ফের নির্বাচিত হতে শি জিনপিংয়ের সহায়তা চেয়েছেন ট্রাম্প জন বল্টনের দাবি

দ্বিতীয় দফায় নিজের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া নিশ্চিত করতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সহায়তা পাওয়ার চেষ্টা করেছেন ট্রাম্প। এমন এক বিস্ফোরক দাবি করেছেন ট্রাম্প প্রশাসনের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বল্টন।

হোয়াইট হাউসে দায়িত্ব পালনের সময়ের ঘটনা নিয়ে পাঁচ দিন পর প্রকাশ হতে যাওয়া নতুন এক বইয়ে এমন কথা জানিয়েছেন মার্কিন আগ্রাসী পররাষ্ট্র নীতির এই সমর্থক। বিবিসি।

দ্য রুম হয়ার ইট হ্যাপেন’-এর প্রকাশ আটকে দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন

সংবাদমাধ্যমটি এক প্রতিবেদন এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, জন বল্টনের লেখা ‘দ্য রুম হয়ার ইট হ্যাপেন’ শিরোনামে ৫৭৭ পৃষ্ঠার বইটি আগামী ২৩ জুন প্রকাশের কথা রয়েছে। এ নিয়ে ইতোমধ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে এই সাবেক কূটনীতিক। এরই মধ্যে বইটির সংক্ষিপ্ত অংশ প্রকাশ করেছে মার্কিন গণমাধ্যম।

এর আগে জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয় বইটিতে অতি গোপনীয় বিষয় রয়েছে। তবে বইটিতে গোপনীয় তথ্য থাকার কথা অস্বীকার করে সেগুলো সরিয়ে ফেলতে অপারগতার কথা জানান বল্টন। চলতি সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছেন, বইটি নিয়ে অপরাধ জনিত সমস্যায় পড়তে পারেন বোল্টন।

এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন ‘দ্য রুম হয়ার ইট হ্যাপেন’ বইটির প্রকাশ আটকে দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানা গেছে। প্রকাশনাটি আটকাতে গত বুধবার রাতে এক বিচারকের কাছে জরুরি আদেশ চেয়েছে মার্কিন বিচার বিভাগ।

প্রভাবশালী মার্কিন গণমাধ্যম ইয়র্কটাইমসে প্রকাশ হওয়া বইটির সারাংশে গত বছরের জুনে ওসাকা শহরে জি২০ সম্মেলনের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যকার এক বৈঠকের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বইটিতে বল্টন লিখেছেন, ওই বৈঠকে চীনের প্রেসিডেন্ট অভিযোগ করেন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু চীন সমালোচক ওয়াশিংটন-বেইজিংয়ের মধ্যে নতুন স্নায়ু যুদ্ধ শুরু করাতে চান।

ট্রাম্পের ধারণা, তারা হলো তার বিরোধী ডেমোক্র্যাট শিবির। বল্টন লিখেছেন, ‘ট্রাম্প আকস্মিকভাবে আলোচনাটি আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকে ঘুরিয়ে নেন। সে সময় চীনের অর্থনৈতিক সক্ষমতার দিকে ইঙ্গিত করে তার নির্বাচিত হওয়া নিশ্চিত করতে শি জিনপিংয়ের সহায়তা চান।’ নির্বাচিত হলে ট্রাম্প চীনের সয়াবিন ও গম কেনা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন বলেও জানিয়েছেন বল্টন। ওই বৈঠকের বাণিজ্য আলোচনায় কৃষি পণ্যকে অগ্রাধিকার দিতে শি জিনপিং সম্মত হলে তাকে ‘চীনা ইতিহাসের মহান নেতা’ বলে আখ্যা দেন ট্রাম্প।

গত ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে খারাপ জনতুষ্টির উদাহরণ বলে মন্তব্য করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করেন জন বল্টন। বুশ প্রশাসনের অধীনে জাতিসংঘে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করে আসা সাবেক এই কূটনীতিককে ২০১৮ সালের এপ্রিলে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা নিয়োগ করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এরই ধারবাহিকতায় প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মতপার্থক্যের জেরে পরের বছর ২০১৯-এর সেপ্টেম্বরেই তাকে বরখাস্ত করা হয়। বেশ কিছু চুপ করে থাকার পর চলতি বছর একটি বই প্রকাশের ঘোষণা দেন মার্কিন জাতীয়তাবাদী এ কর্মকর্তা।

প্রসঙ্গত, ট্রাম্প প্রশাসন প্রকাশ্যে বরাবরই চীনের বিরুদ্ধে সমালোচনামূলক অবস্থান নিয়েছে। দেশটির সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের সঙ্গে চীনের আচরণ নিয়ে প্রকাশ্যে কঠোর অবস্থান নিয়ে আসছেন ট্রাম্প। এরই ধারাবাহিকতায় গত বুধবার হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জিনজিয়াং প্রদেশে মুসলিমদের নিপীড়নে দায়ী চীনা কর্মকর্তাদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপে একটি আইনে সই করেছেন ট্রাম্প।

