মাঠে নামছে ‘দুর্যোগে আলোর গেরিলা’

করোনা সংকটে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে ‘দুর্যোগে আলোর গেরিলা’ নামে বিশেষ বাহিনী গঠন করা হচ্ছে। সব সমিতিকে এ বাহিনী গঠন করে আগামী শনিবারের মধ্যে সদর দফতরে তালিকা পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আরইবির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মঈন উদ্দিন।

এ বিষয়ে মেজর জেনারেল (অব.) মঈন উদ্দিন বলেন, করোনাভাইরাসের প্রদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী এখন মানুষ বেশিরভাগ সময়ে ঘরে থাকছে। আমরা এই পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ বিতরণ স্বাভাবিক রাখার উদ্যোগের অংশ হিসেবে আলোর গেরিলা গঠন করছি। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে লকডাউনের আওতাভুক্ত এলাকা আরও ঘনীভূত হতে পারে। এর বাইরে মৌসুমি ঝড়-বৃষ্টি বা কালবৈশাখী ঝড়ে কোন অস্বাভাবিক পরিস্থিতির উদ্ভব হলে বর্তমান পদ্ধতির মাধ্যমে দ্রুত স্বাভাবিক বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করা সম্ভব নাও হতে পারে। জেলা পর্যায়ে হাসপাতলগুলোতে আইসোলেশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেখানেও বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে হবে। চলমান পরিস্থিতি এবং বৈরী আবহাওয়ার মৌসুম বিবেচনা করে স্থানীয় সমস্যা সমাধানের জন্য উদ্ভাবনী উদ্যোগ ‘দুর্যোগে আলোর গেরিলা’ গঠন এবং কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

আরইবির চেয়ারম্যান বলেন, সমিতির সদর দফতর, জোনাল অফিস, সাব-জোনাল অফিস, এরিয়া অফিস, অভিযোগ কেন্দ্র- প্রতিটির জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক গেরিলা ইউনিট থাকবে, যার ১টি বা একাধিক সর্বদা কর্তব্যরত থাকবে এবং অপরগুলো নির্দেশনার ১৫ মিনিটের মধ্যে কাজে যোগদানের জন্য প্রস্তুৎ থাকবে। বলা হচ্ছে প্রতিটি গেরিলা ইউনিটে ওই এলাকার শ্রমিক/কর্মী নিয়োজিত করলে অন্য অঞ্চলে/এলাকায় যাতায়াতের প্রয়োজন হবে না। এতে সামাজিক/শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত হবে এবং আনাগোনা হ্রাস পাবে।

আরইবি সূত্র জানায়, দেশে এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিতরণে নানা সংকট সৃষ্টি হয়। এই সময়ের মধ্যে গ্রীষ্মের তাপমাত্রা বেশি থাকে। আবার ঝড়-বৃষ্টির মৌসুম চলাতে গ্রামীণ জনপদ দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকে। এছাড়া আগামী ২৪ বা ২৫ এপ্রিল থেকে রোজা শুরু হলে সেহরি, ইফতার ও তারাবিতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করাটাও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সূত্র জানায়, আলোর গেরিলা গঠনে আরইবি চেয়ারম্যান সব সমিতিকে চিঠি দিয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন।

চিঠিতে চেয়ারম্যান বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ, গ্রীষ্মের তাপদাহ, মাহে রমজান এবং ঝড়-বৃষ্টির সময়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দ্রুত নিরসনের জন্য ‘সব ত্যাগে পল্লী বিদ্যুৎ রাখিব সচল’ মূলমন্ত্র ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে উদ্ভাবনী উদ্যোগে ‘দুর্যোগে আলোর গেরিলা’ গঠন করে পরিচালনা করতে হবে। সমিতির নিজস্ব জনবল ছাড়াও সমিতির ভৌগোলিক এলাকায় ব্যক্তিগত/ প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে অভিজ্ঞ জনসম্পদ রয়েছে। এ জনসম্পদ কাজে লাগিয়ে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানের কথা ভাবতে হবে। এসব ক্ষেত্রে সমিতির লাইনম্যান, মিনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার/ফোরম্যান/লাইনম্যান, পল্লী বিদ্যুায়ন বোর্ডের পূর্বযোগ্যতা/সাময়িক পূর্বযোগ্যতাপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার/ফোরম্যান/লাইনম্যান, রেগুলার ভিলেজ ইলেকট্রিশিয়ান, প্রতিটি সমিতিতে ৩ ব্যাচে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ভিলেজ ইলেকট্রিশিয়ান ও স্থানীয় সৎ, কর্মঠ ও দক্ষ কারিগর/শ্রমিক, এসব জনবলের সমন্বয়ে ‘দুর্যোগে আলোর গেরিলা’ ইউনিট গঠিত হবে।

আরইবি জানায়, দুর্যোগে আলোর গেরিলা পরিচালনার জন্য ১২ দফা নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে জেনারেল ম্যানেজারদের নির্দেশনা মেনে কাজ করতে হবে। আর দিনের পাশাপাশি রাতেও আলোর গেরিলারা যাতে কাজ করতে পারে সেই ব্যবস্থা রাখতে হবে। আলোর গেরিলাদের সেহরি ও ইফতারের ব্যবস্থা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড করবে।

আরও খবর
সারাদেশ ঝুঁকিপূর্ণ
জাতিসংঘ তহবিল গঠন না করলে ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে ডাব্লিউএফপি সংবাদ ডেস্ক করোনাভাইরাসের কারণে থমকে যাওয়া বিশ
আরও ৫০ লাখ দরিদ্র লোককে রেশনকার্ড দেয়া হবে : প্রধানমন্ত্রী
বাদুরের দুই প্রজাতির মধ্যে করোনার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে
আজ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস
করোনা সৃষ্টি করছে দীর্ঘমেয়াদি প্রাণঘাতী সংকট
ইরানের ম্যাজিকাল ডিভাইসে ৫ সেকেন্ডে শনাক্ত হবে করোনা রোগী
আইইডিসিআরের ৬ কর্মী আক্রান্ত
এসএসসি ফল নির্ধারিত সময়ে প্রকাশ হচ্ছে না
করোনায় মৃত্যুর চেয়ে সুস্থতার হার বেশি
টিভি চ্যানেলের আরও ৪ জন করোনা আক্রান্ত
২৫০ ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বার ডিলার আটক
করোনা আক্রান্ত বাংলাদেশি ১৩০০ ছাড়াল

শুক্রবার, ১৭ এপ্রিল ২০২০ , ৪ বৈশাখ ১৪২৭, ২২ শাবান ১৪৪১

পল্লী বিদ্যুতের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে

মাঠে নামছে ‘দুর্যোগে আলোর গেরিলা’

ফয়েজ আহমেদ তুষার |

করোনা সংকটে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে ‘দুর্যোগে আলোর গেরিলা’ নামে বিশেষ বাহিনী গঠন করা হচ্ছে। সব সমিতিকে এ বাহিনী গঠন করে আগামী শনিবারের মধ্যে সদর দফতরে তালিকা পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আরইবির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মঈন উদ্দিন।

এ বিষয়ে মেজর জেনারেল (অব.) মঈন উদ্দিন বলেন, করোনাভাইরাসের প্রদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী এখন মানুষ বেশিরভাগ সময়ে ঘরে থাকছে। আমরা এই পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ বিতরণ স্বাভাবিক রাখার উদ্যোগের অংশ হিসেবে আলোর গেরিলা গঠন করছি। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে লকডাউনের আওতাভুক্ত এলাকা আরও ঘনীভূত হতে পারে। এর বাইরে মৌসুমি ঝড়-বৃষ্টি বা কালবৈশাখী ঝড়ে কোন অস্বাভাবিক পরিস্থিতির উদ্ভব হলে বর্তমান পদ্ধতির মাধ্যমে দ্রুত স্বাভাবিক বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করা সম্ভব নাও হতে পারে। জেলা পর্যায়ে হাসপাতলগুলোতে আইসোলেশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেখানেও বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে হবে। চলমান পরিস্থিতি এবং বৈরী আবহাওয়ার মৌসুম বিবেচনা করে স্থানীয় সমস্যা সমাধানের জন্য উদ্ভাবনী উদ্যোগ ‘দুর্যোগে আলোর গেরিলা’ গঠন এবং কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

