রাজধানীর আশপাশে, বিভিন্ন জেলায় বাড়ছে সংক্রমণ

৫৩ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ

রাজধানীর চারদিকের বিভিন্ন জেলায় করোনা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। বিশেষ করে, নোয়াখালী, জামালপুর, ফরিদপুর, টাঙ্গাইলে দ্রুত বাড়ছে করোনা সংক্রমণ।

এর প্রভাবে রাজধানীর আশপাশের জেলাগুলোর সংক্রমণ পরিস্থিতিও খারাপের দিকে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন জনস্বাস্থ্যবিদরা। এর মধ্যে গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জেও বাড়ছে করোনা শনাক্ত।

গত একদিনে দেশে তিন হাজার ৩১৯ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। টানা দ্বিতীয় দিনের মতো এদিন অর্ধশত মানুষের মৃত্যুও হয়েছে। ৫৩ দিনের মধ্যে গতকাল সর্বোচ্চসংখ্যক কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নোয়াখালীতে ১৯১ জনের করোনা সংক্রমণ পাওয়া গেছে। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে সংক্রমণের হার ৩৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আগের দিন এই জেলায় শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৬০ জন। বেশ কিছুদিন ধরেই নোয়াখালীসহ আশপাশের জেলায় সংক্রমণ বাড়ছে।

একদিনের ব্যবধানে এত আক্রান্ত হওয়ার বিষয়ে নোয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার গতকাল সংবাদকে বলেন, ‘আগের কিছু নমুনা পরীক্ষা বাকি ছিল; সেগুলোর রিপোর্টও আজকে এসেছে। এ কারণে শনাক্তের সংখ্যা বেড়েছে। প্রকৃতপক্ষে আজ (গতকাল) ৭১ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে; শনাক্তের হার ২১ শতাংশ।

নোয়াখালীতে সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছিল জানিয়ে সিভিল সার্জন বলেন, ‘কিছুদিন ধরে আবারও জেলায় সংক্রমণ বাড়ছে।’

জামালপুরেও বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। এই জেলায় সোমবার ২১ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ পাওয়া যায়। শনাক্তের হার ছিল ২১ দশমিক ৬৯ শতাংশ। গত একদিনে ১০৬টি নমুনা পরীক্ষায় ২৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৭০ শতাংশ।

জামালপুরের সিভিল সার্জন ডা. প্রণয় কান্তি দাস গতকাল সংবাদকে বলেন, ‘মানুষজন একেবারেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন না; মাস্ক পরছেন না এবং সরকারের ন্যূনতম বিধিনিষেধও কেউ মানছে না। এ কারণেই সংক্রমণ বাড়ছে।’

ফরিদপুরে গত একদিনে ২৮২টি নমুনা পরীক্ষায় ৯১ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষা বিবেচনায় সংক্রমণের হার ৩২ দশমিক ২৬ শতাংশ। আগের দিন এই জেলায় ৮৮ জনের করোনা শনাক্ত করেছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. সিদ্দিকুর রহমান গতকাল সংবাদকে বলেন, ‘জেলার সংক্রমণ পরিস্থিতি খুবই খারাপের দিকে যাচ্ছে। সোমবার জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভা হয়েছে। আগামীকালও (আজ) আংশিক আরেকটি সভা আছে।’

ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসককে ফরিদপুরে ‘লকডাউন’ আরোপের অনুরোধ জানানো হয়েছে- উল্লেখ করে সিভিল সার্জন আরও বলেন, ‘জেলা সদর থেকে প্রতিটি উপজেলা ও থাকায় কোথাও কেউ মাস্ক পরছেন না; ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না; হাটবাজার, কাঁচাবাজারসহ গ্রামাঞ্চলের পরিস্থিতি আরও খারাপ।’

ডা. সিদ্দিকুর রহমান জানান, এখন কঠোর পদক্ষেপ না নিলে জেলায় সংক্রমণ পরিস্থিতি বিপর্যয় ঘটতে পারে। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই এখন ৯১ জন করোনা রোগী চিকিৎসাধীন আছেন।

টাঙ্গাইলে গত একদিনে ২১৭টি নমুনা পরীক্ষায় ৮৫ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩৯ দশমিক ১৭ শতাংশ। টাঙ্গাইলে এর আগের দিন ৭৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়।

