সীতাকুণ্ড সন্দ্বীপ নৌযান চলাচল বন্ধ ৬ দিন

বৈরী আবহাওয়া ও ঝড়ো বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডণ্ডসন্দ্বীপ রুটে নৌযান চলাচল ৬ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে সারাদেশ থেকে আসা সন্দ্বীপগামী হাজার হাজার মানুষ ঘাটে এসে ফিরে যাচ্ছেন। তেমনি সন্দ্বীপ থেকে দেশের কোথাও যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে জরুরি ভিত্তিতে মালামালের বোটগুলো ঝুঁকি নিয়ে পার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ইজারাদার। জানা যায়, দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপে আসা যাওয়ার জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পথ হলো সীতাকুণ্ডের কুমিরা ও সন্দ্বীপের গুপ্তাছড়া ঘাট। এই ঘাট হয়েই প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী সারাদেশ থেকে সন্দ্বীপে এবং সন্দ্বীপ থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আসা যাওয়া করেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এই রুটে দ্বীপ উপজেলাটিতে আসা যাওয়ার জন্য কুমিরা ঘাট থেকে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নিযুক্ত ইজারাদারের ১২টি স্পিড বোট ও বিআইডব্লিউটিসির একটি জাহাজ রয়েছে। স্পিড বোটগুলো নিয়মিত আসা যাওয়া করলেও জাহাজটি প্রতিদিন এক বার সীতাকুণ্ড থেকে সন্দ্বীপ যায় আবার সন্দ্বীপ থেকে ফিরে আসে। এসব নৌযানে প্রতিদিন নুন্যতম ৫শ’ থেকে সর্বোচ্চ ১২শ’ যাত্রী যাতায়াত করেন। স্বাভাবিক সময়ে এভাবে যাত্রীরা আসা যাওয়া করলেও প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বঙ্গোপসাগরের নিম্নœচাপ সৃষ্টিসহ বৈরি আবহাওয়ার কারণে ইজারাদারের লোকজন শনিবার থেকে ছোট নৌযানগুলো চলাচল বন্ধ করে দেয়। এ সময় শুধুমাত্র এমভি মতিন নামক জাহাজটিই ছিল যাত্রী পরিবহনের একমাত্র ভরসা। কিন্তু এই জাহাজটিও ২০০ যাত্রী নিয়ে গত শনিবার সন্দ্বীপ থেকে ফেরার পথে মাঝ সাগরে বিকল হয়ে যায়। প্রায় ৫ ঘণ্টা ভাসমান থাকার পর সেটি উদ্ধার করে উপকূলে আনা সম্ভব হয়। এরপর থেকে জাহাজটি চলাচল বন্ধ রেখেছে বিআইডাব্লিউটিসি। এর ফলে গত শনিবার থেকে সীতাকুণ্ডণ্ডসন্দ্বীপ রুটে আর কোন নৌযান চলাচল করছে না। ভুক্তভোগীরা জানান, হঠাৎ করে একমাত্র জাহাজ এমভি মতিনও চলাচল না করায় অসংখ্য যাত্রী সীতাকুণ্ডের কুমিরা ও সন্দ্বীপ গুপ্তাছড়া ঘাটে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে ফেরত যাচ্ছেন। এদিন চট্টগ্রাম থেকে সন্দ্বীপ যাওয়ার উদ্দেশে কুমিরা ঘাটে আসা সন্দ্বীপ উপজেলার বাসিন্দা মো. মোশারফ হোসেন বলেন, আমি জানি যে আবাহাওয়া খারাপের জন্য স্পিড বোড না চললেও জাহাজটি চলবে। তাই চট্টগ্রাম থেকে এসেছি। কিন্তু এখানে এসে শুনছি জাহাজটি খারাপ হয়ে যাওয়ায় এটির চলাচলও বন্ধ। আমার মত একই অবস্থায় পড়েছেন অসংখ্য যাত্রী। সীতাকুণ্ড থেকে সন্দ্বীপগামী মো. ইকবাল ও কুমিরার বাসিন্দা নাসরিন আক্তার বলেন, আবাহাওয়া একটু খারাপ হলেই এ রুটে নৌ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কখনো কখনো অনির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত নৌ চলাচল বন্ধ থাকে। এসময় আমরা চরম দুর্ভোগের শিকার হই। এদিকে যাত্রীদের অসুবিধা ও নৌ চলাচল বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা পরিষদের ইজারাদার এম এম আনোয়ার হোসেন বলেন, সাগর এখন উত্তাল। তাই আমরা সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রেখেছি। এমভি আবদুল মতিন জাহাজটির ইঞ্জিনে ত্রুটি ধরা পড়েছে। তাই এটি বন্ধ রাখা হয়েছে। সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন রায় বলেন, আসলে দুর্যোগপূর্ণ আবাহাওয়ার কারণে সাগরে নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। আবহাওয়া ঠিক হলে আবার নৌযান চলবে।

শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০১৯ , ২৮ আষাঢ় ১৪২৫, ৮ জিলকদ ১৪৪০

