তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে এলাকাবাসীর প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের মুখে এশিয়া এনার্জি ফুলবাড়ীর কয়লা সম্পদ লুটপাট করতে ব্যর্থ হয়েছে। দেশে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লাখনির যড়যন্ত্র প্রতিহত করা হবে। তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৬ দফা চুক্তিকে সমর্থন দিলেও ক্ষমতায় গিয়ে সেই চুক্তি বাস্তবায়নে কোন ভূমিকা নিচ্ছেন না।
গতকাল দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে কয়লা খনি বিরোধী ট্র্যাজেডি দিবসের ১৪তম বার্ষিকী পালন উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে ঢাকা থেকে মুঠোফোনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ একথা বলেন। তিনি বলেন, খনি বিরোধী আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য আন্দোলনকারী নেতাকর্মীদের নামে দুটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে হয়রানি করছে এশিয়া এনার্জি। এশিয়া এনার্জির দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারসহ ৬ দফা সমঝোতা চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবিও জানান তিনি।
দিবসটি পালনের জন্য ফুলবাড়ী উপজেলা শাখা তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির উদ্যোগে সকাল সাড়ে ১০টায় স্থানীয় নিমতলা মোড় থেকে তেল গ্যাস জাতীয় কমিটির ফুলবাড়ী শাখার উদ্যোগে শোক মিছিল বের করা হয়। মিছিল নিয়ে ২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্যদের গুলিতে নিহত আমিন, সালেকীন ও তরিকুলের স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করে স্থানীয় নেতারা। পরে ফুলবাড়ী শাখা কমিটির আহ্বায়ক সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েলের সভাপতিত্বে কয়লাখনি বিরোধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে মুঠোফোনে বক্তব্য রাখেন তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, ফুলবাড়ী শাখা তেল গ্যাস জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব জয় প্রকাশ গুপ্ত, সদস্য হামিদুল হক, জারজিস আহম্মেদ, আবদুল কাইয়ুম, প্রভাষক জাকির হোসেন, এসএম নূরুজ্জামান জামান, শফিকুল ইসলাম শিকদার, সঞ্জিত প্রসাদ জিতু, কমল চক্রবর্তী, হিমেল মন্ডল, নাজার আহম্মেদ, আমিনুল হক, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্র নাথ সরেন, মো. আলাউদ্দিন প্রমুখ।
এদিকে সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠনের উদ্যোগে ফুলবাড়ী পৌর মেয়র ও সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠনের সমন্বয়ক মুরতুজা সরকার মানিকের নেতৃত্বে সকালে পৌর শহরে শোক মিছিল বের করা হয়। মিছিল শেষে শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়।
এরপর স্মৃতিস্তম্ভ চত্বরে নেতাকর্মীদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার নিয়ে শপথবাক্য পাঠ করান ফুলবাড়ী পৌরসভার মেয়র ও সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠনের সমন্বয়ক মুরতুজা সরকার মানিক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সদস্য সচিব সহকারী অধ্যাপক শেখ সাবীর আলী, মানিক মন্ডল, হিমেল সরকার, মমিনুল ইসলাম সাগর, ঈশ্বর চন্দ্র প্রমুখ। শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
