চট্টগ্রামকে পরিকল্পিতভাবে সাজানোর পরিকল্পনা নবনির্বাচিত মেয়রের

চট্টগ্রামকে পরিকল্পিতভাবে সাজাতে চান নবনির্বাচিত মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। গতকাল বেলা ১২টায় নগরের বহদ্দারহাটে নিজের বাসার সামনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নতুন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামকে আমি পরিকল্পিতভাবে সাজাতে চাই। এজন্য সবার সঙ্গে পরামর্শ করে এবং তা বিশেষজ্ঞদের নিয়ে পর্যালোচনা করে যেটা বাস্তবসম্মত হবে সেটাই গ্রহণ করব। রেজাউল করিম বলেন, সফলতা এলে সবার জন্যই আসবে। সবার সঙ্গে পরামর্শ করে কাজ করলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। আর এককভাবে যদি কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় তাহলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আমি চিন্তা করছি নতুন প্রজন্মকে নিয়ে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। তিন লাখ ১৬ হাজার ৭৫৯ ভোটের বিশাল ব্যবধানে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনকে পরাজিত করেন। এর ফলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন পেল নতুন নগরপিতা। দফায় দফায় সংঘর্ষ, কেন্দ্র থেকে এজেন্ট বের করে দেয়া, পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে না দেয়া- এমন অভিযোগসহ বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ-সহিংসতার মধ্যদিয়ে শেষ হয় এই নির্বাচন। এতে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী রেজাউল পেয়েছেন ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২৪৮ ভোট। আর ধানের শীষ নিয়ে শাহাদাত ভোট পেয়েছেন ৫২ হাজার ৪৮৯টি। ১৯ লাখ ১৭ হাজার ৯৭৮ ভোটের মধ্যে শতকরা হারে ভোটগ্রহণ হয়েছে ২২ দশমিক ৫২ শতাংশ।

গত বুধবার রাত ১টা ৩৫ মিনিটে চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়ামে নির্বাচন কমিশনের অস্থায়ী নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে ভোটের ফল ঘোষণা করেন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মোট ৭৩৩ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়। ষষ্ঠবারের মতো এই নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৭ জন এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ২২৫ জন।

তবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন দুই প্রধান মেয়রপ্রার্থী আওয়ামী লীগের এম. রেজাউল করিম চৌধুরী (নৌকা) ও বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন (ধানের শীষ)। এছাড়া একই পদে অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বীরা হলেন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের এমএ মতিন (মোমবাতি), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের ওয়াহিদ মুরাদ (চেয়ার), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. জান্নাতুল ইসলাম (হাতপাখা), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আবুল মনজুর (আম) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী খোকন চৌধুরী (হাতি)। চসিকের ৪১ ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছেন ৯ লাখ ৯২ হাজার ৩৩ আর নারী ভোটার ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৩ জন।

এর আগে ২০১৫ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই নির্বাচনে ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৩৬১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী আ জ ম নাছির উদ্দীন। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী এম মনজুর আলম পেয়েছিলেন ৩ লাখ ৪ হাজার ৮৩৭ ভোট। ভোট পড়েছিল ৩৭ দশমিক ২৯ শতাংশ। সেই নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে ভোট বর্জন করেছিলেন বিএনপি প্রার্থী।

রেজাউল বলেন, আমাদের শিশুরা স্কুলে যায়, দুপুরে খেয়েদেয়ে ঘুমায়, বিকেলে টিচার আসে। খেলাধুলার কোন জায়গা নেই। মোবাইল নিয়ে তারা বসে থাকে। তাই আমি চিন্তা করেছি- প্রত্যেকটা ওয়ার্ডে যদিও খেলার মাঠ করা সম্ভব নয়, যেখানে সরকারি অনেক জায়গা আছে, চেষ্টা করব ছোট হোক বড় হোক যদি খেলার মাঠ করে দেয়া যায় তাহলে আমাদের শিশুরা সেখানে গিয়ে খেলতে পারবে। তিনি বলেন, বিভিন্ন এলাকায় অনেক সমস্যা আছে। ওয়ার্ডগুলোতে-মহল্লায় অনেক দরিদ্র মানুষ বসবাস করে।

