পয়ঃবর্জ্যে দুই মাস ঘরবন্দী হরিজন পল্লীর চার পরিবার!

সৈয়দপুর শহরে নালার পচা পানি উপচে গিয়ে বাড়ির উঠানে পানি জট সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে হরিজন পল্লীর চারটি পরিবার দীর্ঘ দুই মাস ধরে ঘরবন্দী হয়ে আছে। ঘটনাটি ঘটেছে শহরের ৫নং ওয়ার্ডের মুন্সিপাড়া হরিজন পল্লীতে (সুইপার কলোনি)। এ নিয়ে বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করেও ফল মিলেনি। এ ঘটনায় পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ আনা হয়েছে পৌর মেয়র আমজাদ হোসেন সরকারের বিরুদ্ধে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে দেয়া লিখিত অভিযোগে হরিজন কন্যা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী আশা রাণী জানান, তাদের কলোনীর দিলীপ বাশফোর, সুভতী রাণী চিলরী, রুপা রাণী, নসীব বাশফোর, উত্তম বাশফোর, চন্দন বাশফোর, রনি বাশফোর, দিপক বাশফোর, জয়বাবু গোল্ডেন, সুমিত্রা রাণী, চাঁদনী রাণী, মুনিয়া রাণী একে অপরের সঙ্গে যোগসাজস করে গৃহস্থালী পানি নিষ্কাশনের সরকারি ড্রেন দখল করে বন্ধ করে দেয়। ওই ড্রেনটি দিয়ে প্রায় ১৫০ বছর ধরে গৃহস্থালি পানি নিষ্কাশিত হতো। কিন্তু ড্রেনটি বন্ধ করে দেয়ায় জলজটের সৃষ্টি হয়েছে বাড়ির উঠানে। জমে থাকা পানি পচে চরম দুর্গন্ধের সৃষ্টি করেছে। পঁচা পানি মাড়িয়ে অনেক কষ্টে বাড়ির বাইরে আশা যাওয়া করতে হচ্ছে। এমন অবস্থায় পানি বন্দী ওই চার পরিবারের সদস্যরা নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে নিস্তার পেতে পৌর মেয়রকে অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার মিলেনি। উল্টো পৌর মেয়র ড্রেন দখলকারীদের পক্ষ নিয়েছে।

আশা রাণী তার অভিযোগে আরও জানান, গত ২০১৭ সালে তার কাকা ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী নন্দকুমার বাশফোরকে নাগরিকত্ব সনদপত্র না দেয়ায় মেয়রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছিল। সে কারণেই মেয়র ড্রেন দখলকারী ব্যক্তিদের মদদ দিয়ে আমাদের চার পরিবারকে হেনস্তা করছে। হরিজন পল্লীর সন্তান বিশিষ্ট আইনজীবী নন্দলাল বাশফোর জানান, আমাদের মতো পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এমন ধরনের হয়রানি মানবতা লঙ্ঘনের শামিল। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে কথা হয় বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সৈয়দপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক রুহুল আলম মাস্টারের সঙ্গে। তিনি জানান, সমাজের যে কোন ধরনের নেতিবাচক কর্মকা-কে সমাজের বিবেক সম্পন্ন ব্যক্তি আস্কারা দেয়, যা ভাবতে অবাক লাগে। তিনি ঘটনার নিন্দা জানান। পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ বিষয়ে জানতে মেয়র আমজাদ হোসেন সরকারের মুঠোফোনে যোগাযোগ করে সংযোগ না মেলায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। জানতে চাইলে অভিযোগ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসিম আহমেদ মুঠোফোনে জানান, বিষয়টি নজরে আছে। সময়ের ব্যস্ততায় অভিযোগের সুরাহা করতে সময় লাগছে।

শুক্রবার, ০৫ জুন ২০২০ , ২২ জৈষ্ঠ ১৪২৭, ১২ শাওয়াল ১৪৪১

মেয়রের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ

পয়ঃবর্জ্যে দুই মাস ঘরবন্দী হরিজন পল্লীর চার পরিবার!

কাজী জাহিদ, সৈয়দপুর (নীলফামারী)

সৈয়দপুর শহরে নালার পচা পানি উপচে গিয়ে বাড়ির উঠানে পানি জট সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে হরিজন পল্লীর চারটি পরিবার দীর্ঘ দুই মাস ধরে ঘরবন্দী হয়ে আছে। ঘটনাটি ঘটেছে শহরের ৫নং ওয়ার্ডের মুন্সিপাড়া হরিজন পল্লীতে (সুইপার কলোনি)। এ নিয়ে বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করেও ফল মিলেনি। এ ঘটনায় পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ আনা হয়েছে পৌর মেয়র আমজাদ হোসেন সরকারের বিরুদ্ধে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে দেয়া লিখিত অভিযোগে হরিজন কন্যা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী আশা রাণী জানান, তাদের কলোনীর দিলীপ বাশফোর, সুভতী রাণী চিলরী, রুপা রাণী, নসীব বাশফোর, উত্তম বাশফোর, চন্দন বাশফোর, রনি বাশফোর, দিপক বাশফোর, জয়বাবু গোল্ডেন, সুমিত্রা রাণী, চাঁদনী রাণী, মুনিয়া রাণী একে অপরের সঙ্গে যোগসাজস করে গৃহস্থালী পানি নিষ্কাশনের সরকারি ড্রেন দখল করে বন্ধ করে দেয়। ওই ড্রেনটি দিয়ে প্রায় ১৫০ বছর ধরে গৃহস্থালি পানি নিষ্কাশিত হতো। কিন্তু ড্রেনটি বন্ধ করে দেয়ায় জলজটের সৃষ্টি হয়েছে বাড়ির উঠানে। জমে থাকা পানি পচে চরম দুর্গন্ধের সৃষ্টি করেছে। পঁচা পানি মাড়িয়ে অনেক কষ্টে বাড়ির বাইরে আশা যাওয়া করতে হচ্ছে। এমন অবস্থায় পানি বন্দী ওই চার পরিবারের সদস্যরা নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে নিস্তার পেতে পৌর মেয়রকে অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার মিলেনি। উল্টো পৌর মেয়র ড্রেন দখলকারীদের পক্ষ নিয়েছে।

আশা রাণী তার অভিযোগে আরও জানান, গত ২০১৭ সালে তার কাকা ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী নন্দকুমার বাশফোরকে নাগরিকত্ব সনদপত্র না দেয়ায় মেয়রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছিল। সে কারণেই মেয়র ড্রেন দখলকারী ব্যক্তিদের মদদ দিয়ে আমাদের চার পরিবারকে হেনস্তা করছে। হরিজন পল্লীর সন্তান বিশিষ্ট আইনজীবী নন্দলাল বাশফোর জানান, আমাদের মতো পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এমন ধরনের হয়রানি মানবতা লঙ্ঘনের শামিল। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে কথা হয় বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সৈয়দপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক রুহুল আলম মাস্টারের সঙ্গে। তিনি জানান, সমাজের যে কোন ধরনের নেতিবাচক কর্মকা-কে সমাজের বিবেক সম্পন্ন ব্যক্তি আস্কারা দেয়, যা ভাবতে অবাক লাগে। তিনি ঘটনার নিন্দা জানান। পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ বিষয়ে জানতে মেয়র আমজাদ হোসেন সরকারের মুঠোফোনে যোগাযোগ করে সংযোগ না মেলায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। জানতে চাইলে অভিযোগ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসিম আহমেদ মুঠোফোনে জানান, বিষয়টি নজরে আছে। সময়ের ব্যস্ততায় অভিযোগের সুরাহা করতে সময় লাগছে।