ঈদের জামাত কখন কোথায়

ঈদের দিন দেশের প্রধান ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। অন্যদিকে দেশের সর্ববৃহৎ ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া মাঠে। ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত হবে ৫৩০টি ঈদ জামাত। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় নগরের বিভিন্ন স্থানে ১৬৪টি ঈদ জামাতের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়াও দেশের সব জেলায় রয়েছে ঈদের বিশেষ জামাতের আয়োজন।

জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে দেশের প্রধান ঈদ জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। ঈদগাহের জামাতে ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান। এবারও নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হবে ঈদগাহ ও আশপাশের এলাকা। নিরাপত্তার জন্য নামাজের সময় জায়নামাজ এবং ছাতা ছাড়া আর কিছু সঙ্গে নেয়া যাবে না। ঈদ জামাতের প্যান্ডেলে একসঙ্গে প্রায় ১ লাখ মুসল্লি নামাজ পড়তে পারবেন। এতে ৫ হাজার মহিলা নামাজ আদায় করতে পারবেন। একসঙ্গে দেড় থেকে দুই হাজার মানুষের অজুর ব্যবস্থা করা হয়েছে। মুসল্লিদের সুবিধার্থে টয়লেটের ব্যবস্থাও রয়েছে। স্থান সংকুলানের কারণে সামনের রাস্তায় নামাজ আদায় করতে হলে রাস্তায় চাদর বিছানোর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এতে প্রয়োজনীয় মাইক, সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। জরুরি চিকিৎসা সেবার জন্য থাকবে বিশেষ মেডিকেল টিম।

জাতীয় ঈদগাহ ছাড়াও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় ৩০২টি স্থানে এবার ঈদের জামাত হবে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৫৭টি ওয়ার্ডে ২২৮টি জামাতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ডিএনসিসি এলাকার প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে পাঁচটি করে জামাত হবে। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলররা এসব জামাতের ব্যবস্থাপনায় থাকবেন। এজন্য ডিএনসিসি প্রয়োজনীয় সব খরচ দেবে। নয়াপল্টন জামে মসজিদে সকাল ৮টায় ঈদের জামাত হবে। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে সকাল ৮টা এবং ৯টায় দুটি জামাত হবে। স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রধান ফটক সংলগ্ন মাঠে সকাল ৮টায় এবং ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলের লনে সকাল ৮টায় আরও দুটি জামাত হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। ডিএসসিসির ব্যবস্থাপনায় জাতীয় ঈদগাহ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জামাতের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া গুলশান সেন্ট্রাল মসজিদ ও ঈদগাহ ময়দান, মগবাজার বিটিসিএল কলোনী জামে মসজিদ, নুরানী জামে মসজিদ লক্ষ্মীবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। বংশাল পঞ্চায়েত কমিটির আয়োজনে পুরান ঢাকার (একাংশ) বাসিন্দাদের ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠে সকাল সাড়ে ৭টায়। জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় প্রতিবছরের ন্যায় এবারও পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজের জামাত সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। সোমবার সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ, হুইপবৃন্দ, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ-সদস্য ও সংসদ সচিবালয়ের কর্মচারীসহ এলাকার মুসল্লিরা জামাতে অংশ নেবেন। সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় এ ঈদের নামাজের জামাত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে উল্লেখ করে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জামাতে সব আগ্রহী মুসল্লিকে অংশগ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। জাকের পার্টি রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে আয়োজন করবে ৮০টি জামাত।

ইসলামী ফাউন্ডেশনের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে দেশের প্রধান ঈদ জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। তবে আবহাওয়া বৈরী থাকলে সকাল ৯টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে প্রধান ঈদ জামাত হবে। এবারও নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হবে ঈদগাহ ও আশপাশের এলাকা। নিরাপত্তার জন্য নামাজের সময় জায়নামাজ এবং ছাতা ছাড়া আর কিছু সঙ্গে নেয়া যাবে না। এছাড়া পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যাক্রমে পাঁচটি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৭টায়। এরপর দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টা, তৃতীয় জামাত সকাল ৯টা, চতুর্থ জামাত সকাল ১০টা ও পঞ্চম জামাত সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাতে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি মুহিবুবল্লাহিল বাকী নদভী, দ্বিতীয় জামাতে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি মহিউদ্দিন কাসেমী, তৃতীয় জামায়াতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক ড. মাওলানা মুশতাক আহমাদ, চতুর্থ জামায়াতে ইসলামী ফাউন্ডেশনের মুহাদ্দিস মাওলানা ওয়ালিয়ুর রহমান খান এবং পঞ্চম জামাতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক মাওলানা জুবাইর আহাম্মদ আল আযহারী ইমামতি করবেন।

