অযতে্ন অবহেলায় ভাষা শহীদ জব্বার চত্বর

প্রশাসনের উদাসীনতায় সংস্কার হয়নি পনেরো বছরেও

ময়মনসিংহের গফরগাঁও পৌর এলাকায় ভাষা শহীদ আবদুল জব্বার স্মরণে নির্মিত চত্বরটি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে চরম অযত্ন অবহেলায় পড়ে রয়েছে। প্রশাসনের উদাসীনতায় নির্মাণের পনেরো বছরেও সংস্কার হয়নি।

জানা যায়, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের অন্যতম এ শহীদ আবদুল জব্বারের গ্রামের বাড়ি পাঁচুয়াতে ২০০৮ সালে সরকারি অর্থায়নে পূনঃনির্মিত হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, সেই সঙ্গে নির্মাণ করা হয় ভাষা শহীদ আবদুল জব্বার স্মৃতি জাদুঘর ও গ্রন্থাগার। এই ভাষা শহীদের নামে পৌর এলাকায় কোন স্থাপনা ছিল না। এই ভাবনায় ২০০৫ সালে তৎসময়ের গফরগাঁও উপজেলা নির্বাহী অফিসার গৌতম কুমার নিজ উদ্যোগে পুর্বতন পাবলিক হল মোড়ে উপজেলা প্রশাসনের অর্থায়নে নির্মাণ করেন শহীদ আবদুল জব্বার চত্বর। ভাষা শহীদের স্মরণে তিনটি মিনার দিয়ে বেদিসহ দশ ফুট উচ্চতার পনের ফুট ব্যাসার্ধের একটি স্তম্ভ নির্মাণ করা হয়। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে নামকরণ করা হয় শহীদ জব্বার চত্বর। সেই সঙ্গে সরকারি পাবলিক হলটিরও নামকরণ করা হয় ভাষা শহীদ জব্বার মিলনায়তন। জানা গেছে, মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় মিলনায়তন ও পাশের জমি বেদখল হয়ে যায়। এখন মিলনায়তনটি প্রায় ভগ্নস্তূপে পরিণত হয়েছে। এদিকে জব্বার চত্বরের পাশে বাসস্ট্যান্ড হওয়ায় প্রায়ই এখানে বাস, ট্রাক ও রিকশা-ভ্যান দিয়ে চত্বরটি ঢাকা পড়ে থাকে । এলাকাবাসী জানায়, বাস ও ট্রাকের ধাক্কায় চত্বরের বেদি ক্ষতিগ্রস্ত হলে শ্রমিক-মালিকদের এখানে বাস-ট্রাক, রিকশা-ভ্যান না রাখতে অনুরোধ করলেও তারা কর্ণপাত করেনি। নির্মাণের সময় নিরাপত্তা বলয় হিসেবে দেয়া লোহার রেলিং পর্যন্ত উধাও। খোঁজে পাওয়া যায়নি উদ্বোধনী ফলক। সংস্কারের অভাবে বিবর্ণ স্থাপনাটি পীড়া দেয় এলাকাবাসীকে। এছাড়া বিভিন্ন পোস্টারে ছেয়ে গেছে বেদিসহ স্তম্ভটি।

অন্যদিকে উপজেলা প্রশাসনের অর্থায়নে শহীদ জব্বার চত্বর স্থাপিত হলেও তারা জানেন না এটি দেখভালের দায়িত্ব কার। এ নিয়ে একাধিকবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করা হলেও তারা বরাবরই উদাসীন। ভাষা শহীদের নামে নির্মিত এই চত্বরের চরম অবহেলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন নাগরিক সংগঠন ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের কর্মীরা।

এ বিষয়ে গফরগাঁও নাগরিক আন্দোলন ও মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি আনোয়ার হোসেন ফিরোজ বলেন, শহীদ জব্বার আমাদের গৌরব ও অহঙ্কার। এভাবে অযতেœ অবহেলায় পড়ে থাকলে এক সময় এটির অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে। আমরা গফরগাঁওবাসী অনতিবিলম্বে ভাষা শহীদ জব্বার চত্বর সংস্কার ও মর্যাদার সঙ্গে রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানাচ্ছি।

এ ব্যাপারে গফরগাঁও উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাজুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে খুব শীঘ্রই চত্বরের সংস্কার করা হবে।

রবিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ৮ ফাল্গুন ১৪২৭ ৮ রজব ১৪৪২

