শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় হলি আর্টিজানে হামলায় নিহতদের স্মরণ

দেশের ইতিহাসে নৃশংসতম হামলাগুলোর মধ্যে রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজানে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা অন্যতম। ২০১৬ সালে ১ জুলাই ঘটে যাওয়া এ নারকীয় হত্যাযজ্ঞের ভয়াবহ স্মৃতি আজও শরীরে কাঁপুনি ধরিয়ে দেয়। সেদিন জঙ্গিদের নির্মমতার কাছে হার মানতে হয় ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে। জঙ্গিদের ছোড়া বোমার আঘাতে নিহত হন ২ পুলিশ কর্মকর্তাও। ফলে হামলার দিনটি সবার কাছে কালো অধ্যায় হিসেবে রয়ে গেছে। প্রতি বছর হামলার দিনটি এলেই নির্মমভাবে নিহতদের শ্রদ্ধা জানাতে হলি আর্টিজানে ছুটে যান নানা শ্রেণীর মানুষ।

গতকাল সকালে ভয়াবহ এ জঙ্গি হামলার ৩ বছর উপলক্ষে গুলশান-২ নম্বর সেকশনের ৭৯ নম্বর সড়কের ৫ নম্বর হলি আর্টিজান বেকারিতে অস্থায়ী বেদিতে গিয়ে নিহতদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করেছেন স্বজন, বন্ধুবান্ধবসহ দেশি-বিদেশি নাগরিক ও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন। শ্রদ্ধা জানানো হয় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি), বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন, রেক্টর পুলিশ স্টাফ কলেজ ও বিএনপির পক্ষ থেকেও। সকাল ১০টায় হলি আর্টিজানের গেট খুলে দেয়ার পর একে একে সবাই শ্রদ্ধা জানান। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে র‌্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ শ্রদ্ধা জানানোর পর বলেন, জঙ্গিবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। বিশ্বব্যাপী জঙ্গিবাদ নিশ্চিহ্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, হলি আর্টিজান হামলার পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের আমরা নিশ্চিহ্ন করে দিতে সক্ষম হয়েছি। সারাবিশ্বেই জঙ্গি হামলা হচ্ছে। শুধু ২০১৮ সালেই ইউরোপজুড়ে ১২৯টি জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ থেকে বোঝা যায়, জঙ্গিরা বৈশ্বিকভাবে নিশ্চিহ্ন হয়নি।

সকাল সোয়া ১০টার দিকে ডিএমপির পক্ষ থেকে ভারপ্রাপ্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, এই হামলার সঙ্গে নব্য জেএমবির যারা জড়িত ছিল, তারা সবাই বিভিন্ন অভিযানে নিহত হয়েছে। কেউ জীবিত অবস্থায় গ্রেফতার হয়েছে। আমরা আশা করছি, এ হামলার দ্রুত বিচারকাজ শেষ হবে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে নিহতের পরিবার তাদের অপূরণীয় ক্ষতির ক্ষেত্রে একটু হলেও সান্ত¡না পাবে। তিনি বলেন, হলি আর্টিজানে হামলার মতো আর কোন ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে, এ লক্ষ্যে পুলিশ ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট কাজ করছে।

এদিকে সকাল ১০টার দিকে আর্টিজানে নিহতদের শ্রদ্ধা জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। এ সময় সেলিমা রহমান বলেন, হলি আর্টিজান হামলার পর সরকার কিছুটা হলেও সফল হয়েছে। কিন্তু সামগ্রিক সন্ত্রাসবাদ দমনে ব্যর্থ হয়েছে।

ছিন্নমূল মানুষকে নিয়ে কাজ করা ইতালি নাগরিক ফাদার রিকার্দো তোবানিল্লি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বলেন, বাংলাদেশের মানুষ খুবই শান্তিপ্রিয়। অল্প কয়েক মানুষ অসুবিধা করছে। এ জন্য কিছু চিন্তা আছে, সতর্কতাও আছে। তবে ভয়ের কারণ নেই। আমরা নিরাপদেই আছি। তিনি জানান, নিহত ইতালির ৯ নাগরিকের মধ্যে ছয়জনই তার পরিচিত ছিলেন। ঘটনার দু’দিন আগেও ক্রিস্টিয়ানার সঙ্গে তার কথা হয়েছিল। কিন্তু তিনি ভাবতেই পারেননি দু’দিন পরই তার এমন মৃত্যু হবে।