গোপালগঞ্জে ২৪ ঘণ্টায় ৯১টি নমুনা পরীক্ষায় ৪৮ জন করোনা রোগী পাওয়া গেছে। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে শনাক্তের হার ৫২ দশমিক ৭৪ শতাংশ। আগের দিন গোপালগঞ্জে ৩০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

গাজীপুরে গত একদিনে ২৫৫টি নমুনা পরীক্ষায় ৩৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৯০ শতাংশ। আগের দিন গাজীপুরে ৩২ জনের করোনা ধরা পড়ে।

কিশোরগঞ্জে গত একদিনে ২১২টি নমুনা পরীক্ষায় ৩৪ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ০৩ শতাংশ। আগের দিন এই জেলায় ১৫ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছিল।

রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে সংক্রমণ আরও বেড়েছে

রাজশাহী বিভাগের ৮টি জেলায় ২৪ ঘণ্টায় চার হাজার ২৯২টি নমুনা পরীক্ষায় ৭১২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এই বিভাগে সংক্রমণের হার ১৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ। আগের দিন এই বিভাগে শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৬৪৬ জন।

ঢাকা বিভাগের ১৩টি জেলায় একদিনে ১২ হাজার একটি নমুনা পরীক্ষায় ৯০৭ জনের সংক্রমণ পাওয়া গেছে। শনাক্তের হার ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ। আগের দিন এই বিভাগে এক হাজার মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

খুলনার বিভাগের ১০টি জেলায় একদিনে এক হাজার ৯৬০টি নমুনা পরীক্ষায় ৮০০ জনের করোনা পাওয়া গেছে। শনাক্তে হার ৪০ দশমিক ৮১ শতাংশ। আগের দিন খুলনা বিভাগে ৬১৪ জনের করোনা পাওয়া যায়।

ময়মনসিংহ বিভাগের ৪টি জেলায় একদিনে ৬৪৪টি নমুনা পরীক্ষায় ৮৮ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আগের দিন এই বিভাগে ৬৩ জনের করোনা শনাক্তের কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য বিভাগ।

চট্টগ্রামের ১১টি জেলায় ২৪ ঘণ্টায় দুই হাজার ৮৬৩টি নমুনা পরীক্ষায় ৫১৮ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণের হার ১৮ দশমিক ০৯ শতাংশ। আগের দিন এই বিভাগে ৪৩৫ জন রোগী শনাক্ত হয়েছিল।

রংপুর বিভাগের ৮টি জেলায় ৪৮১টি নমুনা পরীক্ষায় ১৪৮ জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। শনাক্তের হার ৩০ দশমিক ৭৬ শতাংশ। আগের দিন এই বিভাগে ১৬৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

বরিশাল বিভাগের ৬টি জেলায় একদিনে ৩৩৪টি নমুনা পরীক্ষায় ২৮ জনের করোনা পাওয়া গেছে। শনাক্তের হার ৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ। আগের দিন এই বিভাগে ৪০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

সিলেট বিভাগের ৪টি জেলায় ২৪ ঘণ্টায় ৬৯০টি নমুনা পরীক্ষায় ১১৮ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণের হার ১৭ দশমিক ১০ শতাংশ। আগের দিন এই বিভাগে ৮৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

৫৩ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ শনাক্ত

গত একদিনে দেশে তিন হাজার ৩১৯ জনের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। গত ২৩ এপ্রিল এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছিল। ওইদিন তিন হাজার ৬২৯ জনের দেহে সংক্রমণের তথ্য জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। একদিনের শনাক্ত নিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়ালো আট লাখ ৩৩ হাজার ২৯১ জনে।

২৪ ঘণ্টায় করোনায় দেশে ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৩ হাজার ২২২ জন। শনাক্ত অনুসারে মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ।

একদিনে সুস্থ হয়েছেন দুই হাজার ৪৪৩ জন। তাদের নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন সাত লাখ ৭১ হাজার ৭৩ জন। সুস্থতার হার ৯২ দশমিক ৫৩ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত একদিনে সারাদেশে ৫১২টি ল্যাবে ২৩ হাজার ২৬৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৬২ লাখ ১৮ হাজার ৯৭৯টি।

২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ২৭ শতাংশ; আর এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ।

গত একদিনে মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে পুরুষ ৩০ জন এবং নারী ২০ জন। এর মধ্যে ২৬ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ১১ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৯ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর, তিনজনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছর এবং একজনের ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল। এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ১৩ হাজার ২২২ জনের মধ্যে পুরুষ ৯ হাজার ৫০৭ জন এবং নারী তিন হাজার ৭১৫ জন নারী।

মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে ছয়জন ঢাকা বিভাগের, ছয়জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ১৫ জন রাজশাহী বিভাগের, ১৫ জন খুলনা বিভাগের, একজন বরিশাল বিভাগের, তিনজন সিলেট বিভাগের, একজন রংপুর বিভাগের এবং তিনজন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

নোয়াখালী : জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৯১ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। ৫৬৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় এ শনাক্ত পাওয়া যায়। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৩৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ। এটি গত এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ শনাক্ত। এতে জেলায় মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৮৩৬ জন। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে নোয়াখালীর পৌরসভা ও সদর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে চলমান লকডাউনের সময়সীমা ১৮ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তবে লকডাউনের তৃতীয় দিনে নোয়াখালী পৌরসভা ও সদর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে লকডাউন অনেকটা ঢিলেঢালা ভাব দেখা গেছে। তবে শহর এলাকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট বন্ধ থাকতে দেখা যায়।

সাতক্ষীরা : জেলায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৯১ জন। জেলা প্রশাসনের ঘোষিত লকডাউন চলছে। শহরের বিভিন্ন মোড়ে পুলিশি তল্লাশি অব্যাহত রয়েছে। তবে হাট-বাজারে মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. জয়ন্ত সরকার বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৯১ জনের শরীরে করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষার অনুপাতে শনাক্তের হার ৪৯ শতাংশ।

রাজশাহী : রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে আটজনের করোনা পজেটিভ ছিল। হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, চলতি মাসের গত ১৫ দিনে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেছেন ১৪৮ জন। এর মধ্যে ৮৮ জনই মারা গেছেন করোনা শনাক্ত হওয়ার পর।

সোমবার দুইটি ল্যাবে রাজশাহীর ৩৬৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ১১১ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে।

রাতে প্রকাশিত দুইটি পিসিআর ল্যাবের নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, আগের দিনের চেয়ে ১১ দশমিক ০১ শতাংশ কমে করোনা শনাক্তের হার হয়েছে ৩০ দশমিক ১৭ শতাংশ। যা আগের দিন রোববার ছিল ৪১ দশমিক ১৮ শতাংশ এবং এর আগের দিন শনিবার ছিল ৫৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ।

তিনি জানান, রাজশাহী ছাড়াও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৯৯ নমুনা পরীক্ষা করে ২২ জনের পজেটিভ এসেছে। এখানে শনাক্তের হার ২২ দশমিক ২৩ শতাংশ আর নওগাঁয় ৮৮ নমুনা পরীক্ষা করে ৪৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। সেখানে শনাক্তের হার ৪৮ দশমিক ৮৭ শতাংশ। নাটোরে ৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১ জনের পজেটিভ আসে। এখানে শনাক্তের হার ৩৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

চট্টগ্রাম : ২৪ ঘণ্টায় ৯৩৫টি নমুনা পরীক্ষায় চট্টগ্রামে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৫৮ জনের। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত ৫৫ হাজার ১৯০ জন। গতকাল সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানা গেছে। এদিকে নগর ছাড়িয়ে এবার সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে চট্টগ্রামের গ্রাম-গঞ্জেও।

এর মধ্যে উত্তর চট্টগ্রামের চার উপজেলায় রোগীর সংখ্যা বেড়েছে গেল এক সপ্তাহে। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন খোদ স্বাস্থ্য বিভাগও। অন্যদিকে, গত সোমবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের একদল গবেষকের গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। প্রতিবেদনে চট্টগ্রামে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের দুই রোগী পাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। দুই রোগীর একজন নগরীর এবং অন্যজন ফটিকছড়ির বাসিন্দা বলে জানানো হয়েছে।

image

সংক্রমণ বাড়ছে সীমান্ত জেলা গুলোতে স্থানীয় ভাবে কঠোর নিয়ন্ত্রণে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। গতকাল কুড়িগ্রাম পৌরসভার ২, ৩ ও ৭নং ওয়ার্ডে কড়া বিধি নিষেধ আরোপ করা হয় -সংবাদ

আরও খবর
দেশে এক ডোজের জনসনের টিকার অনুমোদন
এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা কবে হবে অনিশ্চিত
গার্ড অব অনারে নারী থাকা নিয়ে আপত্তি সংসদে ক্ষোভ
বুড়িগঙ্গা চ্যানেল উদ্ধারে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
থেকে আম কিনে লক্ষ্মীপুরে সংক্রমণ ধরা পড়ল ব্যবসায়ীর
নাসির, অমি ৭ দিনের রিমান্ডে

