মশার যন্ত্রণা

বর্তমানে মশা সারা দেশে এক আতঙ্কের নাম। মানুষ এখন মশার কাছে জিম্মি। মশা অতি ক্ষুদ্র এক কীট হলেও ক্ষমতার মানুষের জীবন বিষাদময় করতে এর জুড়ি নেই। যখন লিখছি তখন মশার দল হুল ফুটাচ্ছে পায়ে, মুখে, গালে। এর থেকে পরিত্রাণের সর্বোত্তম উপায় হলো আত্মসচেতন হয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যসম্মত রাখার ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা রাখা। কর্তৃপক্ষীয় উদ্যোগ ও ব্যবস্থার পাশাপাশি নাগরিক সচেতনতা ও নাগরিক দায়িত্ববোধই পারে চারপাশ মশা মুক্ত রাখতে। আমাদের মনে রাখা উচিত, বিশাল বিশাল অট্টালিকার বাইরেও প্রায় চল্লিশ লাখ লোক বস্তিতে বসবাস করে। সামর্থ্যহীন এ লোকগুলোর জীবন জীবিকার দায়ভার বহন করাই যখন কষ্টসাধ্য, সেক্ষেত্রে মশার উপদ্রব থেকে নিজেকে রক্ষার বিকল্প তাদের আর কিইবা থাকতে পারে। আবদ্ধ ডোবানালা ও ড্রেনগুলোয় মশার বিস্তার ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে। মশা নিধনের ক্ষেত্রে উপযুক্ত পরিকল্পনা ও চিন্তা-ভাবনার অভাব যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে জবাবদিহিতা ও মনিটরিংয়ের অভাবও। কোথাও কোথাও ওষুধ ছিটিয়ে কিংবা ফগার মেশিন চালিয়ে মশা দমন আদৌ সম্ভব নয়। মশা দমন ও নিধন করতে হলে মশার প্রজনন ক্ষেত্রের দিকে সর্বাগ্রে দৃষ্টি দিতে হবে। গোটা শহর কার্যত ময়লা-আবর্জনায় ভাগাড় হয়ে আছে। রয়েছে মাইলের পর মাইল খোলা নর্দমা। গ্রামের পরিস্থিতি আরও শোচনীয়। গ্রামের বাড়ির আশপাশের বাঁশঝাড়, পালিত প্রাণীর মলমূত্রাদি স্তূপ করে রাখা, যেখানে-সেখানে আবর্জনা, তরকারির খোসা ইত্যাদি ফেলে রাখা হয়। এসব জায়গায় ফেলা ময়লা ঠিকমতো পরিষ্কার করা হয় না। ময়লা ফেলার স্থানগুলো মশা প্রজননের একেকটা ‘উৎকৃষ্ট’ ক্ষেত্র যা মশার বংশ বিস্তারে বড় রকমের ভূমিকা রয়েছে। মশার প্রজননস্থল অবারিত ও উন্মুক্ত রেখে মশা দমন ও নিধনে সফল হওয়া কোনোভাবেই সম্ভব হতে পারে না।

প্রজনন ও উৎসস্থলেই মশার বংশ ধ্বংস করতে হবে। আবর্জনা দ্রুত অপসারণ করতে হবে। আবর্জনা ফেলার জায়গাগুলো সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং নিয়মিত ওষুধ ছিটানোর ব্যবস্থা করতে হবে যাতে ওই সব জায়গায় মশার জন্ম হতে না পারে। খোলা নর্দমাগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে হবে, ওষুধ দিতে হবে যাতে সেখানে মশা জন্মাতে না পারে। একইভাবে জলাশয়গুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে, নিয়মিত ওষুধ ছিটিয়ে মশার লাভা মুক্ত করতে হবে। উৎসে মশা দমন ও নিধন না করে উড়ন্ত মশা দমন ও নিধন কার্যক্রম চালিয়ে মশামুক্ত করা যাবে না।