স্মরণকালের সবচেয়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টায়। জামাতে ইমামতি করবেন ইসলাহুল মুসলিমিন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরিদউদ্দিন মাসউদ। এটি হবে শোলাকিয়ায় ১৯২তম ঈদুল ফিতরের জামাত। প্রতিবছর লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান শোলাকিয়ায় ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য একত্রিত হন। বাংলাদেশসহ ভারত, মিশর, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার কিছু মুসল্লিও প্রতিবারই শোলাকিয়ায় ঈদের নামাজ পড়তে আসেন। মাঠ ও মাঠ সংলগ্ন সড়ক এবং আশপাশে প্রায় এক কিলোমিটার বিস্তৃত হয় এ জামাত। কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ বলেন, মুসল্লিদের জন্য সুপেয় পানি, মেডিকেল টিম, দূর-দূরান্তের মুসল্লিদের থাকা-খাওয়া ও আপ্যায়নের ব্যবস্থাসহ নানা আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, ঈদুল ফিতরের দিন শোলাকিয়ায় ঈদ জামাতে আসা মুসল্লিদের জন্য দুটি বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে। ভোর ৬টায় ভৈরব থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনটি কিশোরগঞ্জ পৌঁছাবে সকাল ৮টায়। পরে এ ট্রেনটিই বেলা ১২টায় কিশোরগঞ্জ থেকে ভৈরবের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। এছাড়া আরেকটি বিশেষ ট্রেন ময়মনসিংহ থেকে ভোর পৌনে ৬টায় ছেড়ে এসে সকাল সাড়ে ৮টায় কিশোরগঞ্জ পৌঁছাবে। পরে এটি আবার ময়মনসিংহের উদ্দেশে কিশোরগঞ্জ ত্যাগ করবে বেলা ১২টায়। নিয়ম অনুযায়ী, জামাত শুরুর আগে শটগানের ৬টি ফাঁকা গুলি ছোড়া হবে। জামাত শুরুর ৫ মিনিট আগে ৩টি, ৩ মিনিট আগে ২টি এবং ১ মিনিট আগে ১টি গুলি ছুড়ে নামাজের জন্য মুসল্লিদের সঙ্কেত দেয়া হবে। জনশ্রুতি আছে, ১৮২৮ সালে এই মাঠে ঈদের জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লি এক সঙ্গে নামাজ আদায় করেছিলেন। সেই থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখিয়া’। যা এখন শোলাকিয়া নামেই পরিচিত। ২০১৬ সালে শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলা ও সাম্প্রতিক সময়ে শ্রীলঙ্কাসহ বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় জঙ্গি হামলার বিষয়গুলো মাথায় রেখে নেয়া হয়েছে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ব্যবস্থাপনায় নগরের বিভিন্ন স্থানে ১৬৪টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এবার প্রথম ও প্রধান ঈদ জামাত সকাল ৮টায় জাতীয় মসজিদ জমিয়তুল ফালাহ মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। এতে ইমামতি করবেন মসজিদের খতিব ও জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসার মুহাদ্দিস আল্লামা সৈয়দ আবু তালেব মোহাম্মদ আলাউদ্দীন আল কাদেরী। একই জায়গায় দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়। এতে ইমামতি করবেন জমিয়তুল ফালাহর পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা আহমুদুল হক। বাকলিয়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন স্টেডিয়ামে প্রথম ঈদ জামাত হবে সকাল ৮টায়। লালদীঘি সিটি করপোরেশন শাহি জামে মসজিদে ঈদ জামাত হবে সকাল সাড়ে ৮টায়। জালালাবাদ আরেফিননগর সিটি করপোরেশন কেন্দ্রীয় কবরস্থান জামে মসজিদের ঈদ জামাত হবে সকাল সোয়া ৮টায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে মাঠের পরিবর্তে মসজিদে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া নগরের ৪১টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের তত্ত্বাবধানে ১টি করে প্রধান ঈদ জামাত ও অন্যান্য ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

