জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ২ শতাংশ হবে : অর্থমন্ত্রী

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আমাদের রেমিট্যান্সের অবস্থা অত্যন্ত ভালো, গত দুই মাসে শুধুমাত্র রেমিট্যান্সেই আমাদের ৫০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। রপ্তানি বাণিজ্য পুনরায় আশানুরূপ অবস্থানে আসতে শুরু করেছে। তাই সবকিছু মিলে আশা করা যায়, এ অর্থবছরের প্রাক্কলন ৮ দশমিক ১ বা ৮ দশমিক ২ অর্জিত হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, চলতি অর্থবছরে (২০২০-২১) বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৮ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। জিডিপি নিয়ে এডিবির প্রক্ষেপণে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী। এডিবির প্রক্ষেপণে সন্তোষ প্রকাশ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে দেশের মানুষ মহামারীর মধ্যেও মনপ্রাণ দিয়ে কাজ করেছে। তারা দেশকে ভালোবেসে কর্ম আগ্রহ দেখিয়েছে বলেই এ অর্জন আসতে যাচ্ছে। বাঙালি জাতি বীরের জাতি। শত বাধা মাড়িয়ে এগিয়ে চলাই এদের স্বভাব। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন- ‘কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না’। করোনার মধ্যে এই অর্জনই সেটার প্রমাণ করে। এডিবির এ প্রাক্কলন অনুযায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি এ অঞ্চলে চীন ও ভারতে পরেই অবস্থান করছে। যেখানে কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ডের কারও অবস্থান বাংলাদেশের ওপরে নয়। এর আগে করোনার নেতিবাচক প্রভাবের মধ্যেও প্রবৃদ্ধির যে প্রাক্কলন এডিবি করেছিল, সেখানে অন্যান্য দেশের ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি থাকলেও বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ধনাত্মক এবং এশিয়ার মধ্যে সবার ওপরে। আশা করা যায়, এ অর্থবছরেও এশিয়ার মধ্যে আমাদের অবস্থান সবার ওপরে থাকবে।

সংস্থাটির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ জানিয়েছেন, মহামারী থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার পেতে শুরু করেছে। স্বাস্থ্য ও মহামারী পরিচালন ব্যবস্থার ওপর উল্লেখযোগ্য চাপ সত্ত্বেও সরকার উপযুক্ত অর্থনৈতিক প্রণোদনা ও সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে অর্থনীতিকে সুসংহত করেছে। দরিদ্র ও দুর্বলদের জন্য মৌলিক সেবা ও পণ্যাদি নিশ্চিত করেছে। রপ্তানি এবং রেমিট্যান্সগুলোতে সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সক্ষমতা, অর্থনৈতিক প্রণোদনা ও সামাজিক সুরক্ষার জন্য বিদেশি তহবিল সুরক্ষাসহ সরকারের সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার ফলে এ পুনরুদ্ধার সম্ভব হয়েছে। এডিবি বলছে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতির হার সাড়ে ৫ শতাংশের ঘরে থাকবে। প্রতিবেদনে বলা হয়, সুচিন্তিত সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা এবং সরকারের উদ্দীপনা ব্যবস্থার দ্রুত বাস্তবায়ন প্রত্যাশিত পুনরুদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তবে এই প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে প্রধান ঝুঁকি হলো- দীর্ঘমেয়াদি মহামারী ও বাংলাদেশের রপ্তানি গন্তব্য। এদিকে এডিবির প্রতিবেদনে মহামারীর প্রভাব এশিয়া অঞ্চলে ব্যাপকভাবে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারীটি এশিয়া অঞ্চলের উন্নয়নশীল অর্থনীতিগুলোকে মন্দার দিকে টেনে নিয়েছে বলে জানানো হচ্ছে প্রতিবেদনে। ২০২০ সালে এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনীতি শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ সংকুচিত হবে। তবে ২০২১ সালে এই অঞ্চলের অর্থনীতি শক্তিশালী প্রত্যাবর্তন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০২১ সালে অর্থনীতি ৬ দশমিক ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে জানায় এডিবি।

