বাজেট অনেক দিক থেকে সাহসী ও অগ্রগামী এমসিসিআই

২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটের ঘাটতি ও নি¤œ প্রবৃদ্ধির হার নিয়ে চিন্তা না করে যুক্তিসঙ্গতভাবে স্থিতিশীল জীবন ও জীবিকা নির্বাহের দিকে মনোনিবেশ করায় প্রস্তাবিত বাজেটের প্রশংসা করেছে মেট্রোপলিটন চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই)। এই পরিস্থিতিতে বাজেটকে অনেক দিক থেকে সাহসী ও আগ্রগামী মনে করে এমসিসিআই। প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দের আর্থিক ও অন্যান্য প্রণোদনাগুলোর পুরো সুবিধা অর্জন করতে সঠিকভাবে বাজেটের বাস্তবায়ন ও সরকারি ব্যয়ের মান নিশ্চিতকরণের প্রধান চ্যালেঞ্জ মনে করছে এমসিসিআই। গতকাল এমসিসিআই’র সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবির স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা হয়েছে।

এমসিসিআই’র পক্ষ থেকে বলা হয়, কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে সৃষ্ট দেশীয় ও বৈশ্বিক পরিস্থিতে বাজেট প্রস্তুত করা অর্থমন্ত্রীর জন্য একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ ছিল। এক বছরের বেশি সময় ধরে এই মহামারী দেশের এবং বৈশ্বিক সামাজিক ও বিজনেস ইকো-সিস্টেম পাল্টে দিয়েছে। এই বাজেটে জীবন ও জীবিকা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পাঁচটি প্রয়োজনীয় খাতে অগ্রাধিকার দেয়ায় এমসিসিআই সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে। এগুলো হলো স্বাস্থ্য খাত, মহামারীর আর্থিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবিলায় প্রণোদনা প্যাকেজ অব্যাহত রাখা, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষি খাত, শিক্ষা ও দক্ষতা বৃদ্ধিসহ মানবসম্পদের সামগ্রিক উন্নয় ও পল্লী উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি।

সরকার নোভেল করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে পর্যায়ক্রমে ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা দেয়ার পরিকল্পনা করেছে। প্রথম পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ গ্রুপকে প্রতি মাসে ২৫ লাখ হারে টিকা দেয়া হবে। জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ মানুষকে এ হারে টিকা দেয়া হলে সেক্ষেত্রে ৪ বছরের বেশি সময় লাগবে। ব্যবসার সঙ্গে জড়িত মালিক, শ্রমিক ও কর্মচারীকে শীঘ্রই এই টিকা কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসা প্রয়োজন।

২০২১-২২ অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি ২১৪,৬৮১ কোটি টাকা নির্ধারণ করা (জিডিপির ৬.২%) হয়েছে, যা চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের ১৯০,০০০ কোটি টাকা (জিডিপির ৬.০%) ছিল। মোট ঘাটতির মধ্যে ১০১,২২৮ কোটি বাইরের উৎস থেকে অর্থায়ন হবে এবং দেশীয় উৎস থেকে ১১৩,৪৫৩ কোটি টাকা। ১১৩,৪৫৩ কোটি টাকার মধ্যে ৭৬,৪৫২ কোটি টাকা ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে এবং ৩৭,০০১ কোটি টাকা সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য নন-ব্যাংক উৎস থেকে আসবে। ইতোমধ্যে অর্থনীতিতে সংঘটিত বিঘœ এবং সম্ভাব্য আরও বিঘেœর আলোকে বাজেটের ঘাটতি বছর শেষে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেড়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছে সংগঠনটি।

মহামারীর শুরু থেকেই এমসিসিআই পরামর্শ দিয়েছে, বিগত বছরগুলোর মতো যথাযথ আর্থিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সরকারের স্ব-আরোপিত বাজেট ঘাটতি ৫ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে সরকারি প্রকল্পে অর্থায়ন, প্রণোদনা প্যাকেজ, কোভিড-১৯ ব্যবস্থাপনা এবং স্বাস্থ্য খাতের সংশ্লিষ্ট ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করা, যাতে নাগরিকদের জীবন ও জীবিকা রক্ষা করা যায়। এমসিসিআই আনন্দিত যে, বাজেট ঘাটতির ৫ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ করা হয়নি, বরং পরিবর্তিত পরিস্থিতি অনুযায়ী এটি বাড়ানো যাবে। একই সঙ্গে, অভ্যন্তরীণ সম্পদ সঞ্চালনের ওপর চাপ কমাতে পাশাপাশি বাজেটের ঘাটতি যথাযথভাবে পূরণ করার লক্ষ্যে এমসিসিআই জোরালোভাবে সব মাধ্যমগুলো ব্যবহার করার জন্য সরকারকে অনুরোধ করছে, যাতে বিভিন্ন স্বল্প সুদের তহবিল আন্তর্জাতিক মাধ্যম থেকে সংগ্রহ করা যায়।

