খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশ থেকে ডাক্তার আনা যাবে : কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমরা খালেদা জিয়ার মৃত্যু কামনা করি না। তিনি দ্রুত আরোগ্য লাভ করুন এটা আমরাও চাই। খালেদা জিয়া অসুস্থ, তিনি হাসপাতালে আছেন, আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা এমনও বলেছি প্রয়োজনে বিদেশ থেকে ডাক্তার নিয়ে আসুন। গতকাল রাজধানীর লালবাগ থানার নবাবগঞ্জ পার্ক প্রাঙ্গণে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে ছয়টি ইউনিটের সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

খালেদা জিয়ার অসুস্থতার জন্য বিএনপিই দায়ী এ মন্তব্য করে আন্দোলনের নামে নাশকতার চেষ্টা করা হলে তা প্রতিহতের হুঁশিয়ারি দেন তিনি। তিনি বলেন, বেগম জিয়াকে নিয়ে মায়াকান্না করছে বিএনপি নেতারা। খালেদা জিয়ার অসুস্থতার জন্য বিএনপি দায়ী, কারণ তারা তার চিকিৎসা নিয়ে রাজনীতি করেছে। খালেদা জিয়াকে নিয়ে রাজনীতি না করতে বিএনপি নেতাদের প্রতি আহ্বানও জানান তিনি।

দুই সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ি চাপায় নিহত হওয়ার প্রসঙ্গেও সড়কমন্ত্রী বলেন, ২ সিটির ময়লার গাড়িতে দুটি মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটেছে, একজন ছাত্র, একজন ব্যবসায়ী। সরকার হিসেবে এর দায় এড়াতে পারি না। যদিও এটা সিটি করপোরেশনের বিষয়। রাস্তাও সিটি করপোরেশনের, গাড়িও সিটি করপোরেশনের, আমার কোন মালিকানা নেই। তারপরও আমি দায় অস্বীকার করি না।

হাফ ভাড়া নিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীরা হাফ ভাড়া দাবি করেছে, সরকারি গাড়িতে আমরা হাফ ভাড়া মওকুফ করেছি। সিটিতে দেয়ার কথা কনসেশন, নেত্রী বললেন, সারাদেশেই দাও। নেত্রী নিজে অনুরোধ করেছেন বেসরকারি বাস মালিকদের। বাস মালিকরা আমাকে গতকালও বলেছেন, তারা আবারও বৈঠকে বসেছেন। বাস মালিকদের আমি বলেছি, সামাজিক দায়বদ্ধতা রয়েছে। ছাত্ররা কনসেশন বহু আগ থেকেই পেতো। মাঝ খানে কিছুদিন বন্ধ ছিল। বাস মালিকরা আলোচনায় বসেছেন, আমরা আশা করবো আপনারা ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেবেন সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে। আমরা ছাত্রদের রাজপথে দেখতে চাই না, তারা ক্যাম্পাসে ফিরে যাক। ফখরুল সাহেবরা সাপোর্ট করার নামে উসকানি দিচ্ছেন। এর আগেও উসকানি দিয়েছিল, এখনও দিচ্ছে।

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, মানুষের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। একটি খারাপ আচরণ ১০টি ভালো উন্নয়নকে ঢেকে দিতে পারে। মানুষকে অখুশি করবেন, ক্ষমতার দাপট দেখাবেন, মানুষ হয়তো এখন আপনাদের ভয় করবে, কিন্তু নির্বাচন যখন হবে ব্যালটের মধ্যে শাস্তি দিয়ে দেবে। নির্বাচনে খারাপ ব্যবহারের জন্য শাস্তি পেতে হবে। কাজেই যতই উন্নয়ন হোক, ভালো ব্যবহার করবেন। জনগণকে খুশি রাখবেন। মাঝে মধ্যে এখানে ওখানে চাঁদাবাজির অভিযোগ আসে, সন্ত্রাসের অভিযোগ আসে, জমি দখলের অভিযোগ আসে, বাড়ি দখলের অভিযোগ আসে, মাদক ব্যবসার অভিযোগ আসে। এসব অপকর্ম আমাদের পার্টির উন্নয়নকে ম্লান করে দিচ্ছে।

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন প্রসঙ্গও উঠে আসে ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে। তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন উৎসব, উদ্দীপনা, ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ ভোটার কেন্দ্রে আসছে। মহিলারা ভোর থেকে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকেন। সারাদেশে উৎসবমুখর নির্বাচন হচ্ছে। কিছু বুদ্ধিজীবী, কিছু রাজনীতিক বলেন, মানুষ নাকি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। অবশ্য ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে কিছু অসুস্থ প্রতিযোগিতা আমাদের বিড়ম্বিত করছে। এতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু ভোটারদের উপস্থিতি সর্বকালের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে।

সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিম, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, মোফাজ্জল হোসেন মায়া, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনসহ অনেকেই। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহম্মদ মন্নাফি, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরসহ বিভিন্ন নেতাকর্মী।

মঙ্গলবার, ৩০ নভেম্বর ২০২১ , ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪২৮ ২৪ রবিউস সানি ১৪৪৩

খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশ থেকে ডাক্তার আনা যাবে : কাদের

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমরা খালেদা জিয়ার মৃত্যু কামনা করি না। তিনি দ্রুত আরোগ্য লাভ করুন এটা আমরাও চাই। খালেদা জিয়া অসুস্থ, তিনি হাসপাতালে আছেন, আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা এমনও বলেছি প্রয়োজনে বিদেশ থেকে ডাক্তার নিয়ে আসুন। গতকাল রাজধানীর লালবাগ থানার নবাবগঞ্জ পার্ক প্রাঙ্গণে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে ছয়টি ইউনিটের সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

খালেদা জিয়ার অসুস্থতার জন্য বিএনপিই দায়ী এ মন্তব্য করে আন্দোলনের নামে নাশকতার চেষ্টা করা হলে তা প্রতিহতের হুঁশিয়ারি দেন তিনি। তিনি বলেন, বেগম জিয়াকে নিয়ে মায়াকান্না করছে বিএনপি নেতারা। খালেদা জিয়ার অসুস্থতার জন্য বিএনপি দায়ী, কারণ তারা তার চিকিৎসা নিয়ে রাজনীতি করেছে। খালেদা জিয়াকে নিয়ে রাজনীতি না করতে বিএনপি নেতাদের প্রতি আহ্বানও জানান তিনি।

দুই সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ি চাপায় নিহত হওয়ার প্রসঙ্গেও সড়কমন্ত্রী বলেন, ২ সিটির ময়লার গাড়িতে দুটি মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটেছে, একজন ছাত্র, একজন ব্যবসায়ী। সরকার হিসেবে এর দায় এড়াতে পারি না। যদিও এটা সিটি করপোরেশনের বিষয়। রাস্তাও সিটি করপোরেশনের, গাড়িও সিটি করপোরেশনের, আমার কোন মালিকানা নেই। তারপরও আমি দায় অস্বীকার করি না।

হাফ ভাড়া নিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীরা হাফ ভাড়া দাবি করেছে, সরকারি গাড়িতে আমরা হাফ ভাড়া মওকুফ করেছি। সিটিতে দেয়ার কথা কনসেশন, নেত্রী বললেন, সারাদেশেই দাও। নেত্রী নিজে অনুরোধ করেছেন বেসরকারি বাস মালিকদের। বাস মালিকরা আমাকে গতকালও বলেছেন, তারা আবারও বৈঠকে বসেছেন। বাস মালিকদের আমি বলেছি, সামাজিক দায়বদ্ধতা রয়েছে। ছাত্ররা কনসেশন বহু আগ থেকেই পেতো। মাঝ খানে কিছুদিন বন্ধ ছিল। বাস মালিকরা আলোচনায় বসেছেন, আমরা আশা করবো আপনারা ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেবেন সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে। আমরা ছাত্রদের রাজপথে দেখতে চাই না, তারা ক্যাম্পাসে ফিরে যাক। ফখরুল সাহেবরা সাপোর্ট করার নামে উসকানি দিচ্ছেন। এর আগেও উসকানি দিয়েছিল, এখনও দিচ্ছে।

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, মানুষের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। একটি খারাপ আচরণ ১০টি ভালো উন্নয়নকে ঢেকে দিতে পারে। মানুষকে অখুশি করবেন, ক্ষমতার দাপট দেখাবেন, মানুষ হয়তো এখন আপনাদের ভয় করবে, কিন্তু নির্বাচন যখন হবে ব্যালটের মধ্যে শাস্তি দিয়ে দেবে। নির্বাচনে খারাপ ব্যবহারের জন্য শাস্তি পেতে হবে। কাজেই যতই উন্নয়ন হোক, ভালো ব্যবহার করবেন। জনগণকে খুশি রাখবেন। মাঝে মধ্যে এখানে ওখানে চাঁদাবাজির অভিযোগ আসে, সন্ত্রাসের অভিযোগ আসে, জমি দখলের অভিযোগ আসে, বাড়ি দখলের অভিযোগ আসে, মাদক ব্যবসার অভিযোগ আসে। এসব অপকর্ম আমাদের পার্টির উন্নয়নকে ম্লান করে দিচ্ছে।

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন প্রসঙ্গও উঠে আসে ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে। তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন উৎসব, উদ্দীপনা, ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ ভোটার কেন্দ্রে আসছে। মহিলারা ভোর থেকে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকেন। সারাদেশে উৎসবমুখর নির্বাচন হচ্ছে। কিছু বুদ্ধিজীবী, কিছু রাজনীতিক বলেন, মানুষ নাকি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। অবশ্য ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে কিছু অসুস্থ প্রতিযোগিতা আমাদের বিড়ম্বিত করছে। এতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু ভোটারদের উপস্থিতি সর্বকালের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে।

সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিম, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, মোফাজ্জল হোসেন মায়া, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনসহ অনেকেই। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহম্মদ মন্নাফি, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরসহ বিভিন্ন নেতাকর্মী।