একজন রিকশাচালকেরও মেধা আছে, বুদ্ধি আছে। আর্থিক সমস্যার কারণে সে হয়তো উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে পারেনি। তার বুদ্ধিও অনেক সময় কাজে লাগতে পারে। তিনি বলেন, আমি এলাকার সব মানুষকে ডাকব। মহল্লা সর্দার থেকে আরম্ভ করে এলাকার গণ্যমান্য লোক- সবার পরামর্শ নেব। আপনার এলাকায় কি সমস্যা আছে- সেটা আপনিই চিহ্নিত করতে পারেন। বাইরের কেউ এসে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা অনেক সময় সম্ভব হয় না। তাই এলাকার মানুষই এলাকার সমস্যাগুলো দেখিয়ে দেবে।

তারপর এসব সমস্যা কিভাবে সমাধান করা যায়, তাদের পরামর্শ নিয়ে এবং যে পরামর্শ গ্রহণযোগ্য হবে, যে পরামর্শ ওই এলাকা পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলার জন্য প্রযোজ্য হবে- সেটাই গ্রহণ করব ও বাস্তবায়ন করব। তখন কেউ আর এককভাবে মেয়রকে দোষারোপ করতে পারবে না। তখন আমি বলব- আপনাদের সবার সঙ্গেই তো পরামর্শ করে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এখন মেয়রকে দোষ দেয়ার কোন অবকাশ আপনাদের নেই।

যুবসমাজকে কিশোর গ্যাং ও মাদকাসক্ত থেকে সরিয়ে আনার পরিকল্পনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিশোর গ্যাং এর কথা বলা হয়। আজকে যুবসমাজ মাদকাসক্ত হচ্ছে। কেন হচ্ছে? তারা আসলে কোন ভালো পরিবেশ পাচ্ছে না। যদি সাংস্কৃতিক চর্চার দিকে তাদের ধাবিত করতে পারি তাহলে অনেকাংশে আমাদের যুবকদের সেখান থেকে সরিয়ে আনতে পারব। তাই চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় যতটুকু পারা যায় সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স গড়ে তোলার একটা চিন্তা-ভাবনা আমার আছে।

সাধারণ মানুষের কল্যাণের জন্য যা যা করা দরকার তাই করে যাবেন জানিয়ে রেজাউল বলেন, কোন প্রভাব, প্রতিপত্তি, লোভ, লালসা অতীতে যেমন আমাকে নীতি ও আদর্শ থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি, ভবিষ্যতে মেয়রের চেয়ারে বসার পরও আমাকে কেউ এক ইঞ্চিও বিচ্যুত করাতে পারবে না। কারণ অর্থবিত্তের প্রতি আমার লোভ লালসা নেই। অতীতেও ছিল না। আমি এটা পরিষ্কারভাবে আগেও বলেছি, এখনও বলছি।

নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের বিষয়ে জানতে চাইলে সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, নগরবাসী আমার উপর যে আস্থা, বিশ্বাস রেখে ভোট দিয়েছেন, আমি চেষ্টা করব আমার অঙ্গীকার শতভাগ পূরণ করতে। এক্ষেত্রে আমি আমার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাব। নগরের সমস্যা তো অনেক। চট্টগ্রামকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন একটি নগরীতে পরিণত করা, মশা থেকে মোটামুটি মুক্ত করা- এসব কাজকে অগ্রাধিকার দেব।

১০০ দিনের অগ্রাধিকার কর্মসূচির বিষয়ে রেজাউল বলেন, ১০০ দিন তো বেশি নয়। কথার ফুলঝুরি দিয়ে লাভ হবে না। রাস্তাঘাটের যে সমস্যা আছে সেগুলো সমাধান করে জনগণ যাতে স্বাচ্ছন্দে চলাফেরা করতে পারে, এটার ওপর প্রথমে মনোযোগ দেব।

শুক্রবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২১ , ১৫ মাঘ ১৪২৭, ১৫ জমাদিউস সানি ১৪৪২

