করোনায় বিপর্যস্ত মানুষ এনজিওর কিস্তির চাপে!

সরকার জুন মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত ক্ষুদ্রঋণের কিস্তি আদায় স্থগিত করলেও গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে জোরপূর্বক এনজিও’র ঋণের কিস্তি আদায়ের খবর পাওয়া গেছে।

পরবর্তীতে আর ঋণ না পওয়ার শঙ্কায় অনেকে মুখ খুলছে না। একদিকে করোনাভাইরাস আতঙ্ক, আর অন্যদিকে এনজিওর ঋণের কিস্তির টাকার বোঝা মাথায় নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কাশিয়ানী উপজেলায় ব্র্যাক, গ্রামীণ ব্যাংক, আশা, সিএসএস, জাগরণী, আর আর এফ, পল্লী প্রগতি সহায়ক সমিতি, টিএমএসএস, আরডিবি, প্রশিখা, গণ উন্নয়ন প্রচেষ্টা, রিকসহ বেশ কয়েকটি এনজিও ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে কাকডাকা ভোরেই এসব এনজিওর কয়েক শ’ কর্মী বিভিন্ন এলাকায় বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কিস্তির টাকা আদায়ের জন্য বেড়িয়ে পড়ছেন।

এ দুঃসময়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও দিনমজুরী পরিবারগুলোর উপর এনজিও’র কিস্তির টাকা যেন ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিস্তির টাকা নিয়ে ঋণগ্রহীতাদের সঙ্গে এনজিও কর্মীদের অসৌজন্যমূলক আচরণ ও ঝগড়া-বিবাদের ঘটনার অভিযোগ পাওয়া গেছে। হাত-পা ধরেও রেহাই পাচ্ছে ঋণগ্রহীতারা। কিস্তির টাকার জন্য এনজিওর কর্মীরা গরু-ছাগল নিয়ে যাওয়ার এবং ভবিষ্যতে ঋণ দেওয়া হবে না এমন ভয়ভীতি দেখিয়ে কিস্তির টাকা আদায় করছেন বলেও অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

এ দুঃসময়ে কর্মহীন মানুষ কোন উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে অনেকে স্থানীয় মহাজনদের কাছ থেকে চড়া সুদে টাকা নিয়ে এনজিওর কিস্তির টাকা পরিশোধ করছেন। আবার অনেকে এনজিও কর্মীদের ভয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ব্যবসায়ীসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

রামদিয়া গ্রামের শিখা বেগম বলেন, ‘রাত পোহালেই কিস্তির জন্য এনজিও কর্মীরা বাড়িতে চলে আসছেন। যতক্ষণ টাকা পরিশোধ না করা হয় ততক্ষণ এনজিও কর্মীরা বাড়ি থেকে যেতে চান না এবং পরবর্তীতে ঋণ দেয়া হবে না বলে হুমকি দিচ্ছেন। ’

কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাব্বির আহমেদ বলেন, যদি কোন এনজিওকর্মী জোরপূর্বক গ্রাহকের কাছ থেকে কিস্তি আদায়ে করে থাকে লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শনিবার, ০৬ জুন ২০২০ , ২৩ জৈষ্ঠ ১৪২৭, ১৩ শাওয়াল ১৪৪১

সরকারি নিদের্শ অমান্য

করোনায় বিপর্যস্ত মানুষ এনজিওর কিস্তির চাপে!

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, গোপালগঞ্জ

সরকার জুন মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত ক্ষুদ্রঋণের কিস্তি আদায় স্থগিত করলেও গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে জোরপূর্বক এনজিও’র ঋণের কিস্তি আদায়ের খবর পাওয়া গেছে।

পরবর্তীতে আর ঋণ না পওয়ার শঙ্কায় অনেকে মুখ খুলছে না। একদিকে করোনাভাইরাস আতঙ্ক, আর অন্যদিকে এনজিওর ঋণের কিস্তির টাকার বোঝা মাথায় নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কাশিয়ানী উপজেলায় ব্র্যাক, গ্রামীণ ব্যাংক, আশা, সিএসএস, জাগরণী, আর আর এফ, পল্লী প্রগতি সহায়ক সমিতি, টিএমএসএস, আরডিবি, প্রশিখা, গণ উন্নয়ন প্রচেষ্টা, রিকসহ বেশ কয়েকটি এনজিও ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে কাকডাকা ভোরেই এসব এনজিওর কয়েক শ’ কর্মী বিভিন্ন এলাকায় বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কিস্তির টাকা আদায়ের জন্য বেড়িয়ে পড়ছেন।

এ দুঃসময়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও দিনমজুরী পরিবারগুলোর উপর এনজিও’র কিস্তির টাকা যেন ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিস্তির টাকা নিয়ে ঋণগ্রহীতাদের সঙ্গে এনজিও কর্মীদের অসৌজন্যমূলক আচরণ ও ঝগড়া-বিবাদের ঘটনার অভিযোগ পাওয়া গেছে। হাত-পা ধরেও রেহাই পাচ্ছে ঋণগ্রহীতারা। কিস্তির টাকার জন্য এনজিওর কর্মীরা গরু-ছাগল নিয়ে যাওয়ার এবং ভবিষ্যতে ঋণ দেওয়া হবে না এমন ভয়ভীতি দেখিয়ে কিস্তির টাকা আদায় করছেন বলেও অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

এ দুঃসময়ে কর্মহীন মানুষ কোন উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে অনেকে স্থানীয় মহাজনদের কাছ থেকে চড়া সুদে টাকা নিয়ে এনজিওর কিস্তির টাকা পরিশোধ করছেন। আবার অনেকে এনজিও কর্মীদের ভয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ব্যবসায়ীসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

রামদিয়া গ্রামের শিখা বেগম বলেন, ‘রাত পোহালেই কিস্তির জন্য এনজিও কর্মীরা বাড়িতে চলে আসছেন। যতক্ষণ টাকা পরিশোধ না করা হয় ততক্ষণ এনজিও কর্মীরা বাড়ি থেকে যেতে চান না এবং পরবর্তীতে ঋণ দেয়া হবে না বলে হুমকি দিচ্ছেন। ’

কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাব্বির আহমেদ বলেন, যদি কোন এনজিওকর্মী জোরপূর্বক গ্রাহকের কাছ থেকে কিস্তি আদায়ে করে থাকে লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।