বুধবার, ১৬ জুন ২০২১ , ২ আষাড় ১৪২৮ ৪ জিলকদ ১৪৪২

রাজধানীর আশপাশে, বিভিন্ন জেলায় বাড়ছে সংক্রমণ

৫৩ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

সংক্রমণ বাড়ছে সীমান্ত জেলা গুলোতে স্থানীয় ভাবে কঠোর নিয়ন্ত্রণে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। গতকাল কুড়িগ্রাম পৌরসভার ২, ৩ ও ৭নং ওয়ার্ডে কড়া বিধি নিষেধ আরোপ করা হয় -সংবাদ

রাজধানীর চারদিকের বিভিন্ন জেলায় করোনা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। বিশেষ করে, নোয়াখালী, জামালপুর, ফরিদপুর, টাঙ্গাইলে দ্রুত বাড়ছে করোনা সংক্রমণ।

এর প্রভাবে রাজধানীর আশপাশের জেলাগুলোর সংক্রমণ পরিস্থিতিও খারাপের দিকে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন জনস্বাস্থ্যবিদরা। এর মধ্যে গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জেও বাড়ছে করোনা শনাক্ত।

গত একদিনে দেশে তিন হাজার ৩১৯ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। টানা দ্বিতীয় দিনের মতো এদিন অর্ধশত মানুষের মৃত্যুও হয়েছে। ৫৩ দিনের মধ্যে গতকাল সর্বোচ্চসংখ্যক কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নোয়াখালীতে ১৯১ জনের করোনা সংক্রমণ পাওয়া গেছে। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে সংক্রমণের হার ৩৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আগের দিন এই জেলায় শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৬০ জন। বেশ কিছুদিন ধরেই নোয়াখালীসহ আশপাশের জেলায় সংক্রমণ বাড়ছে।

একদিনের ব্যবধানে এত আক্রান্ত হওয়ার বিষয়ে নোয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার গতকাল সংবাদকে বলেন, ‘আগের কিছু নমুনা পরীক্ষা বাকি ছিল; সেগুলোর রিপোর্টও আজকে এসেছে। এ কারণে শনাক্তের সংখ্যা বেড়েছে। প্রকৃতপক্ষে আজ (গতকাল) ৭১ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে; শনাক্তের হার ২১ শতাংশ।

নোয়াখালীতে সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছিল জানিয়ে সিভিল সার্জন বলেন, ‘কিছুদিন ধরে আবারও জেলায় সংক্রমণ বাড়ছে।’

জামালপুরেও বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। এই জেলায় সোমবার ২১ জনের দেহে করোনা সংক্রমণ পাওয়া যায়। শনাক্তের হার ছিল ২১ দশমিক ৬৯ শতাংশ। গত একদিনে ১০৬টি নমুনা পরীক্ষায় ২৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৭০ শতাংশ।

জামালপুরের সিভিল সার্জন ডা. প্রণয় কান্তি দাস গতকাল সংবাদকে বলেন, ‘মানুষজন একেবারেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন না; মাস্ক পরছেন না এবং সরকারের ন্যূনতম বিধিনিষেধও কেউ মানছে না। এ কারণেই সংক্রমণ বাড়ছে।’

ফরিদপুরে গত একদিনে ২৮২টি নমুনা পরীক্ষায় ৯১ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষা বিবেচনায় সংক্রমণের হার ৩২ দশমিক ২৬ শতাংশ। আগের দিন এই জেলায় ৮৮ জনের করোনা শনাক্ত করেছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. সিদ্দিকুর রহমান গতকাল সংবাদকে বলেন, ‘জেলার সংক্রমণ পরিস্থিতি খুবই খারাপের দিকে যাচ্ছে। সোমবার জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভা হয়েছে। আগামীকালও (আজ) আংশিক আরেকটি সভা আছে।’

ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসককে ফরিদপুরে ‘লকডাউন’ আরোপের অনুরোধ জানানো হয়েছে- উল্লেখ করে সিভিল সার্জন আরও বলেন, ‘জেলা সদর থেকে প্রতিটি উপজেলা ও থাকায় কোথাও কেউ মাস্ক পরছেন না; ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না; হাটবাজার, কাঁচাবাজারসহ গ্রামাঞ্চলের পরিস্থিতি আরও খারাপ।’

