পাঠ্যপুস্তক প্রস্তুতকারীদের প্রতি শিক্ষামন্ত্রীর হুঁশিয়ারি

বিনামূল্যের পাঠ্যবই প্রস্তুতকারীদের হুঁশিয়ার করে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, নিজেদের স্বার্থকে সামনে রেখে যে সব মুদ্রণকারী নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গতকাল রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (এনসিটিবি) আয়োজিত একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের এনসিটিবি অনুমোদিত তিনটি বই বাজারজাতের জন্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।

কতিপয় অসাধু ব্যক্তি বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক তৈরিতে নানা ধরনের অনিয়ম করে বাধা সৃষ্টি করছেন-অভিযোগ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘তাদের কারণে নির্ধারিত সময়ে পাঠ্যপুস্তক পৌঁছানো নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তে হয়। এসব বন্ধ করতে হবে, যদি এসব অনিয়ম বন্ধ না হয় তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

দীপু মনি বলেন, ‘যারা পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন এবং পাঠ্যক্রম নির্বাচন করেন তাদের মনে রাখতে হবে, আমাদের সন্তানদের ৪র্থ বিপ্লবের জন্য তৈরি করতে হবে। তাই পাঠ্যক্রম নির্বাচন করার আগে ক্রমাগত ভাবতে হবে। আনন্দ পাঠের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান তৈরি করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে পাঠ্যক্রম নির্বাচন করা যেতে পারে। এনসিটিবি সরকারি অন্য প্রতিষ্ঠানের মতো নয়, এটি একটি জ্ঞান তৈরি করার কারখানা। তাই এ প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তাদের পদায়ন ও বদলির ক্ষেত্রে যোগ্য ব্যক্তিদের প্রাধান্য দিতে হবে।’

অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, ‘বর্তমানে বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক তৈরির জন্য মুদ্রণ শিল্প সমিতি একটি বড় শিল্প হিসেবে গড়ে উঠেছে। কেউ কেউ সরকারের বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রম বিতর্কিত করতে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি করছে। নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থের জন্য নানা অনিয়ম করছে। জাতীয় স্বার্থের কথা চিন্তা করে এসব বন্ধ করতে হবে। শুধু নিজের ক্ষুদ্র স্বার্থের কারণে বাজারে নকল বই বিক্রি করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ উপমন্ত্রী দেশের কথা ভেবে অপরাধ থেকে বিরত থাকতে মুদ্রাকর ও প্রকাশকদের প্রতি আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী এনসিটিবির অনুমোদিত ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা সাহিত্যপাঠ, বাংলা সহপাঠ ও ইংলিশ ফর টুডেÑ এ তিনটি বই উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মোট ছয়জন শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সোহরাব হোসেন, কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব মুনশী শাহাবুদ্দীন আহমেদ, এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা। এ সময় শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের কর্মকর্তা, বিভিন্ন বোর্ড চেয়ারম্যান, এনসিটিবি কর্মকর্তা, মুদ্রণকারী, প্রকাশক, শিক্ষার্থী-অভিভাবক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০১৯ , ১৮ আষাঢ় ১৪২৫, ২৮ শাওয়াল ১৪৪০

পাঠ্যপুস্তক প্রস্তুতকারীদের প্রতি শিক্ষামন্ত্রীর হুঁশিয়ারি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

বিনামূল্যের পাঠ্যবই প্রস্তুতকারীদের হুঁশিয়ার করে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, নিজেদের স্বার্থকে সামনে রেখে যে সব মুদ্রণকারী নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গতকাল রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (এনসিটিবি) আয়োজিত একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের এনসিটিবি অনুমোদিত তিনটি বই বাজারজাতের জন্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।

কতিপয় অসাধু ব্যক্তি বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক তৈরিতে নানা ধরনের অনিয়ম করে বাধা সৃষ্টি করছেন-অভিযোগ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘তাদের কারণে নির্ধারিত সময়ে পাঠ্যপুস্তক পৌঁছানো নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তে হয়। এসব বন্ধ করতে হবে, যদি এসব অনিয়ম বন্ধ না হয় তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

দীপু মনি বলেন, ‘যারা পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন এবং পাঠ্যক্রম নির্বাচন করেন তাদের মনে রাখতে হবে, আমাদের সন্তানদের ৪র্থ বিপ্লবের জন্য তৈরি করতে হবে। তাই পাঠ্যক্রম নির্বাচন করার আগে ক্রমাগত ভাবতে হবে। আনন্দ পাঠের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান তৈরি করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে পাঠ্যক্রম নির্বাচন করা যেতে পারে। এনসিটিবি সরকারি অন্য প্রতিষ্ঠানের মতো নয়, এটি একটি জ্ঞান তৈরি করার কারখানা। তাই এ প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তাদের পদায়ন ও বদলির ক্ষেত্রে যোগ্য ব্যক্তিদের প্রাধান্য দিতে হবে।’

অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, ‘বর্তমানে বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক তৈরির জন্য মুদ্রণ শিল্প সমিতি একটি বড় শিল্প হিসেবে গড়ে উঠেছে। কেউ কেউ সরকারের বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রম বিতর্কিত করতে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি করছে। নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থের জন্য নানা অনিয়ম করছে। জাতীয় স্বার্থের কথা চিন্তা করে এসব বন্ধ করতে হবে। শুধু নিজের ক্ষুদ্র স্বার্থের কারণে বাজারে নকল বই বিক্রি করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ উপমন্ত্রী দেশের কথা ভেবে অপরাধ থেকে বিরত থাকতে মুদ্রাকর ও প্রকাশকদের প্রতি আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী এনসিটিবির অনুমোদিত ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা সাহিত্যপাঠ, বাংলা সহপাঠ ও ইংলিশ ফর টুডেÑ এ তিনটি বই উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মোট ছয়জন শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সোহরাব হোসেন, কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব মুনশী শাহাবুদ্দীন আহমেদ, এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা। এ সময় শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের কর্মকর্তা, বিভিন্ন বোর্ড চেয়ারম্যান, এনসিটিবি কর্মকর্তা, মুদ্রণকারী, প্রকাশক, শিক্ষার্থী-অভিভাবক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।