মাছ উৎপাদনে দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু বলেছে, বাংলাদেশ বর্তমানে মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপের ফলে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দেশে চাহিদার তুলনায় প্রায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন বেশি মৎস্য উৎপাদন হয়েছে। গতকাল একাদশ জাতীয় সংসদরে ৬ষ্ঠ অধিবেশনের ১৭তম কার্যদিবসে সরকারি দলের সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকারের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এর আগে বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনের শুরুতে প্রশ্নোত্তর পর্ব টেবিলে উপস্থাপিত হয়।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, বর্তমানে দেশে মাথাপিছু মাছের চাহিদা ৬০ গ্রাম এবং এ চাহিদার বিপরীতে মাছ গ্রহণের পরিমাণ ৬২ দশমিক ৫৮ গ্রাম। এ হিসাবে দেশে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৪২ লাখ ৭৭ হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপাদিত হয়েছে। এ সময়ে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪২ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন।

উচ্চবিত্তদের জন্য ভারত-পাকিস্তান থেকে মৎস্য আমদানি : তিনি জানান, মৎস্য সম্পদে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার পরও দেশের উচ্চবিত্ত মানুষের জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে মাছ আমদানি করা হয়। আমদানি করা দেশের মধ্যে রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, মায়ানমার, উরুগুয়ে, থাইল্যান্ড, চীন, ভিয়েতনাম ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।

দেশে মৎস্যবীজ উৎপাদন খামার ১৪৭টি : সরকারি দলের সংসদ সদস্য নাজমা আকতারের প্রশ্নের জবাবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, দেশের ১৪৭টি সরকারি মৎস্যবীজ উৎপাদন খামারে ২০১৮ সালে ১২ হাজার ৫৯ কেজি রেণু এবং ৩ কোটি ৫৭ লাখ ১৩ হাজার মাছের পোনা উৎপাদিত হয়েছে। এছাড়া একই সময় গলদা চিংড়ির ২৭টি সরকারি এবং বেসরকারি ৪৯টি বাগদা চিংড়ি হ্যাচারিসহ মোট ৭৬টি হ্যাচারি থেকে ১ হাজার ৪১৭ কোটি ২৫ লাখ পোস্ট লার্ভা উৎপাদিত হয়েছে। তিনি আরও জানান এছাড়া দেশের আরও ৮২৪টি বেসরকারি মৎস্য হ্যাচারি থেকে ২০১৮ সালে ৬ লাখ ৭৪ হাজার ৬৯৫ কেজি রেণু এবং ২৬ হাজার ৯৪৯ লাখ তেলাপিয়া জুভেনাইল উৎপাদিত হয়েছে।

নদীর ৫৯৩ একর জমি উদ্ধার ও ৫৫৭৪ অবৈধ স্থপনা উচ্ছেদ : পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেছেন, অবৈধ নদী দখলদারদের কবল থেকে ৬৪ জেলায় এ পর্যন্ত ৫৯৩ একর জমি উদ্ধার ও ৫ হাজার ৫৭৪টি অবৈধ স্থপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী ৯ হাজার ২৯৪টি অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করা হয়েছে এবং নদীর জমি উদ্ধারে এবং দেশের নদ-নদীর পানি দূষণরোধে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। গতকাল সংসদে সরকারি দলের সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদের প্রশ্নর জবাবে প্রতিমন্ত্রী সংসদে এসব তথ্য জানান।

৪৪৮টি ছোট নদী-খাল-জলাশয় খনন : প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক সংসদকে আরও জানান, দেশের ৬৪ জেলার ৩৭৫টি উপজেলায় ৪৪৮টি ছোট নদী ও খাল এবং জলাশয় খনন ও পুনঃখনন কাজ চলছে। আগামী ১০ বছরে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। সরকারি দলের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঢাকার চারপাশে প্রবাহিত বুড়িগঙ্গা শীতলক্ষ্যা তুরাগ,বালু নদী ছাড়াও চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী দখলমুক্ত ও দূষণমুক্ত করার লক্ষ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় একটি ‘অবৈধ উচ্ছেদের লক্ষ্যে ক্রাশ প্রোগাম’ পরিচালনা করছে। প্রতিমন্ত্রী জানান, পর্যায়ক্রমে দেশের সব মৃত প্রায় নদী উদ্ধার করে পুনঃখনন করা হবে।