এমসিসিআই জানায়, সরকারের প্রথম অগ্রাধিকার হলো যতদূর সম্ভব নাগরিকদের স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা। অপরিহার্য ব্যয়, অর্থনীতির মধ্যে তহবিল আদান-প্রদান এবং সামগ্রিক অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে (এই ক্ষেত্রে আমরা বাজেটে কোন সুনির্দিষ্টতা দেখতে পাইনি) প্রয়োজনে ঘাটতি বাড়ানোয় সরকারের দ্বিধান্বিত হওয়া উচিত হবে না।

কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য সরকার ব্যাপকভাবে জোর দিয়েছে, এমসিসিআই যার প্রশংসা করছে। গ্রামীণ দরিদ্র কৃষক, বিদেশ ফেরত শ্রমিক, এবং গ্রামীণ প্রশিক্ষিত ও বেকার যুবকদের ব্যবসার জন্য, এবং কৃষি ও কৃষি সংশ্লিষ্ট উৎপাদন ও সেবা ক্ষেত্রে আত্মকর্মসংস্থান, ক্ষুদ্র ব্যবসা, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প ইত্যাদির জন্য স্বল্প সুদ হারে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যে ৩,২০০ কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করা হয়েছে। এছাড়া প্রবাসী কর্মীদের নিরাপদ অভিবাসন এবং শোভন কাজ নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রচেষ্টা বিদেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ উন্মুক্ত করেছে।

আসন্ন অর্থবছর (২০২১-২২ অর্থবছর) কোভিড-১৯ এর কঠিন সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানসমূহকে প্রস্তাবিত কর ও অন্য প্রশাসনিক সুবিধা প্রদান করাতে, সরকারের জন্য কাক্সিক্ষত রাজস্ব আহরণ করার কাজটিও কঠিন হবে। করপোরেট করের হারকে ২.৫০ শতাংশ (তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য ২৫% থেকে ২২.৫% এবং অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য ৩২.৫০% থেকে ৩০%) কমিয়ে আনার পরিকল্পনায় এমসিসিআই প্রশংসা করছে। যা আঞ্চলিক প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে করপোরেট কর হারে সামঞ্জস্য আনতে ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণে সঠিক পদক্ষেপ। এমসিসিআই হতাশ যে, আগাম আয়কর (এআটি) হ্রাস বা বিলোপের জন্য বাজেটে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

বাজেটে মোবাইল আর্থিক পরিষেবা (এমএফএস) সরবরাহকারীদের করপোরেট করের হার বৃদ্ধির প্রস্তাব ভুল বার্তা দিবে জানিয়ে এমসিসিআই বলে, মহামারী চলাকালীন তাদের করের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করা এবং তাদের বিজ্ঞাপন ব্যয়কে অনুমোদিত ব্যয় হিসেবে বিবেচনা না করা এমএফএস পরিষেবার বৃদ্ধি হ্রাস করবে এবং বাজেটের অনেক ইতিবাচক দিকের মধ্যেও এই খাতের বিনিয়োগকারী এবং ব্যবহারকারীদের জন্য একটি ভুল বার্তা প্রেরণ করবে।

ন্যূনতম টার্নওভার ট্যাক্স বাদ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে সংগঠনটি বলে, এই জাতীয় বাজেটে পাইকারি বিক্রেতা, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ব্যবসায়ী, প্রোপ্রাপটরশিপ, স্টার্টআপ ও দুর্বল কোম্পানি যাদের বিক্রি মূল্য ৩ কোটি টাকার বেশি ন্যূনতম টার্নওভার ট্যাক্স ০.৫০ থেকে কমিয়ে ০.২৫ করা হয়েছে। ন্যূনতম টার্নওভার ট্যাক্স আয়কর নীতির সম্পূর্ণ বিরোধী। এছাড়া মহামারীকালীন ন্যূনতম টার্নওভার ট্যাক্স আরোপ যৌক্তিক নয়।

চলমান মহামারীর কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের অনুমান এখনও অনিশ্চিত। তাই এমসিসিআই’র পক্ষ থেকে ৩ মাস পর বাজেটের অন্তর্বর্তী মূল্যায়ন হওয়া প্রয়োজন বলে দাবি করা হয়েছে।

