সম্প্রীতির মিলনমেলা কক্সবাজার সৈকতে

প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে লাখো মানুষের ঢল নামে। গতকাল বিকেলে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার শেষ দিন বিজয়া দশমীতে সৈকতের লাবনী পয়েন্টে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ। আয়োজকরা জানান, শুধুমাত্র সৈকতের লাবনী পয়েন্টে এ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা শতাধিক প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়েছে। সে সময় দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ সব সম্প্রদায়ের মানুষের সম্প্রীতির মিলনমেলায় পরিণত হয়।

গেল বছর করোনার মহামারীর থাবায় এ উৎসব উল্লেখযোগ্যভাবে পালন করতে পারেনি এ সম্প্রদায়ের মানুষ। যে কারণে এ বছর ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালন করেছে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। একই সময়ে কক্সবাজারের রামুর বাঁকখালী নদী, চকরিয়ার মাতামুহুরী, টেকনাফের সাগর ও নাফনদী, উখিয়ার ইনানী সৈকত ও রেজু নদীতে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়েছে। রামু ও চকরিয়ায় পৃথক প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট রনজিত দাশ বলেন, এবার মা দুর্গা এসেছেন ঘোড়ার পিঠে চড়ে। যাচ্ছেনও ঘোড়ায় চড়ে। এ কারণে এবার আমরা ঝড়-ঝাপটার আশঙ্কা করেছিলাম। তাই মা দুর্গার কাছে আমাদের বিশেষ প্রার্থনা ছিল, প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে মানুষ যেন রক্ষা পায়। মা দুর্গা আমাদের প্রার্থনা শুনেছেন। যে কারণে আবহাওয়া আমাদের অনুকূলেই ছিল।

এদিকে, প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠান ঘিরে সৈকতের লাবনী পয়েন্টে এদিন দুপুর ২টার পর থেকে জেলার উখিয়া, টেকনাফ, সদর, ঈদগাঁও, চৌফলদণ্ডী ছাড়াও নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে শোভাযাত্রাসহকারে প্রতিমা আসতে শুরু করে। ট্রাকে ট্রাকে আসতে প্রতিমায় ভরে যায় অনুষ্ঠানস্থল। বিকেল প্রায় সাড়ে ৫টা পর্যন্ত সৈকতের বালুচরে রাখা দুর্গা প্রতিমা ঘিরে চলে ভক্তদের শেষ আরাধনা। শুধু তাই নয়, নাচে-গানে এক অন্য রকম আনন্দ মুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয় বিশ্বের দীর্ঘতম এ সৈকতে। অনুষ্ঠানকে ঘিরে সমাগম ঘটে পর্যটকসহ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লাখো মানুষের।

এদিকে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সৈকতের লাবনী পয়েন্টের উন্মুক্ত মঞ্চে শুরু হয় বিসর্জন অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা। জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রণজিত দাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যথাক্রমে আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, রামু-কক্সবাজার সদর আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সংসদ সদস্য মো. জাফর আলম চৌধুরী, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কানিজ ফাতেমা মোস্তাক, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশিদ, পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মেয়র মুজিবুর রহমান, পুলিশ সুপার (ট্যুরিস্ট পুলিশ) মো. জিল্লুর রহমান, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি বাবুল শর্মা প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা।

উক্ত অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। সব ধর্মের মানুষের অংশগ্রহণেই এদেশে একইসঙ্গে ঈদ, পূজা, প্রবারণা ও বড়দিন পালিত হয়। বিজয়া দশমীর এ মহামিলন মেলা এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তারা আরও বলেন, আজকের এ অনুষ্ঠানে সব ধর্মের মানুষের সহাবস্থান রয়েছে। এখানে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা যেমন আছেন। পাশাপাশি মুসলিম, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষও আছেন। এটাই বাঙালির অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আমরা সবাই মিলে শারদীয় মাঙ্গলিক দেবী দুর্গা বিসর্জন মেলায় মিলিত হয়েছি।

জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা জানান, এ বছর জেলায় ৩২৪টি মণ্ডপে পূজা উদযাপন হয়েছে। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়েছে কক্সবাজার সৈকতে। তিনি বলেন, প্রতিমা বিসর্জন নিরাপদ করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তা বেস্টনি গড়ে তোলা হয়েছে।