ডা. সিদ্দিকুর রহমান জানান, এখন কঠোর পদক্ষেপ না নিলে জেলায় সংক্রমণ পরিস্থিতি বিপর্যয় ঘটতে পারে। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই এখন ৯১ জন করোনা রোগী চিকিৎসাধীন আছেন।

টাঙ্গাইলে গত একদিনে ২১৭টি নমুনা পরীক্ষায় ৮৫ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩৯ দশমিক ১৭ শতাংশ। টাঙ্গাইলে এর আগের দিন ৭৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়।

গোপালগঞ্জে ২৪ ঘণ্টায় ৯১টি নমুনা পরীক্ষায় ৪৮ জন করোনা রোগী পাওয়া গেছে। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে শনাক্তের হার ৫২ দশমিক ৭৪ শতাংশ। আগের দিন গোপালগঞ্জে ৩০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

গাজীপুরে গত একদিনে ২৫৫টি নমুনা পরীক্ষায় ৩৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৯০ শতাংশ। আগের দিন গাজীপুরে ৩২ জনের করোনা ধরা পড়ে।

কিশোরগঞ্জে গত একদিনে ২১২টি নমুনা পরীক্ষায় ৩৪ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ০৩ শতাংশ। আগের দিন এই জেলায় ১৫ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছিল।

রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে সংক্রমণ আরও বেড়েছে

রাজশাহী বিভাগের ৮টি জেলায় ২৪ ঘণ্টায় চার হাজার ২৯২টি নমুনা পরীক্ষায় ৭১২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এই বিভাগে সংক্রমণের হার ১৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ। আগের দিন এই বিভাগে শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৬৪৬ জন।

ঢাকা বিভাগের ১৩টি জেলায় একদিনে ১২ হাজার একটি নমুনা পরীক্ষায় ৯০৭ জনের সংক্রমণ পাওয়া গেছে। শনাক্তের হার ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ। আগের দিন এই বিভাগে এক হাজার মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

খুলনার বিভাগের ১০টি জেলায় একদিনে এক হাজার ৯৬০টি নমুনা পরীক্ষায় ৮০০ জনের করোনা পাওয়া গেছে। শনাক্তে হার ৪০ দশমিক ৮১ শতাংশ। আগের দিন খুলনা বিভাগে ৬১৪ জনের করোনা পাওয়া যায়।

ময়মনসিংহ বিভাগের ৪টি জেলায় একদিনে ৬৪৪টি নমুনা পরীক্ষায় ৮৮ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আগের দিন এই বিভাগে ৬৩ জনের করোনা শনাক্তের কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য বিভাগ।

চট্টগ্রামের ১১টি জেলায় ২৪ ঘণ্টায় দুই হাজার ৮৬৩টি নমুনা পরীক্ষায় ৫১৮ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণের হার ১৮ দশমিক ০৯ শতাংশ। আগের দিন এই বিভাগে ৪৩৫ জন রোগী শনাক্ত হয়েছিল।

রংপুর বিভাগের ৮টি জেলায় ৪৮১টি নমুনা পরীক্ষায় ১৪৮ জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। শনাক্তের হার ৩০ দশমিক ৭৬ শতাংশ। আগের দিন এই বিভাগে ১৬৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

বরিশাল বিভাগের ৬টি জেলায় একদিনে ৩৩৪টি নমুনা পরীক্ষায় ২৮ জনের করোনা পাওয়া গেছে। শনাক্তের হার ৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ। আগের দিন এই বিভাগে ৪০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

সিলেট বিভাগের ৪টি জেলায় ২৪ ঘণ্টায় ৬৯০টি নমুনা পরীক্ষায় ১১৮ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণের হার ১৭ দশমিক ১০ শতাংশ। আগের দিন এই বিভাগে ৮৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

৫৩ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ শনাক্ত

গত একদিনে দেশে তিন হাজার ৩১৯ জনের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। গত ২৩ এপ্রিল এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছিল। ওইদিন তিন হাজার ৬২৯ জনের দেহে সংক্রমণের তথ্য জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। একদিনের শনাক্ত নিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়ালো আট লাখ ৩৩ হাজার ২৯১ জনে।

২৪ ঘণ্টায় করোনায় দেশে ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৩ হাজার ২২২ জন। শনাক্ত অনুসারে মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ।