ইতালির আরেক নাগরিক আনেজি বারেলো বলেন, হলি আর্টিজানের এই একটি ঘটনা বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদ রাষ্ট্র হিসেবে প্রমাণ করে না। বাংলাদেশের মানুষ অনেক শান্তিপ্রিয়। বাংলাদেশের মানুষ এসব পছন্দ করে না। একটি ছোট গ্রুপ এ কাজ করেছে। ওই রাতের ঘটনা মনে করে তিনি বলেন, আমি সেদিন ইতালিয়ান অ্যাম্বাসাডরের বাসায় ডিনার করছিলাম। হঠাৎ এই খবর পাই। আমরা খুব উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে ছিলাম। আমার পরিচিত বন্ধুরা হলি আর্টিজান বেকারিতে ছিল। বন্ধু ক্লাউডিয়ার সঙ্গে কথা হয় ভোর ৪টায়। সে অনেক কষ্টে বেঁচে গিয়েছিল। সে ইতালি ফিরে গেলেও আবার বাংলাদেশে এসেছে। সে এখনও বাংলাদেশেই কাজ করে। আমরা বাংলাদেশকে ভালোবাসি। এছাড়া ঢাকাস্থ জাপানের রাষ্ট্রদূত, ইতালির রাষ্ট্রদূত, প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভীর স্ত্রী ও ইতালির নাগরিক আনেজি বারেলো ও ৪৬ বছর ধরে এ দেশে বসবাস করা ফাদার আতিলিও ফুল দিয়ে নিহতদের শ্রদ্ধা জানান।

শাওনের ছবি হাতে মায়ের কান্না

সকাল ১১টার দিকে হলি আর্টিজান বেকারিতে আসেন এই হামলায় নিহত জাকিরুল হাসান শাওনের মা মাসুদা বেগম। দুই হাতে শাওনের ছবি। একটি রক্তাক্ত। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে হত্যার বিচার পেলাম না। আমার ছেলেটাকে র‌্যাব, পুলিশ নির্যাতন কইরা মারছে। ওরে জঙ্গি মনে করছিল। কিন্তু দুই বছর পর ঠিকই প্রমাণ হইছে ও জঙ্গি ছিল না।’ তিনি বলেন, আমাদের খোঁজ কেউ নেয় না। মালিক মাসে মাসে পাঁচ হাজার করে টাকা দেয়। ওতে কোন রকম চলি। আমাগো দেখনের কেউ নাই।’

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১ জুলাই ৫ অস্ত্রধারী জঙ্গি হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা করে ৩ বাংলাদেশি, ৭ জাপানিজ, ৯ ইতালিয়ান ও ১ ভারতীয়কে নির্মমভাবে হত্যা করে। দীর্ঘ ১২ ঘণ্টার উদ্ধার অভিযানে ২ পুলিশ কর্মকর্তাও নিহত হন। হামলার পর সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গুলশান থানায় মামলা করা হয়। ওই মামলায় জামা’আতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) স্থানীয় শাখাকে অভিযুক্ত করা হয়। দুই বছর তদন্তের পর সিটিটিসি ইউনিট গত বছরের ২৩ জুলাই ৮ জঙ্গিকে অভিযুক্ত করে ঢাকার একটি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।

image

গতকাল গুলশানে হলি আর্টিজানে সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান স্বজন, বন্ধুবান্ধবসহ বিদেশি নাগরিক

আরও খবর
পাঠ্যপুস্তক প্রস্তুতকারীদের প্রতি শিক্ষামন্ত্রীর হুঁশিয়ারি
প্রতি উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের সেবার আওতায় আনা হবে
এরশাদকে দেখতে হাসপাতালে কাদের
হলি আর্টিজানসহ আলোচিত মামলাসমূহের বিচার দ্রুত শেষ হবে
আজ সূর্যগ্রহণ
জেএমবি জঙ্গিরা এখন ইন্টারনেটে সক্রিয়
নদী ‘জীবন্ত সত্তা’
ভয়াবহ জলাবদ্ধতা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের দাবি
এলএনজি ব্যবসায়ীদের পকেট ভারী করতে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করা হয়
জড়িত মানব পাচারকারীদের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ
দুদকে হাজির হননি মিজান ও বাছির
জীবিকার নিশ্চয়তা না থাকায় উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের আগ্রহ কমেছে

মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০১৯ , ১৮ আষাঢ় ১৪২৫, ২৮ শাওয়াল ১৪৪০

শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় হলি আর্টিজানে হামলায় নিহতদের স্মরণ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

গতকাল গুলশানে হলি আর্টিজানে সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান স্বজন, বন্ধুবান্ধবসহ বিদেশি নাগরিক

দেশের ইতিহাসে নৃশংসতম হামলাগুলোর মধ্যে রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজানে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা অন্যতম। ২০১৬ সালে ১ জুলাই ঘটে যাওয়া এ নারকীয় হত্যাযজ্ঞের ভয়াবহ স্মৃতি আজও শরীরে কাঁপুনি ধরিয়ে দেয়। সেদিন জঙ্গিদের নির্মমতার কাছে হার মানতে হয় ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে। জঙ্গিদের ছোড়া বোমার আঘাতে নিহত হন ২ পুলিশ কর্মকর্তাও। ফলে হামলার দিনটি সবার কাছে কালো অধ্যায় হিসেবে রয়ে গেছে। প্রতি বছর হামলার দিনটি এলেই নির্মমভাবে নিহতদের শ্রদ্ধা জানাতে হলি আর্টিজানে ছুটে যান নানা শ্রেণীর মানুষ।

গতকাল সকালে ভয়াবহ এ জঙ্গি হামলার ৩ বছর উপলক্ষে গুলশান-২ নম্বর সেকশনের ৭৯ নম্বর সড়কের ৫ নম্বর হলি আর্টিজান বেকারিতে অস্থায়ী বেদিতে গিয়ে নিহতদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করেছেন স্বজন, বন্ধুবান্ধবসহ দেশি-বিদেশি নাগরিক ও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন। শ্রদ্ধা জানানো হয় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি), বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন, রেক্টর পুলিশ স্টাফ কলেজ ও বিএনপির পক্ষ থেকেও। সকাল ১০টায় হলি আর্টিজানের গেট খুলে দেয়ার পর একে একে সবাই শ্রদ্ধা জানান। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে র‌্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ শ্রদ্ধা জানানোর পর বলেন, জঙ্গিবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। বিশ্বব্যাপী জঙ্গিবাদ নিশ্চিহ্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, হলি আর্টিজান হামলার পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের আমরা নিশ্চিহ্ন করে দিতে সক্ষম হয়েছি। সারাবিশ্বেই জঙ্গি হামলা হচ্ছে। শুধু ২০১৮ সালেই ইউরোপজুড়ে ১২৯টি জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ থেকে বোঝা যায়, জঙ্গিরা বৈশ্বিকভাবে নিশ্চিহ্ন হয়নি।

সকাল সোয়া ১০টার দিকে ডিএমপির পক্ষ থেকে ভারপ্রাপ্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, এই হামলার সঙ্গে নব্য জেএমবির যারা জড়িত ছিল, তারা সবাই বিভিন্ন অভিযানে নিহত হয়েছে। কেউ জীবিত অবস্থায় গ্রেফতার হয়েছে। আমরা আশা করছি, এ হামলার দ্রুত বিচারকাজ শেষ হবে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে নিহতের পরিবার তাদের অপূরণীয় ক্ষতির ক্ষেত্রে একটু হলেও সান্ত¡না পাবে। তিনি বলেন, হলি আর্টিজানে হামলার মতো আর কোন ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে, এ লক্ষ্যে পুলিশ ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট কাজ করছে।

এদিকে সকাল ১০টার দিকে আর্টিজানে নিহতদের শ্রদ্ধা জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। এ সময় সেলিমা রহমান বলেন, হলি আর্টিজান হামলার পর সরকার কিছুটা হলেও সফল হয়েছে। কিন্তু সামগ্রিক সন্ত্রাসবাদ দমনে ব্যর্থ হয়েছে।