চট্টগ্রামকে পরিকল্পিতভাবে সাজানোর পরিকল্পনা নবনির্বাচিত মেয়রের

নিরুপম দাশগুপ্ত, চট্টগ্রাম ব্যুরো

image

চট্টগ্রামকে পরিকল্পিতভাবে সাজাতে চান নবনির্বাচিত মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। গতকাল বেলা ১২টায় নগরের বহদ্দারহাটে নিজের বাসার সামনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নতুন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামকে আমি পরিকল্পিতভাবে সাজাতে চাই। এজন্য সবার সঙ্গে পরামর্শ করে এবং তা বিশেষজ্ঞদের নিয়ে পর্যালোচনা করে যেটা বাস্তবসম্মত হবে সেটাই গ্রহণ করব। রেজাউল করিম বলেন, সফলতা এলে সবার জন্যই আসবে। সবার সঙ্গে পরামর্শ করে কাজ করলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। আর এককভাবে যদি কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় তাহলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আমি চিন্তা করছি নতুন প্রজন্মকে নিয়ে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। তিন লাখ ১৬ হাজার ৭৫৯ ভোটের বিশাল ব্যবধানে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনকে পরাজিত করেন। এর ফলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন পেল নতুন নগরপিতা। দফায় দফায় সংঘর্ষ, কেন্দ্র থেকে এজেন্ট বের করে দেয়া, পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে না দেয়া- এমন অভিযোগসহ বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ-সহিংসতার মধ্যদিয়ে শেষ হয় এই নির্বাচন। এতে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী রেজাউল পেয়েছেন ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২৪৮ ভোট। আর ধানের শীষ নিয়ে শাহাদাত ভোট পেয়েছেন ৫২ হাজার ৪৮৯টি। ১৯ লাখ ১৭ হাজার ৯৭৮ ভোটের মধ্যে শতকরা হারে ভোটগ্রহণ হয়েছে ২২ দশমিক ৫২ শতাংশ।

গত বুধবার রাত ১টা ৩৫ মিনিটে চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়ামে নির্বাচন কমিশনের অস্থায়ী নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে ভোটের ফল ঘোষণা করেন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মোট ৭৩৩ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়। ষষ্ঠবারের মতো এই নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৭ জন এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ২২৫ জন।

তবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন দুই প্রধান মেয়রপ্রার্থী আওয়ামী লীগের এম. রেজাউল করিম চৌধুরী (নৌকা) ও বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন (ধানের শীষ)। এছাড়া একই পদে অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বীরা হলেন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের এমএ মতিন (মোমবাতি), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের ওয়াহিদ মুরাদ (চেয়ার), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. জান্নাতুল ইসলাম (হাতপাখা), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আবুল মনজুর (আম) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী খোকন চৌধুরী (হাতি)। চসিকের ৪১ ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছেন ৯ লাখ ৯২ হাজার ৩৩ আর নারী ভোটার ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৩ জন।

এর আগে ২০১৫ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই নির্বাচনে ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৩৬১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী আ জ ম নাছির উদ্দীন। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী এম মনজুর আলম পেয়েছিলেন ৩ লাখ ৪ হাজার ৮৩৭ ভোট। ভোট পড়েছিল ৩৭ দশমিক ২৯ শতাংশ। সেই নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে ভোট বর্জন করেছিলেন বিএনপি প্রার্থী।

রেজাউল বলেন, আমাদের শিশুরা স্কুলে যায়, দুপুরে খেয়েদেয়ে ঘুমায়, বিকেলে টিচার আসে। খেলাধুলার কোন জায়গা নেই। মোবাইল নিয়ে তারা বসে থাকে। তাই আমি চিন্তা করেছি- প্রত্যেকটা ওয়ার্ডে যদিও খেলার মাঠ করা সম্ভব নয়, যেখানে সরকারি অনেক জায়গা আছে, চেষ্টা করব ছোট হোক বড় হোক যদি খেলার মাঠ করে দেয়া যায় তাহলে আমাদের শিশুরা সেখানে গিয়ে খেলতে পারবে। তিনি বলেন, বিভিন্ন এলাকায় অনেক সমস্যা আছে। ওয়ার্ডগুলোতে-মহল্লায় অনেক দরিদ্র মানুষ বসবাস করে।

