খিলক্ষেত ফ্লাইওভারে বন্দুকযুদ্ধ ২ ছিনতাইকারী নিহত

রাজধানীর খিলক্ষেত ফ্লাইওভারে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে দুই যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত অবস্থায় আরও দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ডিবি পুলিশ বলছে, নিহত ও গ্রেপ্তারকৃতরা অটোরিকশায় করে ছিনতাই করতো। নিহত দুজন হলো- রাসেল (৩০) ও এনামুল (৩৬)। আহত দুজনের নাম নয়ন ও ইয়ামিন। গত সোমবার রাত পৌনে ৩টার দিকে খিলক্ষেত ফ্লাইওভারের ওপর বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ডিবির গুলশান বিভাগের ডিসি মশিউর রহমান জানান, গত সোমবার রাত সোয়া ২টার দিকে কাওলা হয়ে পূর্বাচলগামী ফ্লাইওভারের মুখে একটি অটোরিকশাকে থামার সংকেত দেয়া হয়। কিন্তু গাড়ি না থামিয়ে চালক দ্রুত সটকে পড়ার চেষ্টা করে। পরে অটোরিকশাটি ধাওয়া করে খিলক্ষেত ফ্লাইওভারের ওপর থাকা পুলিশের চেকপোস্টের সাহায্যে রাস্তার ওপর মাইক্রোবাস রেখে আটক করার চেষ্টা করা হয়। এ সময় অটোরিকশা থেকে দুইজন নেমে গুলি ছুড়তে থাকে। আত্মরক্ষায় ডিবিও পাল্টা গুলি চালায়। গোলাগুলি থামলে ফ্লাইওভারের ওপরে পড়ে থাকা এনামুল ও রাসেলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হয়।

সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। ফ্লাইওভারের ওপরে অটোরিকশার চালকের আসন থেকে নয়ন এবং পাশের আসন থেকে ইয়ামিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। নিহত ও গ্রেপ্তারকৃতদের তল্লাশি করে একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি ভর্তি একটি ম্যাগাজিন, একটি ছুরি, দুটি টাইগার বামের কৌটা, একটি গামছা, ৯টি মোবাইল ফোন, ১৬ পিস ইয়াবা, একটি লাইটার এবং ৫ হাজার টাকা পাওয়া যায়।

গ্রেপ্তার দুইজনের বরাত দিয়ে ডিবি কর্মকর্তা মশিউর বলেন, ওই চারজন প্রথমে টঙ্গীর মধুমিতা এলাকায় একত্রিত হয়ে আবদুল্লাহপুর খন্দকার পেট্রল পাম্পে আসে। ছিনতাইয়ের জন্য সেখানে ‘উপযুক্ত মক্কেল’ না পেয়ে বিমানবন্দর হয়ে কাওলার দিকে রওনা দেয়। উদ্দেশ্য ছিল, পথে কোন ব্যক্তিকে একা পেলে অটোরিকশায় তুলে তারা মোবাইল ফোন ও টাকা- পয়সা এবং মূল্যবান সামগ্রি ছিনিয়ে নেবে।

ঈদের সময় গভীর রাতেও মানুষ যাতায়াত করেছেন জানিয়ে ডিসি মশিউর বলেন, গণপরিবহন না পেয়ে অনেকে অটোরিকশা, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও ছোট পিকআপেও উঠছেন। ছিনতাইকারীরা এই সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছিল। চক্রটি ছিনতাইয়ের কাজে মূলত গামছা এবং মলম ব্যবহার করত। কেউ বাধা দিলে ফাঁস দিয়ে হত্যা করে ফেলে দিত। তারা ছিনতাই, ডাকাতি, হত্যা এবং মাদকের একাধিক মামলার আসামি। ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া জানান, ভোর ৪টার দিকে খিলক্ষেত থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোফাখারুল ইসলাম দুই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে আসে। নিহত এনামুলের বুকে ও হাতে এবং রাসেলের বুকে গুলির চিহ্ন রয়েছে।

এর আগে, গত ৬ মে করোনাভাইরাসের টেস্ট ও দুবাই যাওয়ার জন্য টিকিট কিনতে ঢাকায় এসে খুন হন সুভাষ চন্দ্র সূত্রধর নামে এক প্রবাসী। রাজধানীর খিলক্ষেতে ফ্লাইওভার থেকে গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সুভাষের গ্রামে বাড়ি বগুড়ার শিবগঞ্জ থানার বড় নারায়ণপুরে। দুবাই থাকতেন সুভাষ। গত বছর দেশে এসে বিয়ে করেন। ৮ মে দুবাই যাওয়ার কথা ছিল সুভাষের। যে দুইজন নিহত হয়েছে তারা সুভাষ হত্যার সঙ্গে জড়িত কিনা তা গ্রেপ্তার হওয়া দুইজনকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে বলে জানিয়েছেন ডিবি গুলশান বিভাগের ডিসি মশিউর রহমান।

বুধবার, ১৯ মে ২০২১ , ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ৬ শাওয়াল ১৪৪২

