করোনা দুর্যোগে পূজা পার্বণ থমকে : মহাসংকটে ঢাকিরা

করোনায় এবার হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অনুষ্ঠান তেমন না হওয়ায় ঢাকীদের সময় ভাল যাচ্ছে না। পূজা-পার্বণ এবং বিয়ে ঘরোয়া পরিবেশে হওয়ায় ঢাকীদের কদর কমে গেছে। গত ৭ মাস ধরে তেমন অনুষ্ঠান না থাকায় তারা কোন রকমে দিন কাটাচ্ছে। আগামীতে শারদীয় দূর্গোৎসব বায়না তাদের এখনো হয়নি। এ নিয়ে তাদের ভাবনার শেষ নেই।

জানা গেছে, প্রতিটি পূজা-পার্বন, বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানসহ বিয়েতে ঢাক, বাদ্যযন্ত্র ও কাসরের বাদ্যে মুখরিত হয়ে উঠে। এবার করোনার কারণে সেই অনুষ্ঠানগুলো সীমিত আকারে হওয়ার কারণে তাদের কদর একেবার কমে গেছে।

বিশেষ করে জন্মাষ্টমীতে ঢাকী ও বাদকদের যে চাহিদা থাকে এবার ছিল তা পুরোপুরি আলাদা। করোনাকালে এ আয়োজন স্বল্পপরিসরে অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া বিশ^কর্মা পূজায় এবার ঢাকীদের তেমন চাহিদা ছিল না। এদিকে আগামী ২২ অক্টোবর হিন্দু সম্প্রদায়ের বড় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব, আনন্দময়ী মায়ের আগমনী বার্তা। দুর্গাপূজার ম-পগুলোতে মুখর হয় ঢাকের বাদ্যে। সেই বাদ্যের সুর ছড়িয়ে পড়ে উৎসবের সবখানে। ঢাকীরাও পায় আমন্ত্রণ, ঢাকগুলো সেজে উঠে নতুন সাজে। এবারও প্রকৃতিতে শরৎ এসেছে, পঞ্জিকামতে এবারের আশ্বিন মলিন বা মলো মাস, তাই পিছিয়েছে পূজার দিনক্ষণ। আর আগেই হানা দেয় মহামারী করোনা। এবার চাহিদার তুলনায় ঢাকীদের বাজানোর সংখ্যাও কমে আসবে।

শিবতলা কর্মকারপাড়া দুর্গামাতা ঠাকুরানী মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক অজিত কুমার জানান, করোনার কারণে আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে নির্দেশনা রয়েছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকল আয়োজন করার। প্রতিবছর ঢাকীদের ৬ জনের একটি দল থাকে, এবার থাকবে ৩ জন। এছাড়া বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করা হবে না।

ঢাকী রাজকুমার জানান, করোনার জন্য বিয়ে-পূজায় আয়োজকরা সীমিত আয়োজন করায় তাদের এবার চাহিদা কমে গেছে। দীর্ঘ ৭ মাস ধরে তেমন বায়না নেই। অভাব-অনটনে কাটছে উৎসব মাতিয়ে রাখা ঢাকীদের প্রতিদিনের জীবন।

আরেক ঢাকী চন্দন জানান, পূজা-পার্বণ, মেলা কিংবা বিয়ের অনুষ্ঠান ছাড়াও করোনায় থমকে গেছে সাংস্কৃতিক সব আয়োজন। বর্তমানে কোন রকমে দিন কাটাতে হচ্ছে। তিনি আরও জানান, আগে মাসে ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা আয় হতো, এখন মাত্র ২ থেকে ৩ হাজার টাকা।

সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০১ মহররম ১৪৪২, ০৩ আশ্বিন ১৪২৭

করোনা দুর্যোগে পূজা পার্বণ থমকে : মহাসংকটে ঢাকিরা

জেলা বার্তা পরিবেশক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

image

করোনায় এবার হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অনুষ্ঠান তেমন না হওয়ায় ঢাকীদের সময় ভাল যাচ্ছে না। পূজা-পার্বণ এবং বিয়ে ঘরোয়া পরিবেশে হওয়ায় ঢাকীদের কদর কমে গেছে। গত ৭ মাস ধরে তেমন অনুষ্ঠান না থাকায় তারা কোন রকমে দিন কাটাচ্ছে। আগামীতে শারদীয় দূর্গোৎসব বায়না তাদের এখনো হয়নি। এ নিয়ে তাদের ভাবনার শেষ নেই।

জানা গেছে, প্রতিটি পূজা-পার্বন, বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানসহ বিয়েতে ঢাক, বাদ্যযন্ত্র ও কাসরের বাদ্যে মুখরিত হয়ে উঠে। এবার করোনার কারণে সেই অনুষ্ঠানগুলো সীমিত আকারে হওয়ার কারণে তাদের কদর একেবার কমে গেছে।

বিশেষ করে জন্মাষ্টমীতে ঢাকী ও বাদকদের যে চাহিদা থাকে এবার ছিল তা পুরোপুরি আলাদা। করোনাকালে এ আয়োজন স্বল্পপরিসরে অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া বিশ^কর্মা পূজায় এবার ঢাকীদের তেমন চাহিদা ছিল না। এদিকে আগামী ২২ অক্টোবর হিন্দু সম্প্রদায়ের বড় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব, আনন্দময়ী মায়ের আগমনী বার্তা। দুর্গাপূজার ম-পগুলোতে মুখর হয় ঢাকের বাদ্যে। সেই বাদ্যের সুর ছড়িয়ে পড়ে উৎসবের সবখানে। ঢাকীরাও পায় আমন্ত্রণ, ঢাকগুলো সেজে উঠে নতুন সাজে। এবারও প্রকৃতিতে শরৎ এসেছে, পঞ্জিকামতে এবারের আশ্বিন মলিন বা মলো মাস, তাই পিছিয়েছে পূজার দিনক্ষণ। আর আগেই হানা দেয় মহামারী করোনা। এবার চাহিদার তুলনায় ঢাকীদের বাজানোর সংখ্যাও কমে আসবে।

শিবতলা কর্মকারপাড়া দুর্গামাতা ঠাকুরানী মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক অজিত কুমার জানান, করোনার কারণে আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে নির্দেশনা রয়েছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকল আয়োজন করার। প্রতিবছর ঢাকীদের ৬ জনের একটি দল থাকে, এবার থাকবে ৩ জন। এছাড়া বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করা হবে না।

ঢাকী রাজকুমার জানান, করোনার জন্য বিয়ে-পূজায় আয়োজকরা সীমিত আয়োজন করায় তাদের এবার চাহিদা কমে গেছে। দীর্ঘ ৭ মাস ধরে তেমন বায়না নেই। অভাব-অনটনে কাটছে উৎসব মাতিয়ে রাখা ঢাকীদের প্রতিদিনের জীবন।

আরেক ঢাকী চন্দন জানান, পূজা-পার্বণ, মেলা কিংবা বিয়ের অনুষ্ঠান ছাড়াও করোনায় থমকে গেছে সাংস্কৃতিক সব আয়োজন। বর্তমানে কোন রকমে দিন কাটাতে হচ্ছে। তিনি আরও জানান, আগে মাসে ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা আয় হতো, এখন মাত্র ২ থেকে ৩ হাজার টাকা।