সু চির দল এনএলডি অফিসে সেনা অভিযান

মায়ানমারের সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভের মধ্যেই অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) সদর দফতরে অভিযান চালিয়েছে। দলটি বলছে, তাদের অফিসে তল্লাশি করে তছনছ করা হয়েছে।

বিবিসির বার্মিজ বিভাগের পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, রাতে দরজা ভেঙে এনএলডির সদর দফতরে প্রবেশ করেন সেনাসদস্যরা। তবে দলটির কোনও নেতাকর্মী এ সময় সেখানে ছিলেন না। এনএলডি তাদের ফেসবুক পেজে লিখেছে, সামরিক স্বৈরাচার এনএলডি সদর দফতরে তল্লাশি ও তছনছ করেছে। তবে পোস্টটিতে আর বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি। ওই তল্লাশি চালানো হয়েছে দেশজুড়ে রাত্রিকালীন কারফিউর মধ্যে স্থানীয় সময় রাত ৮টা থেকে ভোর ৪টার মধ্যে। দেশটিতে এখনও ৫ জনের বেশি সমবেত হওয়া নিষিদ্ধ আছে। যদিও এর মধ্যেই বিক্ষোভ চলছে এবং হাজার হাজার প্রতিবাদকারী চতুর্থ দিনের মতো রাস্তায় নেমে আসেন।

সরকারি চাকুরেদের একটি বড় উল্লেখযোগ্য অংশ রাজধানী নেপিদোতে সমবেত হয় বলে স্থানীয় গণমাধ্যম সংবাদ দিয়েছে। তবে পুলিশও ক্রমেই বেপরোয়া হয়ে উঠছে। বেশ কয়েকটি শহরে বিক্ষোভকারীদের ওপর জল কামান ব্যবহার করা হয়েছে।

অনেকেই অং সান সু চি ও তার দলের সিনিয়র নেতাদের মুক্তি দাবি করছেন। তাদের অবস্থান সম্পর্কে এখনও আনুষ্ঠানকিভাবে কোনও তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। গত সপ্তাহে অভ্যুত্থানের পর থেকে সু চিকে আর জনসম্মুখে দেখা যায়নি।

এদিকে নেপিদোতে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে পুলিশ। যদিও তাতে বিক্ষোভকারীদের সরানো যায়নি। বরং সামরিক স্বৈরতন্ত্রের অবসান হোক স্লোগান দিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করেন বিক্ষোভকারীরা।

পুলিশও রাবার বুলেট ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে। বিক্ষোভের সময় একজন নারী মাথায় এবং আরও একজন ব্যক্তি বুকে গুরুতর আঘাত পেয়েছে। তবে এটি পরিষ্কার নয় যে, তারা ঠিক কিভাবে আঘাত পেয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আহত নারীর ছবি ও ফুটেজ ব্যাপকভাবে প্রচারিত হচ্ছে। জাতিসংঘ এই রক্তপাতের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে।

২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ভোরে মায়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। এদিন অভিযান চালিয়ে রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি এবং ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের আটক করা হয়। দেশজুড়ে জারি করা হয় এক বছরের জরুরি অবস্থা। অপরদিকে সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে রাজপথে নামে সু চি সমর্থকরা। এতে শামিল হয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। অব্যাহত রয়েছে বিভিন্ন আন্দোলন-কর্মসূচি। বিক্ষোভ ঠেকাতে প্রথমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং পরবর্তীতে ইন্টারনেটের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়। তবুও ঠেকানো যাচ্ছে না আন্দোলন। এর মধ্যেই এনএলডি কার্যালয়ে তছনছ করেন সেনাসদস্যরা।

বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২৮ মাঘ ১৪২৭, ২৮ জমাদিউস সানি ১৪৪২

সু চির দল এনএলডি অফিসে সেনা অভিযান

image

মায়ানমারে সাম-এএফপি

মায়ানমারের সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভের মধ্যেই অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) সদর দফতরে অভিযান চালিয়েছে। দলটি বলছে, তাদের অফিসে তল্লাশি করে তছনছ করা হয়েছে।

বিবিসির বার্মিজ বিভাগের পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, রাতে দরজা ভেঙে এনএলডির সদর দফতরে প্রবেশ করেন সেনাসদস্যরা। তবে দলটির কোনও নেতাকর্মী এ সময় সেখানে ছিলেন না। এনএলডি তাদের ফেসবুক পেজে লিখেছে, সামরিক স্বৈরাচার এনএলডি সদর দফতরে তল্লাশি ও তছনছ করেছে। তবে পোস্টটিতে আর বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি। ওই তল্লাশি চালানো হয়েছে দেশজুড়ে রাত্রিকালীন কারফিউর মধ্যে স্থানীয় সময় রাত ৮টা থেকে ভোর ৪টার মধ্যে। দেশটিতে এখনও ৫ জনের বেশি সমবেত হওয়া নিষিদ্ধ আছে। যদিও এর মধ্যেই বিক্ষোভ চলছে এবং হাজার হাজার প্রতিবাদকারী চতুর্থ দিনের মতো রাস্তায় নেমে আসেন।

সরকারি চাকুরেদের একটি বড় উল্লেখযোগ্য অংশ রাজধানী নেপিদোতে সমবেত হয় বলে স্থানীয় গণমাধ্যম সংবাদ দিয়েছে। তবে পুলিশও ক্রমেই বেপরোয়া হয়ে উঠছে। বেশ কয়েকটি শহরে বিক্ষোভকারীদের ওপর জল কামান ব্যবহার করা হয়েছে।

অনেকেই অং সান সু চি ও তার দলের সিনিয়র নেতাদের মুক্তি দাবি করছেন। তাদের অবস্থান সম্পর্কে এখনও আনুষ্ঠানকিভাবে কোনও তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। গত সপ্তাহে অভ্যুত্থানের পর থেকে সু চিকে আর জনসম্মুখে দেখা যায়নি।

এদিকে নেপিদোতে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে পুলিশ। যদিও তাতে বিক্ষোভকারীদের সরানো যায়নি। বরং সামরিক স্বৈরতন্ত্রের অবসান হোক স্লোগান দিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করেন বিক্ষোভকারীরা।

পুলিশও রাবার বুলেট ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে। বিক্ষোভের সময় একজন নারী মাথায় এবং আরও একজন ব্যক্তি বুকে গুরুতর আঘাত পেয়েছে। তবে এটি পরিষ্কার নয় যে, তারা ঠিক কিভাবে আঘাত পেয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আহত নারীর ছবি ও ফুটেজ ব্যাপকভাবে প্রচারিত হচ্ছে। জাতিসংঘ এই রক্তপাতের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে।

২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ভোরে মায়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। এদিন অভিযান চালিয়ে রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি এবং ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের আটক করা হয়। দেশজুড়ে জারি করা হয় এক বছরের জরুরি অবস্থা। অপরদিকে সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে রাজপথে নামে সু চি সমর্থকরা। এতে শামিল হয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। অব্যাহত রয়েছে বিভিন্ন আন্দোলন-কর্মসূচি। বিক্ষোভ ঠেকাতে প্রথমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং পরবর্তীতে ইন্টারনেটের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়। তবুও ঠেকানো যাচ্ছে না আন্দোলন। এর মধ্যেই এনএলডি কার্যালয়ে তছনছ করেন সেনাসদস্যরা।