বজ্রপাতে চলতি বছর ৩২৯ জনের মৃত্যু, ১০ বছরে ২ হাজার

প্রতিবছর বজ্রপাতে অন্তত শতাধিক মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। তিনি বলেন, ‘গত ১০ বছরে বজ্রপাতের কারণে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত দুই হাজার মানুষ। এ বিষয়টিকে মাথায় রেখে বজ্রপাতকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।’ এছাড়া বজ্রপাতের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণহানি ঠেকাতে বজ্রপাত পূর্বাভাস যন্ত্র বসানো হবে বলে জানান তিনি।

আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে গতকাল সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী এ তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী জানান, বজ্রপাতে ২০১৬, ২০১৭, ২০১৮ এবং চলতি বছর প্রাণহানি হয়েছে গড়ে তিনশর বেশি। ২০১১ সালে ১৭৯, ২০১২ সালে ২০১, ২০১৩ সালে ১৮৫, ২০১৪ সালে ১৭০, ২০১৫ সালে ২২৬, ২০১৯ সালে ১৯৮ এবং ২০২০ সালে ২৫৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। ২০১৬ সালে ৩৯১, ২০১৭ সালে ৩০৭, ২০১৮ সালে ৩৫৯ এবং চলতি বছর এখন পর্যন্ত প্রাণ গেছে ৩২৯ জনের।

বজ্রপাত থেকে রক্ষায় ৪৭৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে জানিয়ে দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তিন ধাপে কাজটি করবো। প্রথমত মানুষকে সচেতন করতে আমরা সচেতনতামূলক কাজ করবো। বজ্রপাতের আগে মেঘে গুড়গুড় ডাক হবে। এর ৪০ মিনিট পর বজ্রপাত হয়। এই গুড়গুড় ডাক শোনার পরেই যাতে মানুষ ঘরে থাকে বা মেঘ দেখে যাতে ঘরে থাকে সে বিষয়ে তাদের সচেতন করা হবে।’

ডা. এনামুর রহমান বলেন, ‘বর্তমানে আধুনিক বিশ্বে বজ্রপাতের জন্য সাইক্লোনের মতো আগাম সতর্কবার্তা দেয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। কতগুলো মেশিন তৈরি করা হয়েছে যেগুলো ৪০ মিনিট আগে পূর্বাভাস দিতে পারে। এই মেশিনগুলো আমরা বসাবো। যন্ত্রগুলো প্রাথমিকভাবে বজ্রপাতপ্রবণ জেলাগুলোতে বসানো হবে, বিশেষ করে হাওড়-বাঁওড় এলাকায় আমরা গুরুত্ব বেশি দিয়েছি। এই সিগন্যাল একটি অ্যাপের মাধ্যমে যাতে স্থানীয়দের মোবাইলে যেতে পারে সেজন্য একটি অ্যাপও তৈরি করা হবে।’

পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রের মতো বজ্রপাতপ্রবণ এলাকায় বজ্রপাত আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বজ্রপাতে যতগুলো মৃত্যুর খবর দেখেছি সবই কিন্তু খোলা মাঠ বা হাওড়ের মধ্যে। শহরাঞ্চলে কিন্তু বজ্রপাতে মৃত্যু হয় না। এজন্য বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রের মতো বজ্রপাতের আশ্রয়কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছি। বজ্রপাতপ্রবণ ও মুক্ত এলাকায় এগুলো করা হবে।’

এনামুর রহমান বলেন, ‘আমরা যে নকশা করছি তাতে এটি এক ডেসিমেল জায়গায় একটি পাকা ঘর থাকবে এবং প্রত্যেক ঘরে একটি করে লাইটনিং অ্যারেস্টার দেয়া হবে। যাতে ২০ থেকে ২৫ মিনিটের মধ্যে সতর্কবার্তা শোনার পরে মানুষ সেই আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারে এবং বজ্রপাত না হওয়া পর্যন্ত তারা অবস্থান করবে।

বুধবার, ১৩ অক্টোবর ২০২১ , ২৮ আশ্বিন ১৪২৮ ০৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