ছিন্নমূল মানুষকে নিয়ে কাজ করা ইতালি নাগরিক ফাদার রিকার্দো তোবানিল্লি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বলেন, বাংলাদেশের মানুষ খুবই শান্তিপ্রিয়। অল্প কয়েক মানুষ অসুবিধা করছে। এ জন্য কিছু চিন্তা আছে, সতর্কতাও আছে। তবে ভয়ের কারণ নেই। আমরা নিরাপদেই আছি। তিনি জানান, নিহত ইতালির ৯ নাগরিকের মধ্যে ছয়জনই তার পরিচিত ছিলেন। ঘটনার দু’দিন আগেও ক্রিস্টিয়ানার সঙ্গে তার কথা হয়েছিল। কিন্তু তিনি ভাবতেই পারেননি দু’দিন পরই তার এমন মৃত্যু হবে।

ইতালির আরেক নাগরিক আনেজি বারেলো বলেন, হলি আর্টিজানের এই একটি ঘটনা বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদ রাষ্ট্র হিসেবে প্রমাণ করে না। বাংলাদেশের মানুষ অনেক শান্তিপ্রিয়। বাংলাদেশের মানুষ এসব পছন্দ করে না। একটি ছোট গ্রুপ এ কাজ করেছে। ওই রাতের ঘটনা মনে করে তিনি বলেন, আমি সেদিন ইতালিয়ান অ্যাম্বাসাডরের বাসায় ডিনার করছিলাম। হঠাৎ এই খবর পাই। আমরা খুব উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে ছিলাম। আমার পরিচিত বন্ধুরা হলি আর্টিজান বেকারিতে ছিল। বন্ধু ক্লাউডিয়ার সঙ্গে কথা হয় ভোর ৪টায়। সে অনেক কষ্টে বেঁচে গিয়েছিল। সে ইতালি ফিরে গেলেও আবার বাংলাদেশে এসেছে। সে এখনও বাংলাদেশেই কাজ করে। আমরা বাংলাদেশকে ভালোবাসি। এছাড়া ঢাকাস্থ জাপানের রাষ্ট্রদূত, ইতালির রাষ্ট্রদূত, প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভীর স্ত্রী ও ইতালির নাগরিক আনেজি বারেলো ও ৪৬ বছর ধরে এ দেশে বসবাস করা ফাদার আতিলিও ফুল দিয়ে নিহতদের শ্রদ্ধা জানান।

শাওনের ছবি হাতে মায়ের কান্না

সকাল ১১টার দিকে হলি আর্টিজান বেকারিতে আসেন এই হামলায় নিহত জাকিরুল হাসান শাওনের মা মাসুদা বেগম। দুই হাতে শাওনের ছবি। একটি রক্তাক্ত। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে হত্যার বিচার পেলাম না। আমার ছেলেটাকে র‌্যাব, পুলিশ নির্যাতন কইরা মারছে। ওরে জঙ্গি মনে করছিল। কিন্তু দুই বছর পর ঠিকই প্রমাণ হইছে ও জঙ্গি ছিল না।’ তিনি বলেন, আমাদের খোঁজ কেউ নেয় না। মালিক মাসে মাসে পাঁচ হাজার করে টাকা দেয়। ওতে কোন রকম চলি। আমাগো দেখনের কেউ নাই।’

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১ জুলাই ৫ অস্ত্রধারী জঙ্গি হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা করে ৩ বাংলাদেশি, ৭ জাপানিজ, ৯ ইতালিয়ান ও ১ ভারতীয়কে নির্মমভাবে হত্যা করে। দীর্ঘ ১২ ঘণ্টার উদ্ধার অভিযানে ২ পুলিশ কর্মকর্তাও নিহত হন। হামলার পর সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গুলশান থানায় মামলা করা হয়। ওই মামলায় জামা’আতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) স্থানীয় শাখাকে অভিযুক্ত করা হয়। দুই বছর তদন্তের পর সিটিটিসি ইউনিট গত বছরের ২৩ জুলাই ৮ জঙ্গিকে অভিযুক্ত করে ঢাকার একটি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।