ডাকাতিয়া বালু ব্যবসায়ীদের দখল দূষণে অস্তিত্ব সংকটে

অবৈধ বালুমহল আর দূষণে ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে ডাকাতিয়া নদী। চাঁদপুর থেকে লাকসাম পর্যন্ত নদীর দু’পাড় দখল করে গড়ে উঠেছে অসংখ্য অবৈধ বালুমহাল। সরকারের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে চলছে নদীপাড়ে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য। জানা যায়, ডাকাতিয়া নদী বাংলাদেশ-ভারত আন্তঃসীমান্ত নদী। নদীটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কুমিল্লা ও চাঁদপুর জেলা দিয়ে বয়ে গেছে। এর দৈর্ঘ্য ১৪১ কিলোমিটার এবং গড় প্রস্থ ৬৭ মিটার। ডাকাতিয়া নদী মেঘনার একটি উপনদী।ু

এদিকে চাঁদপুর শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান ৫নং কয়লা ঘাট, ৩নং ঘাট, ১০নং ঘাট, চৌধুরী ঘাট ও নতুন বাজার এলাকার নদীর দুই পাড়ে শত শত পাকা বিল্ডিং ও আঁধাপাকা টিনসেড ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘর নির্মাণ করে ডাকাতিয়া পাড় দখল করায় শহরে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এসব স্থাপনা কয়েকবার উচ্ছেদ করা হলেও পুরোপুরি দখলমুক্ত হয়নি। উচ্ছেদের পরবর্তী সময়ে আবারও দখল! ডাকাতিয়া নদীর মেঘনার প্রবেশ মুখের চাঁদপুর পুরান বাজার ও নতুন বাজারসহ বেশিরভাগ এলাকায় নদীই দখল হয়ে নদী সরু হয়ে গেছে। এছাড়াও জেলার সদরসহ, ফরিদগঞ্জ, হাজীগঞ্জ, শাহরাস্তি উপজেলায় নদীর দুই পাশে গড়ে উঠেছে অসংখ্য অবৈধ বালুমহল। এসব বালু মহল ইজারাবিহীনভাবে বালু উত্তোলন করে ভরাট করে যাচ্ছে ডাকাতিয়ার আশপাশ এলাকা। এতে নাব্যতা সঙ্কটে পড়ছে নদীটি। অন্যদিকে দখলের কারণে স্বাভাবিক পানি প্রবাহ আটকে যাওয়ায় ফসল উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বলাখাল, হাজীগঞ্জ, আলীগঞ্জ, শাহরাস্তি, জগন্নাথপুরসহ বিভিন্নস্থানে নদীর পাড় দখল করে অবৈধ বালু ব্যবসার কারণে ভরাট হয়ে যাচ্ছে চিরচেনা ডাকাতিয়া নদী। স্থানীয়রা জানান, হাজীগঞ্জ বাজারের মুরগির ব্যবসায়ীদের মুরগি ড্রেসিং করার পর যে ময়লা আবর্জনাসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসা-বাড়ির পয়ঃনিষ্কাষণের বর্জ্য এবং পৌর কসাইখানার বর্জ্য নদীতে ফেলা হয়। এতে নদীর পানি নষ্টের পাশাপাশি দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। স্থানীয়রা আরও জানান, এক সময় এই ডাকাতিয়ার দুই পাশে গড়ে উঠে জেলে পল্লী। এ নদীতে মাছ ধরেই জীবিকা নির্বাহ করত বহু জেলে পরিবার।

বালুমহলের কারণে দিন দিন নদীতে মাছ কমে যাচ্ছে। তাই বাপ-দাদার চিরচেনা নদীতে মাছ ধরার ব্যবসা এখন বন্ধ করে দিয়েছে অনেক জেলে। ডাকাতিয়া নদী রক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অবৈধ বালুমহল বন্ধ ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান দ্রুততার সঙ্গে করা এখন সচেতনমহলের সময়ের দাবি।

image

চাঁদপুর : দখল-দূষণে নাব্য সংকটে পড়া ডাকাতিয়া নদী -সংবাদ

আরও খবর
তাহিরপুরে ডায়াগনস্টিকে ঢুকে যুবককে চুরিকাঘাত
ডিমলায় ২৮ দিন পর অপহৃতা উদ্ধার
চাঁপাইয়ে নিখোঁজ শিশুর দেহ উদ্ধার
ভেদরগঞ্জে তিন বিদ্রোহীর চাপে নৌকার মাঝি
সিলেট মহানগর কৃষক দলের কমিটির অনুমোদন
গোপালপুরে পাউবোর খননে সড়ক নদীতে বিলীন যান চলাচল বন্ধ
নাগেশ্বরীতে শীতবস্ত্র পেলেন ২ হাজার ২শ’ শীতার্ত
‘চট্টগ্রাম বন্দর ভাগ্য বদলাবে বাংলাদেশের’
আশুগঞ্জে শিয়ালের কামড়ে আহত অর্ধশত : রাত জেগে পাহারা
সেই নুরু বাবুর্চি গ্রেফতার
লাকসামে হাট-বাজারে গরম কাপড়ের ব্যবসা জমজমাট
ইটভাটার গ্রাসে ফসলি জমির ঊর্বর মাটি : আবাদ হুমকিতে