মঙ্গলবার, ০৪ জুন ২০১৯ , ২১ জৈষ্ঠ্য ১৪২৫, ২৯ রমজান ১৪৪০

ঈদের জামাত কখন কোথায়

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

ঈদের দিন দেশের প্রধান ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। অন্যদিকে দেশের সর্ববৃহৎ ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া মাঠে। ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত হবে ৫৩০টি ঈদ জামাত। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় নগরের বিভিন্ন স্থানে ১৬৪টি ঈদ জামাতের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়াও দেশের সব জেলায় রয়েছে ঈদের বিশেষ জামাতের আয়োজন।

জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে দেশের প্রধান ঈদ জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। ঈদগাহের জামাতে ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান। এবারও নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হবে ঈদগাহ ও আশপাশের এলাকা। নিরাপত্তার জন্য নামাজের সময় জায়নামাজ এবং ছাতা ছাড়া আর কিছু সঙ্গে নেয়া যাবে না। ঈদ জামাতের প্যান্ডেলে একসঙ্গে প্রায় ১ লাখ মুসল্লি নামাজ পড়তে পারবেন। এতে ৫ হাজার মহিলা নামাজ আদায় করতে পারবেন। একসঙ্গে দেড় থেকে দুই হাজার মানুষের অজুর ব্যবস্থা করা হয়েছে। মুসল্লিদের সুবিধার্থে টয়লেটের ব্যবস্থাও রয়েছে। স্থান সংকুলানের কারণে সামনের রাস্তায় নামাজ আদায় করতে হলে রাস্তায় চাদর বিছানোর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এতে প্রয়োজনীয় মাইক, সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। জরুরি চিকিৎসা সেবার জন্য থাকবে বিশেষ মেডিকেল টিম।

জাতীয় ঈদগাহ ছাড়াও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় ৩০২টি স্থানে এবার ঈদের জামাত হবে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৫৭টি ওয়ার্ডে ২২৮টি জামাতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ডিএনসিসি এলাকার প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে পাঁচটি করে জামাত হবে। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলররা এসব জামাতের ব্যবস্থাপনায় থাকবেন। এজন্য ডিএনসিসি প্রয়োজনীয় সব খরচ দেবে। নয়াপল্টন জামে মসজিদে সকাল ৮টায় ঈদের জামাত হবে। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে সকাল ৮টা এবং ৯টায় দুটি জামাত হবে। স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রধান ফটক সংলগ্ন মাঠে সকাল ৮টায় এবং ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলের লনে সকাল ৮টায় আরও দুটি জামাত হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। ডিএসসিসির ব্যবস্থাপনায় জাতীয় ঈদগাহ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জামাতের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া গুলশান সেন্ট্রাল মসজিদ ও ঈদগাহ ময়দান, মগবাজার বিটিসিএল কলোনী জামে মসজিদ, নুরানী জামে মসজিদ লক্ষ্মীবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। বংশাল পঞ্চায়েত কমিটির আয়োজনে পুরান ঢাকার (একাংশ) বাসিন্দাদের ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠে সকাল সাড়ে ৭টায়। জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় প্রতিবছরের ন্যায় এবারও পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজের জামাত সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। সোমবার সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ, হুইপবৃন্দ, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ-সদস্য ও সংসদ সচিবালয়ের কর্মচারীসহ এলাকার মুসল্লিরা জামাতে অংশ নেবেন। সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় এ ঈদের নামাজের জামাত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে উল্লেখ করে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জামাতে সব আগ্রহী মুসল্লিকে অংশগ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। জাকের পার্টি রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে আয়োজন করবে ৮০টি জামাত।

ইসলামী ফাউন্ডেশনের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে দেশের প্রধান ঈদ জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। তবে আবহাওয়া বৈরী থাকলে সকাল ৯টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে প্রধান ঈদ জামাত হবে। এবারও নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হবে ঈদগাহ ও আশপাশের এলাকা। নিরাপত্তার জন্য নামাজের সময় জায়নামাজ এবং ছাতা ছাড়া আর কিছু সঙ্গে নেয়া যাবে না। এছাড়া পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যাক্রমে পাঁচটি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৭টায়। এরপর দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টা, তৃতীয় জামাত সকাল ৯টা, চতুর্থ জামাত সকাল ১০টা ও পঞ্চম জামাত সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাতে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি মুহিবুবল্লাহিল বাকী নদভী, দ্বিতীয় জামাতে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি মহিউদ্দিন কাসেমী, তৃতীয় জামায়াতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক ড. মাওলানা মুশতাক আহমাদ, চতুর্থ জামায়াতে ইসলামী ফাউন্ডেশনের মুহাদ্দিস মাওলানা ওয়ালিয়ুর রহমান খান এবং পঞ্চম জামাতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক মাওলানা জুবাইর আহাম্মদ আল আযহারী ইমামতি করবেন।