খিলক্ষেত ফ্লাইওভারে বন্দুকযুদ্ধ ২ ছিনতাইকারী নিহত

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

রাজধানীর খিলক্ষেত ফ্লাইওভারে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে দুই যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত অবস্থায় আরও দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ডিবি পুলিশ বলছে, নিহত ও গ্রেপ্তারকৃতরা অটোরিকশায় করে ছিনতাই করতো। নিহত দুজন হলো- রাসেল (৩০) ও এনামুল (৩৬)। আহত দুজনের নাম নয়ন ও ইয়ামিন। গত সোমবার রাত পৌনে ৩টার দিকে খিলক্ষেত ফ্লাইওভারের ওপর বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ডিবির গুলশান বিভাগের ডিসি মশিউর রহমান জানান, গত সোমবার রাত সোয়া ২টার দিকে কাওলা হয়ে পূর্বাচলগামী ফ্লাইওভারের মুখে একটি অটোরিকশাকে থামার সংকেত দেয়া হয়। কিন্তু গাড়ি না থামিয়ে চালক দ্রুত সটকে পড়ার চেষ্টা করে। পরে অটোরিকশাটি ধাওয়া করে খিলক্ষেত ফ্লাইওভারের ওপর থাকা পুলিশের চেকপোস্টের সাহায্যে রাস্তার ওপর মাইক্রোবাস রেখে আটক করার চেষ্টা করা হয়। এ সময় অটোরিকশা থেকে দুইজন নেমে গুলি ছুড়তে থাকে। আত্মরক্ষায় ডিবিও পাল্টা গুলি চালায়। গোলাগুলি থামলে ফ্লাইওভারের ওপরে পড়ে থাকা এনামুল ও রাসেলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হয়।

সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। ফ্লাইওভারের ওপরে অটোরিকশার চালকের আসন থেকে নয়ন এবং পাশের আসন থেকে ইয়ামিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। নিহত ও গ্রেপ্তারকৃতদের তল্লাশি করে একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি ভর্তি একটি ম্যাগাজিন, একটি ছুরি, দুটি টাইগার বামের কৌটা, একটি গামছা, ৯টি মোবাইল ফোন, ১৬ পিস ইয়াবা, একটি লাইটার এবং ৫ হাজার টাকা পাওয়া যায়।

গ্রেপ্তার দুইজনের বরাত দিয়ে ডিবি কর্মকর্তা মশিউর বলেন, ওই চারজন প্রথমে টঙ্গীর মধুমিতা এলাকায় একত্রিত হয়ে আবদুল্লাহপুর খন্দকার পেট্রল পাম্পে আসে। ছিনতাইয়ের জন্য সেখানে ‘উপযুক্ত মক্কেল’ না পেয়ে বিমানবন্দর হয়ে কাওলার দিকে রওনা দেয়। উদ্দেশ্য ছিল, পথে কোন ব্যক্তিকে একা পেলে অটোরিকশায় তুলে তারা মোবাইল ফোন ও টাকা- পয়সা এবং মূল্যবান সামগ্রি ছিনিয়ে নেবে।

ঈদের সময় গভীর রাতেও মানুষ যাতায়াত করেছেন জানিয়ে ডিসি মশিউর বলেন, গণপরিবহন না পেয়ে অনেকে অটোরিকশা, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও ছোট পিকআপেও উঠছেন। ছিনতাইকারীরা এই সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছিল। চক্রটি ছিনতাইয়ের কাজে মূলত গামছা এবং মলম ব্যবহার করত। কেউ বাধা দিলে ফাঁস দিয়ে হত্যা করে ফেলে দিত। তারা ছিনতাই, ডাকাতি, হত্যা এবং মাদকের একাধিক মামলার আসামি। ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া জানান, ভোর ৪টার দিকে খিলক্ষেত থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোফাখারুল ইসলাম দুই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে আসে। নিহত এনামুলের বুকে ও হাতে এবং রাসেলের বুকে গুলির চিহ্ন রয়েছে।

এর আগে, গত ৬ মে করোনাভাইরাসের টেস্ট ও দুবাই যাওয়ার জন্য টিকিট কিনতে ঢাকায় এসে খুন হন সুভাষ চন্দ্র সূত্রধর নামে এক প্রবাসী। রাজধানীর খিলক্ষেতে ফ্লাইওভার থেকে গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সুভাষের গ্রামে বাড়ি বগুড়ার শিবগঞ্জ থানার বড় নারায়ণপুরে। দুবাই থাকতেন সুভাষ। গত বছর দেশে এসে বিয়ে করেন। ৮ মে দুবাই যাওয়ার কথা ছিল সুভাষের। যে দুইজন নিহত হয়েছে তারা সুভাষ হত্যার সঙ্গে জড়িত কিনা তা গ্রেপ্তার হওয়া দুইজনকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে বলে জানিয়েছেন ডিবি গুলশান বিভাগের ডিসি মশিউর রহমান।