মঙ্গলবার, ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ২১ মাঘ ১৪২৬, ৯ জমাদিউল সানি ১৪৪১

মাছ উৎপাদনে দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু বলেছে, বাংলাদেশ বর্তমানে মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপের ফলে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দেশে চাহিদার তুলনায় প্রায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন বেশি মৎস্য উৎপাদন হয়েছে। গতকাল একাদশ জাতীয় সংসদরে ৬ষ্ঠ অধিবেশনের ১৭তম কার্যদিবসে সরকারি দলের সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকারের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এর আগে বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনের শুরুতে প্রশ্নোত্তর পর্ব টেবিলে উপস্থাপিত হয়।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, বর্তমানে দেশে মাথাপিছু মাছের চাহিদা ৬০ গ্রাম এবং এ চাহিদার বিপরীতে মাছ গ্রহণের পরিমাণ ৬২ দশমিক ৫৮ গ্রাম। এ হিসাবে দেশে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৪২ লাখ ৭৭ হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপাদিত হয়েছে। এ সময়ে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪২ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন।

উচ্চবিত্তদের জন্য ভারত-পাকিস্তান থেকে মৎস্য আমদানি : তিনি জানান, মৎস্য সম্পদে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার পরও দেশের উচ্চবিত্ত মানুষের জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে মাছ আমদানি করা হয়। আমদানি করা দেশের মধ্যে রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, মায়ানমার, উরুগুয়ে, থাইল্যান্ড, চীন, ভিয়েতনাম ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।

দেশে মৎস্যবীজ উৎপাদন খামার ১৪৭টি : সরকারি দলের সংসদ সদস্য নাজমা আকতারের প্রশ্নের জবাবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, দেশের ১৪৭টি সরকারি মৎস্যবীজ উৎপাদন খামারে ২০১৮ সালে ১২ হাজার ৫৯ কেজি রেণু এবং ৩ কোটি ৫৭ লাখ ১৩ হাজার মাছের পোনা উৎপাদিত হয়েছে। এছাড়া একই সময় গলদা চিংড়ির ২৭টি সরকারি এবং বেসরকারি ৪৯টি বাগদা চিংড়ি হ্যাচারিসহ মোট ৭৬টি হ্যাচারি থেকে ১ হাজার ৪১৭ কোটি ২৫ লাখ পোস্ট লার্ভা উৎপাদিত হয়েছে। তিনি আরও জানান এছাড়া দেশের আরও ৮২৪টি বেসরকারি মৎস্য হ্যাচারি থেকে ২০১৮ সালে ৬ লাখ ৭৪ হাজার ৬৯৫ কেজি রেণু এবং ২৬ হাজার ৯৪৯ লাখ তেলাপিয়া জুভেনাইল উৎপাদিত হয়েছে।

নদীর ৫৯৩ একর জমি উদ্ধার ও ৫৫৭৪ অবৈধ স্থপনা উচ্ছেদ : পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেছেন, অবৈধ নদী দখলদারদের কবল থেকে ৬৪ জেলায় এ পর্যন্ত ৫৯৩ একর জমি উদ্ধার ও ৫ হাজার ৫৭৪টি অবৈধ স্থপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী ৯ হাজার ২৯৪টি অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করা হয়েছে এবং নদীর জমি উদ্ধারে এবং দেশের নদ-নদীর পানি দূষণরোধে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। গতকাল সংসদে সরকারি দলের সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদের প্রশ্নর জবাবে প্রতিমন্ত্রী সংসদে এসব তথ্য জানান।

৪৪৮টি ছোট নদী-খাল-জলাশয় খনন : প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক সংসদকে আরও জানান, দেশের ৬৪ জেলার ৩৭৫টি উপজেলায় ৪৪৮টি ছোট নদী ও খাল এবং জলাশয় খনন ও পুনঃখনন কাজ চলছে। আগামী ১০ বছরে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। সরকারি দলের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঢাকার চারপাশে প্রবাহিত বুড়িগঙ্গা শীতলক্ষ্যা তুরাগ,বালু নদী ছাড়াও চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী দখলমুক্ত ও দূষণমুক্ত করার লক্ষ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় একটি ‘অবৈধ উচ্ছেদের লক্ষ্যে ক্রাশ প্রোগাম’ পরিচালনা করছে। প্রতিমন্ত্রী জানান, পর্যায়ক্রমে দেশের সব মৃত প্রায় নদী উদ্ধার করে পুনঃখনন করা হবে।