একদিনে সুস্থ হয়েছেন দুই হাজার ৪৪৩ জন। তাদের নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন সাত লাখ ৭১ হাজার ৭৩ জন। সুস্থতার হার ৯২ দশমিক ৫৩ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত একদিনে সারাদেশে ৫১২টি ল্যাবে ২৩ হাজার ২৬৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৬২ লাখ ১৮ হাজার ৯৭৯টি।

২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ২৭ শতাংশ; আর এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ।

গত একদিনে মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে পুরুষ ৩০ জন এবং নারী ২০ জন। এর মধ্যে ২৬ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ১১ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৯ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর, তিনজনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছর এবং একজনের ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল। এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ১৩ হাজার ২২২ জনের মধ্যে পুরুষ ৯ হাজার ৫০৭ জন এবং নারী তিন হাজার ৭১৫ জন নারী।

মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে ছয়জন ঢাকা বিভাগের, ছয়জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ১৫ জন রাজশাহী বিভাগের, ১৫ জন খুলনা বিভাগের, একজন বরিশাল বিভাগের, তিনজন সিলেট বিভাগের, একজন রংপুর বিভাগের এবং তিনজন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

নোয়াখালী : জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৯১ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। ৫৬৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় এ শনাক্ত পাওয়া যায়। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৩৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ। এটি গত এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ শনাক্ত। এতে জেলায় মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৮৩৬ জন। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে নোয়াখালীর পৌরসভা ও সদর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে চলমান লকডাউনের সময়সীমা ১৮ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তবে লকডাউনের তৃতীয় দিনে নোয়াখালী পৌরসভা ও সদর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে লকডাউন অনেকটা ঢিলেঢালা ভাব দেখা গেছে। তবে শহর এলাকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট বন্ধ থাকতে দেখা যায়।

সাতক্ষীরা : জেলায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৯১ জন। জেলা প্রশাসনের ঘোষিত লকডাউন চলছে। শহরের বিভিন্ন মোড়ে পুলিশি তল্লাশি অব্যাহত রয়েছে। তবে হাট-বাজারে মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. জয়ন্ত সরকার বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৯১ জনের শরীরে করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষার অনুপাতে শনাক্তের হার ৪৯ শতাংশ।

রাজশাহী : রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে আটজনের করোনা পজেটিভ ছিল। হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, চলতি মাসের গত ১৫ দিনে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেছেন ১৪৮ জন। এর মধ্যে ৮৮ জনই মারা গেছেন করোনা শনাক্ত হওয়ার পর।

সোমবার দুইটি ল্যাবে রাজশাহীর ৩৬৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ১১১ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে।

রাতে প্রকাশিত দুইটি পিসিআর ল্যাবের নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, আগের দিনের চেয়ে ১১ দশমিক ০১ শতাংশ কমে করোনা শনাক্তের হার হয়েছে ৩০ দশমিক ১৭ শতাংশ। যা আগের দিন রোববার ছিল ৪১ দশমিক ১৮ শতাংশ এবং এর আগের দিন শনিবার ছিল ৫৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ।

তিনি জানান, রাজশাহী ছাড়াও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৯৯ নমুনা পরীক্ষা করে ২২ জনের পজেটিভ এসেছে। এখানে শনাক্তের হার ২২ দশমিক ২৩ শতাংশ আর নওগাঁয় ৮৮ নমুনা পরীক্ষা করে ৪৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। সেখানে শনাক্তের হার ৪৮ দশমিক ৮৭ শতাংশ। নাটোরে ৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১ জনের পজেটিভ আসে। এখানে শনাক্তের হার ৩৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

চট্টগ্রাম : ২৪ ঘণ্টায় ৯৩৫টি নমুনা পরীক্ষায় চট্টগ্রামে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৫৮ জনের। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত ৫৫ হাজার ১৯০ জন। গতকাল সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানা গেছে। এদিকে নগর ছাড়িয়ে এবার সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে চট্টগ্রামের গ্রাম-গঞ্জেও।

এর মধ্যে উত্তর চট্টগ্রামের চার উপজেলায় রোগীর সংখ্যা বেড়েছে গেল এক সপ্তাহে। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন খোদ স্বাস্থ্য বিভাগও। অন্যদিকে, গত সোমবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের একদল গবেষকের গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। প্রতিবেদনে চট্টগ্রামে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের দুই রোগী পাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। দুই রোগীর একজন নগরীর এবং অন্যজন ফটিকছড়ির বাসিন্দা বলে জানানো হয়েছে।