গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি বোঝার উপর শাকের আঁটি

গণপরিবহনে ভাড়া যে বাড়বে সেটা জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পরপরই মানুষ বুঝতে পেরেছিল। এবং ভাড়া বাড়ানোর আগে গণপরিবহণের কৃত্রিম সংকট দেখা দেবে সেটাও মানুষ তাদের পূর্বঅভিজ্ঞতা থেকেই জানত। শুক্রবার মধ্যরাতে তেলের দাম বাড়ার পর শনিবার থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গণপরিবহণ সংকট দেখা দেয়। কোথাও কোথাও কিছু বাস চললেও তারা যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করেছে। যদিও তখনও সরকার ভাড়া বাড়ায়নি।

শনিবার রাতে বাস ভাড়া বাড়ানো হয়েছে ১৬ থেকে ২২ শতাংশ পর্যন্ত। গত বছর নভেম্বরেও একদফা বাস ভাড়া বেড়েছিল। তখন জ্বালানি তেলে দাম বাড়ার কারণে গণপরিবহনের ভাড়া ২৭ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল। ভাড়ার বোঝা যাত্রীসাধারণ বইবে কী করে সেটা একটা প্রশ্ন। নিত্যপণ্যের বাজার চড়া। বৈশ্বিক মহামারী নভেল করোনাভাইরাস বহু মানুষকে নিঃস্ব করেছে। মহামারীর প্রভাব মোকাবিলা করে মানুষ যখন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে তখন শুরু হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এ দফায় টিকে থাকা যাবে কিনা সেই চিন্তা পেয়ে বসেছে মানুষকে। এখন বোঝার উপর শাকের আঁটি হয়ে দেখা দিয়েছে বাড়তি বাস ভাড়া।

বাস ভাড়া বাড়ানোর পর প্রতিবারই যাত্রীদের সঙ্গে ড্রাইভার-হেল্পারদের বচসা হয়, অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। এবারও তেমনটা ঘটছে বলে জানা যাচ্ছে। যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেছেন, তাদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি টাকা আদায় করা হচ্ছে। বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম। কিন্তু গ্যাসচালিত পরিবহনও বাড়তি ভাড়া আদায় করে বলে অভিযোগ রয়েছে।

ভাড়া বাড়ানোর আগে নাগরিকদের জিম্মি করে গণপরিবহণ বন্ধ রাখা হয়। পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের চাপে সরকার ভাড়া বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু যে ভাড়া নির্ধারণ করে দেয়া হয় তার চেয়ে বেশি টাকা যাত্রীদের কাছ থেকে জোর-জুলুম করে আদায় করা হয়। যাত্রীদের এই দুর্ভোগ লাঘব হয় না। কখনো কখনো লোক দেখানো অভিযান চালানো হয়। অভিযান শেষ হলে গণপরিবহণগুলোতে আগের নৈরাজ্যই চলতে থাকে। নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে যাত্রী সাধারণকে পরিবহন শ্রমিকদের দুর্ব্যবহারের মুখে পড়তে হয়। যাত্রীরা এই নৈরাজ্য থেকে মুক্তি চান।

গণপরিবহনের ভাড়া বাড়ার কারণে সাধারণ মানুষের খরচ বেড়েছে। মানুষের খরচ বেড়েই চলেছে। কিন্তু আয় বাড়েনি। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোয় একদিকে তারা ক্ষুব্ধ অন্যদিকে পরিবহন ভাড়া নৈরাজ্যে হতাশ। তাদের এই ক্ষোভ আর হতাশা দূর করার জন্য সরকার কী পদক্ষেপ নেয় সেটাই দেখার বিষয়।

সোমবার, ০৮ আগস্ট ২০২২ , ২৪ শ্রাবণ ১৪২৯ ৯ মহররম ১৪৪৪

গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি বোঝার উপর শাকের আঁটি

গণপরিবহনে ভাড়া যে বাড়বে সেটা জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পরপরই মানুষ বুঝতে পেরেছিল। এবং ভাড়া বাড়ানোর আগে গণপরিবহণের কৃত্রিম সংকট দেখা দেবে সেটাও মানুষ তাদের পূর্বঅভিজ্ঞতা থেকেই জানত। শুক্রবার মধ্যরাতে তেলের দাম বাড়ার পর শনিবার থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গণপরিবহণ সংকট দেখা দেয়। কোথাও কোথাও কিছু বাস চললেও তারা যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করেছে। যদিও তখনও সরকার ভাড়া বাড়ায়নি।

শনিবার রাতে বাস ভাড়া বাড়ানো হয়েছে ১৬ থেকে ২২ শতাংশ পর্যন্ত। গত বছর নভেম্বরেও একদফা বাস ভাড়া বেড়েছিল। তখন জ্বালানি তেলে দাম বাড়ার কারণে গণপরিবহনের ভাড়া ২৭ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল। ভাড়ার বোঝা যাত্রীসাধারণ বইবে কী করে সেটা একটা প্রশ্ন। নিত্যপণ্যের বাজার চড়া। বৈশ্বিক মহামারী নভেল করোনাভাইরাস বহু মানুষকে নিঃস্ব করেছে। মহামারীর প্রভাব মোকাবিলা করে মানুষ যখন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে তখন শুরু হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এ দফায় টিকে থাকা যাবে কিনা সেই চিন্তা পেয়ে বসেছে মানুষকে। এখন বোঝার উপর শাকের আঁটি হয়ে দেখা দিয়েছে বাড়তি বাস ভাড়া।

বাস ভাড়া বাড়ানোর পর প্রতিবারই যাত্রীদের সঙ্গে ড্রাইভার-হেল্পারদের বচসা হয়, অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। এবারও তেমনটা ঘটছে বলে জানা যাচ্ছে। যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেছেন, তাদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি টাকা আদায় করা হচ্ছে। বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম। কিন্তু গ্যাসচালিত পরিবহনও বাড়তি ভাড়া আদায় করে বলে অভিযোগ রয়েছে।

ভাড়া বাড়ানোর আগে নাগরিকদের জিম্মি করে গণপরিবহণ বন্ধ রাখা হয়। পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের চাপে সরকার ভাড়া বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু যে ভাড়া নির্ধারণ করে দেয়া হয় তার চেয়ে বেশি টাকা যাত্রীদের কাছ থেকে জোর-জুলুম করে আদায় করা হয়। যাত্রীদের এই দুর্ভোগ লাঘব হয় না। কখনো কখনো লোক দেখানো অভিযান চালানো হয়। অভিযান শেষ হলে গণপরিবহণগুলোতে আগের নৈরাজ্যই চলতে থাকে। নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে যাত্রী সাধারণকে পরিবহন শ্রমিকদের দুর্ব্যবহারের মুখে পড়তে হয়। যাত্রীরা এই নৈরাজ্য থেকে মুক্তি চান।

গণপরিবহনের ভাড়া বাড়ার কারণে সাধারণ মানুষের খরচ বেড়েছে। মানুষের খরচ বেড়েই চলেছে। কিন্তু আয় বাড়েনি। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোয় একদিকে তারা ক্ষুব্ধ অন্যদিকে পরিবহন ভাড়া নৈরাজ্যে হতাশ। তাদের এই ক্ষোভ আর হতাশা দূর করার জন্য সরকার কী পদক্ষেপ নেয় সেটাই দেখার বিষয়।