সরাইলে বৃদ্ধার ভাসমান দেহ উদ্ধার, পুলিশের অসহযোগিতা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে হাওরের পানিতে ৪ দিন যাবত ভাসছিল ফুলবানু খাতুন (৮৩) নামে এক বৃদ্ধার মরদেহ। হাওড়ে লাশটি ভাসতে দেখে জয়ধরকান্দি গ্রামের ইউপি সদস্য প্রথমে সরাইল থানার ওসিকে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে অরুয়াইল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই বাপন চক্রবর্তীকে এ লাশের ব্যাপারে জানান, সেই ইউপি সদস্যসহ জয়ধরকান্দি গ্রামের গ্রামপুলিশ (চৌকিদার)। কিন্তু এই পুলিশ কর্মকর্তা এ লাশের ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেননি। পরে গত বুধবার গ্রামের লোকজন ইউপি সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে সাহস করে লাশের কাছে গিয়ে দেখেন এটি ফুলবানু খাতুনের লাশ। ফুলবানু সরাইল উপজেলার পাকশিমুল ইউপির জয়ধরকান্দি গ্রামের প্রয়াত আলাবক্সের স্ত্রী। পরে সরাইল থানার পুলিশ এ দেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় গ্রামবাসীর সহযোগিতায় পুলিশ ফুলবানুর ছেলে গুলু মিয়া ও পুত্রবধূ রুবিনা বেগম ও গুলু মিয়ার এক মেয়েকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। গ্রামবাসীর অভিযোগ, জায়গা জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে বৃদ্ধ ফুলবানুকে হত্যার পর তার লাশ হাওরে ফেলে দেন ছেলে গুলু মিয়া ও তার স্ত্রী রুবিনা বেগম। জয়ধরকান্দি গ্রামের ইউপি সদস্য মো. সালাউদ্দিন গত বুধবার বিকেলে এই প্রতিবেদককে বলেন, দেহটি একবার ভেসে নাসিরনগর থানা এলাকায় যায়, আবার এ লাশ ভেসে সরাইল থানা এলাকায় আসে। এ পরিস্থিতিতে গ্রামের লোকজন বিষয়টি আমাকে জানান এবং অনেকে বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে লেখেন। তখন আমি নিজে পানিতে ভাসমান লাশটি দেখে সরাইল থানার ওসিকে ফোন দেই। তিনি রিসিভ করেননি। পরে এ বিষয়টি অরুয়াইল ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই বাপন চক্রবর্তীকে জানাই। তিনি আমাকে জানান, গিয়ে দেখেন দেহটি সরাইল থানা এলাকায় আছে, নাকি নাসিরনগর থানা এলাকায়। তখন আমি তাকে বলি, ‘এই লাশ দুই থানা এলাকাতেই ভেসে আসছে ও যাচ্ছে।’ জবাবে এসআই বাপন চক্রবর্তী জানান, ‘তাহলে এ অবস্থায় আমার কিছু করার নেই।’ ইউপি সদস্য সালাউদ্দিন আরও বলেন, পরে লোকমুখে শুনা যায় ফুলবানু খাতুন ৪দিন যাবত নিখোঁজ, কিন্তু তার ছেলে ও পুত্রবধূ একেবারেই নীরব।

সন্দেহ হলে তাদের চাপ দেয়া হয় এবং গ্রামের ইউপি সদস্যের উপস্থিতিতে ছেলে ও পুত্রবধূকে রশি দিয়ে বেঁধে ঘরে আটকিয়ে লোকজন নিয়ে সেই ভাসমান লাশের কাছে যাই এবং এ লাশ ফুলবানু খাতুনের শনাক্ত হলে পুলিশকে খবর দেয়া হয়।

শুক্রবার, ২৮ আগস্ট ২০২০ , ৮ মহররম ১৪৪২, ২৮ আগস্ট ২০২০

সরাইলে বৃদ্ধার ভাসমান দেহ উদ্ধার, পুলিশের অসহযোগিতা

প্রতিনিধি, সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে হাওরের পানিতে ৪ দিন যাবত ভাসছিল ফুলবানু খাতুন (৮৩) নামে এক বৃদ্ধার মরদেহ। হাওড়ে লাশটি ভাসতে দেখে জয়ধরকান্দি গ্রামের ইউপি সদস্য প্রথমে সরাইল থানার ওসিকে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে অরুয়াইল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই বাপন চক্রবর্তীকে এ লাশের ব্যাপারে জানান, সেই ইউপি সদস্যসহ জয়ধরকান্দি গ্রামের গ্রামপুলিশ (চৌকিদার)। কিন্তু এই পুলিশ কর্মকর্তা এ লাশের ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেননি। পরে গত বুধবার গ্রামের লোকজন ইউপি সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে সাহস করে লাশের কাছে গিয়ে দেখেন এটি ফুলবানু খাতুনের লাশ। ফুলবানু সরাইল উপজেলার পাকশিমুল ইউপির জয়ধরকান্দি গ্রামের প্রয়াত আলাবক্সের স্ত্রী। পরে সরাইল থানার পুলিশ এ দেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় গ্রামবাসীর সহযোগিতায় পুলিশ ফুলবানুর ছেলে গুলু মিয়া ও পুত্রবধূ রুবিনা বেগম ও গুলু মিয়ার এক মেয়েকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। গ্রামবাসীর অভিযোগ, জায়গা জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে বৃদ্ধ ফুলবানুকে হত্যার পর তার লাশ হাওরে ফেলে দেন ছেলে গুলু মিয়া ও তার স্ত্রী রুবিনা বেগম। জয়ধরকান্দি গ্রামের ইউপি সদস্য মো. সালাউদ্দিন গত বুধবার বিকেলে এই প্রতিবেদককে বলেন, দেহটি একবার ভেসে নাসিরনগর থানা এলাকায় যায়, আবার এ লাশ ভেসে সরাইল থানা এলাকায় আসে। এ পরিস্থিতিতে গ্রামের লোকজন বিষয়টি আমাকে জানান এবং অনেকে বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে লেখেন। তখন আমি নিজে পানিতে ভাসমান লাশটি দেখে সরাইল থানার ওসিকে ফোন দেই। তিনি রিসিভ করেননি। পরে এ বিষয়টি অরুয়াইল ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই বাপন চক্রবর্তীকে জানাই। তিনি আমাকে জানান, গিয়ে দেখেন দেহটি সরাইল থানা এলাকায় আছে, নাকি নাসিরনগর থানা এলাকায়। তখন আমি তাকে বলি, ‘এই লাশ দুই থানা এলাকাতেই ভেসে আসছে ও যাচ্ছে।’ জবাবে এসআই বাপন চক্রবর্তী জানান, ‘তাহলে এ অবস্থায় আমার কিছু করার নেই।’ ইউপি সদস্য সালাউদ্দিন আরও বলেন, পরে লোকমুখে শুনা যায় ফুলবানু খাতুন ৪দিন যাবত নিখোঁজ, কিন্তু তার ছেলে ও পুত্রবধূ একেবারেই নীরব।

সন্দেহ হলে তাদের চাপ দেয়া হয় এবং গ্রামের ইউপি সদস্যের উপস্থিতিতে ছেলে ও পুত্রবধূকে রশি দিয়ে বেঁধে ঘরে আটকিয়ে লোকজন নিয়ে সেই ভাসমান লাশের কাছে যাই এবং এ লাশ ফুলবানু খাতুনের শনাক্ত হলে পুলিশকে খবর দেয়া হয়।