২৬ আগস্ট ২০০৬ সাল, আজ থেকে ১৩ বছর আগে সেদিন কাক ডাকা ভোর থেকে এশিয়া এনার্জির দিনাজপুরের ফুলবাড়ী অফিস ঘেরাও কর্মসূচিতে অংশ নিতে ফুলবাড়ী খনি অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার নারী-পুরুষ, কৃষক-ছাত্র-শ্রমিক-জনতা-ব্যবসায়ীসহ বাঙালি-আদিবাসীরা হাতে লাঠি, তীর-ধনুকসহ বাদ্য-বাজনা নিয়ে সমবেত হতে থাকে ঢাকা মোড় এলাকায়। এ সময় স্বাভাবিক পরিবেশে নেতারা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে ঘেরাও কর্মসূচি শেষ করে নিমতলা মোড়ের দিকে এগুনোর কিছু পরেই নদীর পশ্চিম প্রান্তে শুরু হয় পুলিশ-বিডিআরের অতর্কিত গুলিবর্ষণ। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ফুলবাড়ী পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র মোকলেছুর রহমানের পুত্র রাহশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ৩য় বর্ষের ছাত্র তরিকুল ইসলাম, বারকোনা গ্রামের দিনমজুরের পুত্র আলআমিন ও ঝড়েরপাড় গ্রামের সালেকিন। গুলিবিদ্ধ হয় দুইশতাধিক মানুষসহ পুলিশ ও বিডিআরের লাঠিচার্জসহ টিয়ার গ্যাসে আরো আহত হয় তিন শতাধিক মানুষ। এরপরও সাধারণ মানুষের ওপর আরও মারমুখি হয়ে ওঠে পুলিশ ও বিডিআর। এ ঘটনায় বিক্ষুদ্ধ জনতা পুলিশ ও বিডিআরের গুলি ও লাঠিচার্জকে উপেক্ষা করে এগুতে চেষ্টা করে এশিয়া এনার্জির অফিসের দিকে।
পরদিন ২৭ আগস্ট ভোর থেকেই বিডিআর মারমুখি ভূমিকায় থাকলেও পুলিশ ছিল নিষ্ক্রিয়। এ সময় মহিলারা বিক্ষোভ মিছিল বের করলে বিডিআর সদস্যরা মিছিলে হামলা চালিয়ে কয়েকজন মহিলাকে বেদম প্রহার করে। এ সময় বিডিআরের হামলার ছবি তুলতে গিয়ে উপস্থিত এক নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও বিডিআরের আক্রমণের শিকার হন সাংবদকর্মীরা। ক্যামেরা থেকে ফ্লিম খুলে ফেলে দেয়া হয়। এদিকে সকাল আনুমানিক সাড়ে ৮টায় ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মানিক সরকারের নেতৃত্বে ফুলবাড়ীর প্রধান সড়কের হাশমিপট্টি এলাকায় বের হয় বিক্ষোভ মিছিল। এর পরপরই শুরু হয় বিভিন্ন এলাকায় খন্ড খন্ড বিক্ষোভ মিছিল। এক সময় মিছিলে মিছিলে উত্তাল হয়ে ওঠে ফুলবাড়ী।
ফুলবাড়ী থেকে বিডিআর প্রত্যাহারসহ এশিয়া এনার্জির কর্মকর্তাদের বহিষ্কারের দাবির প্রেক্ষিতে ওই রাতেই বিডিআর সদস্যদের প্রত্যাহার করে নেয়া হলেও ২৮ আগস্ট সকাল ১১টা ৫৭মিনিটে (তৎকালীন ইউএনও’র ভাষ্য অনুযায়ী) এশিয়া এনার্জির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পুলিশ প্রহরায় ফুলবাড়ী থেকে সরিয়ে নেয়া হয়। ২৯ আগস্টও বিক্ষোভ সমাবেশ অব্যাহত থাকে। ৩০ আগস্ট প্রস্তাব আসে বিএনপি-জামাত জোট সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের। নিরাপত্তার কারণে বৈঠকের স্থান নির্ধারণ হয় পার্শ¦বর্তী উপজেলা পার্বতীপুর ডাকবাংলায়। সমঝোতা বৈঠকে সরকারের পক্ষে অংশ নেন তৎকালীন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র মিজানুর রহমান মিনু ও খাদ্য ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী আসাদুল হাবীব দুলু এবং আন্দোলনকারীদের পক্ষে অংশ নেন জাতীয় কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহম্মদসহ অর্ধশত নেতা।
বৃহস্পতিবার, ২৭ আগস্ট ২০২০ , ৭ মহররম ১৪৪২, ২৭ আগস্ট ২০২০