গফরগাঁওয়ে

অযতে্ন অবহেলায় ভাষা শহীদ জব্বার চত্বর

প্রশাসনের উদাসীনতায় সংস্কার হয়নি পনেরো বছরেও

প্রতিনিধি, গফরগাঁও (ময়মনসিংহ)

ময়মনসিংহের গফরগাঁও পৌর এলাকায় ভাষা শহীদ আবদুল জব্বার স্মরণে নির্মিত চত্বরটি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে চরম অযত্ন অবহেলায় পড়ে রয়েছে। প্রশাসনের উদাসীনতায় নির্মাণের পনেরো বছরেও সংস্কার হয়নি।

জানা যায়, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের অন্যতম এ শহীদ আবদুল জব্বারের গ্রামের বাড়ি পাঁচুয়াতে ২০০৮ সালে সরকারি অর্থায়নে পূনঃনির্মিত হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, সেই সঙ্গে নির্মাণ করা হয় ভাষা শহীদ আবদুল জব্বার স্মৃতি জাদুঘর ও গ্রন্থাগার। এই ভাষা শহীদের নামে পৌর এলাকায় কোন স্থাপনা ছিল না। এই ভাবনায় ২০০৫ সালে তৎসময়ের গফরগাঁও উপজেলা নির্বাহী অফিসার গৌতম কুমার নিজ উদ্যোগে পুর্বতন পাবলিক হল মোড়ে উপজেলা প্রশাসনের অর্থায়নে নির্মাণ করেন শহীদ আবদুল জব্বার চত্বর। ভাষা শহীদের স্মরণে তিনটি মিনার দিয়ে বেদিসহ দশ ফুট উচ্চতার পনের ফুট ব্যাসার্ধের একটি স্তম্ভ নির্মাণ করা হয়। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে নামকরণ করা হয় শহীদ জব্বার চত্বর। সেই সঙ্গে সরকারি পাবলিক হলটিরও নামকরণ করা হয় ভাষা শহীদ জব্বার মিলনায়তন। জানা গেছে, মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় মিলনায়তন ও পাশের জমি বেদখল হয়ে যায়। এখন মিলনায়তনটি প্রায় ভগ্নস্তূপে পরিণত হয়েছে। এদিকে জব্বার চত্বরের পাশে বাসস্ট্যান্ড হওয়ায় প্রায়ই এখানে বাস, ট্রাক ও রিকশা-ভ্যান দিয়ে চত্বরটি ঢাকা পড়ে থাকে । এলাকাবাসী জানায়, বাস ও ট্রাকের ধাক্কায় চত্বরের বেদি ক্ষতিগ্রস্ত হলে শ্রমিক-মালিকদের এখানে বাস-ট্রাক, রিকশা-ভ্যান না রাখতে অনুরোধ করলেও তারা কর্ণপাত করেনি। নির্মাণের সময় নিরাপত্তা বলয় হিসেবে দেয়া লোহার রেলিং পর্যন্ত উধাও। খোঁজে পাওয়া যায়নি উদ্বোধনী ফলক। সংস্কারের অভাবে বিবর্ণ স্থাপনাটি পীড়া দেয় এলাকাবাসীকে। এছাড়া বিভিন্ন পোস্টারে ছেয়ে গেছে বেদিসহ স্তম্ভটি।

অন্যদিকে উপজেলা প্রশাসনের অর্থায়নে শহীদ জব্বার চত্বর স্থাপিত হলেও তারা জানেন না এটি দেখভালের দায়িত্ব কার। এ নিয়ে একাধিকবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করা হলেও তারা বরাবরই উদাসীন। ভাষা শহীদের নামে নির্মিত এই চত্বরের চরম অবহেলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন নাগরিক সংগঠন ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের কর্মীরা।

এ বিষয়ে গফরগাঁও নাগরিক আন্দোলন ও মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি আনোয়ার হোসেন ফিরোজ বলেন, শহীদ জব্বার আমাদের গৌরব ও অহঙ্কার। এভাবে অযতেœ অবহেলায় পড়ে থাকলে এক সময় এটির অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে। আমরা গফরগাঁওবাসী অনতিবিলম্বে ভাষা শহীদ জব্বার চত্বর সংস্কার ও মর্যাদার সঙ্গে রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানাচ্ছি।

এ ব্যাপারে গফরগাঁও উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাজুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে খুব শীঘ্রই চত্বরের সংস্কার করা হবে।