মোদিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সংকটকালে কোভিড-১৯ টিকা উপহার পাঠানোয় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শত বছরপূর্তির অনুষ্ঠানমালা উদ্বোধনের সময় তিনি এ ধন্যবাদ জানান। ভারত সরকারের উপহার হিসেবে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ডের ২০ লাখ ডোজ এদিন দুপুরেই বাংলাদেশে পৌঁছায়।

প্রতিবেশী কোন দেশকে ভারতের উপহার হিসেবে দেয়া টিকার সবচেয়ে বড় চালান এটি বলে দেশটির হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন, যেটা আমরা পেয়েছি ভারত থেকে উপহারস্বরূপ সেটা এসে পৌঁছে গেছে। এজন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে আমি ধন্যবাদ জানাই। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি এই টিকারই ৩ কোটি ডোজ কিনছে বাংলাদেশ সরকার। তার প্রথম চালান আগামী সপ্তাহেই আসার কথা।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যেটা টাকা দিয়ে কিনেছি, সেটা ২৫ বা ২৬ তারিখ এসে পৌঁছবে।

‘এই ভ্যাকসিন কীভাবে দেয়া হবে, সব বিষয়ে পরিকল্পনা আমরা নিয়ে রেখে দিয়েছি।’

করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবিলায় সরকার সব ধরনের পদক্ষেপই নিয়েছেন বলে জানান তিনি। নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে সরাসরি অংশ নিতে না পারার আক্ষেপও ঝরে শেখ হাসিনার কণ্ঠে।

‘আজকে করোনাভাইরাসের জন্য বিশ্ব স্থবির। আমিও ঘরে বন্দী। মাঝে মাঝে মনে হয় ২০০৭ সালে যখন গ্রেপ্তার হয়েছিলাম তখন একটা ছোট কারাগারে ছিলাম, এখন মনে হচ্ছে একটা বড় কারাগারে আছি। যে কারণে আজকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপন হচ্ছে, কিন্তু সরাসরি উপস্থিত থাকতে পারলাম না। এটা সত্যিই আমার জন্য খুব কষ্টের, দুঃখের। মনটা পড়ে আছে বিশ্ববিদ্যালয়ে, কিন্তু উপায় নেই।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুসরণ করেই দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় দেশে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেবে বলে আশা করেন প্রধানমন্ত্রী।

‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে শুধু একটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখলে হবে না। এটা একটা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের, যেটা আমাদের প্রতিটি অর্জনের পথ দেখিয়েছে। আমাদের সব অর্জনের বাতিঘর। তার সে আলো ছড়িয়ে পড়বে সারাদেশে।’ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চাহিদার উপযোগী করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গড়ে তোলার ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী।

‘আমাদের আগামী দিনের পথ চলায়, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য যে দক্ষ মানবশক্তি দরকার, এ মানবশক্তি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ই গড়তে পারে বা এখান থেকে যাত্রা শুরু করতে পারে, যাকে অনুসরণ করে সমগ্র বাংলাদেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়। তারাও সেভাবে কাজ করবে, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে তাল মিলিয়ে যেন চলতে পারি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হবে তার কেন্দ্রবিন্দু।’ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা, যেটা আমরা আনতে পেরেছি। অন্তত এটুকু দাবি করতে পারি, আমরা সরকার গঠন করার পর থেকে আমাদের প্রচেষ্টায় প্রতি রাতে অস্ত্রের ঝনঝনানি শোনা যায় না, গোলাগুলিও শোনা যায় না, বোমাবাজিও শোনা যায় না।

‘অবশ্য বলা যায় না, আজকেই কথা বললাম, হয়ত আজকেই কেউ টাস করে একটা ফোটাতে পারে। এটা অবশ্য আমাদের দেশে হয়ে থাকে। ওটা কিছু না, এগুলো নিয়ন্ত্রণ করার মতো দক্ষতা যথেষ্ট আছে।’ জাতির পিতা যে জাতির জন্য সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন, সে জাতির ভাগ্য পরিবর্তনই নিজের লক্ষ্য বলে জানান বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আর এজন্য যেকোন বাধা অতিক্রম করতে আমি সচেষ্ট। আমি বিশ্বাস করি, এটা মানুষও উপলব্ধি করতে পারে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা সময় ছিল, যখন অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হতো। সাহস পেয়েছি বাবার কাছে। সব সময় বাবার আদর্শে চলেছি, তাই মনের মধ্যে কোন ভয় বা দ্বিধা নেই। মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি, একটা সিদ্ধান্ত নিলে সেটা বাস্তবায়ন করা যায়।’ দেশের জন্য নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘করোনা আমাদের জন্য অনেক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে এসেছে। কিন্তু এসব অতিক্রম করতে হবে।

‘আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হব। এরপরও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি কাঠামো রেখে যাচ্ছি। ২০৭১ সালে যেদিন দেশের শতবর্ষ উদযাপন হবে, সেদিন বেঁচে থাকব না। কিন্তু যারা থাকবে, তারা যেন উন্নত দেশে সেদিনটা উদযাপন করতে পারে, এটাই আমার ইচ্ছা।’

আরও খবর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্বরূপে ফিরে আসুক প্রধানমন্ত্রী
সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়তে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে সরকারি দল
ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ‘গণ্ডি’
আরণ্যক নাট্যদলের প্রযোজনা ‘কহে ফেসবুক’
টাকা দিলেই জাল ড্রাইভিং লাইসেন্স ও ফিটনেস সার্টিফিকেট
চীনের মধ্যস্থতায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে প্রতিমন্ত্রী
পিকে হালদারের সহযোগী সুকুমার মৃধা ও মেয়ে অনিন্দিতা রিমান্ডে
ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ ৩ জন গ্রেপ্তার
দেশকে নতজানু রাখার পরিকল্পনা রুখে দিতে হবে মির্জা ফখরুল
অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে বাধা
চৌমুহনী পৌর নির্বাচন হত্যার আসামি গ্রেপ্তার

