ব্যাংক কর্মকর্তা নিজেই পরিবারকে জঙ্গি বানিয়েছে

ডিএমপি

রাজধানীর রূপনগরের একটি বাসা থেকে পুলিশের অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট যে পাঁচ জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে তারা মূলত একই পরিবারের সদস্য। এর মধ্যে পরিবারের প্রধান ব্যক্তি আহমদ আলী (৫২) সোনালী ব্যাংক মতিঝিল শাখায় প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। পরিবারের অন্য সদস্যরা হলো, তার স্ত্রী সালমা আহমেদ (৪৫), দুই ছেলে আবু সালেহ মোহাম্মদ জাকারিয়া (২৪) ও আবু সালেহ মোহাম্মদ কিবরিয়া (২২) এবং মেয়ে আসমা ফেরদৌসী রিফা (২১)। এরা সবাই জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সঙ্গে সম্পৃক্ত। রাজধানীর রূপনগরের ২৮নম্বর রোডের ২৩নম্বর বাসা থেকে গত শুক্রবার মধ্যরাতে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশের অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট।

এ বিষয়ে গতকাল অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. মাহিদুজ্জামান জানান, গ্রেফতার ব্যক্তিরা ওই এলাকায় ১০ বছর ধরে থাকেন। তবে স্থানীয় কারও সঙ্গে তারা যোগাযোগ রাখতেন না। সন্দেহজনক অনেক লোকজন এই বাসায় যাতায়াত করলেও আশপাশের কেউ টের পায়নি। ওই বাসাতেই সাংগঠনিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হত। নিজেদের গোপনীতার স্বার্থে তারা দূরের কোন বাজার থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতেন। আহমদ আলী সোনালী ব্যাংকের কাজ শেষে বাসায় ফিরে পরিবারের সদস্যদের জঙ্গি কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ করতেন। এমনকি ছেলে-মেয়েদের বাইরে বের হওয়া ও পড়াশুনাও বন্ধ করে দেন। তারা আশপাশের কারও সঙ্গে মিশত না এবং কোন অনুষ্ঠানেও যাওয়া তাদের নিষেধ ছিল।

মাহিদুজ্জামান আরও বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অ্যান্টি টেরোরিজমের একটি দল শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে রূপনগর আবাসিক এলাকার ওই বাসায় অভিযান চালায়। শুরুতে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা ঘরের ভেতরে হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। পরে স্থানীয় লোকদের সহযোগিতায় ওই বাসার দরজা ভেঙে প্রবেশ করতে চাইলে তারা দেশীয় অস্ত্রসহ হামলা চালায়। স্থানীয়দের নিরাপত্তার স্বার্থে ওই সময় পুলিশ ৭ রাউন্ড গুলি চালায়। জঙ্গিদের হামলায় পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়। এছাড়া পুলিশের ছোড়া গুলিতে আবু সালেহ মোহাম্মদ জাকারিয়া আহত হয়। তিন পুলিশ সদস্যকে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে এবং জাকারিয়াকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তিনি জানান, রূপনগরের ওই বাসা থেকে পুলিশ এখন পর্যন্ত দেশীয় অস্ত্র, বিস্ফোরণের ধ্বংসাবশেষ, চূর্ণ এবং রাসায়নিক পদার্থ, বোমা তৈরির হার্ডওয়্যার, জিহাদি বই, মোবাইল ও ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এই আস্তানায় যারা যাতায়াত করত তাদের গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সোমবার, ২৯ জুলাই ২০১৯ , ১৪ শ্রাবন ১৪২৫, ২৫ জিলকদ ১৪৪০

ব্যাংক কর্মকর্তা নিজেই পরিবারকে জঙ্গি বানিয়েছে

ডিএমপি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

রাজধানীর রূপনগরের একটি বাসা থেকে পুলিশের অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট যে পাঁচ জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে তারা মূলত একই পরিবারের সদস্য। এর মধ্যে পরিবারের প্রধান ব্যক্তি আহমদ আলী (৫২) সোনালী ব্যাংক মতিঝিল শাখায় প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। পরিবারের অন্য সদস্যরা হলো, তার স্ত্রী সালমা আহমেদ (৪৫), দুই ছেলে আবু সালেহ মোহাম্মদ জাকারিয়া (২৪) ও আবু সালেহ মোহাম্মদ কিবরিয়া (২২) এবং মেয়ে আসমা ফেরদৌসী রিফা (২১)। এরা সবাই জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সঙ্গে সম্পৃক্ত। রাজধানীর রূপনগরের ২৮নম্বর রোডের ২৩নম্বর বাসা থেকে গত শুক্রবার মধ্যরাতে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশের অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট।

এ বিষয়ে গতকাল অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. মাহিদুজ্জামান জানান, গ্রেফতার ব্যক্তিরা ওই এলাকায় ১০ বছর ধরে থাকেন। তবে স্থানীয় কারও সঙ্গে তারা যোগাযোগ রাখতেন না। সন্দেহজনক অনেক লোকজন এই বাসায় যাতায়াত করলেও আশপাশের কেউ টের পায়নি। ওই বাসাতেই সাংগঠনিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হত। নিজেদের গোপনীতার স্বার্থে তারা দূরের কোন বাজার থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতেন। আহমদ আলী সোনালী ব্যাংকের কাজ শেষে বাসায় ফিরে পরিবারের সদস্যদের জঙ্গি কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ করতেন। এমনকি ছেলে-মেয়েদের বাইরে বের হওয়া ও পড়াশুনাও বন্ধ করে দেন। তারা আশপাশের কারও সঙ্গে মিশত না এবং কোন অনুষ্ঠানেও যাওয়া তাদের নিষেধ ছিল।

মাহিদুজ্জামান আরও বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অ্যান্টি টেরোরিজমের একটি দল শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে রূপনগর আবাসিক এলাকার ওই বাসায় অভিযান চালায়। শুরুতে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা ঘরের ভেতরে হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। পরে স্থানীয় লোকদের সহযোগিতায় ওই বাসার দরজা ভেঙে প্রবেশ করতে চাইলে তারা দেশীয় অস্ত্রসহ হামলা চালায়। স্থানীয়দের নিরাপত্তার স্বার্থে ওই সময় পুলিশ ৭ রাউন্ড গুলি চালায়। জঙ্গিদের হামলায় পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়। এছাড়া পুলিশের ছোড়া গুলিতে আবু সালেহ মোহাম্মদ জাকারিয়া আহত হয়। তিন পুলিশ সদস্যকে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে এবং জাকারিয়াকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তিনি জানান, রূপনগরের ওই বাসা থেকে পুলিশ এখন পর্যন্ত দেশীয় অস্ত্র, বিস্ফোরণের ধ্বংসাবশেষ, চূর্ণ এবং রাসায়নিক পদার্থ, বোমা তৈরির হার্ডওয়্যার, জিহাদি বই, মোবাইল ও ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এই আস্তানায় যারা যাতায়াত করত তাদের গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।