অভিনেতা আবদুল কাদেরের মৃত্যু

বনানী কবরস্থানে অন্তিম শয্যা

হাজারো দর্শকের মনে দাগ কাটা গুণী অভিনেতা আবদুুল কাদেরের চিরবিদায়। রাজধানীর বনানী কবরস্থানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে গতকাল সন্ধ্যা ৫টা ৩৫ মিনিটে মায়ের কবরের পাশে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করে আবদুল কাদেরের পুত্রবধূ জাহিদা ইসলাম জেমি সবাইকে দোয়া করতে অনুরোধ করেছেন। আবদুল কাদের এভারকেয়ার হাসপাতালে গতকাল সকাল ৮টা ২০ মিনিটে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। বাদ জোহর রাজধানীর মিরপুর ডিওএইচএস সেন্ট্রাল মসজিদে আবদুল কাদেরের প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়। জানাজায় অংশ নেন অভিনেতার আত্মীয়-স্বজন, ঘনিষ্ঠজন ও মসজিদের মুসল্লিরা।

দুপুর ৩টার দিকে আবদুল কাদেরের মরদেহ সহকর্মী ও সর্বস্তরের মানুষকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য মিরপুর থেকে রাজধানীর সেগুনবাগিচার বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে নেয়া হয়। সেখানে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, নাট্যব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, ফেরদৌসী মজুমদার, ত্রপা মজুমদার, রামেন্দু মজুমদার, এসএ হক অলিকসহ অনেকেই আবদুল কাদেরকে শ্রদ্ধা জানান। শিল্পকলায় প্রয়াত আবদুল কাদেরকে ঘিরে শ্রদ্ধার আয়োজন শেষ হয় ৪টা ৫ মিনিটে। এরপর আবদুল কাদেরের মরদেহ নেয়া হয় রাজধানীর বনানী কবরস্থানে। সেখানে তার দ্বিতীয় জানাজা হয়। এরপর দাফন সম্পন্ন হয়। আবদুল কাদেরের মৃত্যুতে বিনোদন অঙ্গনজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিনোদন ও অন্য অঙ্গনের মানুষেরাও প্রয়াতের মৃত্যুতে গভীর শোক ও তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন। আবদুল কাদেরের প্যানক্রিসের (অগ্ন্যাশয়) ক্যানসার জটিল আকার ধারণ করলে গত ৮ ডিসেম্বর তাকে ভারতের চেন্নাইয়ে নেয়া হয়। বেশ কিছু পরীক্ষার পর ১৫ ডিসেম্বর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

চেন্নাইয়ের ভেলোর শহরের সিএমসি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার পর ২০ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এ অভিনেতাকে। এরপর তার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। গত শুক্রবার মধ্যরাতে তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেয়া হয়। হুমায়ূন আহমেদের লেখা ‘কোথাও কেউ নেই’ ধারাবাহিক নাটকে ‘বদি’ চরিত্রে অভিনয় করে সবচেয়ে জনপ্রিয়তা পান আবদুল কাদের। বাকের ভাই আর বদি, এই দুই চরিত্র নব্বই দশকে বিপুল দর্শকের মনে দাগ কেটেছিল। সেই থেকে সুপরিচিত হয়ে উঠেন আবদুল কাদের। হুমায়ূন আহমেদের ‘নক্ষত্রের রাত’ নাটকে দুলাভাই চরিত্রেও দারুণ প্রশংসিত হন আবদুল কাদের। বহু একক ও ধারাবাহিক নাটকের পাশাপাশি তাকে নিয়মিত দেখা গেছে বিটিভির জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’-তে। ১৯৫১ সালে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার সোনারং গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন অভিনেতা আবদুল কাদের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে কর্মজীবন শুরু করেন শিক্ষকতা দিয়ে। বিটপী বিজ্ঞাপনী সংস্থায় এক্সিকিউটিভ হিসেবে চাকরির পর আন্তর্জাতিক কোম্পানি বাটায় চাকরি করেছেন ৩৫ বছর।

image

গতকাল শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে প্রয়াত অভিনেতা আবদুল কাদেরের মরদেহে বিভিন্ন সংগঠনের শ্রদ্ধা -সংবাদ

আরও খবর
খন্দকার মুনীরুজ্জামান ছিলেন অসাম্প্রদায়িক আদর্শে সমাজ গড়ার স্বপ্নদ্রষ্টা
প্রধানমন্ত্রী ‘ধ্রুবতারা’ উদ্বোধন করবেন আজ
ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তের হার কমছে
বাংলা একাডেমি ফেলোশিপ পেলেন ৭ বিশিষ্ট ব্যক্তি
কবি সৈয়দ শামসুল হকের জন্মদিন আজ
জেমকন সাহিত্য পুরস্কার ২০২০ ঘোষণা
আ’লীগের নেতৃত্বে থাকবেন ত্যাগীরাই তথ্যমন্ত্রী
পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিরলসভাবে কাজ করছে সরকার : ড. রাজ্জাক
তৃতীয় ধাপের ৬৪ পৌরসভায় নৌকার টিকিট পেলেন যারা
নির্বাচন-পূর্ব সহিংসতায় নিহত ১
ডিএমপির ২২ পরিদর্শকের বদলি
সব অবৈধ স্থাপনা দু’দিনের মধ্যে সরিয়ে ফেলার নির্দেশ চসিকের
দেশের ৯০ ভাগ মানুষের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার সামর্থ্য নেই জি.এম কাদের

রবিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ , ১২ পৌষ ১৪২৭, ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

অভিনেতা আবদুল কাদেরের মৃত্যু

বনানী কবরস্থানে অন্তিম শয্যা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

image

গতকাল শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে প্রয়াত অভিনেতা আবদুল কাদেরের মরদেহে বিভিন্ন সংগঠনের শ্রদ্ধা -সংবাদ

হাজারো দর্শকের মনে দাগ কাটা গুণী অভিনেতা আবদুুল কাদেরের চিরবিদায়। রাজধানীর বনানী কবরস্থানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে গতকাল সন্ধ্যা ৫টা ৩৫ মিনিটে মায়ের কবরের পাশে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করে আবদুল কাদেরের পুত্রবধূ জাহিদা ইসলাম জেমি সবাইকে দোয়া করতে অনুরোধ করেছেন। আবদুল কাদের এভারকেয়ার হাসপাতালে গতকাল সকাল ৮টা ২০ মিনিটে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। বাদ জোহর রাজধানীর মিরপুর ডিওএইচএস সেন্ট্রাল মসজিদে আবদুল কাদেরের প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়। জানাজায় অংশ নেন অভিনেতার আত্মীয়-স্বজন, ঘনিষ্ঠজন ও মসজিদের মুসল্লিরা।

দুপুর ৩টার দিকে আবদুল কাদেরের মরদেহ সহকর্মী ও সর্বস্তরের মানুষকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য মিরপুর থেকে রাজধানীর সেগুনবাগিচার বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে নেয়া হয়। সেখানে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, নাট্যব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, ফেরদৌসী মজুমদার, ত্রপা মজুমদার, রামেন্দু মজুমদার, এসএ হক অলিকসহ অনেকেই আবদুল কাদেরকে শ্রদ্ধা জানান। শিল্পকলায় প্রয়াত আবদুল কাদেরকে ঘিরে শ্রদ্ধার আয়োজন শেষ হয় ৪টা ৫ মিনিটে। এরপর আবদুল কাদেরের মরদেহ নেয়া হয় রাজধানীর বনানী কবরস্থানে। সেখানে তার দ্বিতীয় জানাজা হয়। এরপর দাফন সম্পন্ন হয়। আবদুল কাদেরের মৃত্যুতে বিনোদন অঙ্গনজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিনোদন ও অন্য অঙ্গনের মানুষেরাও প্রয়াতের মৃত্যুতে গভীর শোক ও তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন। আবদুল কাদেরের প্যানক্রিসের (অগ্ন্যাশয়) ক্যানসার জটিল আকার ধারণ করলে গত ৮ ডিসেম্বর তাকে ভারতের চেন্নাইয়ে নেয়া হয়। বেশ কিছু পরীক্ষার পর ১৫ ডিসেম্বর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

চেন্নাইয়ের ভেলোর শহরের সিএমসি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার পর ২০ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এ অভিনেতাকে। এরপর তার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। গত শুক্রবার মধ্যরাতে তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেয়া হয়। হুমায়ূন আহমেদের লেখা ‘কোথাও কেউ নেই’ ধারাবাহিক নাটকে ‘বদি’ চরিত্রে অভিনয় করে সবচেয়ে জনপ্রিয়তা পান আবদুল কাদের। বাকের ভাই আর বদি, এই দুই চরিত্র নব্বই দশকে বিপুল দর্শকের মনে দাগ কেটেছিল। সেই থেকে সুপরিচিত হয়ে উঠেন আবদুল কাদের। হুমায়ূন আহমেদের ‘নক্ষত্রের রাত’ নাটকে দুলাভাই চরিত্রেও দারুণ প্রশংসিত হন আবদুল কাদের। বহু একক ও ধারাবাহিক নাটকের পাশাপাশি তাকে নিয়মিত দেখা গেছে বিটিভির জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’-তে। ১৯৫১ সালে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার সোনারং গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন অভিনেতা আবদুল কাদের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে কর্মজীবন শুরু করেন শিক্ষকতা দিয়ে। বিটপী বিজ্ঞাপনী সংস্থায় এক্সিকিউটিভ হিসেবে চাকরির পর আন্তর্জাতিক কোম্পানি বাটায় চাকরি করেছেন ৩৫ বছর।