একনেকে ৫১৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮ প্রকল্প অনুমোদন

‘ঢাকা বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ’ প্রকল্পসহ মোট ৮ প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ১৪২ কোটি ৬ লাখ টাকা। বাসস।

গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এনইসি সম্মেলনকক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় একনেক সভায় এসব প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। সভা শেষে পরিকল্পনা সচিব মোহাম্মদ নুরুল আমিন প্রকল্প সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

তিনি জানান, চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় একনেক সভায় ৫ হাজার ১৪২ কোটি ৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে খরচ করা হবে ৪ হাজার ১২৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা ও প্রকল্প সাহায্য হিসেবে বৈদেশিক সহায়তা পাওয়া যাবে ১ হাজার কোটি ১২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।

অনুমোদিত প্রকল্পের মধ্যে ৬টি নতুন প্রকল্প এবং ২টি সংশোধিত প্রকল্প রয়েছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ঢাকা বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ২ হাজার ৬০৬ কোটি টাকা। স্থানীয় সরকার বিভাগ ঢাকা বিভাগের ১৩ জেলার ৬৭ উপজেলায় ২০২৪ নাগাদ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো- গ্রামীণ যোগাযোগ অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতি ও প্রবৃদ্ধি জোরদার করা। একই সঙ্গে গ্রামীণ যোগাযোগ নেটওয়ার্ক শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে পল্লী এলাকায় নাগরিক সুবিধা সম্প্রসারণের পাশাপাশি কর্মসংস্থান তৈরি, প্রকল্পের আওতায় ১০০১ দশমিক ৫১ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার, ৫৮৫৭ মিটার ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ, ৩০ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ এবং ২৪০টি ইন্টারসেকশন উন্নয়নের কাজ করা হবে।

নুরুল আমিন জানান, প্রধানমন্ত্রী পর্যটন জেলা কক্সবাজারকে পরিকল্পিতভাবে সাজাতে একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরির জন্য কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া জেলা প্রশাসনকে আরও একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরির নির্দেশ দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগে মাস্টারপ্ল্যান হবে তারপর উন্নয়ন প্রকল্প নিতে হবে। সেসব প্রকল্পের মানসম্মত বাস্তবায়ন এবং যেখানে-সেখানে ভবন নির্মাণ করা যাবে না। প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে পর্যটন নগরী কক্সবাজার শহর রক্ষায় সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় ঝাউবন লাগাতে হবে। বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি ২-এর সহায়ক অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা কালিয়াকৈরে স্থাপিতব্য বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কে খেলাধুলা, বিনোদন এবং শপিংমল তৈরির নির্দেশ দেন।

পরিকল্পনা সচিব জানান, প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে মিনি স্টেডিয়াম তৈরি করতে বলেছেন। সেসব স্টেডিয়াম কোন স্কুল, কলেজ বা মাদ্রাসার মাঠে নয়, আলাদা স্থানে হতে হবে। প্রয়োজনে উপজেলার বাইরে কোন স্থানে স্টেডিয়ামগুলো নির্মাণ করতে হবে। এসব স্টেয়িামের একদিকে গ্যালারি তৈরি করতে হবে। বাকি তিন দিক খোলা রাখতে হবে। যাতে মাঠের ভেতর কী হচ্ছে তা সাধারণ মানুষ দেখতে পারেন।

প্রধানমন্ত্রী ঢাকা থেকে কালিয়াকৈর পর্যন্ত ননস্টপ ট্রেন সার্ভিস চালু এবং অন্য রুটের ট্রেনগুলো যাতে স্টেশনে ধরে যায় সে ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন।

একনেকে অনুমোদিত অন্য প্রকল্পসমূহ হলো- গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ‘হলিডে মোড়-বাজারঘাটা-লারপাড়া (বাসস্ট্যান্ড) প্রধান সড়ক সংস্কারসহ প্রশস্তকরণ’ প্রকল্প, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ‘চট্টগ্রামের মীরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপন’ প্রকল্প, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ‘বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি ২-এর সহায়ক অবকাঠামো নির্মাণ’ প্রকল্প। এছাড়া কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘পাবনা-নাটোর-সিরাজগঞ্জ জেলায় ভূ-উপরিস্থ পানির মাধ্যমে সেচ উন্নয়ন’ প্রকল্প, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘পাবর্ত্য চট্টগ্রাম পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প ২য় পর্যায় (আউটপুট-বি, রুরাল কম্পোনেন্ট) (৩য় সংশোধিত) প্রকল্প, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভেটেরিনারি পাবলিক হেলথ সার্ভিস জোরদারকরণ’ প্রকল্প এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ‘এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জবস (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প।

image
আরও খবর
কাবিননামার পাঁচ নম্বর বিধি কেন অবৈধ নয়
বাংলাদেশ নারী ক্ষমতায়নের প্রকৃষ্ট উদাহরণ
২৫-৩১ জুলাই পর্যন্ত মশক নিধন সপ্তাহ
রংপুরেই সাবেক স্বৈরশাসক এরশাদের লাশ দাফন
২০২১ সালের মধ্যে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য ৬ হাজার কোটি ডলার
চীনা ডেমো ট্রেন আর কিনবে না সরকার
৭ কলেজের শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
দেশজুড়ে গুম খুন-ধর্ষণ মহামারী
জঙ্গি সংগঠন ধ্বংস করেছি, মতাদর্শ রয়ে গেছে
চার বছর পর পলাতক আসামি গ্রেফতার
সাংবাদিক শিমুল হত্যা মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর
রাষ্ট্রপতির ক্ষমার ১০ বছর পর মুক্তি পেলেন আজমত আলী
খুলনায় ক্ষুদের খাল খননে হরিলুট
কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় আহত পুলিশ সার্জেন্ট কিবরিয়ার মৃত্যু
বিয়ের আনন্দবাড়ি বিষাদে পরিণত

