দলীয় নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন থেরেসা মে

ব্রেক্সিট ইস্যুতে সমঝোতায় পৌঁছাতে ব্যর্থতার দায় মাথায় নিয়ে অবশেষে নিজ দল কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্ব থেকে গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে সরে দাঁড়িয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। তবে উত্তরসূরি খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী পদে বহাল থাকছেন তিনি। আগামী জুলাইয়ের শেষের দিকে নতুন নেতা নির্বাচন করা হতে পারে। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসহ ১১ কনজারভেটিভ এমপিকে সম্ভাব্য তালিকায় রাখা হয়েছে।

গত তিন বছর আগে (২০১৬ সালে) অনুষ্ঠিত এক গণভোটে ব্রেক্সিটের (ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া) পক্ষে রায় আসার পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন মে। এ কয়েক বছর ব্রেক্সিট পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করেছেন তিনি। চলতি বছরের ২৯ মার্চ রাত ১১টায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্যপদ ত্যাগের কথা ছিল যুক্তরাজ্যের। ব্রেক্সিট পরবর্তীকালে ইইউয়ের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্কের শর্ত নির্দিষ্ট করে তৈরি হয় ব্রেক্সিট চুক্তি। এ চুক্তি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পাস করানোর বাধ্যবাধকতা থাকলেও তিন দফায় তা হাউস অব কমন্সে পাস করাতে ব্যর্থ হন মে। তবে ইইউ নেতাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ব্রেক্সিট বিলম্বিত করতে সমর্থ হন তিনি। ব্রেক্সিট ইস্যুতে নিজ দলের পার্লামেন্ট সদস্যদের পাশাপাশি বিরোধী দলের সদস্যদের সমর্থন আদায়ের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখলেও শেষ পর্যন্ত এতে সফলতা পাননি মে। এমন জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতির মুখে গত মাসের শেষের দিকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। তিনি জানান, ৭ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করবেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন মে। এদিকে নতুন নেতা নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী পদে বহাল থাকলেও ব্রেক্সিট প্রশ্নে তার আর কোন নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। থেরেসার স্থলাভিষিক্ত হওয়ার প্রতিযোগিতায় ১১ জন কনজারভেটিভ এমপি থাকলেও আগামী সোমবারের মধ্যে কয়েক ঝরে পড়তে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদিনই (১০ জুন) মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন।

গত মে মাসে দেয়া পদত্যাগের ঘোষণায় থেরেসা মে জানান, তিনি না পারলেও তার উত্তরসূরি হয়তো পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট ইস্যুতে সমঝোতা করতে পারবেন। তিনি বলেন, এ ধরনের সমঝোতা কেবল তখনই সম্ভব, যখন বিতর্করত সব পক্ষ আপস করতে সম্মত হবে। আবেগপূর্ণ ভাষায় তিনি তখন বলেন, অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই আমার কাজ ছেড়ে দেব। কিন্তু যে সম্মান নিয়ে যাচ্ছি, তা সারা জীবন ধরে রাখব। দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী ছিলাম। তবে অবশ্যই শেষ নারী প্রধানমন্ত্রী হব না। ব্রেক্সিট ইস্যুতে নিজের নেয়া পদক্ষেপের বিষয়ে তিনি বলেন, কোন খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে কিছু করিনি।

শনিবার, ০৮ জুন ২০১৯ , ২৫ জৈষ্ঠ্য ১৪২৫, ৪ শাওয়াল ১৪৪০

দলীয় নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন থেরেসা মে

সংবাদ ডেস্ক

ব্রেক্সিট ইস্যুতে সমঝোতায় পৌঁছাতে ব্যর্থতার দায় মাথায় নিয়ে অবশেষে নিজ দল কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্ব থেকে গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে সরে দাঁড়িয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। তবে উত্তরসূরি খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী পদে বহাল থাকছেন তিনি। আগামী জুলাইয়ের শেষের দিকে নতুন নেতা নির্বাচন করা হতে পারে। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসহ ১১ কনজারভেটিভ এমপিকে সম্ভাব্য তালিকায় রাখা হয়েছে।

গত তিন বছর আগে (২০১৬ সালে) অনুষ্ঠিত এক গণভোটে ব্রেক্সিটের (ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া) পক্ষে রায় আসার পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন মে। এ কয়েক বছর ব্রেক্সিট পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করেছেন তিনি। চলতি বছরের ২৯ মার্চ রাত ১১টায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্যপদ ত্যাগের কথা ছিল যুক্তরাজ্যের। ব্রেক্সিট পরবর্তীকালে ইইউয়ের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্কের শর্ত নির্দিষ্ট করে তৈরি হয় ব্রেক্সিট চুক্তি। এ চুক্তি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পাস করানোর বাধ্যবাধকতা থাকলেও তিন দফায় তা হাউস অব কমন্সে পাস করাতে ব্যর্থ হন মে। তবে ইইউ নেতাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ব্রেক্সিট বিলম্বিত করতে সমর্থ হন তিনি। ব্রেক্সিট ইস্যুতে নিজ দলের পার্লামেন্ট সদস্যদের পাশাপাশি বিরোধী দলের সদস্যদের সমর্থন আদায়ের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখলেও শেষ পর্যন্ত এতে সফলতা পাননি মে। এমন জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতির মুখে গত মাসের শেষের দিকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। তিনি জানান, ৭ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করবেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন মে। এদিকে নতুন নেতা নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী পদে বহাল থাকলেও ব্রেক্সিট প্রশ্নে তার আর কোন নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। থেরেসার স্থলাভিষিক্ত হওয়ার প্রতিযোগিতায় ১১ জন কনজারভেটিভ এমপি থাকলেও আগামী সোমবারের মধ্যে কয়েক ঝরে পড়তে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদিনই (১০ জুন) মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন।

গত মে মাসে দেয়া পদত্যাগের ঘোষণায় থেরেসা মে জানান, তিনি না পারলেও তার উত্তরসূরি হয়তো পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট ইস্যুতে সমঝোতা করতে পারবেন। তিনি বলেন, এ ধরনের সমঝোতা কেবল তখনই সম্ভব, যখন বিতর্করত সব পক্ষ আপস করতে সম্মত হবে। আবেগপূর্ণ ভাষায় তিনি তখন বলেন, অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই আমার কাজ ছেড়ে দেব। কিন্তু যে সম্মান নিয়ে যাচ্ছি, তা সারা জীবন ধরে রাখব। দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী ছিলাম। তবে অবশ্যই শেষ নারী প্রধানমন্ত্রী হব না। ব্রেক্সিট ইস্যুতে নিজের নেয়া পদক্ষেপের বিষয়ে তিনি বলেন, কোন খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে কিছু করিনি।