কিশোর-কিশোরী ক্লাবের নামে হরিলুট

নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে সারা দেশেই কিশোর-কিশোরী ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেছে সরকার। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের অধীনে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গড়ে তোলা হয়েছে ছয়টি কিশোর-কিশোরী ক্লাব। এসব কেন্দ্র ক্লাব পরিচালনায় নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গত মঙ্গলবার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, শুরু থেকেই অদক্ষ শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। শিক্ষকরা নিয়মিত আসেন না, নির্দেশনা অনুযায়ী প্রশিক্ষণ দেন না। শিশুদের নিম্নমানের খাবার দেয়া হচ্ছে। এতে করে সরকারের মূল লক্ষ্য ভেস্তে যেতে বসেছে। কিশোর-কিশোরী ক্লাব কার্যক্রমের নামে টাকা হরিলুট করা হচ্ছে।

বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধসহ বিভিন্ন লক্ষ্যে কিশোর-কিশোরী ক্লাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। দেশের পারিপার্শি¦ক অবস্থার ভিত্তিতে এমন উদ্যোগ প্রশংসারযোগ্য। কিন্তু এতে যে অনিয়ম ও দুর্নীতি দেখা গেছে তাতে আসল উদ্দেশ্য ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কাই বেশি। কিশোর-কিশোরীদের সুবিধা দেয়াসহ সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার যে উদ্দেশ্য তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না, অথচ রাষ্ট্রীয় সম্পদের লুটপাট হচ্ছে ঠিকই।

যাদের দিয়ে এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করার কথা, তাদের অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে তা মাঠে মারা যেতে বসেছে। এখন অনিয়ম ও দুর্নীতি সর্বক্ষেত্রে একটি প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন কোন খাত নেই যেখানে অনিয়ম ও দুর্নীতির কালো ছায়া পড়েনি।

এটা শুধু সৈয়দপুরের চিত্র নয় বরং সারা দেশেরই চিত্র বলেই আমরা মনে করি। শুধু যে কিশোর-কিশোরী ক্লাবের মাধ্যমে অনিয়ম-দুর্নীতি-লুটপাট হচ্ছে তা নয় বরং প্রাথমিকে ঝরে পড়া রোধে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কর্যক্রম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে তথ্য আপা কার্যক্রমসহ সব ক্ষেত্রেই এমনটা হচ্ছে।

সরকার ভালো ভালো অনেক উদ্যোগ নেয় কিন্তু অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে তা ভেস্তে যায়। অনিয়ম ও দুর্নীতি দূর করা না গেলে যত প্রকল্প নেয়া হোক না কেন, এর সুফল মিলবে না। আমরা বলতে চাই, সৈয়দপুরে কিশোর-কিশোরী ক্লাব নিয়ে যে অভিযোগ পাওয়া গেছে তা আমলে নেয়া হোক। সুষ্ঠু তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হোক।

বৃহস্পতিবার, ২৩ জুন ২০২২ , ৯ আষাড় ১৪২৮ ২৩ জিলকদ ১৪৪৩

কিশোর-কিশোরী ক্লাবের নামে হরিলুট

নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে সারা দেশেই কিশোর-কিশোরী ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেছে সরকার। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের অধীনে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গড়ে তোলা হয়েছে ছয়টি কিশোর-কিশোরী ক্লাব। এসব কেন্দ্র ক্লাব পরিচালনায় নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গত মঙ্গলবার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, শুরু থেকেই অদক্ষ শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। শিক্ষকরা নিয়মিত আসেন না, নির্দেশনা অনুযায়ী প্রশিক্ষণ দেন না। শিশুদের নিম্নমানের খাবার দেয়া হচ্ছে। এতে করে সরকারের মূল লক্ষ্য ভেস্তে যেতে বসেছে। কিশোর-কিশোরী ক্লাব কার্যক্রমের নামে টাকা হরিলুট করা হচ্ছে।

বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধসহ বিভিন্ন লক্ষ্যে কিশোর-কিশোরী ক্লাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। দেশের পারিপার্শি¦ক অবস্থার ভিত্তিতে এমন উদ্যোগ প্রশংসারযোগ্য। কিন্তু এতে যে অনিয়ম ও দুর্নীতি দেখা গেছে তাতে আসল উদ্দেশ্য ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কাই বেশি। কিশোর-কিশোরীদের সুবিধা দেয়াসহ সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার যে উদ্দেশ্য তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না, অথচ রাষ্ট্রীয় সম্পদের লুটপাট হচ্ছে ঠিকই।

যাদের দিয়ে এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করার কথা, তাদের অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে তা মাঠে মারা যেতে বসেছে। এখন অনিয়ম ও দুর্নীতি সর্বক্ষেত্রে একটি প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন কোন খাত নেই যেখানে অনিয়ম ও দুর্নীতির কালো ছায়া পড়েনি।

এটা শুধু সৈয়দপুরের চিত্র নয় বরং সারা দেশেরই চিত্র বলেই আমরা মনে করি। শুধু যে কিশোর-কিশোরী ক্লাবের মাধ্যমে অনিয়ম-দুর্নীতি-লুটপাট হচ্ছে তা নয় বরং প্রাথমিকে ঝরে পড়া রোধে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কর্যক্রম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে তথ্য আপা কার্যক্রমসহ সব ক্ষেত্রেই এমনটা হচ্ছে।

সরকার ভালো ভালো অনেক উদ্যোগ নেয় কিন্তু অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে তা ভেস্তে যায়। অনিয়ম ও দুর্নীতি দূর করা না গেলে যত প্রকল্প নেয়া হোক না কেন, এর সুফল মিলবে না। আমরা বলতে চাই, সৈয়দপুরে কিশোর-কিশোরী ক্লাব নিয়ে যে অভিযোগ পাওয়া গেছে তা আমলে নেয়া হোক। সুষ্ঠু তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হোক।