সভাপতির বক্তব্য এ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রণজিত দাশ জানান, বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠান দেশের সবচেয়ে বড় প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠান। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছরও এখানে দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ লাখো মানুষের সমাগম হয়েছে।

পেকুয়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে

এদিকে কুমিল্লা পূজামণ্ডপে পবি কোরআন অবমাননাকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারের পেকুয়ায় সংগঠিত সহিংস ঘটনায় অজ্ঞাত সহস্রাধিক জনকে আসামি করে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৯ জনকে আটক করেছে পুলিশ। পেকুয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে থানায় পৃথক তিনটি ঘটনায় এ মামলাগুলো নথিভুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের ক্ষতিগ্রস্ত দুইজন ব্যক্তি বাদী হয়ে দুইটি এবং পুলিশ বাদী হয়ে অপর একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা তিনটিতে আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাতনামা অন্তত সহস্রাধিক জনকে।

তিনি আরও জানান, গেল বুধবার সন্ধ্যায় একদল উগ্রবাদী দুর্বৃত্ত মিছিল সহকারে উস্কানিমূলক সেøাগান দিয়ে পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিশ্বাসপাড়া, শিলখালীর কাছারী মুরা শীলপাড়া ও মগনামার শীল পাড়াসহ বিভিন্ন এলাকার পূজামণ্ডপে এবং হিন্দুদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের দেয়া তথ্যমতে, পেকুয়ায় সহিংসতার ঘটনায় উগ্রবাদীরা বিভিন্ন স্থানে ৭টি পূজামণ্ডপ, ৩০টি বাড়ি ভাঙচুর ও একটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

১৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় পেকুয়া থানার ওসি মোহাম্মদ আলী সংবাদকে জানান, পেকুয়ার পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তারপরও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ ও র‌্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন রয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

শনিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২১ , ৩১ আশ্বিন ১৪২৮ ০৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩

সম্প্রীতির মিলনমেলা কক্সবাজার সৈকতে

জসিম সিদ্দিকী, কক্সবাজার

image

কক্সবাজার : সমুদ্র সৈকতে প্রতিমা বিসর্জনকালে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকদের সমাগম -সংবাদ

প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে লাখো মানুষের ঢল নামে। গতকাল বিকেলে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার শেষ দিন বিজয়া দশমীতে সৈকতের লাবনী পয়েন্টে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ। আয়োজকরা জানান, শুধুমাত্র সৈকতের লাবনী পয়েন্টে এ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা শতাধিক প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়েছে। সে সময় দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ সব সম্প্রদায়ের মানুষের সম্প্রীতির মিলনমেলায় পরিণত হয়।

গেল বছর করোনার মহামারীর থাবায় এ উৎসব উল্লেখযোগ্যভাবে পালন করতে পারেনি এ সম্প্রদায়ের মানুষ। যে কারণে এ বছর ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালন করেছে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। একই সময়ে কক্সবাজারের রামুর বাঁকখালী নদী, চকরিয়ার মাতামুহুরী, টেকনাফের সাগর ও নাফনদী, উখিয়ার ইনানী সৈকত ও রেজু নদীতে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়েছে। রামু ও চকরিয়ায় পৃথক প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট রনজিত দাশ বলেন, এবার মা দুর্গা এসেছেন ঘোড়ার পিঠে চড়ে। যাচ্ছেনও ঘোড়ায় চড়ে। এ কারণে এবার আমরা ঝড়-ঝাপটার আশঙ্কা করেছিলাম। তাই মা দুর্গার কাছে আমাদের বিশেষ প্রার্থনা ছিল, প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে মানুষ যেন রক্ষা পায়। মা দুর্গা আমাদের প্রার্থনা শুনেছেন। যে কারণে আবহাওয়া আমাদের অনুকূলেই ছিল।