স্মরণকালের সবচেয়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টায়। জামাতে ইমামতি করবেন ইসলাহুল মুসলিমিন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরিদউদ্দিন মাসউদ। এটি হবে শোলাকিয়ায় ১৯২তম ঈদুল ফিতরের জামাত। প্রতিবছর লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান শোলাকিয়ায় ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য একত্রিত হন। বাংলাদেশসহ ভারত, মিশর, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার কিছু মুসল্লিও প্রতিবারই শোলাকিয়ায় ঈদের নামাজ পড়তে আসেন। মাঠ ও মাঠ সংলগ্ন সড়ক এবং আশপাশে প্রায় এক কিলোমিটার বিস্তৃত হয় এ জামাত। কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ বলেন, মুসল্লিদের জন্য সুপেয় পানি, মেডিকেল টিম, দূর-দূরান্তের মুসল্লিদের থাকা-খাওয়া ও আপ্যায়নের ব্যবস্থাসহ নানা আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, ঈদুল ফিতরের দিন শোলাকিয়ায় ঈদ জামাতে আসা মুসল্লিদের জন্য দুটি বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে। ভোর ৬টায় ভৈরব থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনটি কিশোরগঞ্জ পৌঁছাবে সকাল ৮টায়। পরে এ ট্রেনটিই বেলা ১২টায় কিশোরগঞ্জ থেকে ভৈরবের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। এছাড়া আরেকটি বিশেষ ট্রেন ময়মনসিংহ থেকে ভোর পৌনে ৬টায় ছেড়ে এসে সকাল সাড়ে ৮টায় কিশোরগঞ্জ পৌঁছাবে। পরে এটি আবার ময়মনসিংহের উদ্দেশে কিশোরগঞ্জ ত্যাগ করবে বেলা ১২টায়। নিয়ম অনুযায়ী, জামাত শুরুর আগে শটগানের ৬টি ফাঁকা গুলি ছোড়া হবে। জামাত শুরুর ৫ মিনিট আগে ৩টি, ৩ মিনিট আগে ২টি এবং ১ মিনিট আগে ১টি গুলি ছুড়ে নামাজের জন্য মুসল্লিদের সঙ্কেত দেয়া হবে। জনশ্রুতি আছে, ১৮২৮ সালে এই মাঠে ঈদের জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লি এক সঙ্গে নামাজ আদায় করেছিলেন। সেই থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখিয়া’। যা এখন শোলাকিয়া নামেই পরিচিত। ২০১৬ সালে শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলা ও সাম্প্রতিক সময়ে শ্রীলঙ্কাসহ বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় জঙ্গি হামলার বিষয়গুলো মাথায় রেখে নেয়া হয়েছে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ব্যবস্থাপনায় নগরের বিভিন্ন স্থানে ১৬৪টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এবার প্রথম ও প্রধান ঈদ জামাত সকাল ৮টায় জাতীয় মসজিদ জমিয়তুল ফালাহ মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। এতে ইমামতি করবেন মসজিদের খতিব ও জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসার মুহাদ্দিস আল্লামা সৈয়দ আবু তালেব মোহাম্মদ আলাউদ্দীন আল কাদেরী। একই জায়গায় দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়। এতে ইমামতি করবেন জমিয়তুল ফালাহর পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা আহমুদুল হক। বাকলিয়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন স্টেডিয়ামে প্রথম ঈদ জামাত হবে সকাল ৮টায়। লালদীঘি সিটি করপোরেশন শাহি জামে মসজিদে ঈদ জামাত হবে সকাল সাড়ে ৮টায়। জালালাবাদ আরেফিননগর সিটি করপোরেশন কেন্দ্রীয় কবরস্থান জামে মসজিদের ঈদ জামাত হবে সকাল সোয়া ৮টায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে মাঠের পরিবর্তে মসজিদে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া নগরের ৪১টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের তত্ত্বাবধানে ১টি করে প্রধান ঈদ জামাত ও অন্যান্য ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে।