মধ্যপ্রাচ্যে এফ-২২ যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

ইরানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির এফ-২২ স্টিলথ যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে ওয়াশিংটন। গত বৃহস্পতিবার কাতারের আল উদেইদ বিমান ঘাঁটিতে যুদ্ধবিমানগুলো পৌঁছালেও এ তথ্য জানা গেছে গতকাল শনিবার। দেশটির সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, কতগুলো এফ-২২ যুদ্ধবিমান কাতারে পাঠানো হয়েছে তা নিশ্চিত করেনি মার্কিন প্রশাসন। তবে, প্রকাশিত ছবিতে ওই ঘাঁটিতে কমপক্ষে পাঁচটি যুদ্ধবিমান দেখা গেছে।

মধ্যপ্রাচ্যে বিরাজমান যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে এফ-২২ যুদ্ধবিমান পাঠানো প্রসঙ্গে মার্কিন বিমান বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিজস্ব বাহিনীর সুরক্ষা ও ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ডের দায়িত্ব পালনের স্বার্থে কাতারে প্রথমবারের মতো যুদ্ধবিমান পাঠানো হয়েছে। এদিকে ইরানের প্রধান আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সার্ফেস-টু-এয়ার মিসাইল ব্যাটারি এবং বিশেষ করে এস-৩০০ সিস্টেমের ওপর হামলা চালানোই এ এফ-২২ যুদ্ধ বিমানগুলোর মূল মিশন হতে পারে বলে জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার বিমান বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা ও প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক পিটার লেইটন। তিনি বলেন, এস-৩০০ ব্যাটারিগুলোই হবে হামলার প্রথম লক্ষ্যবস্তু। এর মাধ্যমে বাকি আক্রমণের জন্য আকাশপথ উন্মুক্ত হয়ে যাবে। অপরদিকে ইউএস প্যাসিফিক কমান্ডস জয়েন্ট ইন্টেলিজেন্ট সেন্টারের সাবেক ডিরেক্টর অব অপারেশন কার্ল সুস্টার বলেন, এফ-২২ এর উপস্থিতি ইরানের পক্ষ থেকে মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করার ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধক। তবে, এর মানে, যুক্তরাষ্ট্র কিছু একটা থামাতে চাচ্ছে, শুরু করতে নয়।

গত সপ্তাহে হরমুজ প্রণালীতে ইরান একটি মার্কিন গোয়েন্দা ড্রোন ভূপাতিত করার কয়েকদিন পরই মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধবিমানগুলো পাঠানো হলো। তেহরানের দাবি, ড্রোনটি ইরানের আকাশসীমায় চলে এসেছিল। আর ওয়াশিংটনের অভিযোগ, আন্তর্জাতিক জলসীমার ওপর থাকতেই সেটাকে ভূপাতিত করা হয়। প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলারের ড্রোনটি ভূপাতিত করার ঘটনা চলমান ইরান-যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনাকে বাড়িয়ে দেয়ার সর্বশেষ কারণ। এর আগে চলতি মাসে হরমুজ প্রণালীতে দুটি তেলবাহী জাহাজে বিস্ফোরণের ঘটনায় তেহরানকে দায়ী করে ট্রাম্প প্রশাসন। গত মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাত উপকূলে আরও চারটি বাণিজ্যিক জাহাজে বিস্ফোরণের জন্যেও দেশটির দিকেই আঙুল তুলেছে ওয়াশিংটন। ধারাবাহিক এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে প্রায় দুই হাজার সামরিক সদস্য, একটি বিমানবাহী রণতরী ও বি-৫২ বোম্বার পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এবার, এর সঙ্গে যুক্ত হলো সর্বাধুনিক প্রযুক্তির স্টিলথ যুদ্ধবিমান এফ-২২।

ইরানের কাছেই পারস্য উপসাগরীয় দেশ কাতারে রয়েছে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি। সেখানে প্রায় ১১ হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে।

রবিবার, ৩০ জুন ২০১৯ , ১৬ আষাঢ় ১৪২৫, ২৬ শাওয়াল ১৪৪০

মধ্যপ্রাচ্যে এফ-২২ যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

সংবাদ ডেস্ক

image

সর্বাধুনিক প্রযুক্তির এফ-২২ স্টিলথ যুদ্ধবিমান -রয়টার্স

ইরানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির এফ-২২ স্টিলথ যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে ওয়াশিংটন। গত বৃহস্পতিবার কাতারের আল উদেইদ বিমান ঘাঁটিতে যুদ্ধবিমানগুলো পৌঁছালেও এ তথ্য জানা গেছে গতকাল শনিবার। দেশটির সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, কতগুলো এফ-২২ যুদ্ধবিমান কাতারে পাঠানো হয়েছে তা নিশ্চিত করেনি মার্কিন প্রশাসন। তবে, প্রকাশিত ছবিতে ওই ঘাঁটিতে কমপক্ষে পাঁচটি যুদ্ধবিমান দেখা গেছে।

মধ্যপ্রাচ্যে বিরাজমান যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে এফ-২২ যুদ্ধবিমান পাঠানো প্রসঙ্গে মার্কিন বিমান বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিজস্ব বাহিনীর সুরক্ষা ও ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ডের দায়িত্ব পালনের স্বার্থে কাতারে প্রথমবারের মতো যুদ্ধবিমান পাঠানো হয়েছে। এদিকে ইরানের প্রধান আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সার্ফেস-টু-এয়ার মিসাইল ব্যাটারি এবং বিশেষ করে এস-৩০০ সিস্টেমের ওপর হামলা চালানোই এ এফ-২২ যুদ্ধ বিমানগুলোর মূল মিশন হতে পারে বলে জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার বিমান বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা ও প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক পিটার লেইটন। তিনি বলেন, এস-৩০০ ব্যাটারিগুলোই হবে হামলার প্রথম লক্ষ্যবস্তু। এর মাধ্যমে বাকি আক্রমণের জন্য আকাশপথ উন্মুক্ত হয়ে যাবে। অপরদিকে ইউএস প্যাসিফিক কমান্ডস জয়েন্ট ইন্টেলিজেন্ট সেন্টারের সাবেক ডিরেক্টর অব অপারেশন কার্ল সুস্টার বলেন, এফ-২২ এর উপস্থিতি ইরানের পক্ষ থেকে মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করার ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধক। তবে, এর মানে, যুক্তরাষ্ট্র কিছু একটা থামাতে চাচ্ছে, শুরু করতে নয়।

গত সপ্তাহে হরমুজ প্রণালীতে ইরান একটি মার্কিন গোয়েন্দা ড্রোন ভূপাতিত করার কয়েকদিন পরই মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধবিমানগুলো পাঠানো হলো। তেহরানের দাবি, ড্রোনটি ইরানের আকাশসীমায় চলে এসেছিল। আর ওয়াশিংটনের অভিযোগ, আন্তর্জাতিক জলসীমার ওপর থাকতেই সেটাকে ভূপাতিত করা হয়। প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলারের ড্রোনটি ভূপাতিত করার ঘটনা চলমান ইরান-যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনাকে বাড়িয়ে দেয়ার সর্বশেষ কারণ। এর আগে চলতি মাসে হরমুজ প্রণালীতে দুটি তেলবাহী জাহাজে বিস্ফোরণের ঘটনায় তেহরানকে দায়ী করে ট্রাম্প প্রশাসন। গত মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাত উপকূলে আরও চারটি বাণিজ্যিক জাহাজে বিস্ফোরণের জন্যেও দেশটির দিকেই আঙুল তুলেছে ওয়াশিংটন। ধারাবাহিক এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে প্রায় দুই হাজার সামরিক সদস্য, একটি বিমানবাহী রণতরী ও বি-৫২ বোম্বার পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এবার, এর সঙ্গে যুক্ত হলো সর্বাধুনিক প্রযুক্তির স্টিলথ যুদ্ধবিমান এফ-২২।

ইরানের কাছেই পারস্য উপসাগরীয় দেশ কাতারে রয়েছে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি। সেখানে প্রায় ১১ হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে।