চালা আটিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের ভেতর তিন প্রকল্প

টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারভিত্তিক আশ্রয়ণ প্রকল্পের মধ্যে আরও তিনটি প্রকল্পের কাজ করা হচ্ছে। প্রকল্পগুলো হচ্ছে- ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচি, এলজিইডি’র জিওবি ও আরএমপি। একটি প্রকল্পের মধ্যে তিনটি প্রকল্পের শ্রমিক দিয়ে কাজ করানোয় স্থানীয় পর্যায়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।

জানা গেছে, সরকারি কোটায় দেলদুয়ার উপজেলায় ২০টি ও বেসরকারি কোটায় তিনটিসহ প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারভিত্তিক আশ্রয়ণ প্রকল্পের মোট ২৩টি ঘর উত্তোলন করা হচ্ছে। এরমধ্যে চালা আটিয়া নামকস্থানে ৯টি পরিবারের জন্য ৯টি ঘর উত্তোলনে ভিটি উঁচুকরণের নিমিত্তে কর্মসৃজন কর্মসূচির ৩৭ জন শ্রমিক, এলজিইডি’র জিওবি’র দুটি গ্রুপের ১৩ জন শ্রমিক ও আরএমপি প্রকল্পের ১০ জন শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, কয়েকজন নির্মাণ শ্রমিক আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘরের দেয়াল নির্মাণ করছেন। প্রকল্পে মোট ২৩ জন মহিলাকে মাটি, বালু ও ইট আনা-নেয়া করতে দেখা যায়। কিন্তু অতিদরিদ্রদের ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচির কাউকে পাওয়া যায়নি। শ্রমিক সর্দার পপি জানান, তারা এলজিইডি’র জিওবি’র দুইটি গ্রুপের ৬ ও ৭ জন মিলে ১৩ জন এবং আরএমপি প্রকল্পের একটি গ্রুপের ১০ জন আশ্রয়ণ প্রকল্পে কাজ করছেন। তাদের ২০০ টাকা হারে দৈনিক মজুরি দেয়া হচ্ছে। শ্রমিক আমেনা, রেবেকা, লাকি, রোমেলা, সেলিনা, নাজমা, লাল ভানু, রহিমা, রিতাসহ অনেকেই জানান, তারা সবাই এলজিইডি’র শ্রমিক। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত তারা আশ্রয়ণ প্রকল্পে কাজ করেন। অতিদরিদ্রদের ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচি প্রকল্পের ৩৭ জন শ্রমিক কাজ করার কথা থাকলেও তারা অন্য কোন শ্রমিক দেখেননি। তাদের দৈনিক ২০০ টাকা হারে মজুরি দেয়া হচ্ছে।

আটিয়া ইউপি সচিব ছানোয়ার হোসেন জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ভিটি উঁচুকরণে কর্মসৃজন কর্মসূচির যে ৩৭ জন শ্রমিক ধরা হয়েছে তাদের টাকা উত্তোলন করে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলামকে দিতে হয়। আটিয়া ইউনিয়নে ১৮৭ জন শ্রমিক কাজ করার অনুমতি থাকলেও ৪টি প্রকল্পে কতজন কাজ করছে তিনি জানেন না।

আটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম মল্লিক জানান, দৈনিক ২০০ টাকা মজুরিতে শ্রমিক না পাওয়ায় ৩৭ জনের মধ্যে ২৩ জন দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের মেঝে উঁচুকরণে প্রকল্প গ্রহণে আইনি কোন বাধা নেই বলেও জানান তিনি।

দেলদুয়ার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম জানান, প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারভিত্তিক প্রকল্পে প্রতিটি কাঁচাপাকা ঘর নির্মাণে এক লাখ ৭১ হাজার টাকা করে ব্যয় ধরা হয়েছে। ঘরের মেঝে উঁচুকরণে অন্য প্রকল্পের কাজকরণে কোন বিধি-নিষেধ নেই। তাছাড়া কর্মসৃজন কর্মসূচির টাকা শ্রমিকরা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে উত্তোলন করে থাকেন। টাকা উত্তোলন করে তাকে দেয়ার কথাটি মোটেও সত্য নয়।

দেলদুয়ার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাহমুদা আক্তার জানান, উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের সরকারি ২০টি ও বেসরকারি ৩টি ঘর উত্তোলনের কাজ চলমান রয়েছে। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক পরিদর্শন করবেন। পরে সুবিধাজনক সময়ে উদ্বোধন করা হবে।

রবিবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৪ মাঘ ১৪২৭, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪২

টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে

চালা আটিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের ভেতর তিন প্রকল্প

টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারভিত্তিক আশ্রয়ণ প্রকল্পের মধ্যে আরও তিনটি প্রকল্পের কাজ করা হচ্ছে। প্রকল্পগুলো হচ্ছে- ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচি, এলজিইডি’র জিওবি ও আরএমপি। একটি প্রকল্পের মধ্যে তিনটি প্রকল্পের শ্রমিক দিয়ে কাজ করানোয় স্থানীয় পর্যায়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।

জানা গেছে, সরকারি কোটায় দেলদুয়ার উপজেলায় ২০টি ও বেসরকারি কোটায় তিনটিসহ প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারভিত্তিক আশ্রয়ণ প্রকল্পের মোট ২৩টি ঘর উত্তোলন করা হচ্ছে। এরমধ্যে চালা আটিয়া নামকস্থানে ৯টি পরিবারের জন্য ৯টি ঘর উত্তোলনে ভিটি উঁচুকরণের নিমিত্তে কর্মসৃজন কর্মসূচির ৩৭ জন শ্রমিক, এলজিইডি’র জিওবি’র দুটি গ্রুপের ১৩ জন শ্রমিক ও আরএমপি প্রকল্পের ১০ জন শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, কয়েকজন নির্মাণ শ্রমিক আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘরের দেয়াল নির্মাণ করছেন। প্রকল্পে মোট ২৩ জন মহিলাকে মাটি, বালু ও ইট আনা-নেয়া করতে দেখা যায়। কিন্তু অতিদরিদ্রদের ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচির কাউকে পাওয়া যায়নি। শ্রমিক সর্দার পপি জানান, তারা এলজিইডি’র জিওবি’র দুইটি গ্রুপের ৬ ও ৭ জন মিলে ১৩ জন এবং আরএমপি প্রকল্পের একটি গ্রুপের ১০ জন আশ্রয়ণ প্রকল্পে কাজ করছেন। তাদের ২০০ টাকা হারে দৈনিক মজুরি দেয়া হচ্ছে। শ্রমিক আমেনা, রেবেকা, লাকি, রোমেলা, সেলিনা, নাজমা, লাল ভানু, রহিমা, রিতাসহ অনেকেই জানান, তারা সবাই এলজিইডি’র শ্রমিক। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত তারা আশ্রয়ণ প্রকল্পে কাজ করেন। অতিদরিদ্রদের ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচি প্রকল্পের ৩৭ জন শ্রমিক কাজ করার কথা থাকলেও তারা অন্য কোন শ্রমিক দেখেননি। তাদের দৈনিক ২০০ টাকা হারে মজুরি দেয়া হচ্ছে।

আটিয়া ইউপি সচিব ছানোয়ার হোসেন জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ভিটি উঁচুকরণে কর্মসৃজন কর্মসূচির যে ৩৭ জন শ্রমিক ধরা হয়েছে তাদের টাকা উত্তোলন করে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলামকে দিতে হয়। আটিয়া ইউনিয়নে ১৮৭ জন শ্রমিক কাজ করার অনুমতি থাকলেও ৪টি প্রকল্পে কতজন কাজ করছে তিনি জানেন না।

আটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম মল্লিক জানান, দৈনিক ২০০ টাকা মজুরিতে শ্রমিক না পাওয়ায় ৩৭ জনের মধ্যে ২৩ জন দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের মেঝে উঁচুকরণে প্রকল্প গ্রহণে আইনি কোন বাধা নেই বলেও জানান তিনি।

দেলদুয়ার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম জানান, প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারভিত্তিক প্রকল্পে প্রতিটি কাঁচাপাকা ঘর নির্মাণে এক লাখ ৭১ হাজার টাকা করে ব্যয় ধরা হয়েছে। ঘরের মেঝে উঁচুকরণে অন্য প্রকল্পের কাজকরণে কোন বিধি-নিষেধ নেই। তাছাড়া কর্মসৃজন কর্মসূচির টাকা শ্রমিকরা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে উত্তোলন করে থাকেন। টাকা উত্তোলন করে তাকে দেয়ার কথাটি মোটেও সত্য নয়।

দেলদুয়ার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাহমুদা আক্তার জানান, উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের সরকারি ২০টি ও বেসরকারি ৩টি ঘর উত্তোলনের কাজ চলমান রয়েছে। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক পরিদর্শন করবেন। পরে সুবিধাজনক সময়ে উদ্বোধন করা হবে।