বিকল্প ব্যবস্থা ছাড়া রিকশা বন্ধের সিদ্ধান্ত ভুল বলে মনে করেছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা। তারা বলছেন, সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনা করে বিকল্প ব্যবস্থা নিশ্চিত করে রিকশা বন্ধ করা দরকার। আর নয়তো প্রাইভেটকার বেড়ে যাওয়াসহ দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
গতকাল বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) কনফারেন্স হলে ‘ঢাকা শহরে রিকশা ও অযান্ত্রিক বাহনের চলাচল সম্পর্কে নগর পরিকল্পনার দৃষ্টিকোণ থেকে করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এমন অভিমত প্রকাশ করেন। সেমিনারে বিআইপি’র সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ ড. আদিল মুহাম্মদ খান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। অন্যদের মধ্যে বিআইপির সভাপতি একেএম আবুল কালাম আজাদ, সহসভাপতি আক্তার মাহমুদ, বুয়েট অধ্যাপক মুসলে উদ্দিন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
পরিকল্পনাবিদ আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, কম দৈর্ঘ্যের পথে কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য রিকশাকে বেছে নিয়েছে অনেকেই। ১৯৮৬ সালের ঢাকা সিটি করপোরেশনে সর্বশেষ রিকশা ভ্যানের নিবন্ধন দেয়া হয়। তারপর থেকে রাজধানীতে কাগজে কলমে আর কোন নতুন রিকশার লাইসেন্স বা অনুমোদন দেয়া হয়নি। দুই সিটি মিলিয়ে বৈধ রিকশার সংখ্যা ৭৯ হাজার ৫৪৭টি। তবে রাস্তায় চলাচলকারী রিকশার সংখ্যা বিভিন্ন তথ্যমতে ৮-১০ লাখ।
তিনি বলেন, ঢাকা মহানগরের সড়কের প্রায় ৫৫ শতাংশ জুড়ে চলাচল করে ব্যক্তিগত গাড়ি। আর এগুলো বহন করে মাত্র ১২ শতাংশ যাত্রী। একটি রিকশার চেয়ে আড়াই শতাংশ বেশি জায়গা দখল করে। সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি অবৈধ পার্কিং যানজটের অন্যতম কারণ। কিন্তু ঢাকা শহরে যোগাযোগ ব্যবস্থা টেকসই করার জন্য রিকশা বন্ধের টার্গেট করা হয়েছে। বিপরীতে ব্যক্তিগত গাড়ির জন্য রাস্তায় বিধিনিষেধ আরোপ এখনও অনুপস্থিত।
ঢাকার সমন্বিত পরিবহন পরিকল্পনা আর এসটিপি তথ্য তুলে ধরে এই পরিকল্পনাবিদ বলেন, সড়ক রিকশামুক্ত করে যানজট নিরসনের উদাহরণ নেই। রিকশামুক্ত সড়ক আনঅফিসিয়াল কার পার্কিং হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে সড়কের কার্যকর প্রশস্ততা এবং এর উপযোগিতা অর্জিত হচ্ছে না।
আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, রাস্তার সক্ষমতা বিবেচনা করে রিকশা এবং ব্যক্তিগত গাড়ির পরিমাণ এবং ব্যবহার নির্দিষ্ট করতে হবে। নগর পরিবহন ব্যবস্থায় রিকশার অবদানের প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে হবে। সমন্বিত পরিবহন পরিকল্পনা মেনে পর্যাপ্ত বাস নামিয়ে সব শ্রেণীপেশার মানুষের কমিউনিটিভিত্তিক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করতে হবে। যাতে মানুষ রিকশা কিংবা ব্যক্তিগত গাড়ির বিকল্প খুঁজে পায়। তিনি আরও বলেন, ব্যয়, সময় ও মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে। একটি সুনির্দিষ্ট নিয়ন্ত্রণ কাঠামো ও পরিকল্পনা ছাড়া যানজট ও পরিবেশ দূষণের বিরূপ প্রতিক্রিয়া সামনের দিনগুলোতে ঢাকার মানুষের জীবনকে আরও বিপর্যস্ত করে তুলবে।
শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০১৯ , ২৮ আষাঢ় ১৪২৫, ৮ জিলকদ ১৪৪০