শাকিবুল হাসান

বৃহস্পতিবার, ২২ এপ্রিল ২০২১ , ৯ বৈশাখ ১৪২৮ ৯ রমজান ১৪৪২

মশার যন্ত্রণা

বর্তমানে মশা সারা দেশে এক আতঙ্কের নাম। মানুষ এখন মশার কাছে জিম্মি। মশা অতি ক্ষুদ্র এক কীট হলেও ক্ষমতার মানুষের জীবন বিষাদময় করতে এর জুড়ি নেই। যখন লিখছি তখন মশার দল হুল ফুটাচ্ছে পায়ে, মুখে, গালে। এর থেকে পরিত্রাণের সর্বোত্তম উপায় হলো আত্মসচেতন হয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যসম্মত রাখার ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা রাখা। কর্তৃপক্ষীয় উদ্যোগ ও ব্যবস্থার পাশাপাশি নাগরিক সচেতনতা ও নাগরিক দায়িত্ববোধই পারে চারপাশ মশা মুক্ত রাখতে। আমাদের মনে রাখা উচিত, বিশাল বিশাল অট্টালিকার বাইরেও প্রায় চল্লিশ লাখ লোক বস্তিতে বসবাস করে। সামর্থ্যহীন এ লোকগুলোর জীবন জীবিকার দায়ভার বহন করাই যখন কষ্টসাধ্য, সেক্ষেত্রে মশার উপদ্রব থেকে নিজেকে রক্ষার বিকল্প তাদের আর কিইবা থাকতে পারে। আবদ্ধ ডোবানালা ও ড্রেনগুলোয় মশার বিস্তার ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে। মশা নিধনের ক্ষেত্রে উপযুক্ত পরিকল্পনা ও চিন্তা-ভাবনার অভাব যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে জবাবদিহিতা ও মনিটরিংয়ের অভাবও। কোথাও কোথাও ওষুধ ছিটিয়ে কিংবা ফগার মেশিন চালিয়ে মশা দমন আদৌ সম্ভব নয়। মশা দমন ও নিধন করতে হলে মশার প্রজনন ক্ষেত্রের দিকে সর্বাগ্রে দৃষ্টি দিতে হবে। গোটা শহর কার্যত ময়লা-আবর্জনায় ভাগাড় হয়ে আছে। রয়েছে মাইলের পর মাইল খোলা নর্দমা। গ্রামের পরিস্থিতি আরও শোচনীয়। গ্রামের বাড়ির আশপাশের বাঁশঝাড়, পালিত প্রাণীর মলমূত্রাদি স্তূপ করে রাখা, যেখানে-সেখানে আবর্জনা, তরকারির খোসা ইত্যাদি ফেলে রাখা হয়। এসব জায়গায় ফেলা ময়লা ঠিকমতো পরিষ্কার করা হয় না। ময়লা ফেলার স্থানগুলো মশা প্রজননের একেকটা ‘উৎকৃষ্ট’ ক্ষেত্র যা মশার বংশ বিস্তারে বড় রকমের ভূমিকা রয়েছে। মশার প্রজননস্থল অবারিত ও উন্মুক্ত রেখে মশা দমন ও নিধনে সফল হওয়া কোনোভাবেই সম্ভব হতে পারে না।

প্রজনন ও উৎসস্থলেই মশার বংশ ধ্বংস করতে হবে। আবর্জনা দ্রুত অপসারণ করতে হবে। আবর্জনা ফেলার জায়গাগুলো সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং নিয়মিত ওষুধ ছিটানোর ব্যবস্থা করতে হবে যাতে ওই সব জায়গায় মশার জন্ম হতে না পারে। খোলা নর্দমাগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে হবে, ওষুধ দিতে হবে যাতে সেখানে মশা জন্মাতে না পারে। একইভাবে জলাশয়গুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে, নিয়মিত ওষুধ ছিটিয়ে মশার লাভা মুক্ত করতে হবে। উৎসে মশা দমন ও নিধন না করে উড়ন্ত মশা দমন ও নিধন কার্যক্রম চালিয়ে মশামুক্ত করা যাবে না।

শাকিবুল হাসান