চিত্ত ঘোষ ও আশরাফ পারভেজ, দিনাজপুর ও ফুলবাড়ি
তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে এলাকাবাসীর প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের মুখে এশিয়া এনার্জি ফুলবাড়ীর কয়লা সম্পদ লুটপাট করতে ব্যর্থ হয়েছে। দেশে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লাখনির যড়যন্ত্র প্রতিহত করা হবে। তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৬ দফা চুক্তিকে সমর্থন দিলেও ক্ষমতায় গিয়ে সেই চুক্তি বাস্তবায়নে কোন ভূমিকা নিচ্ছেন না।
গতকাল দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে কয়লা খনি বিরোধী ট্র্যাজেডি দিবসের ১৪তম বার্ষিকী পালন উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে ঢাকা থেকে মুঠোফোনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ একথা বলেন। তিনি বলেন, খনি বিরোধী আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য আন্দোলনকারী নেতাকর্মীদের নামে দুটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে হয়রানি করছে এশিয়া এনার্জি। এশিয়া এনার্জির দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারসহ ৬ দফা সমঝোতা চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবিও জানান তিনি।
দিবসটি পালনের জন্য ফুলবাড়ী উপজেলা শাখা তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির উদ্যোগে সকাল সাড়ে ১০টায় স্থানীয় নিমতলা মোড় থেকে তেল গ্যাস জাতীয় কমিটির ফুলবাড়ী শাখার উদ্যোগে শোক মিছিল বের করা হয়। মিছিল নিয়ে ২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্যদের গুলিতে নিহত আমিন, সালেকীন ও তরিকুলের স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করে স্থানীয় নেতারা। পরে ফুলবাড়ী শাখা কমিটির আহ্বায়ক সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েলের সভাপতিত্বে কয়লাখনি বিরোধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে মুঠোফোনে বক্তব্য রাখেন তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, ফুলবাড়ী শাখা তেল গ্যাস জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব জয় প্রকাশ গুপ্ত, সদস্য হামিদুল হক, জারজিস আহম্মেদ, আবদুল কাইয়ুম, প্রভাষক জাকির হোসেন, এসএম নূরুজ্জামান জামান, শফিকুল ইসলাম শিকদার, সঞ্জিত প্রসাদ জিতু, কমল চক্রবর্তী, হিমেল মন্ডল, নাজার আহম্মেদ, আমিনুল হক, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্র নাথ সরেন, মো. আলাউদ্দিন প্রমুখ।
এদিকে সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠনের উদ্যোগে ফুলবাড়ী পৌর মেয়র ও সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠনের সমন্বয়ক মুরতুজা সরকার মানিকের নেতৃত্বে সকালে পৌর শহরে শোক মিছিল বের করা হয়। মিছিল শেষে শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়।
এরপর স্মৃতিস্তম্ভ চত্বরে নেতাকর্মীদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার নিয়ে শপথবাক্য পাঠ করান ফুলবাড়ী পৌরসভার মেয়র ও সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠনের সমন্বয়ক মুরতুজা সরকার মানিক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সদস্য সচিব সহকারী অধ্যাপক শেখ সাবীর আলী, মানিক মন্ডল, হিমেল সরকার, মমিনুল ইসলাম সাগর, ঈশ্বর চন্দ্র প্রমুখ। শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
