আমদানি হলেও দাম কমেনি চালের

উল্টো বেড়েছে কেজিতে দুই টাকা

গত কয়েক মাস আগে ফের চালের দাম বাড়তে শুরু করেছিল। তখন সরকার ৯৫ প্রতিষ্ঠানকে ৪ লাখ ৯ হাজার টন চাল আমদানি করতে অনুমোদন দেয় সরকার। এরপর কিছু প্রতিষ্ঠান চাল আমদানি শুরুও করেছে। তবে তারপরও চালের দাম কমছে না। উল্টো এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব ধরনের চালের দাম প্রতি কেজিতে ২ টাকা করে বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলারের দাম বাড়ার কারণে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। অনেক ব্যবসায়ী চাল আমদানিতে আনাগ্রহও প্রকাশ করছে। এছাড়া বাজারে বেড়েছে কাঁচামরিচের দাম। তবে কমেছে ইলিশের দাম। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।

গতকাল কারওয়ান বাজারে দেখা যায়, গুটি স্বর্ণা জাতের মোটা চাল প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৪৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই চাল এক সপ্তাহ আগেও বিক্রি হয়েছে ৪৩ থেকে ৪৪ টাকায়। শুধু মোটা চালই নয়, বাজারে প্রায় সব ধরনের চালের দামই বেড়েছে।

বাজারে মিনিকেট চাল প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭২ টাকা, বি আর আটাশ ৫২ থেকে ৫৫ টাকা, নাজির শাইল ৭২ থেকে ৭৫ টাকা, বাসমতি ৮৫ টাকা, চিনিগুড়া ১১০ থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসব চাল এক সপ্তাহ আগে দুই টাকা কমে পাওয়া যেত।

রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউন হলের ‘লক্ষ্মীপুর রাইস স্টোর’-এর স্বত্বাধিকারী বলেন, ‘ভারত থেকে চাল এসেছে তবুও দাম কমায়নি পাইকাররা। প্রায় সব ধরনের চালের দাম প্রতি কেজিতে আরও ২ টাকা বেড়েছে।’ এভাবে প্রতিনিয়ত নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে নি¤œ আয়ের মানুষ। গতকাল শ্যামলী কাঁচা বাজারে বাজার করতে আসা নিতাই চন্দ্র বলেন, ‘শুনেছি চালের দাম কমবে কিন্তু বাজারে এসে বেশি দামেই চাল কিনতে হচ্ছে।’

শুধু চালই নয়, বাজারে আটার দামও বেড়েছে। গতকাল বাজারে খোলা আটা প্রতি কেজি ৪৫ টাকা আর প্রতি কেজি খোলা ময়দা বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়। এসব আটার দামও প্রতি কেজিতে দুই টাকা বেড়েছে।

বাজারে আরও দেখা যায়, বাজারে ইলিশ মাছের দাম কমেছে কেজি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা। ৪০০ থেকে ৪৫০ গ্রামের প্রতি কেজি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা, ৬০০ থেকে ৬৫০ গ্রামের প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা, এক কেজি ওজনের প্রতি কেজি ১২০০ টাকা, ১২০০ গ্রাম থেকে দেড় কেজি ওজনের প্রতি কেজি ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা আর দেড় কেজির ওপরে ওজনের প্রতি কেজির দাম ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকা।

এ ছাড়া দেশি পুঁটিমাছ প্রতি কেজি ৪০০ টাকা, মলা প্রতি কেজি ৪০০ টাকা, বাটার মুসা প্রতি কেজি ২০০ টাকা, পাবদা প্রতি কেজি ৪০০ টাকা, কাচকি প্রতি কেজি ৫০০ টাকা, পাঙ্গাস প্রতি কেজি ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা রুই ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা, কাতলা প্রতি কেজি ২০০ থেকে ৩৫০ টাকা, মৃগেল প্রতি কেজি ২২০ থেকে ৩০০ টাকা, আর সাদা কোরাল প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাংসের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, দেশি মুরগি প্রতি কেজি ৫৬০ থেকে ৫৮০ টাকা, সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ২৭৫ থেকে ২৮০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৬০ টাকা, গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬৫০ টাকা, ছাগলের মাংস প্রতি কেজি ৮০০ টাকা, খাসির মাংস প্রতি কেজি ৯৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পাশাপাশি বাজারভেদে এক হালি ফার্মের মুরগির লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, এক হালি দেশি মুরগির ডিম ৬০ টাকা, আর একহালি হাঁসের ডিম ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

