তানের জননী বিধবা মোসা. মিনারা বেগম (৫৫) বলেন, আমার স্বামী সিড়র পরবর্তী সময়ে জীবিকার তাগিদে সুন্দরবনে মাছ আহরণ করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন । গত ১৪ বছরেও তিনি আর ফিরে আসেননি । এমনকি তার লাশটি পাওয়া যায়নি। স্বামী নিখোজ হওয়ার পর আমি ছেলে-মেয়েদের নিয়ে পলিথিন মোড়ানো কুড়ে ঘরে থাকতাম। সরকার গৃহহীনদের জন্য ঘর বরাদ্দ দিলে উপজেলার ইউএনও স্যারের কাছে একটি আবেদন করি । তিনি তালিকায় আমার নামটি অন্তর্ভুক্ত করে সুন্দর একটি ঘর নির্মাণ করে দেন । এতে আমার কোন টাকা পয়সা লাগেনি এবং কোন পরিশ্রমও করতে হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর এমন উপহার পেয়ে আমি ও আমার পরিবারের সবাই খুশি । সরকার আমার মতো অসহায় নারীকে যে উপকার করলেন, সে জন্য আমি তার কাছে চির ঋণী হয়ে থাকলাম। একই গ্রামের বিধবা রীতা রানী (৩২) বলেন, ৩ বছর পূর্বে আমার স্বামী এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। তার পর থেকে একমাত্র শিশু পুত্র রাতুল চন্দ্রকে নিয়ে বাবার ঘরে আছি। সরকারের দেয়া এ উপহারের ফলে অন্তত আমার মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে। তাকে ধন্যবাদ জানানোর ভাষা আমার জানা নাই। ওই গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী মো. আবুল কালাম হাওলাদার (৫৫) বলেন, আমাদের মতো অসহায় মানুষের কথা চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রী বিনা পয়সায় পাকা ঘর দিয়ে যে মমতা দেখিয়েছেন তা বর্তমান সমাজে অনেক জন্মদাতা পিতাও তার সন্তানের জন্য করেন না । এ জন্য আমি সরকার প্রধানকে কৃতজ্ঞতা জানাই । এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী প্রায় দুইশটি ঘর উপজেলার প্রকৃত-ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে সরবারহ করা হবে। যাচাই-বাছাইসহ তালিকা প্রনয়নের কাজ সমাপ্তের পথে এবং ঘরগুলোর নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। প্রধানমন্ত্রী চলতি মাসের ১৫ জানুয়ারি দেশব্যাপী ৫০ হাজার ঘরের উদ্বোধন করবেন । ওইদিন শরণখোলা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার একশটি পরিবারের নিকট তাদের নুতন ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হবে। তবে, এত কম বরাদ্দে শরণখোলার মতো উপকূলীয় অঞ্চলে আধুনিকমানের ঘর নির্মাণ করা কঠিন। কারণ এখানে নির্মাণ সামগ্রীসহ মালামাল পরিবহন ব্যয় খুব বেশি । যার ফলে অতিরিক্ত বরাদ্দ চেয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের মাধ্যমে গত ৩১ ডিসেম্বর উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে একটি আবেদন পাঠানো হয়েছে।