শনিবার, ০৫ জুন ২০২১ , ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৩ শাওয়াল ১৪৪২

বাজেট অনেক দিক থেকে সাহসী ও অগ্রগামী এমসিসিআই

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটের ঘাটতি ও নি¤œ প্রবৃদ্ধির হার নিয়ে চিন্তা না করে যুক্তিসঙ্গতভাবে স্থিতিশীল জীবন ও জীবিকা নির্বাহের দিকে মনোনিবেশ করায় প্রস্তাবিত বাজেটের প্রশংসা করেছে মেট্রোপলিটন চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই)। এই পরিস্থিতিতে বাজেটকে অনেক দিক থেকে সাহসী ও আগ্রগামী মনে করে এমসিসিআই। প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দের আর্থিক ও অন্যান্য প্রণোদনাগুলোর পুরো সুবিধা অর্জন করতে সঠিকভাবে বাজেটের বাস্তবায়ন ও সরকারি ব্যয়ের মান নিশ্চিতকরণের প্রধান চ্যালেঞ্জ মনে করছে এমসিসিআই। গতকাল এমসিসিআই’র সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবির স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা হয়েছে।

এমসিসিআই’র পক্ষ থেকে বলা হয়, কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে সৃষ্ট দেশীয় ও বৈশ্বিক পরিস্থিতে বাজেট প্রস্তুত করা অর্থমন্ত্রীর জন্য একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ ছিল। এক বছরের বেশি সময় ধরে এই মহামারী দেশের এবং বৈশ্বিক সামাজিক ও বিজনেস ইকো-সিস্টেম পাল্টে দিয়েছে। এই বাজেটে জীবন ও জীবিকা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পাঁচটি প্রয়োজনীয় খাতে অগ্রাধিকার দেয়ায় এমসিসিআই সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে। এগুলো হলো স্বাস্থ্য খাত, মহামারীর আর্থিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবিলায় প্রণোদনা প্যাকেজ অব্যাহত রাখা, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষি খাত, শিক্ষা ও দক্ষতা বৃদ্ধিসহ মানবসম্পদের সামগ্রিক উন্নয় ও পল্লী উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি।

সরকার নোভেল করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে পর্যায়ক্রমে ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা দেয়ার পরিকল্পনা করেছে। প্রথম পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ গ্রুপকে প্রতি মাসে ২৫ লাখ হারে টিকা দেয়া হবে। জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ মানুষকে এ হারে টিকা দেয়া হলে সেক্ষেত্রে ৪ বছরের বেশি সময় লাগবে। ব্যবসার সঙ্গে জড়িত মালিক, শ্রমিক ও কর্মচারীকে শীঘ্রই এই টিকা কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসা প্রয়োজন।

২০২১-২২ অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি ২১৪,৬৮১ কোটি টাকা নির্ধারণ করা (জিডিপির ৬.২%) হয়েছে, যা চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের ১৯০,০০০ কোটি টাকা (জিডিপির ৬.০%) ছিল। মোট ঘাটতির মধ্যে ১০১,২২৮ কোটি বাইরের উৎস থেকে অর্থায়ন হবে এবং দেশীয় উৎস থেকে ১১৩,৪৫৩ কোটি টাকা। ১১৩,৪৫৩ কোটি টাকার মধ্যে ৭৬,৪৫২ কোটি টাকা ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে এবং ৩৭,০০১ কোটি টাকা সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য নন-ব্যাংক উৎস থেকে আসবে। ইতোমধ্যে অর্থনীতিতে সংঘটিত বিঘœ এবং সম্ভাব্য আরও বিঘেœর আলোকে বাজেটের ঘাটতি বছর শেষে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেড়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছে সংগঠনটি।

মহামারীর শুরু থেকেই এমসিসিআই পরামর্শ দিয়েছে, বিগত বছরগুলোর মতো যথাযথ আর্থিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সরকারের স্ব-আরোপিত বাজেট ঘাটতি ৫ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে সরকারি প্রকল্পে অর্থায়ন, প্রণোদনা প্যাকেজ, কোভিড-১৯ ব্যবস্থাপনা এবং স্বাস্থ্য খাতের সংশ্লিষ্ট ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করা, যাতে নাগরিকদের জীবন ও জীবিকা রক্ষা করা যায়। এমসিসিআই আনন্দিত যে, বাজেট ঘাটতির ৫ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ করা হয়নি, বরং পরিবর্তিত পরিস্থিতি অনুযায়ী এটি বাড়ানো যাবে। একই সঙ্গে, অভ্যন্তরীণ সম্পদ সঞ্চালনের ওপর চাপ কমাতে পাশাপাশি বাজেটের ঘাটতি যথাযথভাবে পূরণ করার লক্ষ্যে এমসিসিআই জোরালোভাবে সব মাধ্যমগুলো ব্যবহার করার জন্য সরকারকে অনুরোধ করছে, যাতে বিভিন্ন স্বল্প সুদের তহবিল আন্তর্জাতিক মাধ্যম থেকে সংগ্রহ করা যায়।