বুধবার, ১৭ জুলাই ২০১৯ , ৩ শ্রাবন ১৪২৫, ১৩ জিলকদ ১৪৪০

একনেকে ৫১৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮ প্রকল্প অনুমোদন

image

‘ঢাকা বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ’ প্রকল্পসহ মোট ৮ প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ১৪২ কোটি ৬ লাখ টাকা। বাসস।

গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এনইসি সম্মেলনকক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় একনেক সভায় এসব প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। সভা শেষে পরিকল্পনা সচিব মোহাম্মদ নুরুল আমিন প্রকল্প সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

তিনি জানান, চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় একনেক সভায় ৫ হাজার ১৪২ কোটি ৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে খরচ করা হবে ৪ হাজার ১২৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা ও প্রকল্প সাহায্য হিসেবে বৈদেশিক সহায়তা পাওয়া যাবে ১ হাজার কোটি ১২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।

অনুমোদিত প্রকল্পের মধ্যে ৬টি নতুন প্রকল্প এবং ২টি সংশোধিত প্রকল্প রয়েছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ঢাকা বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ২ হাজার ৬০৬ কোটি টাকা। স্থানীয় সরকার বিভাগ ঢাকা বিভাগের ১৩ জেলার ৬৭ উপজেলায় ২০২৪ নাগাদ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো- গ্রামীণ যোগাযোগ অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতি ও প্রবৃদ্ধি জোরদার করা। একই সঙ্গে গ্রামীণ যোগাযোগ নেটওয়ার্ক শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে পল্লী এলাকায় নাগরিক সুবিধা সম্প্রসারণের পাশাপাশি কর্মসংস্থান তৈরি, প্রকল্পের আওতায় ১০০১ দশমিক ৫১ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার, ৫৮৫৭ মিটার ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ, ৩০ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ এবং ২৪০টি ইন্টারসেকশন উন্নয়নের কাজ করা হবে।

নুরুল আমিন জানান, প্রধানমন্ত্রী পর্যটন জেলা কক্সবাজারকে পরিকল্পিতভাবে সাজাতে একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরির জন্য কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া জেলা প্রশাসনকে আরও একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরির নির্দেশ দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগে মাস্টারপ্ল্যান হবে তারপর উন্নয়ন প্রকল্প নিতে হবে। সেসব প্রকল্পের মানসম্মত বাস্তবায়ন এবং যেখানে-সেখানে ভবন নির্মাণ করা যাবে না। প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে পর্যটন নগরী কক্সবাজার শহর রক্ষায় সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় ঝাউবন লাগাতে হবে। বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি ২-এর সহায়ক অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা কালিয়াকৈরে স্থাপিতব্য বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কে খেলাধুলা, বিনোদন এবং শপিংমল তৈরির নির্দেশ দেন।

পরিকল্পনা সচিব জানান, প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে মিনি স্টেডিয়াম তৈরি করতে বলেছেন। সেসব স্টেডিয়াম কোন স্কুল, কলেজ বা মাদ্রাসার মাঠে নয়, আলাদা স্থানে হতে হবে। প্রয়োজনে উপজেলার বাইরে কোন স্থানে স্টেডিয়ামগুলো নির্মাণ করতে হবে। এসব স্টেয়িামের একদিকে গ্যালারি তৈরি করতে হবে। বাকি তিন দিক খোলা রাখতে হবে। যাতে মাঠের ভেতর কী হচ্ছে তা সাধারণ মানুষ দেখতে পারেন।

প্রধানমন্ত্রী ঢাকা থেকে কালিয়াকৈর পর্যন্ত ননস্টপ ট্রেন সার্ভিস চালু এবং অন্য রুটের ট্রেনগুলো যাতে স্টেশনে ধরে যায় সে ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন।

একনেকে অনুমোদিত অন্য প্রকল্পসমূহ হলো- গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ‘হলিডে মোড়-বাজারঘাটা-লারপাড়া (বাসস্ট্যান্ড) প্রধান সড়ক সংস্কারসহ প্রশস্তকরণ’ প্রকল্প, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ‘চট্টগ্রামের মীরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপন’ প্রকল্প, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ‘বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি ২-এর সহায়ক অবকাঠামো নির্মাণ’ প্রকল্প। এছাড়া কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘পাবনা-নাটোর-সিরাজগঞ্জ জেলায় ভূ-উপরিস্থ পানির মাধ্যমে সেচ উন্নয়ন’ প্রকল্প, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘পাবর্ত্য চট্টগ্রাম পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প ২য় পর্যায় (আউটপুট-বি, রুরাল কম্পোনেন্ট) (৩য় সংশোধিত) প্রকল্প, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভেটেরিনারি পাবলিক হেলথ সার্ভিস জোরদারকরণ’ প্রকল্প এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ‘এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জবস (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প।