এদিকে, প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠান ঘিরে সৈকতের লাবনী পয়েন্টে এদিন দুপুর ২টার পর থেকে জেলার উখিয়া, টেকনাফ, সদর, ঈদগাঁও, চৌফলদণ্ডী ছাড়াও নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে শোভাযাত্রাসহকারে প্রতিমা আসতে শুরু করে। ট্রাকে ট্রাকে আসতে প্রতিমায় ভরে যায় অনুষ্ঠানস্থল। বিকেল প্রায় সাড়ে ৫টা পর্যন্ত সৈকতের বালুচরে রাখা দুর্গা প্রতিমা ঘিরে চলে ভক্তদের শেষ আরাধনা। শুধু তাই নয়, নাচে-গানে এক অন্য রকম আনন্দ মুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয় বিশ্বের দীর্ঘতম এ সৈকতে। অনুষ্ঠানকে ঘিরে সমাগম ঘটে পর্যটকসহ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লাখো মানুষের।

এদিকে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সৈকতের লাবনী পয়েন্টের উন্মুক্ত মঞ্চে শুরু হয় বিসর্জন অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা। জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রণজিত দাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যথাক্রমে আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, রামু-কক্সবাজার সদর আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সংসদ সদস্য মো. জাফর আলম চৌধুরী, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কানিজ ফাতেমা মোস্তাক, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশিদ, পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মেয়র মুজিবুর রহমান, পুলিশ সুপার (ট্যুরিস্ট পুলিশ) মো. জিল্লুর রহমান, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি বাবুল শর্মা প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা।

উক্ত অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। সব ধর্মের মানুষের অংশগ্রহণেই এদেশে একইসঙ্গে ঈদ, পূজা, প্রবারণা ও বড়দিন পালিত হয়। বিজয়া দশমীর এ মহামিলন মেলা এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তারা আরও বলেন, আজকের এ অনুষ্ঠানে সব ধর্মের মানুষের সহাবস্থান রয়েছে। এখানে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা যেমন আছেন। পাশাপাশি মুসলিম, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষও আছেন। এটাই বাঙালির অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আমরা সবাই মিলে শারদীয় মাঙ্গলিক দেবী দুর্গা বিসর্জন মেলায় মিলিত হয়েছি।

জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা জানান, এ বছর জেলায় ৩২৪টি মণ্ডপে পূজা উদযাপন হয়েছে। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়েছে কক্সবাজার সৈকতে। তিনি বলেন, প্রতিমা বিসর্জন নিরাপদ করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তা বেস্টনি গড়ে তোলা হয়েছে।

সভাপতির বক্তব্য এ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রণজিত দাশ জানান, বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠান দেশের সবচেয়ে বড় প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠান। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছরও এখানে দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ লাখো মানুষের সমাগম হয়েছে।

পেকুয়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে

এদিকে কুমিল্লা পূজামণ্ডপে পবি কোরআন অবমাননাকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারের পেকুয়ায় সংগঠিত সহিংস ঘটনায় অজ্ঞাত সহস্রাধিক জনকে আসামি করে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৯ জনকে আটক করেছে পুলিশ। পেকুয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে থানায় পৃথক তিনটি ঘটনায় এ মামলাগুলো নথিভুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের ক্ষতিগ্রস্ত দুইজন ব্যক্তি বাদী হয়ে দুইটি এবং পুলিশ বাদী হয়ে অপর একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা তিনটিতে আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাতনামা অন্তত সহস্রাধিক জনকে।

তিনি আরও জানান, গেল বুধবার সন্ধ্যায় একদল উগ্রবাদী দুর্বৃত্ত মিছিল সহকারে উস্কানিমূলক সেøাগান দিয়ে পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিশ্বাসপাড়া, শিলখালীর কাছারী মুরা শীলপাড়া ও মগনামার শীল পাড়াসহ বিভিন্ন এলাকার পূজামণ্ডপে এবং হিন্দুদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের দেয়া তথ্যমতে, পেকুয়ায় সহিংসতার ঘটনায় উগ্রবাদীরা বিভিন্ন স্থানে ৭টি পূজামণ্ডপ, ৩০টি বাড়ি ভাঙচুর ও একটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

১৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় পেকুয়া থানার ওসি মোহাম্মদ আলী সংবাদকে জানান, পেকুয়ার পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তারপরও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ ও র‌্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন রয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।