আরইবির চেয়ারম্যান বলেন, সমিতির সদর দফতর, জোনাল অফিস, সাব-জোনাল অফিস, এরিয়া অফিস, অভিযোগ কেন্দ্র- প্রতিটির জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক গেরিলা ইউনিট থাকবে, যার ১টি বা একাধিক সর্বদা কর্তব্যরত থাকবে এবং অপরগুলো নির্দেশনার ১৫ মিনিটের মধ্যে কাজে যোগদানের জন্য প্রস্তুৎ থাকবে। বলা হচ্ছে প্রতিটি গেরিলা ইউনিটে ওই এলাকার শ্রমিক/কর্মী নিয়োজিত করলে অন্য অঞ্চলে/এলাকায় যাতায়াতের প্রয়োজন হবে না। এতে সামাজিক/শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত হবে এবং আনাগোনা হ্রাস পাবে।

আরইবি সূত্র জানায়, দেশে এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিতরণে নানা সংকট সৃষ্টি হয়। এই সময়ের মধ্যে গ্রীষ্মের তাপমাত্রা বেশি থাকে। আবার ঝড়-বৃষ্টির মৌসুম চলাতে গ্রামীণ জনপদ দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকে। এছাড়া আগামী ২৪ বা ২৫ এপ্রিল থেকে রোজা শুরু হলে সেহরি, ইফতার ও তারাবিতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করাটাও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সূত্র জানায়, আলোর গেরিলা গঠনে আরইবি চেয়ারম্যান সব সমিতিকে চিঠি দিয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন।

চিঠিতে চেয়ারম্যান বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ, গ্রীষ্মের তাপদাহ, মাহে রমজান এবং ঝড়-বৃষ্টির সময়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দ্রুত নিরসনের জন্য ‘সব ত্যাগে পল্লী বিদ্যুৎ রাখিব সচল’ মূলমন্ত্র ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে উদ্ভাবনী উদ্যোগে ‘দুর্যোগে আলোর গেরিলা’ গঠন করে পরিচালনা করতে হবে। সমিতির নিজস্ব জনবল ছাড়াও সমিতির ভৌগোলিক এলাকায় ব্যক্তিগত/ প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে অভিজ্ঞ জনসম্পদ রয়েছে। এ জনসম্পদ কাজে লাগিয়ে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানের কথা ভাবতে হবে। এসব ক্ষেত্রে সমিতির লাইনম্যান, মিনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার/ফোরম্যান/লাইনম্যান, পল্লী বিদ্যুায়ন বোর্ডের পূর্বযোগ্যতা/সাময়িক পূর্বযোগ্যতাপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার/ফোরম্যান/লাইনম্যান, রেগুলার ভিলেজ ইলেকট্রিশিয়ান, প্রতিটি সমিতিতে ৩ ব্যাচে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ভিলেজ ইলেকট্রিশিয়ান ও স্থানীয় সৎ, কর্মঠ ও দক্ষ কারিগর/শ্রমিক, এসব জনবলের সমন্বয়ে ‘দুর্যোগে আলোর গেরিলা’ ইউনিট গঠিত হবে।

আরইবি জানায়, দুর্যোগে আলোর গেরিলা পরিচালনার জন্য ১২ দফা নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে জেনারেল ম্যানেজারদের নির্দেশনা মেনে কাজ করতে হবে। আর দিনের পাশাপাশি রাতেও আলোর গেরিলারা যাতে কাজ করতে পারে সেই ব্যবস্থা রাখতে হবে। আলোর গেরিলাদের সেহরি ও ইফতারের ব্যবস্থা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড করবে।