সোমবার, ০৪ জানুয়ারী ২০২১ , ২০ পৌষ ১৪২৭, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

ডাকাতিয়া বালু ব্যবসায়ীদের দখল দূষণে অস্তিত্ব সংকটে

অমরেশ দত্ত, চাঁদপুর

image

চাঁদপুর : দখল-দূষণে নাব্য সংকটে পড়া ডাকাতিয়া নদী -সংবাদ

অবৈধ বালুমহল আর দূষণে ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে ডাকাতিয়া নদী। চাঁদপুর থেকে লাকসাম পর্যন্ত নদীর দু’পাড় দখল করে গড়ে উঠেছে অসংখ্য অবৈধ বালুমহাল। সরকারের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে চলছে নদীপাড়ে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য। জানা যায়, ডাকাতিয়া নদী বাংলাদেশ-ভারত আন্তঃসীমান্ত নদী। নদীটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কুমিল্লা ও চাঁদপুর জেলা দিয়ে বয়ে গেছে। এর দৈর্ঘ্য ১৪১ কিলোমিটার এবং গড় প্রস্থ ৬৭ মিটার। ডাকাতিয়া নদী মেঘনার একটি উপনদী।ু

এদিকে চাঁদপুর শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান ৫নং কয়লা ঘাট, ৩নং ঘাট, ১০নং ঘাট, চৌধুরী ঘাট ও নতুন বাজার এলাকার নদীর দুই পাড়ে শত শত পাকা বিল্ডিং ও আঁধাপাকা টিনসেড ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘর নির্মাণ করে ডাকাতিয়া পাড় দখল করায় শহরে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এসব স্থাপনা কয়েকবার উচ্ছেদ করা হলেও পুরোপুরি দখলমুক্ত হয়নি। উচ্ছেদের পরবর্তী সময়ে আবারও দখল! ডাকাতিয়া নদীর মেঘনার প্রবেশ মুখের চাঁদপুর পুরান বাজার ও নতুন বাজারসহ বেশিরভাগ এলাকায় নদীই দখল হয়ে নদী সরু হয়ে গেছে। এছাড়াও জেলার সদরসহ, ফরিদগঞ্জ, হাজীগঞ্জ, শাহরাস্তি উপজেলায় নদীর দুই পাশে গড়ে উঠেছে অসংখ্য অবৈধ বালুমহল। এসব বালু মহল ইজারাবিহীনভাবে বালু উত্তোলন করে ভরাট করে যাচ্ছে ডাকাতিয়ার আশপাশ এলাকা। এতে নাব্যতা সঙ্কটে পড়ছে নদীটি। অন্যদিকে দখলের কারণে স্বাভাবিক পানি প্রবাহ আটকে যাওয়ায় ফসল উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বলাখাল, হাজীগঞ্জ, আলীগঞ্জ, শাহরাস্তি, জগন্নাথপুরসহ বিভিন্নস্থানে নদীর পাড় দখল করে অবৈধ বালু ব্যবসার কারণে ভরাট হয়ে যাচ্ছে চিরচেনা ডাকাতিয়া নদী। স্থানীয়রা জানান, হাজীগঞ্জ বাজারের মুরগির ব্যবসায়ীদের মুরগি ড্রেসিং করার পর যে ময়লা আবর্জনাসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসা-বাড়ির পয়ঃনিষ্কাষণের বর্জ্য এবং পৌর কসাইখানার বর্জ্য নদীতে ফেলা হয়। এতে নদীর পানি নষ্টের পাশাপাশি দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। স্থানীয়রা আরও জানান, এক সময় এই ডাকাতিয়ার দুই পাশে গড়ে উঠে জেলে পল্লী। এ নদীতে মাছ ধরেই জীবিকা নির্বাহ করত বহু জেলে পরিবার।

বালুমহলের কারণে দিন দিন নদীতে মাছ কমে যাচ্ছে। তাই বাপ-দাদার চিরচেনা নদীতে মাছ ধরার ব্যবসা এখন বন্ধ করে দিয়েছে অনেক জেলে। ডাকাতিয়া নদী রক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অবৈধ বালুমহল বন্ধ ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান দ্রুততার সঙ্গে করা এখন সচেতনমহলের সময়ের দাবি।