২৬ আগস্ট ২০০৬ সাল, আজ থেকে ১৩ বছর আগে সেদিন কাক ডাকা ভোর থেকে এশিয়া এনার্জির দিনাজপুরের ফুলবাড়ী অফিস ঘেরাও কর্মসূচিতে অংশ নিতে ফুলবাড়ী খনি অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার নারী-পুরুষ, কৃষক-ছাত্র-শ্রমিক-জনতা-ব্যবসায়ীসহ বাঙালি-আদিবাসীরা হাতে লাঠি, তীর-ধনুকসহ বাদ্য-বাজনা নিয়ে সমবেত হতে থাকে ঢাকা মোড় এলাকায়। এ সময় স্বাভাবিক পরিবেশে নেতারা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে ঘেরাও কর্মসূচি শেষ করে নিমতলা মোড়ের দিকে এগুনোর কিছু পরেই নদীর পশ্চিম প্রান্তে শুরু হয় পুলিশ-বিডিআরের অতর্কিত গুলিবর্ষণ। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ফুলবাড়ী পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র মোকলেছুর রহমানের পুত্র রাহশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ৩য় বর্ষের ছাত্র তরিকুল ইসলাম, বারকোনা গ্রামের দিনমজুরের পুত্র আলআমিন ও ঝড়েরপাড় গ্রামের সালেকিন। গুলিবিদ্ধ হয় দুইশতাধিক মানুষসহ পুলিশ ও বিডিআরের লাঠিচার্জসহ টিয়ার গ্যাসে আরো আহত হয় তিন শতাধিক মানুষ। এরপরও সাধারণ মানুষের ওপর আরও মারমুখি হয়ে ওঠে পুলিশ ও বিডিআর। এ ঘটনায় বিক্ষুদ্ধ জনতা পুলিশ ও বিডিআরের গুলি ও লাঠিচার্জকে উপেক্ষা করে এগুতে চেষ্টা করে এশিয়া এনার্জির অফিসের দিকে।
পরদিন ২৭ আগস্ট ভোর থেকেই বিডিআর মারমুখি ভূমিকায় থাকলেও পুলিশ ছিল নিষ্ক্রিয়। এ সময় মহিলারা বিক্ষোভ মিছিল বের করলে বিডিআর সদস্যরা মিছিলে হামলা চালিয়ে কয়েকজন মহিলাকে বেদম প্রহার করে। এ সময় বিডিআরের হামলার ছবি তুলতে গিয়ে উপস্থিত এক নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও বিডিআরের আক্রমণের শিকার হন সাংবদকর্মীরা। ক্যামেরা থেকে ফ্লিম খুলে ফেলে দেয়া হয়। এদিকে সকাল আনুমানিক সাড়ে ৮টায় ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মানিক সরকারের নেতৃত্বে ফুলবাড়ীর প্রধান সড়কের হাশমিপট্টি এলাকায় বের হয় বিক্ষোভ মিছিল। এর পরপরই শুরু হয় বিভিন্ন এলাকায় খন্ড খন্ড বিক্ষোভ মিছিল। এক সময় মিছিলে মিছিলে উত্তাল হয়ে ওঠে ফুলবাড়ী।
ফুলবাড়ী থেকে বিডিআর প্রত্যাহারসহ এশিয়া এনার্জির কর্মকর্তাদের বহিষ্কারের দাবির প্রেক্ষিতে ওই রাতেই বিডিআর সদস্যদের প্রত্যাহার করে নেয়া হলেও ২৮ আগস্ট সকাল ১১টা ৫৭মিনিটে (তৎকালীন ইউএনও’র ভাষ্য অনুযায়ী) এশিয়া এনার্জির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পুলিশ প্রহরায় ফুলবাড়ী থেকে সরিয়ে নেয়া হয়। ২৯ আগস্টও বিক্ষোভ সমাবেশ অব্যাহত থাকে। ৩০ আগস্ট প্রস্তাব আসে বিএনপি-জামাত জোট সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের। নিরাপত্তার কারণে বৈঠকের স্থান নির্ধারণ হয় পার্শ¦বর্তী উপজেলা পার্বতীপুর ডাকবাংলায়। সমঝোতা বৈঠকে সরকারের পক্ষে অংশ নেন তৎকালীন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র মিজানুর রহমান মিনু ও খাদ্য ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী আসাদুল হাবীব দুলু এবং আন্দোলনকারীদের পক্ষে অংশ নেন জাতীয় কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহম্মদসহ অর্ধশত নেতা।