দেশি মশুর ডাল প্রতি কেজি ১৩৫ টাকা, বাইরের মশুর ডাল প্রতি কেজি ১১০ টাকা, মুগ ডাল প্রতি কেজি ১২৫ টাকা আর বুটের ডাল প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সর্বশেষ বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি হচ্ছে বোতলজাত সয়াবিন তেল। বাজারে এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৮৫ টাকা, ২ লিটার ৩৭০ টাকা আর ৫ লিটার সয়াবিন তেল ৮৯০ থেকে ৯১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সবজি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, আলু প্রতি কেজি ৩০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ৮০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ৬০ থেকে টাকা, পটোল প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, চাল কুমড়া প্রতি পিস ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, লাউ ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমরা প্রতি কেজি ৪০ টাকা, কচু প্রতি কেজি ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ২০০ টাকা প্রকারভেদে বেগুন প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, কাকরোল ৬০ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতি পিস ৫০ টাকা, ঝিঙ্গা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, ধনিয়া পাতা প্রতি কেজি ১৬০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, শসা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, দেশি গাজর ১২০, চায়না গাজর ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া বাজারে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ ৫০ টাকা। দেশি রসুন প্রতি কেজি ১০০ টাকা, চায়না রসুন ১৪০ টাকা। আর চায়না আদা প্রতি কেজি ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

শনিবার, ৩০ জুলাই ২০২২ , ১৫ শ্রাবণ ১৪২৯ ৩০ জিলহজ ১৪৪৩

আমদানি হলেও দাম কমেনি চালের

উল্টো বেড়েছে কেজিতে দুই টাকা

আমিরুল মোমিনিন সাগর

image

গত কয়েক মাস আগে ফের চালের দাম বাড়তে শুরু করেছিল। তখন সরকার ৯৫ প্রতিষ্ঠানকে ৪ লাখ ৯ হাজার টন চাল আমদানি করতে অনুমোদন দেয় সরকার। এরপর কিছু প্রতিষ্ঠান চাল আমদানি শুরুও করেছে। তবে তারপরও চালের দাম কমছে না। উল্টো এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব ধরনের চালের দাম প্রতি কেজিতে ২ টাকা করে বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলারের দাম বাড়ার কারণে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। অনেক ব্যবসায়ী চাল আমদানিতে আনাগ্রহও প্রকাশ করছে। এছাড়া বাজারে বেড়েছে কাঁচামরিচের দাম। তবে কমেছে ইলিশের দাম। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।

গতকাল কারওয়ান বাজারে দেখা যায়, গুটি স্বর্ণা জাতের মোটা চাল প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৪৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই চাল এক সপ্তাহ আগেও বিক্রি হয়েছে ৪৩ থেকে ৪৪ টাকায়। শুধু মোটা চালই নয়, বাজারে প্রায় সব ধরনের চালের দামই বেড়েছে।

বাজারে মিনিকেট চাল প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭২ টাকা, বি আর আটাশ ৫২ থেকে ৫৫ টাকা, নাজির শাইল ৭২ থেকে ৭৫ টাকা, বাসমতি ৮৫ টাকা, চিনিগুড়া ১১০ থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসব চাল এক সপ্তাহ আগে দুই টাকা কমে পাওয়া যেত।

রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউন হলের ‘লক্ষ্মীপুর রাইস স্টোর’-এর স্বত্বাধিকারী বলেন, ‘ভারত থেকে চাল এসেছে তবুও দাম কমায়নি পাইকাররা। প্রায় সব ধরনের চালের দাম প্রতি কেজিতে আরও ২ টাকা বেড়েছে।’ এভাবে প্রতিনিয়ত নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে নি¤œ আয়ের মানুষ। গতকাল শ্যামলী কাঁচা বাজারে বাজার করতে আসা নিতাই চন্দ্র বলেন, ‘শুনেছি চালের দাম কমবে কিন্তু বাজারে এসে বেশি দামেই চাল কিনতে হচ্ছে।’

শুধু চালই নয়, বাজারে আটার দামও বেড়েছে। গতকাল বাজারে খোলা আটা প্রতি কেজি ৪৫ টাকা আর প্রতি কেজি খোলা ময়দা বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়। এসব আটার দামও প্রতি কেজিতে দুই টাকা বেড়েছে।

বাজারে আরও দেখা যায়, বাজারে ইলিশ মাছের দাম কমেছে কেজি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা। ৪০০ থেকে ৪৫০ গ্রামের প্রতি কেজি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা, ৬০০ থেকে ৬৫০ গ্রামের প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা, এক কেজি ওজনের প্রতি কেজি ১২০০ টাকা, ১২০০ গ্রাম থেকে দেড় কেজি ওজনের প্রতি কেজি ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা আর দেড় কেজির ওপরে ওজনের প্রতি কেজির দাম ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকা।

এ ছাড়া দেশি পুঁটিমাছ প্রতি কেজি ৪০০ টাকা, মলা প্রতি কেজি ৪০০ টাকা, বাটার মুসা প্রতি কেজি ২০০ টাকা, পাবদা প্রতি কেজি ৪০০ টাকা, কাচকি প্রতি কেজি ৫০০ টাকা, পাঙ্গাস প্রতি কেজি ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা রুই ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা, কাতলা প্রতি কেজি ২০০ থেকে ৩৫০ টাকা, মৃগেল প্রতি কেজি ২২০ থেকে ৩০০ টাকা, আর সাদা কোরাল প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাংসের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, দেশি মুরগি প্রতি কেজি ৫৬০ থেকে ৫৮০ টাকা, সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ২৭৫ থেকে ২৮০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৬০ টাকা, গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬৫০ টাকা, ছাগলের মাংস প্রতি কেজি ৮০০ টাকা, খাসির মাংস প্রতি কেজি ৯৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পাশাপাশি বাজারভেদে এক হালি ফার্মের মুরগির লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, এক হালি দেশি মুরগির ডিম ৬০ টাকা, আর একহালি হাঁসের ডিম ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

দেশি মশুর ডাল প্রতি কেজি ১৩৫ টাকা, বাইরের মশুর ডাল প্রতি কেজি ১১০ টাকা, মুগ ডাল প্রতি কেজি ১২৫ টাকা আর বুটের ডাল প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সর্বশেষ বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি হচ্ছে বোতলজাত সয়াবিন তেল। বাজারে এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৮৫ টাকা, ২ লিটার ৩৭০ টাকা আর ৫ লিটার সয়াবিন তেল ৮৯০ থেকে ৯১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সবজি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, আলু প্রতি কেজি ৩০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ৮০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ৬০ থেকে টাকা, পটোল প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, চাল কুমড়া প্রতি পিস ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, লাউ ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমরা প্রতি কেজি ৪০ টাকা, কচু প্রতি কেজি ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ২০০ টাকা প্রকারভেদে বেগুন প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, কাকরোল ৬০ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতি পিস ৫০ টাকা, ঝিঙ্গা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, ধনিয়া পাতা প্রতি কেজি ১৬০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, শসা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, দেশি গাজর ১২০, চায়না গাজর ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া বাজারে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ ৫০ টাকা। দেশি রসুন প্রতি কেজি ১০০ টাকা, চায়না রসুন ১৪০ টাকা। আর চায়না আদা প্রতি কেজি ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।