এমসিসিআই জানায়, সরকারের প্রথম অগ্রাধিকার হলো যতদূর সম্ভব নাগরিকদের স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা। অপরিহার্য ব্যয়, অর্থনীতির মধ্যে তহবিল আদান-প্রদান এবং সামগ্রিক অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে (এই ক্ষেত্রে আমরা বাজেটে কোন সুনির্দিষ্টতা দেখতে পাইনি) প্রয়োজনে ঘাটতি বাড়ানোয় সরকারের দ্বিধান্বিত হওয়া উচিত হবে না।

কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য সরকার ব্যাপকভাবে জোর দিয়েছে, এমসিসিআই যার প্রশংসা করছে। গ্রামীণ দরিদ্র কৃষক, বিদেশ ফেরত শ্রমিক, এবং গ্রামীণ প্রশিক্ষিত ও বেকার যুবকদের ব্যবসার জন্য, এবং কৃষি ও কৃষি সংশ্লিষ্ট উৎপাদন ও সেবা ক্ষেত্রে আত্মকর্মসংস্থান, ক্ষুদ্র ব্যবসা, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প ইত্যাদির জন্য স্বল্প সুদ হারে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যে ৩,২০০ কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করা হয়েছে। এছাড়া প্রবাসী কর্মীদের নিরাপদ অভিবাসন এবং শোভন কাজ নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রচেষ্টা বিদেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ উন্মুক্ত করেছে।

আসন্ন অর্থবছর (২০২১-২২ অর্থবছর) কোভিড-১৯ এর কঠিন সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানসমূহকে প্রস্তাবিত কর ও অন্য প্রশাসনিক সুবিধা প্রদান করাতে, সরকারের জন্য কাক্সিক্ষত রাজস্ব আহরণ করার কাজটিও কঠিন হবে। করপোরেট করের হারকে ২.৫০ শতাংশ (তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য ২৫% থেকে ২২.৫% এবং অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য ৩২.৫০% থেকে ৩০%) কমিয়ে আনার পরিকল্পনায় এমসিসিআই প্রশংসা করছে। যা আঞ্চলিক প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে করপোরেট কর হারে সামঞ্জস্য আনতে ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণে সঠিক পদক্ষেপ। এমসিসিআই হতাশ যে, আগাম আয়কর (এআটি) হ্রাস বা বিলোপের জন্য বাজেটে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

বাজেটে মোবাইল আর্থিক পরিষেবা (এমএফএস) সরবরাহকারীদের করপোরেট করের হার বৃদ্ধির প্রস্তাব ভুল বার্তা দিবে জানিয়ে এমসিসিআই বলে, মহামারী চলাকালীন তাদের করের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করা এবং তাদের বিজ্ঞাপন ব্যয়কে অনুমোদিত ব্যয় হিসেবে বিবেচনা না করা এমএফএস পরিষেবার বৃদ্ধি হ্রাস করবে এবং বাজেটের অনেক ইতিবাচক দিকের মধ্যেও এই খাতের বিনিয়োগকারী এবং ব্যবহারকারীদের জন্য একটি ভুল বার্তা প্রেরণ করবে।

ন্যূনতম টার্নওভার ট্যাক্স বাদ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে সংগঠনটি বলে, এই জাতীয় বাজেটে পাইকারি বিক্রেতা, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ব্যবসায়ী, প্রোপ্রাপটরশিপ, স্টার্টআপ ও দুর্বল কোম্পানি যাদের বিক্রি মূল্য ৩ কোটি টাকার বেশি ন্যূনতম টার্নওভার ট্যাক্স ০.৫০ থেকে কমিয়ে ০.২৫ করা হয়েছে। ন্যূনতম টার্নওভার ট্যাক্স আয়কর নীতির সম্পূর্ণ বিরোধী। এছাড়া মহামারীকালীন ন্যূনতম টার্নওভার ট্যাক্স আরোপ যৌক্তিক নয়।

চলমান মহামারীর কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের অনুমান এখনও অনিশ্চিত। তাই এমসিসিআই’র পক্ষ থেকে ৩ মাস পর বাজেটের অন্তর্বর্তী মূল্যায়ন হওয়া প্রয়োজন বলে দাবি করা হয়েছে।