ভালো সুপারিশ

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের জন্য প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক শিক্ষার্থীকেই পাড়ি দিতে হয় মাইলের পর মাইল পথ। গণপরিবহনের সুবিধা নেই এমন এলাকায় শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে ভ্যান বা রিকশায়। নিত্য যানবাহনে চড়ার সঙ্গতি যাদের নেই তারা চলে হেঁটে। তারা যাতায়াতের ঝক্কি সয়ে স্কুল-কলেজে যায় আর ঘরে ফেরে ক্লান্তি নিয়ে। বিশেষ করে মেয়ে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ হয় বেশি। তাদের এই কষ্টের সহজ একটি সমাধান দিতে পারে বাইসাইকেল।

একটি সাইকেল পেলে মেয়ে শিক্ষার্থীরা স্বাধীনভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারবে। ভ্যান-রিকশা বা অন্য কোন বাহনের জন্য তাদের অপেক্ষা ফুরাবে। অভিভাবকদেরও সাশ্রয় হবে। যারা হেঁটে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যায় তাদের ক্লান্তি কমবে, সময় বাঁচবে। স্কুল-কলেজে মেয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়বে ও নিয়মিত হবে। এতে লেখাপড়ায় উন্নতি আশা করা যায়। নারী শিক্ষার পালে হাওয়া দিতে পারে বাইসাইকেল। এক সাইকেলে মেটানো যাবে অনেক সমস্যা। কোথাও থেকে যদি এই সহজ সমাধান মেলে তবে তাকে সাধুবাদ জানাতে হয়।

মেয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের জন্য সাইকেল প্রদান প্রকল্প তৈরি করা যেতে পারে বলে মতামত দিয়েছে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। গত রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এ মতামত দেয়া হয়।

গণতান্ত্রিক দেশে আইনপ্রণেতারা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার মুক্তির লক্ষ্যে কাজ করবেন, বৈষম্যের শিকার জনগোষ্ঠীর চলার পথ মসৃণ করবেন সেটাই প্রত্যাশা। দেশের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই নারী। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তারা এগিয়ে যেতে না পারলে সমাজের কাক্সিক্ষত অগ্রগতি বা টেকসই উন্নতি হবে না। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি মেয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের জন্য সাইকেল প্রদান প্রকল্প তৈরি করার যে সুপারিশ করেছে তা বাস্তবায়ন হলে দেশে লিঙ্গ বৈষম্য কমাতে, নারীর ক্ষমতায়ন ঘটাতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। দ্রুত এই সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হবে সেটা আমাদের প্রত্যাশা।

গত ১৩ জুন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যুর পর গার্ড অব অনার দেয়ার ক্ষেত্রে নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) পরিবর্তে বিকল্প ব্যক্তি নির্ধারণে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছিল। জাতীয় সংসদে বসে এক দল আইন প্রণেতা চরম বৈষম্যমূলক ও নারীর ক্ষমতায়নের ধারণার বিরোধী এমন সুপারিশ করেন কী করে সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। অভিযোগ উঠেছিল, ধর্ম আর সমাজের ধুয়া তুলে লিঙ্গবৈষম্যকে উসকে দেয়া হচ্ছে। এ ধরনের সুপারিশ নারীর অগ্রগতির পথে কাঁটা বিছানোর শামিল। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি যে সুপারিশ করেছে সেটা নারীর চলার পথকে মসৃণ করবে, গতিকে করবে বেগবান। এই সুপারিশ থেকে অনেকেরই অনেক কিছু শেখার আছে।

বুধবার, ৩০ জুন ২০২১ , ১৬ আষাঢ় ১৪২৮ ১৮ জিলক্বদ ১৪৪২

ভালো সুপারিশ

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের জন্য প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক শিক্ষার্থীকেই পাড়ি দিতে হয় মাইলের পর মাইল পথ। গণপরিবহনের সুবিধা নেই এমন এলাকায় শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে ভ্যান বা রিকশায়। নিত্য যানবাহনে চড়ার সঙ্গতি যাদের নেই তারা চলে হেঁটে। তারা যাতায়াতের ঝক্কি সয়ে স্কুল-কলেজে যায় আর ঘরে ফেরে ক্লান্তি নিয়ে। বিশেষ করে মেয়ে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ হয় বেশি। তাদের এই কষ্টের সহজ একটি সমাধান দিতে পারে বাইসাইকেল।

একটি সাইকেল পেলে মেয়ে শিক্ষার্থীরা স্বাধীনভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারবে। ভ্যান-রিকশা বা অন্য কোন বাহনের জন্য তাদের অপেক্ষা ফুরাবে। অভিভাবকদেরও সাশ্রয় হবে। যারা হেঁটে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যায় তাদের ক্লান্তি কমবে, সময় বাঁচবে। স্কুল-কলেজে মেয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়বে ও নিয়মিত হবে। এতে লেখাপড়ায় উন্নতি আশা করা যায়। নারী শিক্ষার পালে হাওয়া দিতে পারে বাইসাইকেল। এক সাইকেলে মেটানো যাবে অনেক সমস্যা। কোথাও থেকে যদি এই সহজ সমাধান মেলে তবে তাকে সাধুবাদ জানাতে হয়।

মেয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের জন্য সাইকেল প্রদান প্রকল্প তৈরি করা যেতে পারে বলে মতামত দিয়েছে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। গত রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এ মতামত দেয়া হয়।

গণতান্ত্রিক দেশে আইনপ্রণেতারা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার মুক্তির লক্ষ্যে কাজ করবেন, বৈষম্যের শিকার জনগোষ্ঠীর চলার পথ মসৃণ করবেন সেটাই প্রত্যাশা। দেশের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই নারী। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তারা এগিয়ে যেতে না পারলে সমাজের কাক্সিক্ষত অগ্রগতি বা টেকসই উন্নতি হবে না। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি মেয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের জন্য সাইকেল প্রদান প্রকল্প তৈরি করার যে সুপারিশ করেছে তা বাস্তবায়ন হলে দেশে লিঙ্গ বৈষম্য কমাতে, নারীর ক্ষমতায়ন ঘটাতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। দ্রুত এই সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হবে সেটা আমাদের প্রত্যাশা।

গত ১৩ জুন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যুর পর গার্ড অব অনার দেয়ার ক্ষেত্রে নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) পরিবর্তে বিকল্প ব্যক্তি নির্ধারণে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছিল। জাতীয় সংসদে বসে এক দল আইন প্রণেতা চরম বৈষম্যমূলক ও নারীর ক্ষমতায়নের ধারণার বিরোধী এমন সুপারিশ করেন কী করে সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। অভিযোগ উঠেছিল, ধর্ম আর সমাজের ধুয়া তুলে লিঙ্গবৈষম্যকে উসকে দেয়া হচ্ছে। এ ধরনের সুপারিশ নারীর অগ্রগতির পথে কাঁটা বিছানোর শামিল। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি যে সুপারিশ করেছে সেটা নারীর চলার পথকে মসৃণ করবে, গতিকে করবে বেগবান। এই সুপারিশ থেকে অনেকেরই অনেক কিছু শেখার আছে।