শুক্রবার, ১৯ জুন ২০২০ , ৫ আষাঢ় ১৪২৭, ২৬ শাওয়াল ১৪৪১

ফের নির্বাচিত হতে শি জিনপিংয়ের সহায়তা চেয়েছেন ট্রাম্প জন বল্টনের দাবি

সংবাদ ডেস্ক |

দ্বিতীয় দফায় নিজের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া নিশ্চিত করতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সহায়তা পাওয়ার চেষ্টা করেছেন ট্রাম্প। এমন এক বিস্ফোরক দাবি করেছেন ট্রাম্প প্রশাসনের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বল্টন।

হোয়াইট হাউসে দায়িত্ব পালনের সময়ের ঘটনা নিয়ে পাঁচ দিন পর প্রকাশ হতে যাওয়া নতুন এক বইয়ে এমন কথা জানিয়েছেন মার্কিন আগ্রাসী পররাষ্ট্র নীতির এই সমর্থক। বিবিসি।

দ্য রুম হয়ার ইট হ্যাপেন’-এর প্রকাশ আটকে দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন

সংবাদমাধ্যমটি এক প্রতিবেদন এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, জন বল্টনের লেখা ‘দ্য রুম হয়ার ইট হ্যাপেন’ শিরোনামে ৫৭৭ পৃষ্ঠার বইটি আগামী ২৩ জুন প্রকাশের কথা রয়েছে। এ নিয়ে ইতোমধ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে এই সাবেক কূটনীতিক। এরই মধ্যে বইটির সংক্ষিপ্ত অংশ প্রকাশ করেছে মার্কিন গণমাধ্যম।

এর আগে জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয় বইটিতে অতি গোপনীয় বিষয় রয়েছে। তবে বইটিতে গোপনীয় তথ্য থাকার কথা অস্বীকার করে সেগুলো সরিয়ে ফেলতে অপারগতার কথা জানান বল্টন। চলতি সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছেন, বইটি নিয়ে অপরাধ জনিত সমস্যায় পড়তে পারেন বোল্টন।

এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন ‘দ্য রুম হয়ার ইট হ্যাপেন’ বইটির প্রকাশ আটকে দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানা গেছে। প্রকাশনাটি আটকাতে গত বুধবার রাতে এক বিচারকের কাছে জরুরি আদেশ চেয়েছে মার্কিন বিচার বিভাগ।

প্রভাবশালী মার্কিন গণমাধ্যম ইয়র্কটাইমসে প্রকাশ হওয়া বইটির সারাংশে গত বছরের জুনে ওসাকা শহরে জি২০ সম্মেলনের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যকার এক বৈঠকের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বইটিতে বল্টন লিখেছেন, ওই বৈঠকে চীনের প্রেসিডেন্ট অভিযোগ করেন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু চীন সমালোচক ওয়াশিংটন-বেইজিংয়ের মধ্যে নতুন স্নায়ু যুদ্ধ শুরু করাতে চান।

ট্রাম্পের ধারণা, তারা হলো তার বিরোধী ডেমোক্র্যাট শিবির। বল্টন লিখেছেন, ‘ট্রাম্প আকস্মিকভাবে আলোচনাটি আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকে ঘুরিয়ে নেন। সে সময় চীনের অর্থনৈতিক সক্ষমতার দিকে ইঙ্গিত করে তার নির্বাচিত হওয়া নিশ্চিত করতে শি জিনপিংয়ের সহায়তা চান।’ নির্বাচিত হলে ট্রাম্প চীনের সয়াবিন ও গম কেনা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন বলেও জানিয়েছেন বল্টন। ওই বৈঠকের বাণিজ্য আলোচনায় কৃষি পণ্যকে অগ্রাধিকার দিতে শি জিনপিং সম্মত হলে তাকে ‘চীনা ইতিহাসের মহান নেতা’ বলে আখ্যা দেন ট্রাম্প।

গত ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে খারাপ জনতুষ্টির উদাহরণ বলে মন্তব্য করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করেন জন বল্টন। বুশ প্রশাসনের অধীনে জাতিসংঘে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করে আসা সাবেক এই কূটনীতিককে ২০১৮ সালের এপ্রিলে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা নিয়োগ করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এরই ধারবাহিকতায় প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মতপার্থক্যের জেরে পরের বছর ২০১৯-এর সেপ্টেম্বরেই তাকে বরখাস্ত করা হয়। বেশ কিছু চুপ করে থাকার পর চলতি বছর একটি বই প্রকাশের ঘোষণা দেন মার্কিন জাতীয়তাবাদী এ কর্মকর্তা।

প্রসঙ্গত, ট্রাম্প প্রশাসন প্রকাশ্যে বরাবরই চীনের বিরুদ্ধে সমালোচনামূলক অবস্থান নিয়েছে। দেশটির সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের সঙ্গে চীনের আচরণ নিয়ে প্রকাশ্যে কঠোর অবস্থান নিয়ে আসছেন ট্রাম্প। এরই ধারাবাহিকতায় গত বুধবার হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জিনজিয়াং প্রদেশে মুসলিমদের নিপীড়নে দায়ী চীনা কর্মকর্তাদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপে একটি আইনে সই করেছেন ট্রাম্প।