রূপগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুুই গ্রুপের রাতভর সংঘর্ষ, আহত ২০

বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর-লুটপাট

এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে দুই পক্ষের মাঝে কয়েক দফা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের নারীসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।

এ সময় এক পক্ষ আরেক পক্ষের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ব্যপক ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ করে উভয় পক্ষ। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। যে কোন সময় আবারও সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। গত বৃহস্পতিবার উপজেলার তারাব পৌরসভার বরাব এলাকায় রাতভর এসব ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অবৈধ গ্যাস লাইনের সংযোগ, বালু, সিমেন্টসহ বিভিন্ন মালামাল সরবরাহসহ বিভিন্ন বিষয়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আগে থেকেই বরাব এলাকার মিজানসহ তার লোকজনের সঙ্গে একই এলাকার মজিবুর রহমান, মাহাবুবল আলম শুভও তাদের লোকজনের বিরোধ চলে আসছিল।

আর এসব বিরোধের জের ধরে গত বুধবার রাতে স্থানীয় আলমগীর হোসেনের খাবার হোটেলে দেয়া অবৈধ গ্যাস সংযোগ থেকে মাসিক ৩ হাজার টাকা করে চাঁদা তুলতে যায় মিজান ও তার লোকজন। এ সময় মজিবুর, মাহাবুবুর রহমান শুভসহ তাদের লোকজন বাধা দেন।

ওই বাধা দেয়াকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের লোকজন তর্কে-বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে ওই রাতে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন দুই পক্ষের লোকজন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

পরে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে দ্বিতীয় দফায় দুই পক্ষের লোকজনই রামদা, চাপাতি, চাইনিজ কুড়ালসহ ধারালো ও বিভিন্ন অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষে মাহাবুব আলম শুভ, বাবলু মিয়া, সোলায়মান, শরিফা বেগম, হাসিব, আলম, সাজিব, রাকিব, আবু বক্কর বাজিবুর, স্মৃতি বেগম, শামিমা, আফরিন, আবির, মনির হোসেন, নুরে আলম, হযরত আলীসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।

এর মধ্যে রাকিব ও নুরে আলমের অবস্থা আশঙ্কাজন। আহতদের বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া এক পক্ষ আরেক পক্ষের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ব্যপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এদিকে, রাতভর দুই পক্ষের তা-বের কারণে এলাকাবাসীর মাঝে চরম আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। পরে রূপগঞ্জ থানা পুলিশসহ অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে বেশ কয়েক জন স্থানীয় এলাকাবাসী অভিযোগ করে জানান, আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে এসব লোকজন একের পর এক অন্যায় করে যাচ্ছেন। মাদক ব্যবসা, ছিনতাই, ডাকাতি, ধর্ষণ, হত্যাসহ বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে উভয় পক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধে। এদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। ভয়ে এলাকাবাসী প্রতিবাদ করার সাহস টুকুও পায় না। এ ব্যপারে এসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ওসি এএফএম সায়েদ বলেন, কোন অপরাধীর ছাড় নেই। উভয় পক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শনিবার, ১৭ জুলাই ২০২১ , ২ শ্রাবন ১৪২৮ ৬ জিলহজ ১৪৪২

রূপগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুুই গ্রুপের রাতভর সংঘর্ষ, আহত ২০

বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর-লুটপাট

প্রতিনিধি, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)

এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে দুই পক্ষের মাঝে কয়েক দফা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের নারীসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।

এ সময় এক পক্ষ আরেক পক্ষের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ব্যপক ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ করে উভয় পক্ষ। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। যে কোন সময় আবারও সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। গত বৃহস্পতিবার উপজেলার তারাব পৌরসভার বরাব এলাকায় রাতভর এসব ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অবৈধ গ্যাস লাইনের সংযোগ, বালু, সিমেন্টসহ বিভিন্ন মালামাল সরবরাহসহ বিভিন্ন বিষয়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আগে থেকেই বরাব এলাকার মিজানসহ তার লোকজনের সঙ্গে একই এলাকার মজিবুর রহমান, মাহাবুবল আলম শুভও তাদের লোকজনের বিরোধ চলে আসছিল।

আর এসব বিরোধের জের ধরে গত বুধবার রাতে স্থানীয় আলমগীর হোসেনের খাবার হোটেলে দেয়া অবৈধ গ্যাস সংযোগ থেকে মাসিক ৩ হাজার টাকা করে চাঁদা তুলতে যায় মিজান ও তার লোকজন। এ সময় মজিবুর, মাহাবুবুর রহমান শুভসহ তাদের লোকজন বাধা দেন।

ওই বাধা দেয়াকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের লোকজন তর্কে-বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে ওই রাতে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন দুই পক্ষের লোকজন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

পরে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে দ্বিতীয় দফায় দুই পক্ষের লোকজনই রামদা, চাপাতি, চাইনিজ কুড়ালসহ ধারালো ও বিভিন্ন অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষে মাহাবুব আলম শুভ, বাবলু মিয়া, সোলায়মান, শরিফা বেগম, হাসিব, আলম, সাজিব, রাকিব, আবু বক্কর বাজিবুর, স্মৃতি বেগম, শামিমা, আফরিন, আবির, মনির হোসেন, নুরে আলম, হযরত আলীসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।

এর মধ্যে রাকিব ও নুরে আলমের অবস্থা আশঙ্কাজন। আহতদের বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া এক পক্ষ আরেক পক্ষের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ব্যপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এদিকে, রাতভর দুই পক্ষের তা-বের কারণে এলাকাবাসীর মাঝে চরম আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। পরে রূপগঞ্জ থানা পুলিশসহ অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে বেশ কয়েক জন স্থানীয় এলাকাবাসী অভিযোগ করে জানান, আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে এসব লোকজন একের পর এক অন্যায় করে যাচ্ছেন। মাদক ব্যবসা, ছিনতাই, ডাকাতি, ধর্ষণ, হত্যাসহ বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে উভয় পক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধে। এদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। ভয়ে এলাকাবাসী প্রতিবাদ করার সাহস টুকুও পায় না। এ ব্যপারে এসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ওসি এএফএম সায়েদ বলেন, কোন অপরাধীর ছাড় নেই। উভয় পক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।