মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সতর্ক মুদ্রানীতি ঘোষণা

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন কমিয়ে ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ করা হয়েছে। অর্থাৎ আগের মুদ্রানীতির চেয়ে দশমিক ৭০ শতাংশ কমানো হয়েছে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি সুদহার হিসেবে পরিচিত রেপো হার ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ২০২২-২৩ অর্থবছরের মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন গভর্নর ফজলে কবির।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য রাখা হয়েছে ১৩ শতাংশ ৬০ শতাংশ। চলতি জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ১৩ দশমিক ১০ শতাংশ।

ঘোষিত নতুন মুদ্রানীতিতে সরকারের লক্ষ্যমাত্রার আলোকে ঋণ গ্রহণের প্রবৃদ্ধি ৩৬ দশমিক ৩ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। আর মোট অভ্যন্তরীণ ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১৮ দশমিক ২০ শতাংশ।

গভর্নর বলেন, মুদ্রানীতির প্রধান লক্ষ্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও রিজার্ভ ধরে রাখা। আর কর্মসংস্থানের জন্য আমরা জিডিপি প্রবৃদ্ধি চাই। বাংলাদেশ ব্যাংক স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেয়, এ ক্ষেত্রে সরকার বা মন্ত্রণালয় হস্তক্ষেপ করছে না। অর্থনীতির জন্য যা প্রয়োজন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা বিবেচনায় নিয়েই বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়, কারও চাপে পড়ে নয়।

নীতি সুদহার বেড়ে যাওয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা ধার করতে ব্যাংকগুলোকে এখন বেশি সুদ দিতে হবে। এতে সস্তা টাকার দিন শেষ হয়ে আসবে বলে আশা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, যা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কাজে আসবে। আর আমদানিবিকল্প পণ্যের উৎপাদন বাড়াতে নতুন পুনঃ অর্থায়ন স্কিম চালুর ঘোষণা দিয়েছেন গভর্নর। পাশাপাশি বিলাসজাতীয় দ্রব্য যেমন বিদেশি ফল, অশস্য খাদ্যপণ্য, টিনজাত ও প্রক্রিয়াজাত পণ্যের আমদানি নিরুৎসাহিত করতে ৭৫ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত মার্জিন আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। এতে ডলারের ওপর চাপ কমবে, যার বদৌলতে সুরক্ষিত রাখবে রিজার্ভ ও মুদ্রার বিনিময়হার।

চলতি অর্থবছরে মুদ্রানীতির চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে গভর্নর বলেন, মুদ্রানীতির মূল চ্যালেঞ্জ হবে, টাকার মান ধরে রাখা, অর্থাৎ মূল্যস্ফীতি ও বিনিময়হার স্থিতিশীল রাখা। একই সঙ্গে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রমে সমর্থন অব্যাহত রাখা। এ জন্য সতর্কতামূলক মুদ্রানীতির ভঙ্গি অনুসরণ করা হয়েছে, যা কিছুটা সংকোচনমুখী।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে মুদ্রানীতি ঘোষণা অনুষ্ঠানে সব ডেপুটি গভর্নর, প্রধান অর্থনীতিবিদ ও নির্বাহী পরিচালকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শুক্রবার, ০১ জুলাই ২০২২ , ১৭ আষাড় ১৪২৮ ২৯ জিলকদ ১৪৪৩

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সতর্ক মুদ্রানীতি ঘোষণা

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন কমিয়ে ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ করা হয়েছে। অর্থাৎ আগের মুদ্রানীতির চেয়ে দশমিক ৭০ শতাংশ কমানো হয়েছে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি সুদহার হিসেবে পরিচিত রেপো হার ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ২০২২-২৩ অর্থবছরের মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন গভর্নর ফজলে কবির।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য রাখা হয়েছে ১৩ শতাংশ ৬০ শতাংশ। চলতি জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ১৩ দশমিক ১০ শতাংশ।

ঘোষিত নতুন মুদ্রানীতিতে সরকারের লক্ষ্যমাত্রার আলোকে ঋণ গ্রহণের প্রবৃদ্ধি ৩৬ দশমিক ৩ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। আর মোট অভ্যন্তরীণ ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১৮ দশমিক ২০ শতাংশ।

গভর্নর বলেন, মুদ্রানীতির প্রধান লক্ষ্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও রিজার্ভ ধরে রাখা। আর কর্মসংস্থানের জন্য আমরা জিডিপি প্রবৃদ্ধি চাই। বাংলাদেশ ব্যাংক স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেয়, এ ক্ষেত্রে সরকার বা মন্ত্রণালয় হস্তক্ষেপ করছে না। অর্থনীতির জন্য যা প্রয়োজন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা বিবেচনায় নিয়েই বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়, কারও চাপে পড়ে নয়।

নীতি সুদহার বেড়ে যাওয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা ধার করতে ব্যাংকগুলোকে এখন বেশি সুদ দিতে হবে। এতে সস্তা টাকার দিন শেষ হয়ে আসবে বলে আশা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, যা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কাজে আসবে। আর আমদানিবিকল্প পণ্যের উৎপাদন বাড়াতে নতুন পুনঃ অর্থায়ন স্কিম চালুর ঘোষণা দিয়েছেন গভর্নর। পাশাপাশি বিলাসজাতীয় দ্রব্য যেমন বিদেশি ফল, অশস্য খাদ্যপণ্য, টিনজাত ও প্রক্রিয়াজাত পণ্যের আমদানি নিরুৎসাহিত করতে ৭৫ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত মার্জিন আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। এতে ডলারের ওপর চাপ কমবে, যার বদৌলতে সুরক্ষিত রাখবে রিজার্ভ ও মুদ্রার বিনিময়হার।

চলতি অর্থবছরে মুদ্রানীতির চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে গভর্নর বলেন, মুদ্রানীতির মূল চ্যালেঞ্জ হবে, টাকার মান ধরে রাখা, অর্থাৎ মূল্যস্ফীতি ও বিনিময়হার স্থিতিশীল রাখা। একই সঙ্গে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রমে সমর্থন অব্যাহত রাখা। এ জন্য সতর্কতামূলক মুদ্রানীতির ভঙ্গি অনুসরণ করা হয়েছে, যা কিছুটা সংকোচনমুখী।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে মুদ্রানীতি ঘোষণা অনুষ্ঠানে সব ডেপুটি গভর্নর, প্রধান অর্থনীতিবিদ ও নির্বাহী পরিচালকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।