শুক্রবার, ২২ জানুয়ারী ২০২১ , ৮ মাঘ ১৪২৭, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪২

টিকা উপহার

মোদিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

সংকটকালে কোভিড-১৯ টিকা উপহার পাঠানোয় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শত বছরপূর্তির অনুষ্ঠানমালা উদ্বোধনের সময় তিনি এ ধন্যবাদ জানান। ভারত সরকারের উপহার হিসেবে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ডের ২০ লাখ ডোজ এদিন দুপুরেই বাংলাদেশে পৌঁছায়।

প্রতিবেশী কোন দেশকে ভারতের উপহার হিসেবে দেয়া টিকার সবচেয়ে বড় চালান এটি বলে দেশটির হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন, যেটা আমরা পেয়েছি ভারত থেকে উপহারস্বরূপ সেটা এসে পৌঁছে গেছে। এজন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে আমি ধন্যবাদ জানাই। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি এই টিকারই ৩ কোটি ডোজ কিনছে বাংলাদেশ সরকার। তার প্রথম চালান আগামী সপ্তাহেই আসার কথা।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যেটা টাকা দিয়ে কিনেছি, সেটা ২৫ বা ২৬ তারিখ এসে পৌঁছবে।

‘এই ভ্যাকসিন কীভাবে দেয়া হবে, সব বিষয়ে পরিকল্পনা আমরা নিয়ে রেখে দিয়েছি।’

করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবিলায় সরকার সব ধরনের পদক্ষেপই নিয়েছেন বলে জানান তিনি। নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে সরাসরি অংশ নিতে না পারার আক্ষেপও ঝরে শেখ হাসিনার কণ্ঠে।

‘আজকে করোনাভাইরাসের জন্য বিশ্ব স্থবির। আমিও ঘরে বন্দী। মাঝে মাঝে মনে হয় ২০০৭ সালে যখন গ্রেপ্তার হয়েছিলাম তখন একটা ছোট কারাগারে ছিলাম, এখন মনে হচ্ছে একটা বড় কারাগারে আছি। যে কারণে আজকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপন হচ্ছে, কিন্তু সরাসরি উপস্থিত থাকতে পারলাম না। এটা সত্যিই আমার জন্য খুব কষ্টের, দুঃখের। মনটা পড়ে আছে বিশ্ববিদ্যালয়ে, কিন্তু উপায় নেই।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুসরণ করেই দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় দেশে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেবে বলে আশা করেন প্রধানমন্ত্রী।

‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে শুধু একটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখলে হবে না। এটা একটা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের, যেটা আমাদের প্রতিটি অর্জনের পথ দেখিয়েছে। আমাদের সব অর্জনের বাতিঘর। তার সে আলো ছড়িয়ে পড়বে সারাদেশে।’ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চাহিদার উপযোগী করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গড়ে তোলার ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী।

‘আমাদের আগামী দিনের পথ চলায়, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য যে দক্ষ মানবশক্তি দরকার, এ মানবশক্তি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ই গড়তে পারে বা এখান থেকে যাত্রা শুরু করতে পারে, যাকে অনুসরণ করে সমগ্র বাংলাদেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়। তারাও সেভাবে কাজ করবে, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে তাল মিলিয়ে যেন চলতে পারি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হবে তার কেন্দ্রবিন্দু।’ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা, যেটা আমরা আনতে পেরেছি। অন্তত এটুকু দাবি করতে পারি, আমরা সরকার গঠন করার পর থেকে আমাদের প্রচেষ্টায় প্রতি রাতে অস্ত্রের ঝনঝনানি শোনা যায় না, গোলাগুলিও শোনা যায় না, বোমাবাজিও শোনা যায় না।

‘অবশ্য বলা যায় না, আজকেই কথা বললাম, হয়ত আজকেই কেউ টাস করে একটা ফোটাতে পারে। এটা অবশ্য আমাদের দেশে হয়ে থাকে। ওটা কিছু না, এগুলো নিয়ন্ত্রণ করার মতো দক্ষতা যথেষ্ট আছে।’ জাতির পিতা যে জাতির জন্য সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন, সে জাতির ভাগ্য পরিবর্তনই নিজের লক্ষ্য বলে জানান বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আর এজন্য যেকোন বাধা অতিক্রম করতে আমি সচেষ্ট। আমি বিশ্বাস করি, এটা মানুষও উপলব্ধি করতে পারে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা সময় ছিল, যখন অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হতো। সাহস পেয়েছি বাবার কাছে। সব সময় বাবার আদর্শে চলেছি, তাই মনের মধ্যে কোন ভয় বা দ্বিধা নেই। মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি, একটা সিদ্ধান্ত নিলে সেটা বাস্তবায়ন করা যায়।’ দেশের জন্য নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘করোনা আমাদের জন্য অনেক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে এসেছে। কিন্তু এসব অতিক্রম করতে হবে।

‘আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হব। এরপরও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি কাঠামো রেখে যাচ্ছি। ২০৭১ সালে যেদিন দেশের শতবর্ষ উদযাপন হবে, সেদিন বেঁচে থাকব না। কিন্তু যারা থাকবে, তারা যেন উন্নত দেশে সেদিনটা উদযাপন করতে পারে, এটাই আমার ইচ্ছা।’