সীতাকুণ্ড সন্দ্বীপ নৌযান চলাচল বন্ধ ৬ দিন

প্রতিনিধি, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম)

বৈরী আবহাওয়া ও ঝড়ো বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডণ্ডসন্দ্বীপ রুটে নৌযান চলাচল ৬ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে সারাদেশ থেকে আসা সন্দ্বীপগামী হাজার হাজার মানুষ ঘাটে এসে ফিরে যাচ্ছেন। তেমনি সন্দ্বীপ থেকে দেশের কোথাও যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে জরুরি ভিত্তিতে মালামালের বোটগুলো ঝুঁকি নিয়ে পার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ইজারাদার। জানা যায়, দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপে আসা যাওয়ার জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পথ হলো সীতাকুণ্ডের কুমিরা ও সন্দ্বীপের গুপ্তাছড়া ঘাট। এই ঘাট হয়েই প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী সারাদেশ থেকে সন্দ্বীপে এবং সন্দ্বীপ থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আসা যাওয়া করেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এই রুটে দ্বীপ উপজেলাটিতে আসা যাওয়ার জন্য কুমিরা ঘাট থেকে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নিযুক্ত ইজারাদারের ১২টি স্পিড বোট ও বিআইডব্লিউটিসির একটি জাহাজ রয়েছে। স্পিড বোটগুলো নিয়মিত আসা যাওয়া করলেও জাহাজটি প্রতিদিন এক বার সীতাকুণ্ড থেকে সন্দ্বীপ যায় আবার সন্দ্বীপ থেকে ফিরে আসে। এসব নৌযানে প্রতিদিন নুন্যতম ৫শ’ থেকে সর্বোচ্চ ১২শ’ যাত্রী যাতায়াত করেন। স্বাভাবিক সময়ে এভাবে যাত্রীরা আসা যাওয়া করলেও প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বঙ্গোপসাগরের নিম্নœচাপ সৃষ্টিসহ বৈরি আবহাওয়ার কারণে ইজারাদারের লোকজন শনিবার থেকে ছোট নৌযানগুলো চলাচল বন্ধ করে দেয়। এ সময় শুধুমাত্র এমভি মতিন নামক জাহাজটিই ছিল যাত্রী পরিবহনের একমাত্র ভরসা। কিন্তু এই জাহাজটিও ২০০ যাত্রী নিয়ে গত শনিবার সন্দ্বীপ থেকে ফেরার পথে মাঝ সাগরে বিকল হয়ে যায়। প্রায় ৫ ঘণ্টা ভাসমান থাকার পর সেটি উদ্ধার করে উপকূলে আনা সম্ভব হয়। এরপর থেকে জাহাজটি চলাচল বন্ধ রেখেছে বিআইডাব্লিউটিসি। এর ফলে গত শনিবার থেকে সীতাকুণ্ডণ্ডসন্দ্বীপ রুটে আর কোন নৌযান চলাচল করছে না। ভুক্তভোগীরা জানান, হঠাৎ করে একমাত্র জাহাজ এমভি মতিনও চলাচল না করায় অসংখ্য যাত্রী সীতাকুণ্ডের কুমিরা ও সন্দ্বীপ গুপ্তাছড়া ঘাটে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে ফেরত যাচ্ছেন। এদিন চট্টগ্রাম থেকে সন্দ্বীপ যাওয়ার উদ্দেশে কুমিরা ঘাটে আসা সন্দ্বীপ উপজেলার বাসিন্দা মো. মোশারফ হোসেন বলেন, আমি জানি যে আবাহাওয়া খারাপের জন্য স্পিড বোড না চললেও জাহাজটি চলবে। তাই চট্টগ্রাম থেকে এসেছি। কিন্তু এখানে এসে শুনছি জাহাজটি খারাপ হয়ে যাওয়ায় এটির চলাচলও বন্ধ। আমার মত একই অবস্থায় পড়েছেন অসংখ্য যাত্রী। সীতাকুণ্ড থেকে সন্দ্বীপগামী মো. ইকবাল ও কুমিরার বাসিন্দা নাসরিন আক্তার বলেন, আবাহাওয়া একটু খারাপ হলেই এ রুটে নৌ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কখনো কখনো অনির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত নৌ চলাচল বন্ধ থাকে। এসময় আমরা চরম দুর্ভোগের শিকার হই। এদিকে যাত্রীদের অসুবিধা ও নৌ চলাচল বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা পরিষদের ইজারাদার এম এম আনোয়ার হোসেন বলেন, সাগর এখন উত্তাল। তাই আমরা সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রেখেছি। এমভি আবদুল মতিন জাহাজটির ইঞ্জিনে ত্রুটি ধরা পড়েছে। তাই এটি বন্ধ রাখা হয়েছে। সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন রায় বলেন, আসলে দুর্যোগপূর্ণ আবাহাওয়ার কারণে সাগরে নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। আবহাওয়া ঠিক হলে আবার নৌযান চলবে।