একজন রিকশাচালকেরও মেধা আছে, বুদ্ধি আছে। আর্থিক সমস্যার কারণে সে হয়তো উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে পারেনি। তার বুদ্ধিও অনেক সময় কাজে লাগতে পারে। তিনি বলেন, আমি এলাকার সব মানুষকে ডাকব। মহল্লা সর্দার থেকে আরম্ভ করে এলাকার গণ্যমান্য লোক- সবার পরামর্শ নেব। আপনার এলাকায় কি সমস্যা আছে- সেটা আপনিই চিহ্নিত করতে পারেন। বাইরের কেউ এসে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা অনেক সময় সম্ভব হয় না। তাই এলাকার মানুষই এলাকার সমস্যাগুলো দেখিয়ে দেবে।

তারপর এসব সমস্যা কিভাবে সমাধান করা যায়, তাদের পরামর্শ নিয়ে এবং যে পরামর্শ গ্রহণযোগ্য হবে, যে পরামর্শ ওই এলাকা পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলার জন্য প্রযোজ্য হবে- সেটাই গ্রহণ করব ও বাস্তবায়ন করব। তখন কেউ আর এককভাবে মেয়রকে দোষারোপ করতে পারবে না। তখন আমি বলব- আপনাদের সবার সঙ্গেই তো পরামর্শ করে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এখন মেয়রকে দোষ দেয়ার কোন অবকাশ আপনাদের নেই।

যুবসমাজকে কিশোর গ্যাং ও মাদকাসক্ত থেকে সরিয়ে আনার পরিকল্পনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিশোর গ্যাং এর কথা বলা হয়। আজকে যুবসমাজ মাদকাসক্ত হচ্ছে। কেন হচ্ছে? তারা আসলে কোন ভালো পরিবেশ পাচ্ছে না। যদি সাংস্কৃতিক চর্চার দিকে তাদের ধাবিত করতে পারি তাহলে অনেকাংশে আমাদের যুবকদের সেখান থেকে সরিয়ে আনতে পারব। তাই চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় যতটুকু পারা যায় সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স গড়ে তোলার একটা চিন্তা-ভাবনা আমার আছে।

সাধারণ মানুষের কল্যাণের জন্য যা যা করা দরকার তাই করে যাবেন জানিয়ে রেজাউল বলেন, কোন প্রভাব, প্রতিপত্তি, লোভ, লালসা অতীতে যেমন আমাকে নীতি ও আদর্শ থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি, ভবিষ্যতে মেয়রের চেয়ারে বসার পরও আমাকে কেউ এক ইঞ্চিও বিচ্যুত করাতে পারবে না। কারণ অর্থবিত্তের প্রতি আমার লোভ লালসা নেই। অতীতেও ছিল না। আমি এটা পরিষ্কারভাবে আগেও বলেছি, এখনও বলছি।

নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের বিষয়ে জানতে চাইলে সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, নগরবাসী আমার উপর যে আস্থা, বিশ্বাস রেখে ভোট দিয়েছেন, আমি চেষ্টা করব আমার অঙ্গীকার শতভাগ পূরণ করতে। এক্ষেত্রে আমি আমার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাব। নগরের সমস্যা তো অনেক। চট্টগ্রামকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন একটি নগরীতে পরিণত করা, মশা থেকে মোটামুটি মুক্ত করা- এসব কাজকে অগ্রাধিকার দেব।

১০০ দিনের অগ্রাধিকার কর্মসূচির বিষয়ে রেজাউল বলেন, ১০০ দিন তো বেশি নয়। কথার ফুলঝুরি দিয়ে লাভ হবে না। রাস্তাঘাটের যে সমস্যা আছে সেগুলো সমাধান করে জনগণ যাতে স্বাচ্ছন্দে চলাফেরা করতে পারে, এটার ওপর প্রথমে মনোযোগ দেব।