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |
বিকল্প ব্যবস্থা ছাড়া রিকশা বন্ধের সিদ্ধান্ত ভুল বলে মনে করেছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা। তারা বলছেন, সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনা করে বিকল্প ব্যবস্থা নিশ্চিত করে রিকশা বন্ধ করা দরকার। আর নয়তো প্রাইভেটকার বেড়ে যাওয়াসহ দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
গতকাল বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) কনফারেন্স হলে ‘ঢাকা শহরে রিকশা ও অযান্ত্রিক বাহনের চলাচল সম্পর্কে নগর পরিকল্পনার দৃষ্টিকোণ থেকে করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এমন অভিমত প্রকাশ করেন। সেমিনারে বিআইপি’র সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ ড. আদিল মুহাম্মদ খান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। অন্যদের মধ্যে বিআইপির সভাপতি একেএম আবুল কালাম আজাদ, সহসভাপতি আক্তার মাহমুদ, বুয়েট অধ্যাপক মুসলে উদ্দিন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
পরিকল্পনাবিদ আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, কম দৈর্ঘ্যের পথে কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য রিকশাকে বেছে নিয়েছে অনেকেই। ১৯৮৬ সালের ঢাকা সিটি করপোরেশনে সর্বশেষ রিকশা ভ্যানের নিবন্ধন দেয়া হয়। তারপর থেকে রাজধানীতে কাগজে কলমে আর কোন নতুন রিকশার লাইসেন্স বা অনুমোদন দেয়া হয়নি। দুই সিটি মিলিয়ে বৈধ রিকশার সংখ্যা ৭৯ হাজার ৫৪৭টি। তবে রাস্তায় চলাচলকারী রিকশার সংখ্যা বিভিন্ন তথ্যমতে ৮-১০ লাখ।
তিনি বলেন, ঢাকা মহানগরের সড়কের প্রায় ৫৫ শতাংশ জুড়ে চলাচল করে ব্যক্তিগত গাড়ি। আর এগুলো বহন করে মাত্র ১২ শতাংশ যাত্রী। একটি রিকশার চেয়ে আড়াই শতাংশ বেশি জায়গা দখল করে। সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি অবৈধ পার্কিং যানজটের অন্যতম কারণ। কিন্তু ঢাকা শহরে যোগাযোগ ব্যবস্থা টেকসই করার জন্য রিকশা বন্ধের টার্গেট করা হয়েছে। বিপরীতে ব্যক্তিগত গাড়ির জন্য রাস্তায় বিধিনিষেধ আরোপ এখনও অনুপস্থিত।
ঢাকার সমন্বিত পরিবহন পরিকল্পনা আর এসটিপি তথ্য তুলে ধরে এই পরিকল্পনাবিদ বলেন, সড়ক রিকশামুক্ত করে যানজট নিরসনের উদাহরণ নেই। রিকশামুক্ত সড়ক আনঅফিসিয়াল কার পার্কিং হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে সড়কের কার্যকর প্রশস্ততা এবং এর উপযোগিতা অর্জিত হচ্ছে না।
আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, রাস্তার সক্ষমতা বিবেচনা করে রিকশা এবং ব্যক্তিগত গাড়ির পরিমাণ এবং ব্যবহার নির্দিষ্ট করতে হবে। নগর পরিবহন ব্যবস্থায় রিকশার অবদানের প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে হবে। সমন্বিত পরিবহন পরিকল্পনা মেনে পর্যাপ্ত বাস নামিয়ে সব শ্রেণীপেশার মানুষের কমিউনিটিভিত্তিক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করতে হবে। যাতে মানুষ রিকশা কিংবা ব্যক্তিগত গাড়ির বিকল্প খুঁজে পায়। তিনি আরও বলেন, ব্যয়, সময় ও মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে। একটি সুনির্দিষ্ট নিয়ন্ত্রণ কাঠামো ও পরিকল্পনা ছাড়া যানজট ও পরিবেশ দূষণের বিরূপ প্রতিক্রিয়া সামনের দিনগুলোতে ঢাকার মানুষের জীবনকে আরও বিপর্যস্ত করে তুলবে।