বৃহস্পতিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৭ মহররম ১৪৪২, ২৯ ভাদ্র ১৪২৭

জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ২ শতাংশ হবে : অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আমাদের রেমিট্যান্সের অবস্থা অত্যন্ত ভালো, গত দুই মাসে শুধুমাত্র রেমিট্যান্সেই আমাদের ৫০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। রপ্তানি বাণিজ্য পুনরায় আশানুরূপ অবস্থানে আসতে শুরু করেছে। তাই সবকিছু মিলে আশা করা যায়, এ অর্থবছরের প্রাক্কলন ৮ দশমিক ১ বা ৮ দশমিক ২ অর্জিত হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, চলতি অর্থবছরে (২০২০-২১) বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৮ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। জিডিপি নিয়ে এডিবির প্রক্ষেপণে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী। এডিবির প্রক্ষেপণে সন্তোষ প্রকাশ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে দেশের মানুষ মহামারীর মধ্যেও মনপ্রাণ দিয়ে কাজ করেছে। তারা দেশকে ভালোবেসে কর্ম আগ্রহ দেখিয়েছে বলেই এ অর্জন আসতে যাচ্ছে। বাঙালি জাতি বীরের জাতি। শত বাধা মাড়িয়ে এগিয়ে চলাই এদের স্বভাব। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন- ‘কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না’। করোনার মধ্যে এই অর্জনই সেটার প্রমাণ করে। এডিবির এ প্রাক্কলন অনুযায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি এ অঞ্চলে চীন ও ভারতে পরেই অবস্থান করছে। যেখানে কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ডের কারও অবস্থান বাংলাদেশের ওপরে নয়। এর আগে করোনার নেতিবাচক প্রভাবের মধ্যেও প্রবৃদ্ধির যে প্রাক্কলন এডিবি করেছিল, সেখানে অন্যান্য দেশের ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি থাকলেও বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ধনাত্মক এবং এশিয়ার মধ্যে সবার ওপরে। আশা করা যায়, এ অর্থবছরেও এশিয়ার মধ্যে আমাদের অবস্থান সবার ওপরে থাকবে।

সংস্থাটির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ জানিয়েছেন, মহামারী থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার পেতে শুরু করেছে। স্বাস্থ্য ও মহামারী পরিচালন ব্যবস্থার ওপর উল্লেখযোগ্য চাপ সত্ত্বেও সরকার উপযুক্ত অর্থনৈতিক প্রণোদনা ও সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে অর্থনীতিকে সুসংহত করেছে। দরিদ্র ও দুর্বলদের জন্য মৌলিক সেবা ও পণ্যাদি নিশ্চিত করেছে। রপ্তানি এবং রেমিট্যান্সগুলোতে সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সক্ষমতা, অর্থনৈতিক প্রণোদনা ও সামাজিক সুরক্ষার জন্য বিদেশি তহবিল সুরক্ষাসহ সরকারের সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার ফলে এ পুনরুদ্ধার সম্ভব হয়েছে। এডিবি বলছে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতির হার সাড়ে ৫ শতাংশের ঘরে থাকবে। প্রতিবেদনে বলা হয়, সুচিন্তিত সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা এবং সরকারের উদ্দীপনা ব্যবস্থার দ্রুত বাস্তবায়ন প্রত্যাশিত পুনরুদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তবে এই প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে প্রধান ঝুঁকি হলো- দীর্ঘমেয়াদি মহামারী ও বাংলাদেশের রপ্তানি গন্তব্য। এদিকে এডিবির প্রতিবেদনে মহামারীর প্রভাব এশিয়া অঞ্চলে ব্যাপকভাবে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারীটি এশিয়া অঞ্চলের উন্নয়নশীল অর্থনীতিগুলোকে মন্দার দিকে টেনে নিয়েছে বলে জানানো হচ্ছে প্রতিবেদনে। ২০২০ সালে এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনীতি শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ সংকুচিত হবে। তবে ২০২১ সালে এই অঞ্চলের অর্থনীতি শক্তিশালী প্রত্যাবর্তন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০২১ সালে অর্থনীতি ৬ দশমিক ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে জানায় এডিবি।