বজ্রপাতে চলতি বছর ৩২৯ জনের মৃত্যু, ১০ বছরে ২ হাজার

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

প্রতিবছর বজ্রপাতে অন্তত শতাধিক মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। তিনি বলেন, ‘গত ১০ বছরে বজ্রপাতের কারণে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত দুই হাজার মানুষ। এ বিষয়টিকে মাথায় রেখে বজ্রপাতকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।’ এছাড়া বজ্রপাতের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণহানি ঠেকাতে বজ্রপাত পূর্বাভাস যন্ত্র বসানো হবে বলে জানান তিনি।

আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে গতকাল সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী এ তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী জানান, বজ্রপাতে ২০১৬, ২০১৭, ২০১৮ এবং চলতি বছর প্রাণহানি হয়েছে গড়ে তিনশর বেশি। ২০১১ সালে ১৭৯, ২০১২ সালে ২০১, ২০১৩ সালে ১৮৫, ২০১৪ সালে ১৭০, ২০১৫ সালে ২২৬, ২০১৯ সালে ১৯৮ এবং ২০২০ সালে ২৫৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। ২০১৬ সালে ৩৯১, ২০১৭ সালে ৩০৭, ২০১৮ সালে ৩৫৯ এবং চলতি বছর এখন পর্যন্ত প্রাণ গেছে ৩২৯ জনের।

বজ্রপাত থেকে রক্ষায় ৪৭৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে জানিয়ে দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তিন ধাপে কাজটি করবো। প্রথমত মানুষকে সচেতন করতে আমরা সচেতনতামূলক কাজ করবো। বজ্রপাতের আগে মেঘে গুড়গুড় ডাক হবে। এর ৪০ মিনিট পর বজ্রপাত হয়। এই গুড়গুড় ডাক শোনার পরেই যাতে মানুষ ঘরে থাকে বা মেঘ দেখে যাতে ঘরে থাকে সে বিষয়ে তাদের সচেতন করা হবে।’

ডা. এনামুর রহমান বলেন, ‘বর্তমানে আধুনিক বিশ্বে বজ্রপাতের জন্য সাইক্লোনের মতো আগাম সতর্কবার্তা দেয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। কতগুলো মেশিন তৈরি করা হয়েছে যেগুলো ৪০ মিনিট আগে পূর্বাভাস দিতে পারে। এই মেশিনগুলো আমরা বসাবো। যন্ত্রগুলো প্রাথমিকভাবে বজ্রপাতপ্রবণ জেলাগুলোতে বসানো হবে, বিশেষ করে হাওড়-বাঁওড় এলাকায় আমরা গুরুত্ব বেশি দিয়েছি। এই সিগন্যাল একটি অ্যাপের মাধ্যমে যাতে স্থানীয়দের মোবাইলে যেতে পারে সেজন্য একটি অ্যাপও তৈরি করা হবে।’

পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রের মতো বজ্রপাতপ্রবণ এলাকায় বজ্রপাত আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বজ্রপাতে যতগুলো মৃত্যুর খবর দেখেছি সবই কিন্তু খোলা মাঠ বা হাওড়ের মধ্যে। শহরাঞ্চলে কিন্তু বজ্রপাতে মৃত্যু হয় না। এজন্য বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রের মতো বজ্রপাতের আশ্রয়কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছি। বজ্রপাতপ্রবণ ও মুক্ত এলাকায় এগুলো করা হবে।’

এনামুর রহমান বলেন, ‘আমরা যে নকশা করছি তাতে এটি এক ডেসিমেল জায়গায় একটি পাকা ঘর থাকবে এবং প্রত্যেক ঘরে একটি করে লাইটনিং অ্যারেস্টার দেয়া হবে। যাতে ২০ থেকে ২৫ মিনিটের মধ্যে সতর্কবার্তা শোনার পরে মানুষ সেই আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারে এবং বজ্রপাত না হওয়া পর্যন্ত তারা অবস্থান করবে।